Just In
সকালে খালি পেটে জিরে জল খেলেই কমবে ওজন, ত্বক হবে উজ্জ্বল, জানুন এর অন্যান্য উপকারিতা
রান্নায় ব্যবহৃত অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ মশলা হল জিরা। বেশিরভাগ ভারতীয় রান্নাতেই এই মশলার ব্যবহার হয়ে থাকে। তবে জিরা কেবলমাত্র খাবারের স্বাদ-গন্ধ বাড়ায় না, পাশাপাশি এটি আমাদের স্বাস্থ্যেরও অনেক উপকার করে, যেমন - ওজন কমানো, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করা, হজমের সমস্যা দূর করা, ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ এবং রক্তাল্পতা নিরাময়, প্রভৃতি।
জিরা তামা, আয়রন, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ভিটামিন-এ, ভিটামিন-সি, জিঙ্ক এবং পটাশিয়াম সমৃদ্ধ। বিভিন্ন ঘরোয়া প্রতিকারের ক্ষেত্রে জিরা ব্যবহার করা হয়ে থাকে। বিশেষ করে জিরার জল, আমাদের স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে বেশি উপকারি। প্রতিদিন মাত্র এক গ্লাস জিরার জল পান করা, আমাদের সামগ্রিক স্বাস্থ্যের জন্য ভীষণ উপকারি হতে পারে। তাহলে জেনে নিন, জিরার জলের কিছু স্বাস্থ্য উপকারিতা সম্পর্কে।
১) বদহজম নিরাময় করে
অন্ত্রে গ্যাস জমে গিয়ে পেট ফুলে যাওয়ার ঘটনা খুবই সাধারণ ব্যাপার। এর ফলে, পেট ফুলে শক্ত হয়ে যায় এবং পেট ভার হয়ে থাকার অনুভূতি হয়। এছাড়াও, পেটে অস্বস্তি কিংবা পেট ব্যথাও হতে পারে। এক্ষেত্রে জিরা জলের সেবন অত্যন্ত উপকারি হতে পারে। জিরা বদহজমের সমস্যা থেকে বাঁচাতে পারে।
২) ওজন কমাতে সহায়ক
ভাল হজমে সহায়তা করে এবং দেহ থেকে টক্সিন বার করতে পারে জিরা। পাচনতন্ত্র ঠিক থাকলে, শরীর থেকে টক্সিন সহজেই পরিষ্কার হয়, ফলে ওজন হ্রাস এবং ফ্যাট কমে। তাই নিয়মিত জিরা জলের সেবন, ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারে।
৩) রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে
জিরা পটাশিয়াম, আয়রন এবং ফাইবারের একটি চমৎকার উৎস। নিয়মিত জিরার জলের সেবন, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে শক্তিশালী করে তুলতে সহায়তা করে। এটি বিভিন্ন রোগের বিরুদ্ধে লড়াই করার পাশাপাশি, ঘনঘন অসুস্থ হওয়ার সম্ভাবনাকেও কম করতে সহায়তা করে।
৪) ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখে
খালি পেটে জিরা জলের সেবন, ডায়াবেটিস আক্রান্ত রোগীদের ক্ষেত্রে অত্যন্ত উপকারি। জিরা শরীরের ইনসুলিন উৎপাদনকে উদ্দীপিত করে। এটি রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়তা করে। ফলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকে।
৫) রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে
জিরা জলে উচ্চ পটাশিয়াম থাকে। পটাশিয়াম একটি গুরুত্বপূর্ণ খনিজ, যা শরীরের সঠিক ক্রিয়াকলাপে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তাছাড়া, এটি লবণের নেতিবাচক প্রভাবগুলির মধ্যে ভারসাম্য বজায় রেখে, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়তা করে।
৬) লিভারের জন্য উপকারি
জিরাতে লিভারের ডিটক্সিফিকেশন বৈশিষ্ট্য বর্তমান। তাই জিরার জলের সেবন, লিভারের ক্ষেত্রে অত্যন্ত উপকারি। এটি ডাইজেস্টিভ এনজাইম উৎপাদন বাড়ায়। নিয়মিত জিরার জলের সেবন, শরীর থেকে টক্সিন বের করে দেওয়ার পাশাপাশি, পিত্ত উৎপাদনেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
৭) রক্তাল্পতা নিরাময়ে সাহায্য করে
আয়রন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ খনিজগুলির মধ্যে একটি এবং এটি শরীরের সঠিক ক্রিয়াকলাপে মূল ভূমিকা পালন করে। এছাড়া, রক্তে হিমোগ্লোবিন গঠনের জন্য আয়রনের প্রয়োজন, যা আমাদের শরীরে অক্সিজেন পরিবহনের জন্য আরও বেশি প্রয়োজনীয়। আর এই আয়রনের একটি ভাল উৎস হল জিরা। এটি রক্তাল্পতা নিরাময়ে সাহায্য করে। আয়রনের ঘাটতির বিরুদ্ধে লড়াই করতে, আপনি নিয়মিত জিরার জল পান করতে পারেন।
৮) ক্যান্সারের ঝুঁকি হ্রাস করে
জিরার জলে অ্যান্টি-কার্সিনোজেনিক বৈশিষ্ট্য বর্তমান। এটি বিভিন্ন ধরনের ক্যান্সারের ঝুঁকি হ্রাস করতে অত্যন্ত কার্যকরী। তাছাড়া এটি metastasis প্রতিরোধ করতে পারে, যা শরীরের অন্যান্য অংশে ক্যান্সার ছড়ায়।
৯) হার্টের ক্ষেত্রে উপকারি
জিরার জল রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখার পাশাপাশি, ট্রাইগ্লিসারাইড এবং কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতেও অত্যন্ত সহায়ক। নিয়মিত জিরার জলের সেবন, হার্টকে বিভিন্ন ধরনের ব্যাধির হাত থেকেও রক্ষা করে।
১০) ত্বক ও চুলের ক্ষেত্রে অত্যন্ত উপকারি
জিরার জলে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল বৈশিষ্ট্য বর্তমান। এটি শরীরকে ডিটক্স করতে সহায়তা করে। এর ফলে আমাদের ত্বক স্বাস্থ্যকর এবং উজ্জ্বল থাকে। এছাড়াও, জিরা জল ব্রণের সমস্যা দূর করে এবং ইনফেকশন থেকে ত্বককে রক্ষা করে।
জিরার জল চুলের ক্ষেত্রেও অত্যন্ত উপকারি। এটি চুলের গোড়া শক্তিশালী করে তোলার পাশাপাশি, চুল পড়া প্রতিরোধ করা, খুশকি দূর করা এবং অকালে চুল পেকে যাওয়ার সমস্যা দূর করতেও অত্যন্ত সহায়ক।