Just In
দুর্গা পুজোর আগে চটজলদি ভুঁড়ি কমাতে ভুলেও এই কাজগুলি করবেন না!
একথা ঠিক যে ওজন বৃদ্ধির পিছনে ক্যালরি অনেকাংশেই দায়ি থাকে। কিন্তু তাই বলে ওজন কমানো চেষ্টায় লেগে পরা মানেই ক্যালরি সমৃদ্ধ খাবার বন্ধ করে দেওয়া, এমন নয় কিন্ত!
হাতে আর মাত্র ৪০-৪৫ দিন। তার মধ্যে ভুঁড়ি কামতে না পারলে যে বেজায় বিপদ! বছরের এই একটা সময় যদি একটু শাহরুখ-সালমান হয়ে ওঠা না যায়, তাহলে জীবনই বৃথা। তাই তো সময় থাকতে ভুঁড়ি কমানোর চেষ্টায় লেগে পরাটাই মঙ্গল। কিন্তু প্রশ্নটা হল অল্প সময়ে এই অসাধ্য সাধন করবেন কীভাবে?
নিশ্চয় ভাবছেন খাওয়া-দাওয়া ছেড়ে চর্বির বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করবেন? একেবারেই! জানি তো এমন ভবনাই মাথায় আসবে। কারণ প্রায় ৮০ শতাংশ মানুষ ওজন কমাতে প্রথমে খাওয়া-দাওয়ায় কাট-ছাট করা কথাই ভেবে থাকেন। আর এখানেই করে ফেলেন মারাত্মক ভুল কাজটা। কারণ শরীরকে সচল এবং কর্মক্ষম রাখতে প্রতিদিন কতগুলি উপাদানের প্রয়োজন পরে। এই উপাদানগুলির ঘাটতি দেখা গিলে ওজন তো কমেই না। উল্টে শরীরে একাদিক রোগ এসে বাসা বাঁধে। তাই তো এই প্রবন্ধে চোখ রাখাটা জরুরি। কারণ এই লেখায় এমন কিছু বিষয় সম্পর্কে আলোচনা করা হল, যা ওজন কমানোর সময় একেবারেই করা উচিত নয়। যেমন...
১. হঠাৎ করে ক্যালরি গ্রহন বন্ধ করে দেবেন না:
একথা ঠিক যে ওজন বৃদ্ধির পিছনে ক্যালরি অনেকাংশেই দায়ি থাকে। কিন্তু তাই বলে ওজন কমানো চেষ্টায় লেগে পরা মানেই ক্যালরি সমৃদ্ধ খাবার বন্ধ করে দেওয়া, এমন নয় কিন্ত! কারণ শরীরকে সচল রাখতে ক্যালরির প্রয়োজন পরে। তাই তো এই উপাদানটির ঘাটিত হওয়াটা একেবারেই উচিত নয়। তাহলে উপায়? এক্ষেত্রে একটা নিয়ম সব সময় মেনে চলা উচিত। তা হল, চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করে জেনে নিতে হবে সারা দিন যে পরিমাণে পরিশ্রম করছেন, সেই অনুপাতে কত পরিমাণ ক্যালরি আপনার শরীরে প্রবেশ করা উচিত। সেই অনুপাতে যদি ক্যালরি সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া শুরু করুন তাহেল শরীরে অতিরিক্ত চর্বি জমে ভুঁড়ি বা সার্বিক ওজন বৃদ্ধির আশঙ্কা থাকে না বললেই চলে। সেই সঙ্গে শরীরেরও কোনও ক্ষতিও হয় না।
২. প্রোটিন খাওয়া চাইই-চাই:
প্রতিটি মিলে, অর্থাৎ ব্রেকফাস্ট, লাঞ্চ এবং ডিনারে প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার থাকা মাস্ট! কারণ প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার খেলে বাড়ে বাড়ে ক্ষিদে পায় না। ফলে স্বাভাবিকভাবেই খাওয়ার পরিমাণ কমতে শুরু করে। আর এমনটা হলে ওজন যে কমবেই, তা বলাই বাহুল্য! প্রসঙ্গত, ওজন কমাতে আরেকভাবেও প্রোটিন বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে এই উপাদানটি শরীরে অন্দরে প্রবেশ করার পর এমন কিছু পরিবর্তন করে যে চর্বি গলতে শুরু করে। ফলে অল্প দিনেই চোখে পরার মতো ওজন কমে।
