Just In
মায়ের দুধের অজানা কথা!
জন্ম নেওয়ার ১ ঘন্টার মধ্যে বাচ্চাকে মায়ের দুধ খাওয়ানোর পরামর্শ দেন চিকিৎসকেরা। এমনটা করলে নবজাতকের শরীরের অন্দরে শক্তির ঘাটতি পূরণ হয়।
জন্ম নেওয়ার ১ ঘন্টার মধ্যে বাচ্চাকে মায়ের দুধ খাওয়ানোর পরামর্শ দেন চিকিৎসকেরা। এমনটা করলে নবজাতকের শরীরের অন্দরে শক্তির ঘাটতি পূরণ হয়। সেই সঙ্গে প্রতিটি অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের সচলতা বৃদ্ধি পেতে শুরু করে। শুধু তাই নয়, বাচ্চার সুস্থভাবে বেড়ে ওঠার ক্ষেত্রেও মায়ের দুধ বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। আসলে মাতৃদুগ্ধে উপস্থিত একাধিক খনিজ এবং পুষ্টিকর উপাদান বাচ্চার মাথায় চুল থেকে পায়ের নখ পর্যন্ত শরীরের প্রতিটি অংশের কর্মক্ষমতা বাড়তে সাহায্য করে থাকে। কিন্তু আমাদের দেশে প্রথম ঘন্টায় তো ছাড়ুন, জন্মের পরের ছয় মাস পর্যন্ত বাচ্চা তার মায়ের দুধ পায় না। ফলে তারা যত বড় হতে থাকে, তত নানাবিধ রোগ শরীরে এসে বাসা বাঁধে। চিকিৎসকদের মতে, গত কয়েক দশকে এদেশে মারণ রোগের প্রকোপ এত বৃদ্ধির পিছনে বাচ্চাদের পর্যান্ত পরিমাণে মায়ের দুধ না খাওয়াকেই দায়ি করা যেতে পারে।
মায়ের দুধ খাওয়া জরুরি কেন?
জন্মের পর থেকে টানা ছয় মাস বাচ্চাকে টানা ব্রেস্ট ফিড করালে নবজাতকের শরীরে বিশেষ কিছু অ্যান্টিবডির মাত্রা বেড়ে যায়। ফলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার এতটা উন্নতি ঘটে যে কোনও জীবাণুই ক্ষতি করে উঠতে পারে না। প্রসঙ্গত, সম্প্রতি "এ সি এস" জার্নালে প্রকাশিত একটি গবেষণা পত্রে দেখা গেছে মায়ের দুধে বিশেষ এক ধরনের কার্বোহাইড্রেটে রয়েছে, যাতে উপস্থিত শক্তিশালী অ্যান্টি-ব্য়াকটেরিয়াল প্রপাটিজ বাচ্চাকে নানা ধরনের সংক্রমণের হাত থেকে প্রতি সময় রক্ষা করে থাকে।
মায়ের দুধ আসলে কী?
মাতৃদুগ্ধ হল আসলে ফ্যাট, প্রোটিন এবং কার্বোহাইড্রেটের মিশ্রনে তৈরি একটি তরল, যা বাচ্চাকে শক্তপোক্ত করার পাশাপাশি আগামী দিনে যাতে সে সুস্থভাবে বড় হয়ে উঠতে পারে সে ব্যাপারেও সাহায্য করে থাকে। প্রসঙ্গত, এতদিন চিকিৎসকেরা মনে করতেন মায়ের দুধে উপস্থিত প্রোটিনই বেশিরভাগ কাজটা করে থাকে। কিন্তু এই নতুন গবেষণায় দেখা গেছে প্রটোনের পাশাপাশি কার্বোহাইড্রেটও এক্ষেত্রে দারুন উপকারে লাগে, যা এতদিন পর্যন্ত অজানা ছিল।
গবেষণাটা কেন করা হয়েছিল:
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভ্যানডারবিল্ড ইউনিভার্সিটির গবষকদের করা এই এই গবেষণার প্রধান লক্ষ ছিল, বাচ্চাদের কীভাবে সংক্রমণের হাত থেকে আরও সুরক্ষিত রাখা যায়, সে বিষযে প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহ করা, যা করতে গিয়ে বিশেষজ্ঞরা দেখেছিলেন যে বাচ্চাদের যদি ঠিক মতো মায়ের দুধ খাওয়ানো যায়, তাহলে সংক্রমণ নিয়ে চিন্তাই থাকে না। কারণ মায়ের দুধ এতটাই শক্তিশালী যে তা প্রায় সব ধরনের ইনফেকশনকে বাচ্চাদের থেকে দূরে রাখতে পারে। তাই আপনি যদি আপনার বাচ্চার দীর্ঘায়ু কামনা করেন, তাহলে তাকে টানা ছয় মাস মায়ের দুধ খাওয়াতে ভুলবেন না যেন!
শেষ হয়েও হয় না শেষ:
অমৃতের সন্ধান পেয়ে অমর হতে চান? তাহলে বাচ্চাকে মায়ের দুধ থেকে বঞ্চিত করবেন না। কারণ এতে উপস্থিত সুগার এবং কার্বোহাইড্রেট শুধু ব্যাকটেরিয়াদের ক্ষতি করার ক্ষমতাই কমায় না, সেই সঙ্গে তাদের প্রতিরোধ ক্ষমতাকেও নষ্ট করে দেয়। ফলে বাচ্চার শরীরে বেশিদিন সেইসব ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া বেঁচে থাকতে পারে না। এবার নিশ্চয় বুঝতে পরেছেন আপাতো দৃষ্টিতে ব্রেস্ট ফিডিং-কে সামান্য একটা কাজ ভেবে অনেক মা অবজ্ঞা করলেও আদতে কিন্তু এটি বাচ্চার কাছে অমৃতের কম নয়।