Just In
- 54 min ago এপ্রিল মাসে ৪ গ্রহের স্থান পরিবর্তন, রাজযোগ ও সৌভাগ্যে ফুলে ফেঁপে উঠবে এই রাশির জাতকরা, দেখুন
- 2 hrs ago আপনার কি ক্রমাগত কান চুলকাচ্ছেন? অজান্তেই ডেকে আনচ্ছেন বড় বিপদ
- 5 hrs ago মসুর ডাল খেতে ভালোবাসেন? কিন্তু অতিরিক্ত খেলে হতে পারে পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া!
- 7 hrs ago অনলাইন গেমে বাচ্চারা ঘরকুঁনো! জানেন কি স্বাস্থ্যের জন্য় কতটা উপকারি আউটডোর গেম?
Don't Miss
নভেম্বর মাসে ভুলেও দাড়ি কাটা চলবে না! কেন জানেন?
গত কয়েক বছরে আমাদের দেশে যে হারে ক্যান্সার রোগের প্রকোপ বেড়েছে, তাতে মনে হয় নো-শেভ নভেম্বর মাসের প্রয়োজন এদেশেও কম নেই। কিন্তু একটা কথা জানেন কি? দাড়ি রাখলে অনেক শারীরিক উপকারিতাও পাওয়া যায়।
ঘটনাটা ২০০৭ সালের। দীর্ঘদিন ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে এক প্রকার কষ্ট পেতে পেতেই মারা গেলেন চিকাগোর বাসিন্দা ম্যাথু হিল। তার পর পরই যেন সব বদলে গেল হিল পরিবারে। এত সামনে থেকে কাছের মানুষটাকে কষ্ট পেতে দেখে ম্যাথুর বাচ্চাদের মন এতটাই ধাক্কা খয়েছিল যে তারা সিন্ধান্ত নিল একটি চ্যারিটি প্রোগ্রাম শুরু করার, যা ক্য়ান্সার রিসার্চে টাকা যোগাবে, যাতে আর কোনও ম্যাথুকে এত কষ্ট পেয়ে পৃথিবী ছাড়তে না হয়। সিদ্ধান্ত তো হল। কিন্তু শুরু করা যায় কিভাবে? এই প্রশ্ন যেন সারাক্ষণ ঘুরপাত খাচ্ছিল ম্যাথুর আট ছেলে-ময়ের মাথায়। হঠাৎই একদিক একটা আইডিয়া বেশ পছন্দ হল সবার। কী আইডিয়া? "নো-শেভ নভেম্বর" নামে একটি উদ্যোগ নেওয়া হবে। মানুষকে বোঝানো হবে নভেম্বর মাসে তারা একদিনও দাড়িতে রেজার ছোঁয়াবেন না। বরং দাড়ি রাখার মধ্যে দিয়ে পরিবার-পরিজনের মধ্য়ে ক্যান্সার সম্পর্কে সচেতনতা বিকাশের চেষ্টা চালাবেন। ভাবনার সঙ্গে সঙ্গে শুরু হল প্রচার। সারাও মিলল ব্যাপোক। সেই থেকে সারা আমেরিকা জুড়ে সারা নভেম্বর মাস জুড়ে নো-শেভ নভেম্বর পালন করা হয়।
গত কয়েক বছরে আমাদের দেশে যে হারে ক্যান্সার রোগের প্রকোপ বেড়েছে, তাতে মনে হয় নো-শেভ নভেম্বর মাসের প্রয়োজন এদেশেও কম নেই। কিন্তু একটা কথা জানেন কি? দাড়ি রাখলে অনেক শারীরিক উপকারিতাও পাওয়া যায়। তবে সে বিষয়ে আলোচনা হবে, তবে তার আগে আলোকপাত করা যাক আরেকটি আকর্ষণীয় বিষযের উপর। কী সেই বিষয়?
দাড়ি-গোঁফ রাখার স্টাইল কিন্তু আজকের নয়। ইতিহাস ঘাঁটলে দেখতে পাবেন ১৮০০ শতকের পর থেকেই দাড়ি রাখা হয়ে ওঠে একটা নতুন ফ্যাশন। তার পর থেকে সময় যত এগতে শুরু করে, তত এই ফ্যাশনের পালে হাওয়ার তেজ বাড়তে থাকে। এক সময়ে গিয়ে তো দাবানলের চেহারা নেয় এই নতুন স্টাইল স্টেটমেন্ট। যার আঁচ থেকে বাদ যাননি আমেরিকার সে সময়কার রাষ্ট্রপতিরাও, তা সে আব্রাহাম লিঙ্কন হোন কি এস গ্রান্ট, সবার সে সময় দাড়ি রাখতে খুব পছন্দ করতেন। তবে ধীরে ধীরে এই ট্রেন্ডে ভাটা পরতে শুরু করলে দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধের সময় থেকে। আসলে সে সময় ক্লিন শেভ রাখার চল শুরু হল। তাই তো ১৯৪০ সাল পর্যন্ত সমকালীন পুরুষদের মধ্যে দাড়ি রাখার প্রবণতা সেভাবে চোখে পরেনি। তবে ক্লিন শেভ লুক বেশিদিন জনপ্রিয়তার স্বাদ পায়নি। ফিরে এসেছে সেই দাড়ি রাখার চলই। আর এখন তো কোনও কথাই নেই। ইয়ংস্টারদের মতে দাড়ি মানে মাচো ম্যান, দাড়ি মানে বেশ কতক ফিমেল ফ্যান! তাই তো ক্লিন শেভ মোটে নয়!
