Just In
টানা ৫ ঘন্টা বসে থাকলে কি হতে পারে জানেন?
টানা এক ঘন্টা বসে থাকার পর যদি কয়েক মিনিট দাঁড়িয়ে থাকা যায়, তাহলে শারীরিক ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা অনেকাংশেই হ্রাস পায়।
প্রতি বছর এদেশে কম করে প্রায় ৪-৫ লাখ ছাত্র-ছাত্রী ইঞ্জিনিয়ারিং পড়া শেষ করে। প্রায় একই সংখ্যক ডাক্তার এবং ম্যানেজমেন্ট এক্সপার্টেরও জন্ম হয় বছরপিছু। এরা যখন চাকরি পায় তখন সারা দিন প্রায় বসে বসেই কেটে যায়। নানা ভাববেন এরা কাজ করে না। আমি বলছি এদের কাজটা এমনই যে দিনের বেশিরভাগ সময়ই চেয়ারের সঙ্গে লেগে থাকতে হয়। আর এতক্ষণ বসে থাকার কারণে এদের কী কী শারীরিক ক্ষতি হয় জানেন?
সম্প্রতি ইংরেজ বিজ্ঞানীদের করা এক গবেষণায় দেখা গেছে প্রতি ঘন্টা পিছু বসে থাকার কারণে হার্টের রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা প্রায় ১৪ শতাংশ বৃদ্ধি পায়। তাহলে এবার হিসেবে করুন মাত্র ৫ ঘন্টা বসে থাকলে হার্টের কতটা ক্ষতি হতে পারে। তবে এখানেই শেষ নয়, এই গবেষণাটি অনুসারে দীর্ঘক্ষণ বসে থাকলে ওজন বৃদ্ধির আশঙ্কাও থাকে। আর যেমনটা আপনাদের সকলেরই জানা আছে, যত শরীরের ওজন বাড়ে, তত ডায়াবেটিস, রক্তচাপ এবং কোলেস্টেরলের মতো মারণ রোগ শরীরে এসে বাসা বাঁধে। ফলে আয়ু কমে চোখে পরার মতো।
মেডিকেল কলেজ অব উইলকনিসের গবেষকদের করা এক পরীক্ষায় জানা গেছে অনেক সময় ধরে এক জায়গায় বসে থাকলে আমাদের পেশীর অন্দরে একাধিক এনজাইমের চরিত্র বদলে যেতে শুরু করে। যার প্রভাবে মারাত্মক ক্ষতি হয়। তাই বন্ধুরা বেশিক্ষণ বসে থাকা কোনও মতেই চলবে। আর যদি কাজের চাপে এমনটা করতেই হয়, তাহলে শরীরের ক্ষতি আটকাতে এই নিয়মগুলি মেনে চলতেই হবে, না হলে কিন্তু বেজায় বিপদ!
১. কিছু সময় অন্তর অন্তর উঠে দাঁড়াবেন:
গবেষণায় দেখা গেছে টানা এক ঘন্টা বসে থাকার পর যদি কয়েক মিনিট দাঁড়িয়ে থাকা যায়, তাহলে শারীরিক ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা অনেকাংশেই হ্রাস পায়। তাই এবার থেকে ঘড়ি ধরে এক ঘন্টা অন্তর অন্তর কয়েক মিনিট কাজ বন্ধ করে একটু দাঁড়িয়ে পরবেন, তাহলেই আর কেনও চিন্তা থাকবে না। আর যদি কাজের চাপে এমনটা করার সুযোগ না থাকে, তাহলে কম্পিউটারটাকে বই বা ফাইলের উপরে তুলে কয়েক মিনিট দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়েই কাজ করবেন। এমনটা না করলে জানেনই কী ক্ষতিটাই না হতে পারে আপনার সঙ্গে।
২. ঘোরাঘুরি জরুরি:
কাজের ফাঁকে ওয়াশরুম যাওয়ার অজুহাতে একটু হাঁটাহাঁটি করে নিতে ভুলবেন না। এমনটা করলে শরীরের নিচের অংশে রক্তের সরবরাহ বেড়ে যাবে। ফলে হার্টের রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা যেমন কমবে, তেমনি অন্যান্য শারীরিক ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনাও হ্রাস পাবে।
৩. কম্পিউটারের হাইট যেন ঠিক থাকে:
বসে থাকাকালীন আপনার ল্য়াপটপ বা কম্পিউটার থাকবে একেবারে চোখের সমান্তরালে অথবা চোখের লেভেল থেকে মাত্র ১০ ডিগ্রি নিচে। এমনটা না হলে কিন্তু ঘাড় এবং পিঠের উপর মারাত্মক প্রেসার পরবে। আর এইভাবে দীর্ঘক্ষণ কাজ করলে স্পন্ডাইলাইটিস বা ব্যাকপেইন মতো সমস্যা যে বাড়বে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। তাই সাবধান!
৪. অনুসরণ করুন পমোড্রা টেকনিক:
কী এই পমোড্রা টেকনিক? বিষয়টা খুব সহজ! কাজ শরু করার পর ২৫ মিনিট সেট করে স্টপ ওয়াচ চালিয়ে দিন। এই ২৫ মিনিট খুব মন দিয়ে কাজ করুন। সময় হয়ে গেলেই মিনিট পাঁচেক হেঁটে আসুন বা জাম্পিং জ্যাক-এর মতো এক্সারসাইজ করে নিন। তারপর আবার ২৫ মিনিটের জন্য কাজে লেগে পরুন। এমনভাবে যদি সারা দিন কাজ করতে পারেন, তাহলে যতক্ষণই বসে থাকুন না কেন শরীরের কোনও ক্ষতি হবে না।
৫. সারা দিন ধরে যখন সুযোগ পাবেন হাঁটবেন:
বেশ কিছু স্টাডিতে দেখা গেছে যারা দীর্ঘক্ষণ বসে কাজ করেন, তারা যদি দিনে কম করে ১০,০০০ স্টেপ নেন, তাহলে শারীরিক ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা হ্রাস পায়। তাই শরীরকে সুস্থ রাখতে অফিসের পরে হেঁটেই বাড়ি ফেরার চেষ্টা করুন। এমনটা করলে মস্তিষ্কে এন্ডোরফিন হরমোনের ক্ষরণ বাড়বে। ফলে মন-মেজাজ যেমন চাঙ্গা হয়ে উঠবে, তেমনি হাঁটার কারণে দীর্ঘক্ষণ বসে থাকার খারাপ প্রভাবও শরীরে কম পরবে।