Just In
আপনার অফিসেও থাকতে পারে জীবাণু! দেখে নিন কোন কোন স্থানগুলি জীবাণুর প্রজনন স্থল
রোগ বৃদ্ধির প্রথম কারণ হলো জীবাণু, আর এই জীবাণুর বৃদ্ধি ও বিকাশে সহায়তা করে ময়লা। সে আপনার বাড়ি হোক কিংবা অফিস, যেকোনও জায়গার অবাঞ্ছিত ময়লা থেকেই জন্ম নেয় কিছু ভয়াবহ রোগের জীবাণু। সুতরাং নিজেকে পরিষ্কার রাখার পাশাপাশি যে জায়গায় আমরা বসবাস করি বা কিছু সময়ের জন্য থাকি সেই জায়গা গুলিকেও পরিষ্কার রাখা অত্যন্ত প্রয়োজন। তবেই হয়তো আমরা কঠিন মারণ রোগের হাত থেকে রেহাই পেতে পারি।
আপনি আপনার বাড়ির পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার প্রতি খুব ভালো মনোযোগ দেন নিশ্চয়ই? তাহলে কখনোও কি ভেবে দেখেছেন যে দিনের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ৮ থেকে ১০ ঘণ্টা যে অফিসে ব্যয় করছেন তা কতটা নিরাপদ? অফিসে এমন অনেক জিনিস রয়েছে যা আপনার স্বাস্থ্যের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। আক্রান্ত হতে পারেন বিভিন্ন মারণ রোগেও। তাই নিজের ঘরের পাশাপাশি নিজের অফিসকেও করে তুলুন পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন।
আরও পড়ুন : ফ্লাইটে ভ্রমণের সময় সংক্রমণের হাত থেকে নিজেকে বাঁচান এই উপায়গুলির মাধ্যমে
অফিসটি পরিষ্কার রাখার আগে জেনে নিন সেখানকার কোন কোন স্থানগুলিতে জীবাণু সবচেয়ে বেশি থাকে -
১) নিজের ডেস্ক
অফিসে নিজের ডেস্কে কাজ করার সময় হাঁচি বা কাশি হলে সেই জীবাণু ডেস্ক এবং কম্পিউটারের কিবোর্ডে লেগে থাকে। মাঝে মাঝেই আমরা ডেস্কে বসে ব্রেকফাস্টও করে থাকি। খাওয়ার সময় কোনও গুরুত্বপূর্ণ কাজ এলে আমরা সেই অবস্থাতেই আবার কাজ শুরু করি। এভাবে জমে থাকা জীবাণু থেকেই রোগের উৎপত্তি হয়। তাই, আপনি আপনার কিবোর্ড বা মাউস অন্যকে ব্যবহার করতে দেবেন না তাহলে সেই রোগ জীবাণু অন্যের শরীরেও প্রবেশ করবে।
সুতরাং, নিজের ডেস্ক সব সময় পরিষ্কার রাখুন এবং ডেস্কে বসে খাবেন না। হাঁচি বা কাশি দেওয়ার সময় মুখে রুমাল চাপা দেবেন। পরক্ষণেই হাত ধোয়ার পরে আবার কাজ শুরু করবেন।
২) রেস্ট রুম বা বাথরুম
অফিসের রেস্টরুম বা বাথরুমেই ব্যাকটেরিয়াগুলি বেশি জন্ম নেয়। এই ব্যাকটেরিয়াগুলি মূলত টয়লেট ফ্লাশ, দরজার তালা, জলের ট্যাপগুলিতে থাকে। তাই বাথরুমের এই জায়গাগুলিকে সবসময় পরিষ্কার রাখুন এবং কাজ করার আগে হ্যান্ডওয়াশ দিয়ে ভালো করে হাত ধুয়ে কাজ করতে বসুন।
