Just In
ঠিক মতো ঘুম হচ্ছে কিনা বুঝবেন কিভাবে?
আচ্ছা ৭ ঘন্টার কম সময় ঘুমলে কী হতে পারে? একাধিক গবেষমায় দেখা গেছে ঘুমনোর সময় সারা দিন ধরে আমাদের শরীর এবং মস্তিষ্কের উপর তৈরি হওয়া নানা ক্ষত সারতে শুরু করে।
অনেকের কাছেই ঘুম মানে সয়ম নষ্ট। কারও কারও কাছে তো বেজায় গুরুত্বহীন বিষয়ও! কিন্তু বিজ্ঞান একথা প্রমাণ করে ছেড়েছে যে শরীরকে রোগমুক্ত রাখতে এবং সুস্থ থাকতে ঘুমের কোনও বিকল্প হয় না বললেই চলে। সেই কারণেই তো চিকিৎসকেরা দৈনিক ৭-৮ ঘন্টা ঘুমনোর পরামর্শ দিয়ে থাকে।
আচ্ছা ৭ ঘন্টার কম সময় ঘুমলে কী হতে পারে? একাধিক গবেষমায় দেখা গেছে ঘুমনোর সময় সারা দিন ধরে আমাদের শরীর এবং মস্তিষ্কের উপর তৈরি হওয়া নানা ক্ষত সারতে শুরু করে। সেই সঙ্গে শরীর পর্যাপ্ত পরিমাণ আরাম পাওয়ার কারণে আগামী দিন লড়াইয়ের জন্য প্রস্থুত হয়ে যায়। সেই সঙ্গে শরীরের সার্বিক কর্মক্ষমতাও বৃদ্ধি পায়। এখন যদি কেউ ঠিক মতো না ঘুমোন, তাহলেই বিপদ! সেক্ষেত্রে ব্রেন পাওয়ার তো কমেই, সেই সঙ্গে শরীরের রোগ প্রতিরোধী ব্যবস্থা এতটা দুর্বল হয়ে পরে যে ছোট-বড় নানা রোগ শরীরে এসে বাসা বাঁধতে শুরু করে। প্রসঙ্গত, আপনার শরীরের প্রয়োজন অনুসারে অপনি ঠিক মতো ঘুমোচ্ছেন কিনা, সেটা বোঝার একটা সহজ উপায়া আছে। কী সেই উপায়?
যদি দেখেন কারণে অকারণে সর্দি-কাশিতে আক্রান্ত হচ্ছেন, তাহলে বুঝবেন আপনার ঘুম ঠিক মতো হচ্ছে না। কারণ যেমনটা আগেও আলোচনা করা হয়েছে যে ঘুমনোর সময় আমাদের ইমিউন সিস্টেট সাইটোকিনস এবং ইনফেকশন ফাইটিং অ্যান্টিবডি তৈরি করে। ফলে সর্দি-কাশির মতো রোগ ধারে কাছেও ঘেঁষতে পারে না। তাই তো যখনই রোগ প্রতিরোধী ব্যবস্থা দুর্বল হতে শুরু করে, তখন সর্দি-কাশির মতো রোগ মাথা চাড়া দিয়ে ওঠে। এখানেই শেষ নয়, ঠিম মতো ঘুম না হলে আরও কিছু লক্ষণে দেখা যেতে পারে। যেমন- মা হতে সমস্যা হওয়া, রক্তচাপ বেড়ে যাওয়া, ওজন বৃদ্ধি, ত্বকের সৌন্দর্য কমে যাওয়া প্রভৃতি।
এখন প্রশ্ন হল, যদি খেয়াল করে দেখেন যে এই এই লক্ষণগুলি প্রকাশ পাচ্ছে তখন কী করবেন? সেক্ষেত্রে শরীর এবং মস্তিষ্ককে বাঁচাতে এই প্রবন্ধে আলোচিত খাবারগুলি খাওয়া শুরু করতে হবে। তাহলেই দেখবেন ঘুমে আর ব্যাঘাত ঘটবে না। কারণ একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে এই খাবারগুলির অন্দরে এমন কিছু উপাদান থাকে, যা সহজে ঘুম আসতে সাহায্য করে।
এক্ষেত্রে যে যে খাবারগুলি বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে, সেগুলি হল...
