Just In
দীপাবলির সাবধানতা!
দেখতে দেখতে চলে এলো আলোর উৎসব। সমস্ত অন্ধকার, যন্ত্রণা কাটিয়ে আলোর উৎসবে সামিল হবে আপামর ভারতবাসী। এখন তো বিদেশেও দীপাবলি ধুমধাম সহকারে পালন করা হয়ে থাকে। আর দীপাবলি উপহার দেওয়া-নেওয়ারও উৎসব, কি তাই তো! সব মিলিয়ে দীপাবলি হল আমাদের সকলের মুখে হাসি ফোটানোর উৎসব। কিন্তু মন খারাপ করার বিষয় হল দীপাবলির সময় নানা কারণে অনেক দুর্ঘটনারও খবর পাওয়া যায়। কেউ বাজি ফাটাতে গিয়ে বিপদে পরেন, তো কেউ অন্য কারণে। তাই তো কখনও সখনও আনন্দ বদলে যায় দুঃখের আবহে। তাই এবারের কালি পুজোয় কিন্তু একটু সাবধান হতে হবে। পরিবার,পরিজন,আত্মীয়-বন্ধুবান্ধব সবাইকে নিয়ে আনন্দে মেতে উঠুন হাতেগোনা কিছু সাবধানতা অবলম্বন করে। কি সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে? তারই হদিশ দেবে আজ বোল্ডস্কাই বাংলা।
১. নামকরা দোকান থেকে বাজি কিনুন:
আমরা অনেকেই যে কোনও দোকান থেকে যে কোনওরকম বাজি কিনে নি। আবার অনেক সময় শুধুমাত্র কম দাম দেখেই যেখান সেখান ব্যাগ ভর্তি করে বাজি কিনে আনি। এমনটা করা কিন্তু একেবারেই উচিত নয়। কেন জানেন? এইভাবে বাজি কিনলে কিন্তু যে কেনাও সময় বিপদ ঘটার আশঙ্কা মারাত্মক থাকে। কারণ রাস্তার দোকেন বিক্রি হওয়া বাজিগুলি অনেক সময় ঠিক মতো বানানো হয়। কোনও কোনও সময় তো মশলাও ঠিক থাকে না। ফলে পোড়ানোর সময় বাজিগুলো বাস্ট করা আশঙ্কা থাকে। তাই যে কোনও জয়গা থেকে ইচ্ছামতো বাজি না কিনে কোনও নামি কোম্পানির বাজি কেনাই বুদ্ধিমানের কাজ। সেই সঙ্গে বাজি পোড়ানোর আগে সব সময় নির্দিষ্ট নির্দেশাবলী পড়ে নেওয়া উচিত।
২. খোলা জায়গায় বাজি পোড়ানো উচিত:
কোনও ভিড় জায়গায় বাজি পোড়াবেন না। এতে দুর্ঘটনা হতে পারে। সবসময় কোনও মাঠ, ছাঁদ বা উঠোনে বাজি পোড়ান। খেয়াল রাখবেন, পথচারী বা পরিবারের কোনও সদস্য যেন বাজির দ্বারা আহত না হন।
৩. আপতকালীন সাবধানতা অবলম্বন করুন:
বাজি পোড়ানোর সময় সবসময় এক বালতি জল কাছে রাখবেন। এছাড়াও বেশ কিছু জরুরি ফোন নাম্বার, যেমন- কাছাকাছি হাসপাতাল, নার্সিংহোম, দমকল, থানা এগুলির নাম্বার এক জায়গায় লিখে রেখে দেবেন। সেই সঙ্গে ছোটখাটো পুড়ে যাওয়া বা কেটে যাওয়া সামলাতে প্রাথমিক চিকিৎসার ব্য়বস্থা থাকাও জরুরি। তাই বাজি ফাটানোর সময় সঙ্গে বার্নল এবং ঐ জাতীয় ওষুধ সঙ্গে রাখতে ভুলবেন না!
৪. কি ধরণের পোশাক পড়বেন?
