Just In
পাঁঠার মাংস খেলেই বাড়বে চিনি!
ইনসুলিনের কর্মক্ষমতা বাড়ানোর মধ্যে দিয়ে রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে করলা বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।
রবিবাসরীয় লাঞ্চে কব্জি ডুবিয়ে কচি পাঁঠার মাংস খাওয়ার রেওয়াজ আছে কি? তাহলে সাবধান! কারণ গবেষণা বলছে এমনটা করলে যে কোনও সময় যোম রাজের সঙ্গে দেখা হয়ে যেতে পারে।
সম্প্রতি সিঙ্গাপুরের ডুক-এন ইউ এস মিডিকেল স্কুলের গবেষকরা একটি পরীক্ষা চালিয়েছিলেন। তাতে দেখা গেছে বেশি মাত্রায় রেড মিট খেলে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়াপর আশঙ্কা মারাত্মক বৃদ্ধি পায়। আর যেমনটা সকলেরই জানা আছে যে সারা বিশ্বের চিকিৎসক মহল এই রোগটিকে "সাইলেন্ট কিলার" নামে ডেকে থাকেন। কারণ ডায়াবেটিসকে যদি নিয়ন্ত্রণে রাখা না যায়, তাহলে একে একে চোখ থেকে শুরু করে শরীরে প্রতিটি অঙ্গ বিকল হতে শুরু করে। আর এক সময়ে গিয়ে ভয়ঙ্কর মৃত্যু আমাদের আলিঙ্গন করে। শুধু কী তাই! গবেষণা বলছে একবার ডায়াবেটিসের মতো মারণ রোগে আক্রান্ত হলে জীবনযাত্রাও বদলে যেতে শুরু করে। ডায়েট থেকে একে একে বাদ পরতে থাকে পছন্দের সব খাবার। তাই এমন জীবন পেতে না চাইলে সময় থাকতে থাকতে সাবধান হওয়ার প্রয়োজন রয়েছে বন্ধুরা। না হলে কিন্তু বেজায় বিপদ!
মাংস
খাওয়া
কি
তাহলে
একেবারে
চলবে
না?
আরে
না
না!
তা
একেবারেই
নয়।
তবে
নিয়ন্ত্রণ
আনাটা
জরুরি।
প্রতিদিন
পাঁঠার
মাংস
খাওয়ার
পরিমাণ
কমিয়ে
যদি
বেশি
করে
শাক-সবজি,
মাছ
এবং
দুধ
খাওয়া
যায়,
তাহলে
দারুন
উপকার
মেলে।
কারণ
এই
খাবারগুলি
শুধু
পুষ্টির
ঘাটতি
মেটায়
না,
সেই
সঙ্গে
ডায়াবেটিসের
মতো
রোগকে
দূরে
রাখতেও
বিশেষ
ভূমিকা
পালন
করে
থাকে।
মোট
কথা
যে
খাবারই
খান
না
কেন,
তা
অনিয়ন্ত্রিত
মাত্রায়
খাওয়া
চলবে
না।
তাহলেই
আর
কোনও
চিন্তা
থাকবে
না।
গবেষণায় কী দেখা গিয়েছে?
টানা ১৬ বছর ধরে ৬৩,২৫৭ জনের উপর এই পরীক্ষাটি চালানো হয়েছিল। গবেষণাটি চলাকালীন বিশেষজ্ঞরা লক্ষ করেছিলেন যারা প্রতিদিনই প্রায় রেড মিট খেয়ে থাকেন, তাদের ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বাকিদের থেকে বেশি থাকে। সংখ্যার নিরিখে বললে যারা বেশি মাত্রায় রেড মিট খায়, তাদের শরীরে শর্করা বা চিনির মাত্রা স্বাভাবিকের থেকে বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা প্রায় ২৩ শতাংশ বৃদ্ধি পায়।
এখন প্রশ্ন হল, যদি ইতিমধ্যেই যদি কেউ ব্লাড সুগার উপরের দিকে থাকে, তাহলে কী করবেন? সেক্ষেত্রে একটু রান্না ঘরে সময় কাটাতে হবে। মানে! রান্না ঘরে গেলেই সুগার কমে যাবে? একেবারেই! কিভাবে? গবেষণা বলছে আমাদের রান্না ঘরে থাকা কিছু খাবার রক্তে শর্করার মাত্রা কমাতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। ফলে এই খাবারগুলি যদি নিয়মিত খাওয়া যায়, তাহলে ডায়াবেটিস রোগ দূরে পালাতে সময় নেয় না। শুধু তাই নয়, ডায়াবেটিস রোগীরাও যদি এই খাবারগুলি নিয়মিত খেতে পারেন তাহলে রক্তে সুগারের মাত্রা বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা অনেকংশে হ্রাস পায়।
এক্ষেত্রে যে যে খাবরগুলি বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে, সেগুলি হল...