১. কলা:
এই ফলটিতে উপস্থিত পটাশিয়াম এবং ভিটামিন বি৬ একদিকে যেমন পেশীর ক্লান্তি দূর করে ঘুম আসতে সাহায্য করে, তেমনি মেলাটোনিন হরমোনের ক্ষরণ বাড়িয়ে দিয়ে ইনসমনিয়ার মতো রোগের চিকিৎসাতেও বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। তাই যদি দেখেন যে ঘুম ঠিক মতো হচ্ছে না, তাহলে শুতে যাওয়ার আগে একটা বা দুটো কলা খেয়ে নিতে ভুলবেন না।
২. চেরি:
নানা কারণে মানসিক চাপ এত বেড়ে গেছে যে কিছুতেই ঘুম আসছে না? ফিকার নট! ঝটপট এক গ্লাস চেরির রস বানিয়ে পান করে ফেলুন, দেখবেন ঘুম আসতে সময়ই লাগবে না। আসলে এই ফলটির অন্দরে থাকা একাধিক উপকারি উপাদান শরীরে প্রবেশ করার পর মেলাটোনিনের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। ফলে স্বাভাবিকভাবেই ঘুম আসতে সময় লাগে না।
৩. দানাশস্য:
একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে ডিনারে দানাশস্য বা সিরিয়াল জাতীয় খাবার খেলে রক্তে টাইপটোফেনের মাত্রা বাড়তে শুরু করে। এই উপাদানটির পরিমাণ শরীরে যত বাড়ে, তত অনিদ্রা দূর হয়। তাই তো ইনসমনিয়ার মতো রোগের চিকিৎসায় এই প্রকৃতিক উপাদানটি বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।
৪. বাদাম:
ম্যাগনেসিয়ামে পরিপূর্ণ এই প্রকৃতিক উপাদানটি এক মুঠো করে খাওয়া শুরু করলে দেখবেন রাতের বেলা আর প্যাঁচার মতো জেগে থাকতে হবে না। কারণ এই খনিজটির পাশাপাশি বাদামে উপস্থিত প্রোটিন, পেশীর ক্লান্তি দূর করে, সেই সঙ্গে ঠিক মতো যাতে ঘুম হয়, সেদিকেও খেয়াল রাখে।
৫. রাঙা আলু:
একাধিক রোগকে দূরে রাখতে এই সবজিটির কোনও বিকল্প হয় না বললেই চলে। আর এখন তো চিকিৎসকেরা অনিদ্রা দূর করতেও কাজে লাগাতে বলছেন রাঙা আলুকে। আর কেন বলবেন নাই বা বলুন! এতে উপস্থিত পটাশিয়াম এবং অন্যান্য উপকারি উপাদান মস্তিষ্ক এবং শরীরের অন্দরে এমন পরিবর্তন আনতে শুরু করে যে ঘুম আসতে সময়ই লাগে না।
৬.গরম দুধ:
ঘুম যদি আপনার সঙ্গ ছেড়ে থাকে তাহলে আজ থকেই শুতে যাওয়ার আগে এক গ্লাস গরম দুধ খাওয়া শুরু করুন। দেখবেন ঘুম আসতে কোনও সমস্যাই হবে না। প্রসঙ্গত, দুধে উপস্থিত ক্যালসিয়াম এক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। প্রসঙ্গত, বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে ঘুমনোর আগে যদি কার্বোহাইড্রেড সমৃদ্ধ খাবার, যেমন- ওটস, ব্রাউন ব্রেড প্রভৃতির সঙ্গে যদি দুধ খাওয়া যায়, তাহলে আরও ভাল রকম ঘুম আসে।
৭. মধু:
এতে উপস্থিত প্রাকৃতিক শর্করা মস্তিষ্কের অন্দরে অরেক্সিন নামক একটি কেমিকেলের কর্মক্ষমতা কমিয়ে দেয়। ফলে ঘুম আসতে সময় লাগে না। প্রসঙ্গত, এই রাসায়নিকটি ব্রেনকে অ্যালার্ট রাখতে সাহায্য করে। এই কারণেই তো অরেক্সিনের উৎপাদন বাড়তে থাকলে স্বাভাবিকভাবেই ঘুম আসতে সমস্যা হয়।