Just In
স্কিপিং করার অভ্যাস আছে কি?
আজ একটি গবেষণা পত্র প্রকাশিত হয়েছে, তাতে এমনটা দাবি করা হয়েছে যে নিয়মিত কিছু সময় স্কিপিং করলে সারা শরীরের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।
অকারণ প্রশ্ন করছি জানি। কারণ আজকের যুবসমাজের কাছে কোনও কিছুর জন্যই সময় নেই। এমনকি শরীরের খেয়াল রাখার ক্ষেত্রেও তারা বেজায় উদাসিন। তাই স্কিপিং করেন কি, এই প্রশ্ন করাটা বাস্তবিকই বোকামি!
কিন্তু হঠাৎ করে স্কিপিং-এর প্রসঙ্গ আসছে কেন? আসছে এই কারণে যে আজ একটি গবেষণা পত্র প্রকাশিত হয়েছে, তাতে এমনটা দাবি করা হয়েছে যে নিয়মিত কিছু সময় স্কিপিং করলে সারা শরীরের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। সেই সঙ্গে হার্টের ক্ষমতা এতটা বৃদ্ধি পায় যে হঠাৎ করে হার্ট অ্যাটাকের আশঙ্কা একেবারে কমে যায়। প্রসঙ্গত, সরকারি নথির দিকে নজর ফেরালেই জানতে পারবেন, আমাদের দেশে গত কয়েক বছরে কীভাবে কম বয়সিদের মধ্যে হার্টের রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে সুস্থ থাকতে নিয়মিত যে স্কিপং করার প্রয়োজন বেড়েছে, সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই।
একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে ১০ মিনিট স্কিপিং করলে যে উপকার পাওয়া যায়, তা প্রায় ৩০ মিনিট জগিং-এর সমান। শুধু তাই নয়, বিশেষ ধরনের এই শরীরচর্চাটি করার সময় শ্বাস-প্রশ্বাস নেওয়ার হার এতটা বেড়ে যায় যে হার্টের কর্মক্ষমতা বাড়তে সময়ই লাগে না। সেই সঙ্গে আরও অনেক শারীরিক উপকারও পাওয়া যায়। যেমন...
১. শরীরের প্রতিটি পেশীর কর্মক্ষমতা বাড়ে:
একাধিক কেস স্টাডি করে দেখা গেছে নিয়মিত স্কিপিং করলে শরীরে নিচের অংশ, বিশেষত পায়ের পেশীর কর্মক্ষমতা মারাত্মক বৃদ্ধি পায়। সেই সঙ্গে শরীরের উপরিঅংশে যত মাসল রয়েছে, তাদেরও সচলতাও বৃদ্ধি পায়। ফলে সার্বিকভাবে দেহের কর্মক্ষমতা বাড়তে সময় লাগে না।
২. ওজন হ্রাস পেতে একেবারেই সময় লাগে না:
অতিরিক্তি ওজনের কারণে যদি চিন্তায় থাকেন, তাহলে আজ থেকেই স্কিপং-এর সঙ্গে বন্ধুত্ব পাতিয়ে নিতে পারেন। এমনটা করলে দেখবেন দারুন উপকার মিলবে। আসলে প্রতিদিন ৩০ মিনিট স্কিপিং করা শুরু করলে কম-বেশি প্রায় ৩০০ ক্যালরি বার্ন হয়। এই পরিমাণ ক্যালরি প্রতিদিন ঝরতে থাকলে ওজন কমতে যে একেবারেই সময় লাগে না, তা বলাই বাহুল্য!
৩. হার্ট রেটের উন্নতি ঘটে:
শরীরের এই গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গটির কর্মক্ষমতা বাড়াতে বাস্তবিকই স্কিপং-এর কোনও বিকল্প নেই বললেই চলে। আসলে নিয়মিত এই শরীরচর্চাটি করলে হার্টের স্বাস্থ্যের উন্নতি তো ঘটেই না। সেই সঙ্গে আর্টারি এবং ভেইনের কর্মক্ষমতাও বৃদ্ধি পেতে শুরু করে। ফলে সারা শরীরের পাশাপাশি হার্টেও অক্সিজেন সমৃদ্ধ রক্তের সরবরাহ এতটা বেড়ে যায় যে হার্টের রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা একেবারে কমে যায়। সেই সঙ্গে স্ট্যামিনাও চোখে পরার মতো বৃদ্ধি পায়।
৪. ত্বকের সৌন্দর্য বাড়ে:
জাপিং রোপের সঙ্গে ত্বকের ভাল-মন্দের কি সম্পর্ক? আসলে এই শরীরচর্চাটি নিয়মিত ১৫ মিনিট করলেই এত মাত্রায় ঘাম হয় যে শরীর এবং ত্বকের অন্দরে উপস্থিত টক্সিক উপাদানেরা বেরিয়ে যেতে শুরু করে। ফলে ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধি পেতে সময়ই লাগে না। প্রসঙ্গত, আরেকভাবেও এই শরীরচর্চাটি ত্বকের সৌন্দর্য বাড়িয়ে তোলে। কীভাবে? বেশ কিছু কেস স্টাডিতে দেখা গেছে স্কিপং করার সময় সারা শরীরে রক্তের সরবরাহ বেড়ে যায়। ফলে ত্বকের অন্দরে পুষ্টির ঘাটতি দূর হতে সময় লাগে না, যার প্রভাবে সৌন্দর্য বাড়তে শুরু করে।
৫. হাড়ের স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটায়:
একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে নিয়মিত স্কিপং-এর মতো কার্ডিও এক্সারসাইজ করলে বোন ডেনসিটি বাড়তে শুরু করে। সেই সঙ্গে জয়েন্টের সচলতাও এতটা বেড়ে যায় যে অস্টিওপরোসিসের মতো হাড়ের রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বৃদ্ধি পায়। প্রসঙ্গত, ৩৫ পেরতে না পেরতেই পুরুষ এবং মহিলা উভয়েরই হাড়ের স্বাস্থ্যের অবনতি ঘটতে শুরু করে। তাই যারা ইতিমধ্যেই এই বয়সে পৌঁছে গেছেন, তাদের বেশি করে স্কিপং করার প্রয়োজন রয়েছে।
৬. হোল বডি এক্সারসাইজ:
স্কিপিং করার সময় অনবরত লাফাতে হয়। ফলে শরীরের নিচের অংশের সচলতা এমনিতেই বৃদ্ধি পায়। সেই সঙ্গে হাত, কাঁধ এবং অ্যাবডোমিনাল এরিয়ার কর্মক্ষমতাও বৃদ্ধি পেতে শুরু করে। এখানেই শেষ নয়, চিকিৎসকদের মতে সারাক্ষণ চেয়ারে বসে কাজ করার কারণে বেশিরভাগেরই বডি পসচার খারাপ হয়ে যায়। এক্ষেত্রেও স্কিপং সাহায্য করে থাকে। আসলে এই শরীরচর্চাটি করার সময় শরীর একেবারে সোজা থাকে, ফলে বডি পসচারে উন্নতি ঘটতে সময় লাগে না।
৭. ব্রেন পাওয়ার বাড়ে:
বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে নিয়মিত ২০ মিনিট করে স্কিপং করলে মস্তিষ্কের অন্দরে বেশ কিছু হরমোনের ক্ষরণ বেড়ে যায়, যে কগনিটিভ ফাংশনের উন্নতি ঘটতে সময়ই লাগে না। শুধু তাই নয়, স্মৃতিশক্তি এবং বুদ্ধির বিকাশেও এই শরীরচর্চাটি বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।