Just In
এবার আপনার মন খারাপের চিকিৎসা করবে গুগুল সার্চ ইঞ্জিন!
যখনই গুগুল সার্চে ডিপ্রেশন শব্দটা টাইপ করবেন, অমনি একটা বক্স দেখতে পারবেন স্কিনের একেবারে উপরের দিকে। এই বক্সের নাম দেওয়া হয়েছে "নলেজ প্যানেল"।
সম্রাট অশোক ক্ষমতায় আসার ৮ বছরের মধ্যে প্রায় সমগ্র ভারতবর্ষকে মৌর্য সাম্রাজ্য়ের অন্তর্ভুক্ত করে ফেলেছিল। বাকি ছিল কেবল মাত্র কলিঙ্গ। এক সময়ে গিয়ে কলিঙ্গও বশ্যতা স্বীকার করেছিল বটে, তবু রাজ্যটিকে নিজের সাম্রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত করতে পারেননি অশোক। কিন্তু গুগুলের ক্ষেত্রে এমনটা ঘটল না। কয়েক দশকে আগে ওয়েব দুনিয়ায় পা রাখা গুগল আজ প্রায় সব ক্ষেত্রে নিজেকে এক নম্বর প্রমাণিত করেছে, তা সে তথ্য আদান প্রদানের ক্ষেত্রে হোক, কী যোগাযোগ ব্য়বস্থায়। জয় করতে বাকি ছিল একটাই শৃঙ্গ। এবার সেখানেও বিজয় পতাকা ওড়াল সুন্দর পিচাই। এতদিন পর্যন্ত মানুষের মনকে বুঝবে, এমন কোনও প্রষুক্তির সন্ধান দিতে পারেনি গুগুল। এবার থেকে সেই কাজটিও করবে বিশ্বের অন্যতম সর্ববৃহত তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থা।
কীভাবে মানুষের মনকে বুঝবে গুগুলের এই অভিনব প্রযুক্তি? আর কিছু দিনের মধ্যেই যে কেউ সহজেই আন্দাজ পেয়ে যাবেন তার মন ডিপ্রেশনের শিকার কিনা। তিনি যখনই গুগুল সার্চে ডিপ্রেশন শব্দটা টাইপ করবেন, অমনি একটা বক্স দেখতে পারবেন স্কিনের একেবারে উপরের দিকে। এই বক্সের নাম দেওয়া হয়েছে "নলেজ প্যানেল"। এই নলেজ প্যানেলে আগে থেকে স্টোর করা রয়েছে ডিপ্রেশন বা মন খারাপ সংক্রান্ত সব ধরনের তথ্য। যেমন ধরুন মনের কোন পরিস্থিতিকে ডিপ্রেশন বলা হবে, লক্ষণ কী কী, কেমন চিকিৎসা করলে দ্রুত ফল মিলবে এমন সব তথ্য।
নলেজ প্যানেলেই একটি অপশন থাকবে। তাতে লেখা থাকবে "আপনি ক্লিনিকালি মন খারাপের শিকার কিনা তা দেখে নিন স্কিনিং করে"। লেখাটা যদিও ইংরেজিতে থাকবে। সেখানে কিছু প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে। যে উত্তরগুলি গুগুলের বিশেষ প্রযুক্তি সেকেন্ডে বিশ্লেষণ করে বলে দেবে আপনি বিপদসীমার মধ্যে আছেন কিনা। আর এই তথ্যটি সম্পর্ণ ব্যক্তিগত পর্যায়ে থাকবে। আপনি আর গুগুল ছাড়া আর কেউ আপনার মনের অবস্থা সম্পর্কিত তথ্যের হদিশ পাবে না। প্রসঙ্গত, ন্যাশনাল অ্যালায়েন্স অন মেন্টাল ইলনেসের সঙ্গে হাত মিলিয়ে তৈরি করা গুগুলের এই নতুন প্রযুক্তির লক্ষই হল কম বয়সিদের ডিপ্রেশন বা মন খারাপের মারণ ফাঁদ থেকে বাচানো। কারণ সমীক্ষা রিপোর্ট বলছে গত কয়েক দশকে আমাদের দেশের পাশাপাশি সারা বিশ্বে ২৫-৫০ বছর বয়সিদের মধ্যে ডিপ্রেশনে আক্রান্তের সংখ্যা চোখে পরার মতো বৃদ্ধি পয়েছে। শুধু তাই নয়, এই সংক্রান্ত আত্মহত্যার সংখ্যাও ক্রমশ বাড়ছে, যাতে ভারতের স্থান একেবারে উপরের দিকে।
এখন প্রশ্ন হল, যদি জানতে পারেন আপনি ডিপ্রেশনের শিকার, তাহলে কী করবেন? এই প্রশ্নেরই সন্ধান দিতে চলেছে এই প্রবন্ধ। একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে এমন কিছু সহজলভ্য খাবার আছে, যা নিমেষে মনকে চাঙ্গা করে তুলতে পারে। যেমন ধরুন...
