Just In
- 7 min ago হিন্দু নববর্ষের ৩ দিন আগেই গ্রহ পরিবর্তন, শনির প্রভাবে অর্থ-বৃষ্টির সম্ভাবনা এই রাশিগুলিতে
- 17 hrs ago এপ্রিল মাসে ৪ গ্রহের স্থান পরিবর্তন, রাজযোগ ও সৌভাগ্যে ফুলে ফেঁপে উঠবে এই রাশির জাতকরা, দেখুন
- 18 hrs ago আপনার কি ক্রমাগত কান চুলকাচ্ছেন? অজান্তেই ডেকে আনচ্ছেন বড় বিপদ
- 22 hrs ago মসুর ডাল খেতে ভালোবাসেন? কিন্তু অতিরিক্ত খেলে হতে পারে পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া!
কারা ১০০ বছর বাঁচেন জানেন?
চিকিৎসা বিজ্ঞানের উন্নতি কারণে মানুষের গড় আয়ু বেড়েছে ঠিকই। তবু সেঞ্চুরির গণ্ডি পরেনো এখনও সহজ হয়নি। একমাত্র মুষ্টিমেয় মানুষরাই এই মাইল ফলক ছুঁতে পারেন। আর এমনটা কেন হয় জানেন?
এক্ষেত্রে অনেকেই মনে করেন স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার পাশাপাশি যদি জীবনযাপনে নিয়ন্ত্রণ আনলে দীর্ঘজীবন একেবারে হাতের মুঠোয় এসে যায়। এই ধারণা যে একেবারে ভুল এমন নয়, তবে এর পাশাপাশি আরও বেশ কিছু ফ্যাক্টর আছে যা এক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। যেমন...
১. কম বয়সী মায়ের শরীর থেকে জন্ম নিলে:
শুনতে একটু অন্য রকমের লাগছে, তাই তো? কিন্তু বিজ্ঞান প্রমাণ করেছে এই ধরণা একেবারেই ভুল নয়। আসলে ২৫ বছর বা তার কম বয়সী মায়ের শরীরে যেতে যাদের জন্ম হয়,তাদের আয়ু সাধারণত ১০০ বছর হয়েই থাকে। সেই কারণে দেখবেন আগেকার দিনে মানুষেরা সুস্থ শরীরে অনেক দিন পর্যন্ত বাঁচতেন। কারণ সে সময় বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই মেয়েদের কম বয়ে বিয়ে এবং বাচ্চা প্রসব হয়ে যেত। এখন পরিস্থিতি একেবারে বদলে গেছে। স্বামী-স্ত্রী দুজনের কর্মরত হওয়ার কারণে পরিবার পরিকল্পনায় অনেক ক্ষেত্রেই দেরি করে ফলছেন। ফলে প্রসবের সময় মায়ের জীবনহানীর আশঙ্কা যেমন বাড়ছে, তেমনি বাচ্চাও একাধিক শারীরিক সমস্যা নিয়ে জন্ম নিচ্ছে।
২. চা পান জরুরি:
গ্রিন টি এবং কালো চায়ে প্রচুর পরিমাণে রয়েছে ক্যাটাচিন নামে একটি উপাদান। এটি হার্টের স্বাস্থ্যের উন্নতিতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। সেই সঙ্গে সারা শরীরে রক্ত প্রবাহ যাতে ঠিক মতো হতে পারে সেদিকেও খেয়াল রাখে। ফলে সার্বিকভাবে শরীরের উন্নতি ঘটে। প্রসঙ্গত, বেশ কিছু বছর আগে হওয়া একটি গবেষণায় দেখা গিয়েছিল দিনে এক কাপ লাল চা অথবা গ্রিন টি খেলে আয়ু চোখে পরার মতো বৃদ্ধি পায়। এবার বুঝেছেন তো ব্রিটিশ, জাপানি এবং ভারতীয়দের গড় আয়ু বাকিদের থেকে কেন বেশি হয়!
৩. হাঁটবে যত বাড়বে জীবন:
যারা প্রতিদিন কম করে ৩০ মিনিট হাঁটেন তাদের আয়ু প্রায় চার গুণ বৃদ্ধি পায়, এমনই দাবি করে থাকেন চিকিৎসকেরা। এমন বক্তব্যের পিছনে যুক্তিও আছে। আসলে হাঁটার সময় হার্টে অক্সিজেন সমৃদ্ধ রক্তের সরবরাহ বেড়ে যায়, ফলে স্বাভাবিকভাবেই হৃদপিণ্ডের স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটে। আর হার্ট ঠিক মতো দৌড়াবে তো সুস্থ শরীর এবং আয়ু বৃদ্ধি নিয়ে কোনও চিন্তাই থাকবে না।
৪. ঠান্ডা পানীয় নৈব নৈব চ!