বাজি পোড়ানোর সময় সবসময় সুতির জামা পড়ুন। সিন্থেটিকের কাপড় বা জামা যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলুন। খুব বেশি ছড়ানো জামা বা বড় ওড়না দেওয়া জামা পড়বেন না। এতে বাজি পোড়ানোর সময় পোশাক সামলানো মুশকিল হয়ে পড়ে। ফলে হঠাৎ করে খারাপ কিছু ঘটে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে।
৫. মোমবাতি এবং প্রদীপ জ্বালানোর সময় সাবধান থাকুন:
দীপাবলি মানেই তো আলোর উৎসব। তাই তো এই সময় সারা বাড়িতে মোমবাতি বা প্রদীপ জ্বালানো হয়। কিন্তু এমনটা করতে গিয়ে যাতে কোনও ধরনের বিপদ না হয়, তাই খেয়াল রাখুন বাড়ির কোথায় কোথায় প্রদীপ বা মোমবাতি জ্বালাচ্ছেন, সেখানে ভুলেও কোনও জামা-কাপড় রাখবেন না। কারণ এমনটা করলে আগুন ধরে গিয়ে বিপদ হওয়ার আশঙ্কা থাকে।
৬. অতিরিক্ত বাজি আগুনের থেকে দূরে রাখুন:
আগুনের কাছে সব বাজি এনে রাখবেন না। এতে দুর্ঘটনা হতে পারে। বাড়ির ভেতরে কোনও খোলামেলা জায়গায় বাজিগুলি রাখুন। সেখান থেকে একটা একটা করে বাজি এনে ফাটান। আর অবশ্যই খেয়াল করে শিশুদের থেকে াগুন এবং বাজি দূরে রাখুন।
৭. একসঙ্গে অনেক বাজি ফাটাতে যাবেন না:
অনেক বাজি বা অনেক রকম বাজি একসঙ্গে ফাটাবেন না। এতেও খারাপ কিছু ঘটে যেতে পারে। কোনও বাজি নিজের হাতে ধরে বা শরীরের কাছাকাছি এনে ফাটাবেন না। সবসময় নির্দিষ্ট দুরত্ব বজায় রাখুন ফাটান। এক্ষেত্রে আরেকটা বিষয মাথায় রাখতে হবে। তা হল বাজি পোড়ানোর সময় কখনও সামনের দিকে ঝুঁকে পরবেন না। এমনটা করলে আগুন ছিটকে এসে কোনও বিপদ ঘটতে পারে।
৮. বিপদে হাসপাতালে যেতে দেরি করবেন না:
বাজি পোড়াতে গিয়ে শরীরের কোনও অংশ পুড়ে গেলে কখনোই তেল বা ঘি ব্যবহার করবেন না। এতে সংক্রমণের সম্ভাবনা বেড়ে যায়। খুব বেশি মাত্রায় পুড়ে গেলে বা ক্ষত গভীর হলে সঙ্গে সঙ্গে রোগীকে হাসপাতালে নিয়ে যান। এমনটা করলে তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে ওঠা সম্ভব হবে।
৯.স্পর্শকাতর বিষয়ে সাবধান হোন:
দীপাবলি আনন্দের উৎসব। তাই এই উৎসব এমন ভাবে পালন করা উচিত, যাতে কোনোভাবে কোনও অসুবিধার সৃষ্টি না হয়। বাজি পোড়ানোর সময় খুব বেশী চিৎকার, চেঁচামেচি বা হইহুল্লোড় করবেন না। এতে আপনার পাড়া বা পরিবারের অসুস্থ বা বয়স্ক মানুষেরা অসুবিধার সম্মুখীন হতে পারেন। সেই সঙ্গে মনে রাখবেন খুব বেশি শব্দের বাজি পোড়াবেন না। এতে পরিবেশের ক্ষতি হয়। আর মনে করে রাস্তার কুকুর-বিড়ালকেও অযথা বাজি দিয়ে উত্তক্ত বা ভয় দেখাবেন না।