১. কার্বোহাইড্রেট সমৃদ্ধ খাবার:
ব্রাউন রাইস, সাদা ভাত, হোল গ্রেন এবং বেশ কিছু শাক-সবজিতে প্রচুর মাত্রায় কার্বোহাইড্রেট রয়েছে। এমন খাবার বেশি করে খেলে মস্তিষ্কে সেরোটনিন নামে বিশেষ এক ধরনের হরমোনের ক্ষরণ বেড়ে যায়, যে হরমোনটিকে চিকিৎসা পরিভাষায় "ফিল গুড হরমোন" বলা হয়। এই হরমোনটির ক্ষরণ বাড়া মাত্র মন ভাল হতে শুরু করে দেয়। তাই এবার থেকে মন হাতের বাইরে চলে গেলেই কব্জি ডুবিয়ে ভাত-ডাল খাবেন। দেখবেন নিমেষে মন চাঙ্গা হয়ে উঠবে।
২. প্রোটিন রয়েছে এমন খাবার:
বেশিরভাগ প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবারে ট্রাইপটোফেন নামে বিশেষ এক ধরনের অ্যামাইনো অ্যাসিড থাকে, যা সেরোটিনিন হরমোনের ক্ষরণ বাড়িয়ে দেয়। ফলে মনকে নিয়ে আর কোনও চিন্তাই থাকে না। প্রসঙ্গত, ডিম, মাংস, বিনস, সয়াবিন, পনির, দই এবং দুধে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন থাকে।
৩. ব্রাহ্মি শাক:
স্ট্রেস কমাতে এই শাকটির কোনও বিকল্প হয় না বললেই চলে। আসলে ব্রাহ্মি শাক খাওয়া মাত্র শরীরের অন্দরে এমন কিছু পরিবর্তন হয় যে মানসিক চাপ সেভাবে কোনও খারাপ প্রভাবই ফেলতে পারে না। সেই সঙ্গে সেরোটনিনের উৎপাদন বেড়ে যাওয়ার কারণে নিমেষ মন ভাল হয়ে যায়।
৪. অশ্বগন্ধা:
এতে উপস্থিত নানাবিধ উপকারি উপাদান, যেমন- স্টেরোইডাল ল্যাকটোস, স্য়াপোনিনস এবং অ্যালকালয়েড নিমেষে অ্যাংজাইটি এবং স্ট্রেস কমিয়ে ফেলে। ফলে ডিপ্রেশন একেবারে হাতের মুঠোয় চলে আসে। এখানেই শেষ নয়, ব্রেন পাওয়ার বাড়ানোর মধ্যে দিয়ে স্মৃতিশক্তি এবং বুদ্ধির ধার বাড়াতেও এই প্রকৃতিক উপাদনটি বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।
৫. ভিটামিন ডি:
একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে শরীরে এই ভিটামিনটির পরিমাণ কমে যেতে থাকলে ব্রেন ফাংশনে ব্যাঘাত ঘটে। সেই সঙ্গে সেরোটনিন হরমোনের ক্ষরণও কমে যায়। ফলে ডিপ্রেশনে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বাড়ে। তাই শরীরে যাতে এই ভিটামিনটির ঘাটতি না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখাটা একান্ত প্রয়োজন। প্রসঙ্গত, একাধিক খাবারে এই ভিটামিনটি প্রচুর মাত্রায় থাকে। যেমন- চর্বিযুক্ত মাছ, মাশরুম, কমলা লেবু, ডিম প্রভৃতি।