১. করলা:
ইনসুলিনের কর্মক্ষমতা বাড়ানোর মধ্যে দিয়ে রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে এই সবজিটি বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। এক্ষেত্রে প্রতিদিন এক গ্লাস করে করলার রস খেলে দারুন উপকার মেলে। আর যদি জুস খেতে ইচ্ছা না হয়, তাহলে পছন্দ মতো যে কোনও করলার পদ রান্না করেও খেতে পারেন। এমনটা করলেও সমান উপকার পাওয়া যায়।
২. দারচিনি:
বেশ কয়েকটি গবেষণায় দেখা গেছে নিয়মিত দারচিনি খাওয়ার অভ্যাস করলে শরীরে বায়োঅ্যাকটিভ কম্পাউন্ডের মাত্রা বাড়তে শুরু করে, যা ডায়াবেটিস রোগের প্রকোপ কমাতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। এখন প্রশ্ন হল কিভাবে গ্রহন করতে হবে এই মশলাটি? এক কাপ গরম জলে হাফ চামচ দারচিনি গুঁড়ো মিশিয়ে প্রতিদিন পান করলে দারুন উপকার মিলবে।
৩. মেথি:
শরীরে গ্লকোজ টলারেন্সের উন্নতি ঘটানোর মধ্যে দিয়ে ডায়াবেটিস রোগকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে এই গুল্মটির কোনও বিকল্প হয় না বললেই চলে। আসলে মেথিতে উপস্থিত ফাইবার এক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। ২ চামচ মেথি বীজ সারা রাত জলে ভিজিয়ে রাখার পর, পরের দিন সকালে সেই জলটা পান করলে দারুন কাজে আসে। তবে নিয়মিত এমনটা করতে হবে, না হলে কিন্তু সেভাবে কোনও উপকার মিলবে না।
৪. আমলকি:
এতে উপস্থিত ভিটামিন সি প্যানক্রিয়াসের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি করে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই ইনসুলির ক্ষরণ বাড়তে শুরু করে। আর একবার ইনসুলিন ঠিক মতো কাজ করা শুরু করে দিলে ডায়াবেটিস রোগ ধারে কাছেও ঘেঁষতে পারে না। সেই কারণেই তো যাদের পরিবারে ডায়াবেটিস রোগের ইতিহাস রয়েছে তাদের প্রতিদিন সকালে খালি পেটে আমলকির জুস খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন চিকিৎসকেরা।
৫. কালোজাম:
এই ফলটির শরীরে উপস্থিত অ্যান্থোসায়ানিন, অ্যালেজিক অ্যাসিড এবং হাইড্রোলিসাবেল টেনিনিনস নামে নানাবিধ উপাদান রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে নিয়মিত কালোজম বা এই ফলটির বীজ খাওয়া যায়, তাহলে শরীরে গ্লাইকোসাইড জ্যাম্বোলাইন এবং অ্যালকালয়েড জাম্বোসাইন নামক দুটি উপাদানের মাত্রা বাড়তে থাকে। এই দুটি উপাদান ব্লাড সুগার লেভেলকে স্বাভাবিক রাখার কাজটি করে থাকে।
৬. আম পাতা:
এক গ্লাস গরম জলে ১০-১৫ টা আম পাতা সারা রাত ভিজিয়ে রেখে পরের দিন সকালে জলটা ছেঁকে নিয়ে পান করলে এক্ষেত্রে দারুন উপকার পাওয়া যায়। আসলে আম পাতায় উপস্থিত বেশ কিছু কার্যকারি উপাদান ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণে রাখার পাশাপাশি দেহে বাজে কোলেস্টরলের মাত্রা কমাতেও বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।