Just In
- 16 hrs ago এপ্রিল মাসে ৪ গ্রহের স্থান পরিবর্তন, রাজযোগ ও সৌভাগ্যে ফুলে ফেঁপে উঠবে এই রাশির জাতকরা, দেখুন
- 17 hrs ago আপনার কি ক্রমাগত কান চুলকাচ্ছেন? অজান্তেই ডেকে আনচ্ছেন বড় বিপদ
- 21 hrs ago মসুর ডাল খেতে ভালোবাসেন? কিন্তু অতিরিক্ত খেলে হতে পারে পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া!
- 22 hrs ago অনলাইন গেমে বাচ্চারা ঘরকুঁনো! জানেন কি স্বাস্থ্যের জন্য় কতটা উপকারি আউটডোর গেম?
শুনুন শুনুন প্লিজ শুনুন রোগা মানুষেরা...!
ওজন বাড়াতে সাহায্য করতে পারে একটি প্রপার ডায়েট চার্ট, যাতে থাকবে কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন, উপকারি ফ্য়াট সহ শরীরের প্রয়োজনীয় বাকি উপকারি উপাদান।
বেশি দিন নয়, গত বছরের ঘটনা। আমার এক বন্ধু হঠাৎই এক আন্তর্জিত কোম্পানির উচ্চপদে চাকরি পেয়ে গেল। তার তো খুশি ধরে না! এদিকে আমরা বেজায় চিন্তায়। কেন চিন্তায় কেন? আরে মশাই আমার সেই বন্ধুটা প্রথম শ্রেনির খাদ্যরসিক সে গিয়ে ব্যাঙ্গালোরের মতো জায়গায় থাকবে কিভাবে, খাবেই বা কী!
আর হলও তাই। ছয় মাস পেরতে না পেরতেই মোটা মায়নে পাওয়া আমার সেই মোটা বন্ধুটির সে কি কান্নাকাটি! ঠিক মতো খেতে না পেরে এমন অবস্থা হয়েছে যে ওজন ৮৫ কেজি থেকে ৬৫-তে এসে ল্যান্ড করেছে। ফলে চাকরি ছেড়ে কলকাতায় ফেরার আর্জি নিয়ে ঘুরছে এদিক-সেদিক। এমন অবস্থা আমাদের অনেকেরই। বিশেষত যারা বাড়ির বাইরে থাকেন, তাদরে তো খাওয়া ঠিক মতো হয়ই না। তার উপর কাজের চাপে শরীর এমন ভাঙতে থাকে যে জামা-কাপড়ের সাইজ ক্রমাগত নিম্নমুখি হতে শুরু করে।
এমন পরিস্থিতিতে একমাত্র সাহায্য করতে পারে একটি প্রপার ডায়েট চার্ট, যাতে থাকবে কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন, উপকারি ফ্য়াট সহ শরীরের প্রয়োজনীয় বাকি উপকারি উপাদান। সেই সঙ্গে খেয়াল রাখতে এমন খাবারের মধ্য়ে এইসব উপাদান থাকবে, যা হবে সহজলভ্য এবং পকেট ফ্রেন্ডলি। কি তাই তো? একেবারে! তাহলে আর অপেক্ষা কেন, চলুন জেনে ফেলা যাক সেই সব নিয়ম এবং ডায়েট চার্চ সম্পর্কে, যা মেনে চললে ক্ষয়ে যাওয়া শরীর আবার সুন্দর হয়ে উঠবে। এদিকে ওজনও থাকবে বিপদ সীমার নিচে।
এক্ষেত্রে যে যে নিয়মগুলি মেনে চলতে হবে, সেগুলি হল...
১. নিয়ম মেনে খেতে হবে ক্যালরি সমৃদ্ধ খাবার:
ওজন বাড়ানোর প্রথম ধাপে জেনে নিতে হবে কোন কোন খাবারে একটু বেশি মাত্রায় ক্যালরি রয়েছে। এমন খাবার একটু বেশি মাত্রায় খেলে ওজন ধিরে ধিরে বাড়তে শুরু করবে। তবে খেয়াল রাখতে হবে দৈনিক যেন ২৫০ ক্যালরির বেশি শরীরে প্রবেশ না করে। এই মাপটি মেনে চললে দেখবেন আপনার ওজন হাফ কেজি মতো বাড়ে যাবে। এর বেশি বাড়াতে চাইলে ক্যালরি গ্রহণের পরিমাণ ধীরে ধীরে বাড়াতে পারেন। প্রসঙ্গত, এক্ষেত্রে সিরায়াল জাতীয় খাবার, ব্রেড, ভাত, বাদাম, আখরোট প্রভৃতি বেশি করে খেতে পারেন। এইসব খাবারগুলি বেজায় ক্যালরি সমৃদ্ধ।
২. খাবারের পরিমাণ বাড়াতে হবে:
তিনটে মিলের পরিবর্তে দিনে ছটা মিল খাওয়া শুরু করুন। অর্থাৎ সহজ কথায় ব্রেকফাস্ট, লাঞ্চ এবং ডিনারের মাঝে অল্প অল্প করে কিছু খাবার খেতে হবে। আর খেয়াল রাখতে হবে দিনের মূল তিনটি খাবার খাওয়ার সময় তাতে যেন থাকে ক্যালরি রিচ ফুড। এমনটা করলেই দেখবেন ওজন ধীরে ধীরে বাড়তে শুরু করবে। প্রসঙ্গত, সন্ধ্যার পর থেকে আমাদের মেটাবলিজম রেট কমতে শুরু করে। সেই কারণেই ওজন বাড়াতে চাইলে রাতের বেলা কব্জি ডুবিয়ে খাওয়া পরমার্শ দেন চিকিৎসকেরা।