এই ধরনের পানীয়তে এমন কিছু উপাদান থাকে যা শরীরে প্রবেশ করা মাত্র ব্লাড প্রেসার, ডায়াবেটিস এবং ওজন বৃদ্ধির মতো সমস্যায় আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বহুগুণে বৃদ্ধি পায়। ফলে স্বাভাবিকভাবেই আয়ু কমতে শুরু করে। তাই এমন কোনও কাজ করা উচিত নয়, যে কারণে শরীরের মারাত্মক কোনও ক্ষতি হতে পারে।
৫.স্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রা:
১৪-২১, এই বয়সেই শরীরের বেশি করে খেয়াল রাখতে হবে। আর কেউ যদি এমনটা না করেন তাহলেই কিন্তু বিপদ! যেমন ধরুন ১৪ পেরতে না পেরতেই যদি কেউ ওজন মৃদ্ধি করে ফেলে তাহলে আগামী সময়ে গিয়ে টাইপ ১ এবং টাইপ ২ ডায়াবেটিস আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বৃদ্ধি পায়। সেই সঙ্গে নানাবিধ হার্টের রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও বাড়তে থাকে। তাই যৌবনে শরীর যত তরতাজা এবং চনমনে থাকবে, পরবর্তী জীবনে তাত বেশি সুফল পাওয়া যাবে।
৬. রেড মিটে লুকিয়ে...
মৃত্যু ফাঁদ আজ চারিদিকে। তাই প্রতিটি পদক্ষেপ ফেলতে হবে সাবধানে, না হলেই খেল খতম! এমন মারণ ফাঁদের অন্যতম হল রেড মিট। যত বেশি বেশি করে এমন মাংস খাবেন তত শরীরের অন্দরে নানা রোগের ভিড় বাড়তে শুরু করবে। যেমন এক সমীক্ষায় দেখা গেছে যারা প্রতি সপ্তাহে অনিয়ন্ত্রিত হারে রেড মিট খেয়ে থাকেন, তাদের কলোরেকটাল ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বৃদ্ধি পায়। আর আমাদের দেশ এই মারণ রোগে আক্রান্তের বিচারে সারা বিশ্বের মধ্যে তৃতীয় নম্বরে আছে। এবার বুঝতে পারছেন তো রেড মিট শরীরে পক্ষে কতটা ভয়ানক। তাই তো দীর্ঘ জীবন পেতে জিভকে নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে। তাইলেই কেল্লাফতে!
৭. জাম খান বেশি করে:
এই ফলে রয়েছে পনিফেনালস নামে একটি উপাদান, যা হার্টের স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটায়। সেই সঙ্গে স্মৃতিশক্তির রক্ষাকবচ হিসেবে কাজ করে অ্যালঝাইমারসের মতো রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও কমায়। ফলে সুস্থ এবং দীর্ঘ জীবনের পথ প্রশস্ত হয়।
৮. পা যাদের মজবুত, আয়ুও তোদের দীর্ঘ:
একেবারেই ঠিক শুনেছেন! কীভাবে পায়ের সঙ্গে আয়ুর যোগ রয়েছে জানেন? খেয়াল করে দেখবেন বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বেশিরভাগেরই শরীরে নিচের অংশ, বিশেষত পা খুব দুর্বল হয়ে যায়। ফলে শরীরে ভার রাখতে না পেরে পরে গিয়ে এমন চোট পান যে বেঁচে থাকার সম্ভাবনা হ্রাস পায়। সেই কারণে কম বয়স থেকেই পায়ের শক্তি বাড়ানো যায় কীভাবে সেদিকে খেয়াল রাথা একান্ত প্রয়োজন, যাতে বুড়ো বয়সে গিয়ে কোনও এক্সিডেন্টের কারণে প্রাণহানী না ঘটে।
৯. আনন্দে ভরা কলেজ লাইফ:
কেস স্টাডি করে দেখা গেছে যারা কম করে ১২ বছর আনন্দের সঙ্গে স্কুল এবং কলেজ লাইফ কাটিয়েছেন তাদের আয়ু বাকিদের থেকে বেশি হয়। কেন এমনটা হয় জানেন? আসলে স্কুল বা কলেজ আমাদের শুধু শিক্ষিত করে তোলে না, সেই সঙ্গে অনেক বিষয়ে সচেতনও করে। তাই তো জীবন সম্পর্কে ধরণাটা স্পষ্ট হয়ে যায়। সেই সঙ্গে শরীরে পক্ষে কী খারাপ এবং কী ভাল সে বিষয়েও জ্ঞান অর্জন করার সুযোগ মেলে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই সুস্থ জীবনের পরিধি বাড়তে থাকে।
১০. সুন্দর সম্পর্ক= সুন্দর জীবন:
সুন্দর সম্পর্ককে ঘিরে জীবনের পথে এগিয়ে চললে স্ট্রেস নিয়ন্ত্রণে থাকে। ফলে হাজারো মারণ ব্যাধি ধারে কাছেও ঘেঁষতে পারে না। সর্বপরি, বর্তমান সময়ে যে কটা রোগের প্রসার বেড়েছে তার সবকটির সঙ্গে স্ট্রেসের যোগ রয়েছে। আসলে স্ট্রেস লেভেল যত বাড়তে থাকে, তত শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা হ্রাস পায়। ফলে নানাবিধ রোগের প্রকোপ বৃদ্ধি পেতে থাকে। তাই একবার যদি স্ট্রেসকে নিয়ন্ত্রণে নিয়ে চলে আসতে পারেন, তাহলেই কেল্লাফতে! প্রসঙ্গত, মা, বাবা, বন্ধু-বান্ধব এবং স্ত্রীর ভালবাসা এবং সাপোর্ট পেলে মানসিক শান্তি মেলে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই শরীরেরও উন্নতি ঘটে। সেই কারণেই তো বলে একা বেঁচে থাকার মধ্যে কোনও আনন্দ নেই, যা পরিবারের সঙ্গে থাকার মধ্যে আছে।
১১. স্বাস্থ্যবান বন্ধুর সংখ্যা বাড়ান:
দীর্ঘদিন বাঁচতে চান তো স্বাস্থ্যবান বন্ধুদের সঙ্গে বেশি করে সময় কাটান। কারণ গবেষণায় দেখা গেছে প্রিয় বন্ধু যদি শরীর সম্পর্কে সচেতন হন, তাহলে স্বাভাবিকভাবেই অন্যদের জীবনযাত্রাতেও পরিবর্তন আসতে শুরু করে। ফলে রোগ-ব্যাধির প্রকোপ কমতে থাকে, বাড়তে থাকে আয়ু।
১২. উৎসাহে যেন খামতি না হয়:
চিকিৎসকদের মতে যারা প্রতিদিন নিজেদের নানা রকম চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলেন এবং সেই প্রতিবন্ধকতা উৎসাহের সঙ্গে পেরনোর চেষ্টায় লেগে যান, তাদের আয়ু বাকিদের তুলনায় বেশি হয়। কারণ একঘেয়েমি আমাদের মস্তিষ্ককে ধীরে ধীরে বিকল করতে শুরু করে। ফলে এক সময় গিয়ে ব্রেন পাওয়ার এতটাই কমে যায় যা নানাবিধ ব্রেন ডিজিজ মাথা চাড়া দিয়ে ওঠে, বিশেষত অ্যালঝাইমারস এবং ডিমেনশিয়ার মতো রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বাড়ে। আর এমন রোগে আক্রান্ত হলে জীবনের পরিধি যে আর চোখে পরার মতো কমে যায়, তা নিশ্চয় আর বলার অপেক্ষা রাখে না।
১৩. বাড়ির কাজ করেন তো?
শুনতে অবাস্তব লাগলেও বিজ্ঞান প্রমাণ করে ছেড়েছে যে যারা প্রতিদিন কাপড় কাচা, ঘর মোছা এবং রান্না করার মতো কাজগুলি করে থাকেন তাদের আয়ু লাফিয়ে লাপিয়ে বৃদ্ধি পায়। কারণ এই কাজগুলি করার সময় শরীর এবং মস্তিষ্কের সচলতা মারাত্মকভাবে বেড়ে যায়। সেই সঙ্গে প্রায় ৩০০ ক্যালরি বার্ন হয়। ফলে কম বয়সে মৃত্যুর আশঙ্কা প্রায় ৩০ শতাংশ কমে যায়।