সবাই ঠিক আছে। সমস্যাটা একটা জায়গাতেই। একদল বিজ্ঞানী মনে করেন দাড়ি-গোঁফ রাখা নাকি স্বাস্থ্যের পক্ষে বেজায় ক্ষতিকারক। কারণ একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে দীর্ঘদিন দাড়ি রাখলে তাতে নানবিধ ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া বাসা বাঁধতে শুরু করে। ফলে সেই ব্যাকটেরিয়ারা এক সময় হাত হয়ে পৌঁছে যায় মুখে। বাড়ে সংক্রমণের আক্রমণে জর্জরিত হওয়ার আশঙ্কা। তাই এই বিষয়ে সাবধান থাকাটা জরুরি।
এই বৈজ্ঞানিক মাতামতের বিরুদ্ধে কোনও য়ুক্তি রাখা মানে মুর্খামি। তবে এ বিষয়েও কোনও সন্দেহ নেই যে দাড়ি রাখার একাধিক উপকারিতাও আছে। আপনাদের কী জানা আছে দাড়ি রাখলে স্কিন ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বহুগুণে হ্রাস পায়। সেই সঙ্গে আরও অনেক উপকার মেলে। যেমন...
১. স্কিন ক্যান্সারের প্রকোপ হ্রাস পায়:
সম্প্রতি প্রকাশিত বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে দাড়ি থাকলে আলট্রাভায়োলেট রশ্মি ত্বকের সেভাবে ক্ষতি করতে পারে না, যতটা ক্লিন শেভ থাকলে করে থাকে। আর একথার নিশ্চয় সবাই জানেন যে "ইউ ভি" রশ্মির সংস্পর্শ থেকে ত্বক যত দূরে থাকবে, তত ত্বকের ক্যান্সার হওয়ার আশঙ্কা হ্রাস পাবে।
২. অ্যাস্থেমা এবং অ্যালার্জির প্রকোপ কমবে:
আপনি কি প্রায়শই ডাস্ট অ্যালার্জিতে ভুগে থাকেন? তাহলে দাড়ি রাখার কথা ভাবতেই পারেন। কারণ পরিবেশ উপস্থিত ডাস্ট পার্টিকালসগুলি যাতে নাকের মাধ্যমে শরীরের অন্দরে প্রবেশ করতে না পারে, সেদিকে খেয়াল রাখে দাড়ি। আসলে দাড়ি হল একটা প্রতিরোধ ব্য়বস্থা, যাকে ভেদ করে ধুলো-বালির পক্ষে শরীরে প্রবেশ করা সম্ভব হয় না। এখানেই শেষ নয়, বিজ্ঞানীরা লক্ষ করে দেখেছেন অ্যাস্থেমার মতো রোগের প্রকোপ কমাতেও গোঁফ এবং দাড়ি বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।
৩. বয়স কমবে, বাড়বে না:
অনেকেই মনে করেন দাড়ি রাখলে বুড়োটে লাগে। এই ধরণা কিন্তু একেবারে ভুল। বরং একেবারে উল্টো ঘঠনা ঘটে! আলট্রাভায়োলেট রশ্মির আঘাত কম লাগার কারণে যাদের দাড়ি রয়েছে, তাদের ত্বকের ক্ষয় কম হয়। ফলে কম বয়সীদের মতো দেখতে লাগে। তাই তো বন্ধুরা বেশি দিন পর্যন্ত যদি ত্বকের বয়স ধরে রাখতে চান, তাহলে দাড়ি রাখাটা মাস্ট কিন্তু!
৪. ঠান্ডার হাত থেকে রক্ষা করে:
তাপমাত্রা যখন কমতে থাকে, তখন শরীরকে গরম রাখতে দাড়ি বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। একাধিক কেস স্টাডি করে বিজ্ঞানীদের মনে আর কোনও সন্দেহ নেই যে, শরীরের তাপমাত্রা ধরে রাখতে বিয়ার্ড বাস্তবিকই সাহায্য করে। তাই খেয়াল করে দেখবেন ক্লিন শেভ থাকেন যারা তাদের তুলনায় দাড়িওয়ালারা কম রোগে ভুগে থাকেন।
৫. সংক্রমণের আশঙ্কা কমে:
আমরা দাড়ি কাটি কীভাবে? কীভাবে আবার রেজার দিয়ে। একেবারেই! আর দাড়ি কাটতে গিয়ে কেটে যাওয়াটা খুবই স্বাভাবিক ঘটনা, তাই না? সমস্যাটা হল এই ক্ষত থেকে মারাত্মক সংক্রমণ এবং তা থেকে মৃত্যু পর্যন্তও ঘটে থাকে। ভাববেন না একটুও বাড়িয়ে বলছি। গুগলে সার্চ করেও দেখতে পাবেন। এমন অনেক মানুষের নাম পাবেন যারা এমন ভাবেই সংক্রমণে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। তাই দাড়ি রাখবেন কি রাখবেন না, এই সিদ্ধান্ত আপনাদের! তবে দাড়ি রাখলে যে উপকার হয়, সে বিষয়ে নিশ্চয় আর কোনও সন্দেহ নেই।
৬. ত্বকের আদ্রতা বজায় থাকে:
স্কিন স্পেশালিস্টরা লক্ষ করে দেখেছেন দাড়ি থাকলে ত্বকের আদ্রতা সহজে হারায় না। কারণ এক্ষেত্রে দাড়ি অনেকটা রক্ষাকবচের কাজ করে থাকে। ফলে সহজে স্কিন ড্রাই হয়ে যায় না। তাই তো যারা সারা বছরই কম-বেশি ড্রাই স্কিনের সমস্যায় ভুগে থাকেন, তারা দাড়ি রাখার কথা ভাবতেই পারেন।