৩) টেলিফোন
জীবাণু এবং ব্যাকটেরিয়া জন্ম নেওয়ার সেরা স্থান হল অফিসের টেলিফোন, আর এটি খুব ব্যবহার্য একটি বস্তু। তাই স্যানিটাইজার দিয়ে রোজ এটিকে পরিষ্কার রাখুন।
৪) অফিস ডিভাইস
অফিসে থাকা প্রিন্টার, ফ্যাক্স মেশিন ও অন্যান্য মেশিনে জমে থাকা দীর্ঘদিনের ধুলো থেকে ব্যাকটেরিয়া জন্ম নিতে পারে। তাই রোজ এগুলিকে পরিষ্কার করুন। খাওয়ার আগে এগুলি স্পর্শ করলে অবশ্যই হাত ধুয়ে খাবার গ্রহণ করবেন।
৫) লিফটের বোতাম
অফিস টাইমে কত লোকই লিফ্টে করে ওঠানামা করেন। ফলে বিভিন্ন ব্যক্তির হাতের স্পর্শে জীবাণু জমতে থাকে লিফ্টের বোতামগুলিতে। ওই বোতাম যখন আপনিও ব্যবহার করবেন তখন সেই জীবাণু আপনার শরীরেও প্রবেশ করতে পারে। সুতরাং, লিফট ব্যবহার করার পর হাত ধুয়ে নিন বা হাত না ধুলে স্যানিটাইজার ব্যবহার করুন।
করোনা ভাইরাস : দেখে নিন ভাইরাস থেকে বাঁচার কিছু সেফটি টিপস্
৬) কিচেন স্পঞ্জ
কিচেন স্পঞ্জগুলিতে ৪০০ গুণ বেশি জীবাণু লক্ষ্য করা যায়। স্পঞ্জ গুলিই কোলি এবং সালমনেলা ব্যাকটেরিয়ার জন্ম দেয়। সাধারণত অফিসে একটি মাত্র কিচেন স্পঞ্জেই নিজেদের টিফিন বক্স ধুয়ে থাকি। ফলে, জীবাণুগুলি টিফিন বক্সে প্রবেশ করতে থাকে। তাই প্রতি দুই সপ্তাহ অন্তর কিচেন স্পঞ্জগুলি বদলে ফেলুন। চেষ্টা করুন আলাদা আলাদা কিচেন স্পঞ্জ ব্যবহার করতে।
৭) গুদামঘর
অফিস লাগোয়া যদি কোন গুদামঘর থাকে তবে তা থেকেও জীবাণু এবং ব্যাকটেরিয়া অফিসের মধ্যে প্রবেশ করতে পারে। তাই চেষ্টা করুন গুদামঘরটিকে অফিসের অন্তত ১০০ মিটার দূরে রাখার। গুদাম ঘর থেকে বেরোনোর পর হাত, পা, মুখ ভালো করে ধুয়ে অফিসে প্রবেশ করবেন এবং প্রতিনিয়ত গুদামঘরটিকে পরিষ্কার রাখার চেষ্টা করুন।
৮) কফি মেশিন ও কফি মগ
অফিসের সর্বাধিক ব্যবহৃত জিনিসগুলির মধ্যে একটি হল কফি মেশিন। কিন্তু, অফিসের বাকি জিনিস পরিষ্কার করলেও এই জিনিসের প্রতি নজর খুবই কম পড়ে। আর ব্যাকটেরিয়াগুলি এই মেশিনে দ্রুত বিকাশ লাভ করে। তাই সপ্তাহে অন্তত দু'বার পরিষ্কার করুন কফি মেশিন। পরিষ্কার করতে ব্যবহার করুন সাদা ভিনেগার।
কফি মেশিনের পাশাপাশি কফি মগও একটি গুরুত্বপূর্ণ ব্যবহার্য্য বস্তু। অল্প একটু জল দিয়ে ধুয়ে আমরা ভাবি পরিষ্কার হয়ে গেছে। কিন্তু তা হয় না, ৯০ শতাংশ জীবাণু থেকেই যায়। তাই কাপটিকে সাবান জল দিয়ে ভালো করে ধোবেন। নিজের কাপ নিজে ব্যবহার করুন, অন্যকে দেবেন না এবং অন্যের কাপও ব্যবহার করবেন না।