Just In
নিয়মিত ঠান্ডা জল পান করছেন? দেখে নিন স্বাস্থ্যের কী কী ক্ষতি হতে পারে
স্বাস্থ্য ভাল রাখতে পর্যাপ্ত পরিমাণে জল পান কতটা প্রয়োজনীয়, তা আমরা সকলেই জানি। সুস্থ-সবল থাকতে, প্রতিদিন সঠিক পরিমাণ জল পান করা খুবই দরকারি। শরীরকে হাইড্রেট রাখা, হজম ঠিক রাখা, শরীরের রক্ত সঞ্চালন স্বাভাবিক রাখা থেকে শুরু করে অন্যান্য শারীরিক ক্রিয়ার ক্ষেত্রেও জল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
আমাদের মধ্যে অনেকেই সাধারণ তাপমাত্রার জলের থেকে ঠান্ডা জল পান করতে বেশি পছন্দ করেন। ঠান্ডা জল পানে স্বাস্থ্যের উপর যেমন ভাল প্রভাব পড়ে তেমন বেশ কিছু ক্ষতিকারক প্রভাবও পড়ে। তাহলে জেনে নিন অতিরিক্ত ঠান্ডা জল পান করলে স্বাস্থ্যের উপর কেমন প্রভাব পড়ে।
ঠান্ডা জল পান করার উপকারিতা
১) ওয়ার্কআউটের পর শরীরের তাপমাত্রা ঠিক রাখে
ব্যায়াম বা শরীরচর্চার পরে, শরীরের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায়। তাই ব্যায়ামের পর ঠান্ডা জলের সেবন, শরীরের অতিরিক্ত তাপমাত্রাকে প্রতিরোধ করতে সহায়তা করে। ফলে শরীরের তাপমাত্রার ভারসাম্যতা বজায় থাকে।
২) এনার্জি প্রদান করতে পারে
ঠান্ডা জল শরীরকে আরও এনার্জি প্রদান করতে পারে। তবে, এই বিষয়টি প্রমাণ করার জন্য আরও গবেষণা প্রয়োজন।
৩) অতিরিক্ত ওজনের বাচ্চাদের জন্য ভাল
এটা আমরা সকলেই জানি যে, পর্যাপ্ত পরিমাণে জল পান, হজমের ক্ষেত্রে অত্যন্ত সহায়ক। তবে আপনি কি জানেন, জল ওজন রক্ষণাবেক্ষণেও সহায়তা করতে পারে! দেখা গেছে যে, ঠান্ডা জল অতিরিক্ত ওজনের বাচ্চাদের মধ্যে এনার্জির ব্যয় বাড়িয়ে দিতে পারে।
ঠান্ডা জল পান করার ক্ষতিকারক দিক
১) হার্ট রেট কমে যেতে পারে
ঠান্ডা জল পান করার একটি ক্ষতিকারক দিক হল, হার্ট রেট কমে যাওয়া। গবেষণায় দেখা গেছে যে, ঠান্ডা জলের সেবন কেবলমাত্র হৃদস্পন্দনকেই কমায় না, এটি ভ্যাগাস নার্ভকেও উদ্দীপিত করে। নার্ভটি শরীরের অনিচ্ছাকৃত কার্যকলাপকে নিয়ন্ত্রণ করে। ভ্যাগাস নার্ভের উপর ঠান্ডা জল সরাসরি প্রভাব ফেলে, ফলে হার্ট রেট কমে যায়।
২) শরীরকে শক দিতে পারে
কঠোর পরিশ্রমের পর, কখনই ঠান্ডা জল পান করা উচিত নয়। তবে অনেকেই কঠোর পরিশ্রমের পর ঠান্ডা জল পান করতে পছন্দ করেন, বিশেষ করে গরমকালে শরীরচর্চা করার পর। বিশেষজ্ঞদের মতে, শরীরচর্চার পর ঈষদুষ্ণ জল পান করা উচিত। কারণ শরীরচর্চার সময় শরীরে প্রচুর পরিমাণে তাপ উৎপন্ন হয়। তাই ওই সময় ঠাণ্ডা জলের সেবন, শরীরের তাপমাত্রায় অসামঞ্জস্যতা আনতে পারে। যার ফলে হজমে সরাসরি প্রভাব পড়তে পারে। তাছাড়া শরীরচর্চার পরপরই ঠান্ডা জল পান করলে, দীর্ঘস্থায়ী পেটে ব্যথা হতে পারে, কারণ অত্যন্ত ঠান্ডা জল আমাদের শরীরে শক দেয়।
৩) ফ্যাট ব্রেকডাউনে প্রভাব ফেলে
খাবার খাওয়ার পরই ঠান্ডা জল পান করলে, তা শরীরের ফ্যাট ব্রেকডাউনের ক্ষমতাকে হস্তক্ষেপ করে। ঠান্ডা জল খাবার থেকে আসা ফ্যাটকে শক্ত করে। ফলে শরীর থেকে অবাঞ্ছিত ফ্যাট ব্রেকডাউন কঠিন হয়ে পড়ে। তাছাড়া, খাবার খাওয়ার পর নর্মাল জল পান করতে চাইলেও কমপক্ষে ৩০ মিনিট অপেক্ষা করার পর, তবেই পান করা ভাল।
৪) কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা হতে পারে
হজম প্রক্রিয়াকে স্বাভাবিক রাখার জন্য ঘরোয়া তাপমাত্রার জল পান করা অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। তবে ঠান্ডা জল পান করলে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দেখা দিতে পারে। এর মূল কারণ হল, ঠাণ্ডা জল পান করার ফলে খাদ্য শক্ত হয়ে যায় এবং শরীরের মধ্য দিয়ে যাওয়ার সময় সমস্যা দেখা দেয়। এছাড়া, অন্ত্রও সংকুচিত হয়, যা কোষ্ঠকাঠিন্যের অন্যতম প্রধান কারণ।
৫) হজমে প্রভাব ফেলে
ঠান্ডা জল হজমে গুরুতর প্রভাব ফেলে। ঠান্ডা জল এবং কিছু ঠান্ডা পানীয় রক্তনালীগুলিকে সংকুচিত করে এবং হজমেও প্রভাব ফেলে। ঠান্ডা পানি পান করার ফলে, হজমের সময় পুষ্টি শোষণের প্রাকৃতিক প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত হয়।
Disclaimer : এই আর্টিকেলটি সাধারণ তথ্যের উপর ভিত্তি করে লেখা। এর দায়ভার বোল্ডস্কাই বাংলা এবং এর কর্মচারীরা নেবে না।