৩. প্রোটিন খেতে হবে বেশি করে:
ওজন বাড়ানোর সময় একটা কথা খেয়াল রাখতে হবে যে শরীরের এই পরিবর্তন যেন ঠিক ঠিক নিয়ম মেনে হয়। না হলে কিন্তু হিতে-বিপরীত হওয়ার আশঙ্কা বাড়বে। তাই ক্যালরি সমৃদ্ধ খাবার খাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে প্রতিদিনের ডায়েটে নির্দিষ্ট পরিমাণে প্রোটিন সমৃদ্ধি খাবারও রাখতে হবে। এমনটা করলে দেখবেন ওজন তো বাড়বেই, সেই সঙ্গে শরীর হয়ে উঠবে পেশি বহুল। এক্ষেত্রে ডিম, মাছ, ছোলা এবং দুদ্ধজাত খাবার বেশি করে খেতে হবে।
৪. উপকারি ফ্যাটের দিকেও খেয়াল রাখতে হবে:
পেশির গঠনের জন্য যে যে উপাদাগুলির বিশেষ প্রয়োজন পরে, তার মধ্যে অন্যতম হল উপকারি ফ্যাট। সেই কারণেই তো ওজন বাড়ানোর পরিকল্পনা করলে রোজের ডেয়েটে সবুজ শাক-সবজি, বাদাম, মাছ, অ্যাভোকাডো এবং নানা ধরনের বীজ রাখার পরামর্শ দিয়ে থাকেন ডায়েটেশিয়ানরা। আসলে উপকারি ফ্যাট দেহের গঠনে উন্নতি ঘটানোর পাশাপাশি টেস্টোস্টরন হরমোনের ক্ষরণ যাতে ঠিক মতো হয়, সেদিকেও খেয়াল রাখে। প্রসঙ্গত, এই হরমোনটি শরীরের গঠনে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।
৫. শরীরচর্চাও প্রয়োজন রয়েছে:
ওজন কমাতে যেমন নিয়মিত শরীরচর্চা করার পরামর্শ দিয়ে থাকেন চিকিৎসকেরা, তেমনি একথা ভুলে গেলেও চলবে না যে ওজন বাড়াতেও এক্সারসাইজের কোনও বিকল্প হয় না বললেই চলে। এক্ষেত্রে দেহের গঠনের উন্নতি ঘটানোর জন্য় যে যে এক্সারসাইজগুলি নিয়মিত করতে হবে, সেগুলি হল- টুইস্টিং ক্রাঞ্চ, লেগ প্রেস, লেগ এক্সটেনশন, লেগ কার্লস, শোল্ডার শ্রাগ, সিটেড ডাম্বেল প্রেস, ট্রাইসেপ পুশ ডাউন, বারবেল স্কোওয়াট,পুল আপস প্রভৃতি।
৬. কমাতে হবে স্ট্রেস:
একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে দ্রুত ওজন কমে যাওয়ার পেছনে অনেক ক্ষেত্রেই স্ট্রেস বা মানসিক টাপ দায়ি থাকে। তাই ওজন বাড়ানার প্ল্যান করলে প্রথমেই কিন্তু স্ট্রেসকে নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে। না হলে যতই ঠিক মতো খান না কেন, ওজন কিন্তু বাড়বেই না।
৭. ঘুম ঠিক মতো হওয়াটা জরুরি:
শরীরের গঠনে যে যে ফ্যাক্টরগুলি বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে, সেগুলির মধ্যে অন্যতম হল ঘুম। তাই দৈনিক ৭-৮ ঘন্টার ঘুম জরুরি। না হলে কিন্তু শরীর এবং মস্তিষ্কও উভয়ই ভাঙতে শুরু করবে। সেই সঙ্গে লেজুড় হবে নানা রোগও। তাই এমনটা যদি না চান, তাহলে হাজারও ব্যস্ততা সত্ত্বেও ঘুমের ঘাটতি হতে দেওয়া কিন্তু চলবে না।
কেমন হবে ডায়েট চার্ট:
সকাল ৭-৮ টার মধ্যে ঘুম থেকে উঠে পরে দাঁত মেজে ব্রেকফাস্ট। তাতে থাকবে মাল্টি গ্রেন ব্রেড, সঙ্গে ডিমের অমলেট অথবা একবাটি ওটস। পরটা, উপমা, রুটি বা ডালিয়াও চলতে পারে। ব্রেকফাস্টের ২ ঘন্টা পর খেতে হবে এক গ্লাস দুধ। আর লাঞ্চে থাকতে পারে ছোট বাটির এক বাটি ভাত এবং ২ টো রুটি। সঙ্গে ডাল, সবজি, মাছ অথবা মাংস। এই সময় যদি একটু গ্রিন স্যালাড খেতে পারেন তাহলে তো কথাই নেই। আরেকটা বিষয় দুপুরের খাবারের পর এক বটি দই খেতে ভুলবেন না যেন!
লাঞ্চ শেষ করার ২-৩ ঘন্টা পরে দেখবেন হলকা ক্ষিদে পাবে। এই সময় এক বাটি সবজি অথবা চিকেন সুপ খেতে পারেন। আর যদি এইসব খেতে ইচ্ছা না করে, তাহলে ভেজ স্য়ানডুইচও খেতে পারেন। রাতের খাবার হবে দুপুরের মতই। শুধু একটাই পরিবর্তন হবে, তা হল ডিনার শেষ করা ২-৩ ঘন্টা পরে যখন শুতে যাবেন, তখন এক গ্লাস দুধ খেয়ে নিতে ভুলবেন না। তাহলেই কেল্লাফতে!