Just In
ডাবের জলে রোগ মুক্তি!
ডাবের জল শরীরের অন্দরে প্রবেশ করা মাত্র জলের ঘাটতি মিটতে শুরু করে।
গরম বাড়লেই হল। অমনি গাছ থেকে টপাটপ পরতে থাকে। আর ঘ্যাচাং ঘ্যাচাং কাটতে থাকে গলা। তারপর শরীর থেকে বেরিয়ে আসে সেই অমৃত, যা শরীর প্রবেশ করা মাত্র ছোট থেকে বড়, সব রোগ নিমেষে ছু মন্তর হয়ে যায়।
কী নিয়ে কথা বলছেন বলুন তো! কিছুই তো মগজে ঢুকছে না। আরে মশাই ডাবের কথা বলছিলাম। আর অমৃত হল ডাবের জল। কেন অমৃত বলছি তাই ভাবছেন তো? আসলে একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে শুধু গরমকাল নয়, সারা বছর যদি নিয়ম করে ডাবের জল খাওয়া যায়, তাহলে একাধিক রোগ শরীরের ধারে কাছেও ঘেঁষতে পারে না। শুধু তাই নয়, ডাবের জলে উপস্থিত অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, অ্যামাইনো অ্যাসিড, ভিটামিন বি কমপ্লেক্স, ভিটামিন সি, আয়রন, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, মেঙ্গানিজ এবং জিঙ্ক নানাভাবে শরীরে গঠনে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। আর যেমনটা আপনাদের সকলেরই জানা আছে যে এইসব কটি উপাদানই আমাদের বেঁচে থাকার জন্য প্রয়োজন পরে। তাই ডাবের জল খাওয়া শুরু করতে পারেন। এমনটা করলে কয়েক দিনের মধ্যেই দেখবেন...
১. শরীরে জলের ঘাটতি দূর হবে:
ডাবের জল শরীরের অন্দরে প্রবেশ করা মাত্র জলের ঘাটতি মিটতে শুরু করে। সেই সঙ্গে এতে উপস্থিত ইলেকট্রোলাইট কম্পোজিশান ডায়ারিয়া, বমি এবং অতিরিক্ত ঘামের পর শরীরে ভিতরে খনিজের ঘাটতি মেটাতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। সেই কারণেই তো গরমকালে ডাবকে রোজের সঙ্গী করার পরামর্শ দিয়ে থাকেন চিকিৎসকেরা।
২. ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণে রাখে:
ডাবের জলে উপস্থিত ভিটামিন সি, পটাশিয়াম এবং ম্যাগনেসিয়াম রক্তচাপকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে থাকে। সম্প্রতি ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান মেডিকেল জানার্লে প্রকাশিত একটি গবেষণা অনুসারে পটাশিয়াম শরীরে নুনের ভারসাম্য ঠিক রাখার মধ্যে দিয়ে ব্লাড প্রেসারকে স্বাভাবিক রাখে। তাই যাদের পরিবারে এই মারণ রোগটির ইতিহাস রয়েছে, তাদের নিয়মিত ডাবের জল খাওয়া উচিত। একই নিয়ম যদি রক্তচাপে ভোগা রোগীরাও মেনে চলেন, তাহলেও দারুন উপকার মেলে।
৩. হার্ট টনিক:
শরীরে বাজে কোলেস্টেরল বা এল ডি এল-এর পরিমাণ কমিয়ে হার্টের স্বাস্থ্যের উন্নতিতে ডাবের জলের কোনও বিকল্প হয় না বললেই চলে। শুধু তাই নয়, দেহে ভাল কোলেস্টেরলের পরিমাণ বাড়িয়ে হঠাৎ হার্ট অ্যাটাকের আশঙ্কা কমাতেও ডাবের জল বিশেষ ভূমিকা নিয়ে থাকে।
৪. ওজন হ্রাসে সাহায্য করে:
ডাবের জলে উপস্থিত বেশ কিছু উপকারি এনজাইম হজম ক্ষমতা বাড়ানোর পাশাপাশি মেটাবলিজমের উন্নতিতেও সাহায্য় করে থাকে। ফলে খাবার খাওয়া মাত্র তা এত ভাল ভাবে হজম হয়ে যায় যে শরীরের অন্দরে হজম না হওয়া খাবার মেদ হিসেবে জমার সুযোগই পায় না। ফলে ওজন কমতে শুরু করে। প্রসঙ্গত, ডাবের জল শরীরে নুনের মাত্রা ঠিক রাখে। ফলে ওয়াটার রিটেনশন বেড়ে গিয়ে ওজন বৃদ্ধির আশঙ্কাও হ্রাস পায়।
৫. মাথা যন্ত্রণা কমায়:
ডিহাইড্রেশনের কারণে মাথা যন্ত্রণা বা মাইগ্রেনর অ্যাটাক হওয়ার মতো ঘটনা ঘটলে শীঘ্র এক গ্লাস ডাবের জল খেয়ে নেবেন। এমনটা করলে দেখবেন নিমেষে কষ্ট কমে যাবে। আসলে এই প্রকৃতিক উপাদানটিতে উপস্থিত ম্যাগনেসিয়াম, এই ধরনের শারীরিক সমস্যার চিকিৎসায় বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।
৬. ব্লাড সুগারকে নিয়ন্ত্রণে রাখে:
২০১২ সালে হওয়া জার্নাল ফুড অ্যান্ড ফাংশন স্টাডিসে দেখা গিয়েছিল ডাবের জলে থাকা অ্যামাইনো অ্যাসিড এবং ডায়াটারি ফাইবার ইনসুলিনের কর্মক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়। ফলে স্বাভাবিকভাবেই ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণে চলে আসে।
৭.বয়স কমায়:
খাতায় কলমে বয়স বাড়লেও শরীরের বয়স কি ধরে রাখতে চান? তাহলে আজ থেকেই ডাবের জল খাওয়া শুরু করুন। দেখবেন উপকার পাবেন। আসলে ডাবের জলে রয়েছে সাইটোকিনিস নামে নামে একটি অ্যান্টি-এজিং উপাদান, যা শরীরের উপর বয়সের ছাপ পরতে দেয় না। সেই সঙ্গে ত্বকের সৌন্দর্য বাড়াতেও বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।