Just In
এই বয়সেও নরেন্দ্র মোদিজির রোগমুক্ত জীবনের সিক্রেট কি জানেন আছে?
মোদিজির রোগমুক্ত শরীর এবং চনমনে মনের পিছনে তাঁর ডায়েট এবং এক্সারসাইজ বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।
পরিবেশ দূষণ এবং অনিয়ন্ত্রিত জীবনের মারে যখন আমাদের যুবসমাজের শরীর ভাঙতে বসেছে। তখন আমাদের দেশের সবথেকে ব্যস্ত মানুষটির দৈনিক জীনযাত্রা শুনলে চোখ কপালে উঠে যাবে আপনাদের। কাজের চাপের অজুহাতে যেখানে অস্বাস্থ্যকর খাবার এবং পানীয়ের প্রতি আসক্তি বাড়ছে ২৫-৪০ বছর বয়সীদের মধ্যে, সেখানে দিনে ১৪ ঘন্টা কাজ করেও ক্লান্তি ছুঁতে পারে না মোদিজিকে। কেন জানেন?
মোদিজির রোগমুক্ত শরীর এবং চনমনে মনের পিছনে তাঁর ডায়েট এবং এক্সারসাইজ বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। তাই খেয়াল করে দেখবেন যুবসমাজের উদ্দেশ্য তাঁর দেওয়াটা প্রায় প্রতিটি ভাষণেই খাবার এবং শরীরচর্চার বিষয়ে পরামর্শ দিয়েছেন। আর আজকের যা পরিস্থিতি তাতে দীর্ঘদিন সুস্থ থাকতে প্রত্যেকেরই নরেন্দ্র মোদির মতো জীবনযাপন করা উচিত।
এতদূর পড়ার পর নিশ্চয় জানতে ইচ্ছা করছে কীভাবে এতটা চনমনে থাকেন আমাদের ১৫ তম প্রধানমন্ত্রী? চলুন আর অপেক্ষা না করে খোঁজ লাগানো যাক মোদিজির ডায়েট এবং শরীরচর্চা সম্পর্কিত নানা বিষয়ে।
মোদি মন্ত্র!
"আর্লি টু বেড অ্যান্ড আর্লি টু রাইস, মেকস আ পার্সেন হেলদি, ওয়েলদি অ্যান্ড ওয়াইস!" বেঞ্জামিন ফ্র্যাঙ্কলিনের এই বক্তব্যটি সারা জীবন মেনে এসেছেন। সেই যুবক কালে বাড়ি ছাড়ার পর থেকে আজ পর্যন্ত ৫ টার মধ্যে বিছানা ছাড়ার অভ্যাস রয়েছে মোদির। ঘুম থেকে উঠে হাতু-মুখ ধুয়ে এক পয়েলা চায়ে চুমুক দিতে দিতে ই-মেল অ্যাকাউন্টে চোখ বোলানো। তারপর ১ ঘন্টা নিয়ম করে প্রাণায়ম এবং যোগাসন মাস্ট! বিশ্বের যে প্রান্তেই থাকুন না কেন, দৈনিক রুটিনে, বিশেষত সকালের রুটিনে কোনও পরিবর্তন পছন্দ করেন না মোদিজি। যোগাসনের পর ১ ঘন্টা চলে আধুনিক অক্সারসাইজ। এই করতে করতে প্রায় সাড়ে সাতটা বেজে যায়। ঝটপট স্নান সেরে এবার ব্রেকফাস্টের পালা। সাধারণত সকালের দিকে পোহা, খাকরা-র মতো গুজরাটি ডিশ খেতেই ভালোবাসেন প্রধানমন্ত্রী। সেই সঙ্গে চলে খবর কাগজ পড়া এবং ইন্টারনেটে দেশ-বিদেশের নানা খবর সম্পর্কিত সার্চিং। তারপর সোজা অফিস।
দুপুরের খাবার:
শরীরকে চাঙ্গা রাখতে সাধারণত হলকা খাবারই খেয়ে থাকেন প্রধানমন্ত্রী। সকালে যেমন হলকা ব্রেকফাস্ট করেন, তেমনি লাঞ্চে থাকে কেবল মাত্র ডাল, সবজি এবং স্য়ালাড। সঙ্গে অল্প করে ভাত বা রুটি। সাধারণত ১-১:৩০টার মধ্যে দুপুরের খাবার খেয়ে থাকেন মোদিজি। এত কম খেয়ে পেট ভরে? একবার কথা প্রসঙ্গে এই প্রশ্নটি করার সুযোগ হয়েছিল। তাতে প্রধানমন্ত্রীর থেকে যা উত্তর পেয়েছিলাম, তা বাস্তবিকই চমকপ্রদ। "গত ৩৫ বছর ধরে ভারতের নানা প্রান্তে ঘোরার সময় প্রায় ভিক্ষা করে খেয়েছি। যার বাড়িতে যা পেয়েছি, তাই খেয়েছি। তাই খাবার বিষয়ে আমার তেমন উৎসাহ নেই।" এখানেই শেষ নয়! আরও জানালেন, "এত বছর ধরে নানা ধরনের খাবার খাওয়ার কারণে পেটের অবস্থা খুব খারাপ হয়ে গেছে। তাই হলকা খাবার খেতে হয়। আর তাছাড়া শরীরকে সচল রাখতে যতটা সম্ভব ঝাল-মশলা কম খাওয়া যায়, ততই ভাল।" এবার বুঝেছেন তো বয়স কেন বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর উপর একটুও ছাপ ফেলতে পারেনি।
আর রাতে?
ব্যস্ততার কারণে অফিস থেকে বেরতে প্রধানমন্ত্রীর প্রায় দিনই রাত ১০টা বেজে যায়। আর যদি নিজ বাসভবনের অফিসে বসে কাজ করেন, তাহলে তো আরও দেরি হয় দিনের কাজ গোছাতে। তবে যতই কাজের চাপ থাকুন না কেন সাড়ে দশটার মধ্যে রাতের খাবার খেয়ে নেন তিনি। ডিনারে মূলত খিচুড়ি, সঙ্গে হলকাভাবে তৈরি কোনও গুজরাটি পদ খেতেই বেশি পছন্দ করেন "নমো"।
বড় সমালোচক!
শরীররে ব্য়পারে কোনও চান্স নিতে একেবারেই পছন্দ করেন না মোদিজি। সেই কারণেই তো একটা বিষয়ে নিজের সমালোচনা করতেও ছাড়েন না। রাতের খাবার খাওয়ার পর প্রায় দেড়টা পর্যন্ত চলে কাজকর্ম। ফলে শুতে শুতে অনেক দেরি হয়ে যায় ওনার। এদিকে সকাল পাঁচটায় ওঠার কারণে দৈনিক ৩-৪ ঘন্টার বেশি সময় ঘুমানোর সুযোগই হয় না তাঁর। কিন্তু চিকিৎসকেরা যে বলেন দিনে কম করে ৬-৭ ঘন্টার ঘুম চাইই চাই?"একেবারে ঠিক বলেছেন। আমার ডাক্তার বন্ধুরাও একই কথা বলে থাকেন। কিন্তু কোনও মতেই আমার ৪ ঘন্টা বেশি ঘুম হয় না। চেষ্টা করলেও নয়!" আর এই বিষয়টা যে একেবারেই ভাল না, তা বেশ বোঝেন কিন্তু প্রধানমন্ত্রী! তাই তো নিজেরও সমালোচনা করতে ছাড়েন না।
ক্লান্ত লাগে না?
"মাঝে মাঝে লাগে বৈকি!" তখন? "ক্লান্ত লাগলেই টানা ৫-১০ মিনিট জোরে জোরে শ্বাসনি। এমনটা করলেই ক্লান্তি একেবারে ছু মন্তর হয়ে যায়।" কী বলবেন এমন মানুষকে! সত্যিই যেমন চমকপ্রদ চরিত্র, তেমনি আকর্ষণীয় জীবনযাত্রা, তাই না!