৩. ভাজাভুজি খাওয়া চলবে না:
রিফাইন্ড কার্বোহাইড্রেট, যেমন- চিনি, ভাত এবং ময়দা যতটা সম্ভব কম খেতে হবে। এই তিনটি খাবার পুষ্টিকর তো নয়ই, সেই সঙ্গে ওজন বৃদ্ধির সম্ভাবনাও বাড়িয়ে দেয়। এখন নিশ্চয় ভাবছেন ভাত ছাড়া থাকবেন কীভাবে, তাই তো? চিন্তা নেই। সাদা ভাতের পরিবর্তে ব্রাউন রাইস খাওয়া শুরু করুন। তাহলেই কেল্লা মার দিয়া! এক্ষেত্রে আরেকটি বিষয় মাথায় রাখতে হবে। তা হল, ভুলেও ভাজাভুজি খাওয়া চলবে না। কারণ এমন খাবার ওজন বৃদ্ধির পথকে প্রশস্থ করে। সেই সঙ্গে ব্লাড প্রেসার, কোলেস্টেরল এবং হার্টের রোগে আক্রান্ত হওযার সম্ভাবনাও বাড়ায়।
৪. পর্যাপ্ত পরিমাণ জল খেতে হবে:
দা জার্নাল অব ক্লিনিকাল এন্ডোক্রিনোলজি অ্যান্ড মেটাবলিজম-এ প্রকাশিত একটি গবেষণা পত্র অনুসারে দিনে ৩-৪ লিটার জল পান করলে হজম ক্ষমতা প্রায় ৩০ শতাংশ বৃদ্ধি পায়। ফলে শরীরে অতিরিক্ত চর্বি জমার সুযোগই পায় না। প্রসঙ্গত, আরেকটি স্টাডিতে দেখা গেছে বেশি বেশি করে জল খেলে ক্ষিদে কমে যেতে থাকে। ফলে অনিয়ন্ত্রিত ভাবে খাবার খাওয়া প্রবণতা কমার কারণে ওজন হ্রাসের সম্ভাবনাও বাড়ে।
৫. কী পরিমাণে খাচ্ছেন তা নজরে রাখতে হবে:
একাধিক কেস স্টাডি করে দেখা গেছে দিন যত এগতে থাকে তত আমাদের হজম ক্ষমতা কমে যেতে শুরু করে। তাই তো রাতের বেলা কব্জি ডুবিয়ে খেলে ওজন বাড়ে। সেই কারণেই তো ডিনার সব সময় হাল্কা করার পরামর্শ দেন চিকিৎসকেরা। এক্ষেত্রে একটা সহজ নিয়ম মাথায় রাখবেন, তাহলেই কেল্লাফতে! কী সেই নিয়ম? ব্রেকফাস্ট করবেন রাজার মতো। এই সময় পেট পুরে খাওয়া চলতেই পারে। কারণ সকালে আমাদের মেটাবলিক রেট এতটাই বেশি থাকে যে খাবার নিমেষে হজম হয়ে যায়। ফলে শরীরে অতিরিক্ত চর্বি জমার সুযোগই থাকে না। দুপুরেও পরিমাণ মতো খাবার খাওয়া চলতে পারে। কিন্তু বিকালের পর থেকে বিশেষত রাতে খাবার খেতে হবে ভিকারির মতো। অর্থাৎ যতটা কম সম্ভব খাবার খেয়ে ঘুমতে যাওয়াই শ্রেয়। এমনটা করলে ভুঁড়ি বা ওজন বৃদ্ধির আর সম্ভাবনা থাকে না।
৬. কখন খাবার খাচ্ছেন সেদিকে নজর দিতে হবে:
প্রতিটি মিলের মাঝে যেন ৩-৪ ঘন্টার ব্যবধান থাকে। কারণ খাবার হজম হতে এইটুকু সময় লেগেই থাকে। সেই সঙ্গে খাবারে উপস্থিত পুষ্টকর উপাদানগুলি শরীরের উন্নতিতে যথাযথভাবে কাজে আসার সুযোগ পায়। ফলে খাবার হজম না হতে পেরে চর্বি হিসেবে শরীরে জমা হওয়ার সুয়োগই পায় না।
এই নিয়মগুলি মানার সঙ্গে সঙ্গে যদি নিয়মিত শরীরচর্চা করতে পারেন। তাহলেই দেখবেন দুর্গা মা আসার আগে শরীর একেবারে টানটান হয়ে যাবে।