Just In
দুধের রাজা দিল বর!
খাদ্য গবেষকরা জোট বেঁধে একটি পরীক্ষা চালিয়েছিলেন। তাতে দেখা গেছে নিয়মিত মাত্র এক গ্লাস করে দুধ খেলে চিকিৎসকের কাছে যাওয়ার প্রয়োজনই পরে না।
ভূতের রাজার কথা তো শুনেছিলাম, এই দুধের রাজাটে কে মশাই? এ হল আমাদের অনেকের প্রিয় দুধ, যা ভূতের রাজার মতোই আমাদের নানাভাবে নানা বর দিয়ে থাকে। কিন্তু সমস্যাটা হল অনেকেই দুধের এই বর দেওয়ার বিষয়টা জানেন না, তাই তো দেখলেই নাক শিঁটকোন। এদের কথা ভেবেই আজ এই প্রবন্ধটি লেখার সিদ্ধান্ত নেওয়া।
খাদ্য গবেষকরা জোট বেঁধে একটি পরীক্ষা চালিয়েছিলেন। তাতে দেখা গেছে নিয়মিত মাত্র এক গ্লাস করে দুধ খেলে চিকিৎসকের কাছে যাওয়ার প্রয়োজনই পরে না। কারণ দুধের মাধ্যমে শরীরে প্রবেশ করে এমন কিছু উপকারি উপাদান, যা একদিকে যেমন হাড়ের রোগ থেকে ক্যান্সার, সব ধরনের রোগকে দূরে রাখে, তেমনি হার্ট থেকে কিডনি, শরীরের প্রতিটি অঙ্গের কর্মক্ষমতা বাড়াতেও বিশেষ ভূমিকা পালন করে। তাই এবার আপনিই সিদ্ধান্ত নিন, দুধ খাবেন কী খাবেন না! তবে চুরান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে একবার বাকি প্রবন্ধে চোখ রাখতে ভুলবেন না যেন! কারণ দুধে উপস্থিত ভিটামিন এ, বি১২, ক্যালসিয়াম সহ আরও সব পুষ্টিকর উপাদান কিভাবে শরীরের উপকারে লেগে থাকে, সে বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হল...
১. হাড়কে মজবুত করে:
আমাদের শরীরের অন্দরে থাকা ২০৬ টা হাড়ের শক্তি বাড়াতে ক্যালসিয়াম কোনও বিকল্প হয় না বললেই চলে। আর এই উপাদনটি প্রচুর মাত্রায় রয়েছে দুধে। তাই তো রোজের ডায়েটে এই পানীয়টির অন্তর্ভুক্তি ঘটালে বুড়ো বয়সে গিয়ে যে আর্থ্রাইটিসের মতো কোনও রোগের সম্মুখিন হওয়ার আশঙ্কা কমে, সেকথা হলফ করে বলতে পারি। প্রসঙ্গত, ক্যালসিয়াম হাড়ের শক্তি বাড়ানোর পাশাপাশি ক্যান্সার রোগকে দূরে রাখতে এবং সার্বিকভাবে শরীরকে সুস্থ রাখতেও বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।
২. হার্টের কর্মক্ষমতা বাড়ায়:
বেশ কয়েকটি গবেষণায় দেখা গেছে শরীরে ক্যালসিয়ামের ঘাটতি দূর হলে নানাবিধ হাড়ের রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা যেমন হ্রাস পায়, তেমনি কার্ডিওভাসকুলার ডিজিজ ধারে কাছে ঘেঁষার সম্ভাবনাও কমে। তাই দীর্ঘদিন যদি হৃদযন্ত্রকে সুস্থ রাখতে চান, তাহলে দুধ খেতে ভুলবেন না যেন! প্রসঙ্গত, দুধ খাওয়ার অভ্যাস করলে রক্তচাপও স্বাভাবিক থাকে। এবার বুঝেছেন তো কেন চিকিৎসকেরা এই প্রাকৃতিক উপদানটির পক্ষে এতটা সাওয়াল করে থাকেন।
৩. দাঁতকে শক্তপোক্ত করে:
বেশ কয়েকটি কেস স্টাডি অনুসারে নিয়মিত দুধ খেলে দাঁতের উপরে থাকা এনামেল নামক স্থরটির শক্তি বৃদ্ধি পায়। ফলে দাঁতের ক্ষয় রোধ হয়। সেই কারণেই তো বাচ্চাদের নিয়মিত এক গ্লাস করে দুধ খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন চিকিৎসকেরা।
৪. ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধি পায়:
একেবারে ঠিক শুনেছেন বন্ধুরা। ত্বকের খেয়াল রাখতে দুধের কোনও বিকল্প হয় না। আর একথা স্বয়ং রূপের রাণী ক্লিয়োপেট্রাও প্রমাণ করে গেছেন। মিশরের রাণী তার ত্বকের ঔজ্জ্বল্য বাড়াতে প্রতিদিন দুধে স্নান করতেন। এমনটা আপনার পক্ষে করা সম্ভব হবে না ঠিকই। কিন্তু নিয়মিত দুধ পান করতে তো পারেন। এমনটা করলে শরীরে ভিটামিন এ-এর মাত্রা বাড়তে শুরু করে। এই ভিটামিনটি ত্বকের খেয়াল রাখতে বিশেষ ভূমিকা নেয়।
৫. অ্যাসিডিটির প্রকোপ কমায়:
গবেষণায় দেখা গেছে বদ-হজম বা অ্যাসিডিটির মতো সমস্যা কমাতে ঠান্ডা দুধের কোনও বিকল্প হয় না বললেই চলে। তাই তো এবার থেকে এই ধরনের কোনও সমস্যা দেখা দিলে চটজলদি এক গ্লাস দুধ পান করতে ভুলবেন না যেন!
৬. ক্যান্সার রোগের চিকিৎসায় কাজে লাগে:
সম্প্রতি প্রকাশিত একটি গবেষণা অনুসারে কোলন ক্যান্সারে আক্রান্ত রোগীদের যদি প্রতিদিন দুধ খাওয়ানো যায়, তাহলে তাদের আয়ু বৃদ্ধি পায়। কিন্তু কিভাবে এমনটা হয়, সে বিষয়ে যদিও গবেষণা চলছে। আশা করা যেতে পারে আগামী দিনে এই প্রশ্নের উত্তরও পাওয়া যাবে।