Just In
- 14 hrs ago ঠাকুরকে নিত্যভোগ দেওয়ার সময় ঘণ্টা বাজে কেন? জানেন কি এর পিছনের রহস্য
- 16 hrs ago প্রখর রোদ থেকে স্বস্তি পেতে বাড়িতেই বানিয়ে নিন এই শরবতগুলি, ঠান্ডা রাখবে শরীরও
- 18 hrs ago গরমে এই পানীয়গুলি খেলে আপনিও থাকবেন হাইড্রেটেড ও সতেজ
- 20 hrs ago কাঠফাটা রোদ থেকে বাঁচতে কী করবেন? এড়িয়ে চলুন চা-কফি
Don't Miss
লিউকোমিয়া প্রাণ কেড়ে নিল ঋষি কাপুরের, জেনে নিন এই রোগ সম্পর্কে বিস্তারিত
লিউকোমিয়া ক্যান্সারের বিরুদ্ধে দীর্ঘ লড়াইয়ের পর অবশেষে জীবন থমকে গেল বলিউড খ্যাত অভিনেতা ঋষি কাপুরের। ৩০ এপ্রিল, বৃহস্পতিবার সকালে মুম্বইয়ের এক বেসরকারি হাসপাতালে মৃত্যু হয় তাঁর। বলিউড থেকে টলিউড, গোটা সিনেমা জগতে নেমে আসে শোকের ছায়া। দীর্ঘ কয়েক বছর ধরেই লিউকোমিয়ায় ভুগছিলেন তিনি। চিকিৎসার জন্য উড়ে গিয়েছিলেন আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রে। দীর্ঘদিন চিকিৎসা হওয়ার পর সুস্থ হয়ে ফিরে আসেন মুম্বইতে। বুধবার হঠাৎই অসুস্থতা বোধ করায় পুনরায় মুম্বইয়ের হাসপাতলে ভর্তি করা হয় তাঁকে। কিন্তু, শেষ রক্ষা আর হল না।
কী এই লিউকোমিয়া? যা প্রাণ কেড়ে নিল এই বলিউড মহাতারকার। চলুন জেনে নেওয়া যাক এই মারণ রোগ সম্পর্কে।
লিউকোমিয়া কী?
রক্ত এবং অস্থিমজ্জার ক্যান্সার হল লিউকোমিয়া। সাধারণ অর্থে, লিউকোমিয়া হলো এক ধরনের ব্লাড ক্যান্সার। এটি এমন একটি শারীরিক অবস্থা যাতে আমাদের শরীর স্বাস্থ্যকর রক্তকণিকা তৈরি করতে অক্ষম হয়। যার ফলে শরীরে রক্তের মধ্যে থাকা শ্বেত রক্ত কণিকার মাত্রা অস্বাভাবিক ও অনিয়ন্ত্রিতভাবে বৃদ্ধি পায়।
আমাদের শরীরের তিন ধরনের রক্ত কণিকা থাকে। লোহিত রক্তকণিকা, শ্বেত রক্তকণিকা এবং অনুচক্রিকা। এই সবগুলি অস্থিমজ্জায় তৈরি হয়। যখন অস্থিমজ্জার কোষগুলিতে কিছু ত্রুটি দেখা দেয় এবং অপরিণত কোষ উৎপাদন শুরু করে তখনই শরীরে লিউকোমিয়া দেখা দেয়। এই অস্বাভাবিক কোষগুলি শরীরের রোগ সংক্রমণ এবং অন্যান্য অস্বাভাবিকতার বিরুদ্ধে লড়াই করতে অক্ষম হয়।
আরও পড়ুন : 'কনজাঙ্কটিভাইটিস' হতে পারে করোনা ভাইরাসের নতুন উপসর্গ, দেখুন কী বলছেন বিশেষজ্ঞরা
লিউকোমিয়া কত ধরনের?
লিউকোমিয়া চার ধরনের। অ্যাকিউট মাইলোজেনাস লিউকোমিয়া (Acute myelogenous leukemia), ক্রনিক মাইলোজেনাস লিউকোমিয়া (Chronic myelogenous leukemia ), অ্যাকিউট লিম্ফোসাইটিক লিউকোমিয়া (Acute lymphocytic leukemia ) এবং ক্রনিক লিম্ফোসাইটিক লিউকোমিয়া (Chronic lymphocytic leukemia)। একটি প্রতিবেদন অনুযায়ী, ঋষি কাপুর অ্যাকিউট মাইলোজেনাস লিউকোমিয়া দ্বারা আক্রান্ত হয়েছিলেন। এই রোগটি সাধারণভাবে ৬০ বছরের বেশি বয়স্কদের ক্ষেত্রে দেখা দেয়। তাছাড়া, মহিলাদের তুলনায় পুরুষরা এই রোগে বেশি আক্রান্ত হন, তবে এটি যেকোনোও বয়সেই হতে পারে।
কী কী কারণে এটি হয়?
১) উচ্চমাত্রার বিকিরণ বা তেজস্ক্রিয়তা।
২) দীর্ঘ সময় ধরে বেনজিনের মতো রাসায়নিকের সংস্পর্শে থাকলে।
৩) কেমোথেরাপি নিলে (অন্যান্য ক্যান্সারের জন্য)।
৪) কিছু জন্মগত রোগ, যেমন বংশগত ডাউন সিনড্রোম।
৫) পূর্ব-বিদ্যমান রক্তের রোগ, যথা মাইলোফাইব্রোসিস এবং অ্যাপ্লাস্টিক রক্তাল্পতা।
৬) অতিরিক্ত ধূমপান।
রোগের লক্ষণ
১) এই রোগের ক্ষেত্রে সাধারণ লক্ষণ হলো ফ্লু হওয়া। লিউকোমিয়া হলে শরীরের অ্যান্টিবডি যখন কাজ করা বন্ধ করে দেয় তখন ফ্লু দেখা দেয়।
২) এই রোগে আক্রান্ত রোগীরা মাত্রাতিরিক্ত অবসাদে ভোগেন।
৩) শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে কষ্ট হয়।
৪) মাথা ঘোরায়।
৫) এই রোগের ফলে শরীরের ওজন নিয়মিতভাবে কমতে থাকে।
৬) এই রোগে আক্রান্ত ব্যক্তির শরীর থেকে হঠাৎই অধিক পরিমাণে রক্তক্ষরণ হয়। ফলে রক্তহীনতা দেখা দেয়।
৭) রক্তক্ষরণের পাশাপাশি শরীরের বিভিন্ন জায়গায় রক্ত জমাট বেধে লাল রংয়ের দাগ হয়ে যায়।
৮) শরীরের যেকোনও হাড়ে হঠাৎ করেই ব্যথার সৃষ্টি হয়।
৯) মাড়ি ফুলে যায়।
১০) লিভার ফুলে যায়।
১১) বুকের ব্যথা দেখা দেয়।
রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসা পদ্ধতি
এই রোগের ক্ষেত্রে রোগীর রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে রোগ নির্ণয় করতে হয়। এই ধরনের রোগের চিকিৎসা রোগীর বয়স, স্বাস্থ্য, রোগের তীব্রতা এবং অন্যান্য বিষয়গুলির উপর ভিত্তি করে হয়। পদ্ধতিগুলি হল -
১) রিমিশন ইন্ডাকশন থেরাপি (Remission induction therapy)
এই পদ্ধতির মাধ্যমে রক্ত এবং অস্থিমজ্জার লিউকোমিয়া কোষকে মেরে ফেলা হয়।
২) কনসোলিডেটেড থেরাপি (Consolidated therapy)
উপরোক্ত পদ্ধতি অনুসরণ করে যদি অবশিষ্ট লিউকোমিয়া কোষ থেকে থাকে, তবে তাকে এই পদ্ধতির সাহায্যে মেরে ফেলা হয়।
৩) কেমোথেরাপি (Chemotherapy)
এই পদ্ধতিতে ক্যান্সারজনিত কোষগুলিকে মারতে বিভিন্ন রাসায়নিক ব্যবহার করা হয়।
৪) অস্থিমজ্জা প্রতিস্থাপন (Bone marrow transplant)
এই পদ্ধতিকে স্টেম সেল প্রতিস্থাপনও বলা হয়। এর সাহায্যে অস্বাস্থ্যকর অস্থিমজ্জার পরিবর্তে স্বাস্থ্যকর অস্থিমজ্জা প্রতিস্থাপন করা হয়।
এক কথায় এই রোগের তেমন কোনও ফলপ্রসূ চিকিৎসা নেই। ব্লাড ট্রান্সফিউশনের মাধ্যমে রোগীকে অল্প কিছুদিন বাঁচানো সম্ভব হয়।