Just In
মশারা সাবাধান!
মেরে কেটে আর মাত্র ২ বছর। ব্য়াস, তাহলেই কেল্লাফতে! কী হবে মশাই দু বছরের মধ্য়ে? বন্ধু ভারতীয় বিজ্ঞানীরা ডেঙ্গুর ভাইরাসের ভ্যাকসিন তৈরিতে প্রায় সফল হয়ে গেছেন।
মেরে কেটে আর মাত্র ২ বছর। ব্য়াস, তাহলেই কেল্লাফতে! কী হবে মশাই দু বছরের মধ্য়ে? বন্ধু ভারতীয় বিজ্ঞানীরা ডেঙ্গুর ভাইরাসের ভ্যাকসিন তৈরিতে প্রায় সফল হয়ে গেছেন। তাদের ধরণা ২০২০ সালের মধ্যেই সেই ভ্যাকসিনের প্রয়োগ শুরু হয়ে যাবে। আর একবার এমনটা হলে ডেঙ্গুর কারণে যে আর একটা প্রাণও যাবে না, সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই।
রাজ্যসভায় ওঠা এক প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী অশ্বিনী কুনার চৌবে এই খবরটি প্রকাশ করেছেন। তিনি জানান ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর জেনেটিক বায়োটেকনোলজি এবং সান ফার্মার যৌথ উদ্যোগে তৈরি হতে হতে চাল এই ভ্যাকসিনের পরীক্ষামূলক প্রয়োগ আর কয়েক মাসের মধ্যে শুরু হয়ে যাবে। যদি দেখা যায় রেজাল্ট আশাপ্রদ, তাহলে আগামী দু বছরের মধ্যে সেই ভ্যাকসিন জনসাধারণের নাগালে চলবে আসবে বলে ধরণা স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রীর।
প্রসঙ্গত, এই বছর কলকাতা সহ সারা দেশেই ডেঙ্গুর প্রকোপ মারাত্মক হারে বৃদ্ধি পয়েছিল। এমনকী প্রিয়াঙ্কী গন্ধীও আক্রান্ত হয়েছিলেন এই ভাইরাসে। কেন্দ্রীয় সরকারের প্রকাশ করা ডেটা অনুসারে এ বছর ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত ডেঙ্গু ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে প্রায় ১,৫০,৪৮২ জন ভারতীয়, যাদের মধ্যে মৃত্যু হয়েছে প্রায় ২২৫ জনের।
এই সুখবরের মাঝেও এক প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। চিকিৎসাকেদের মতে যেভাবে ডেঙ্গু ভাইরাস তার চরিত্র বদল করছে, তাতে এই রোগের সঙ্গে লড়াই করাটা বেশ মুশকিল হয়ে পরছে। এমন পরিস্থিতিতে আগামী দুবছর কীভাবে সুস্থভাবে বেঁচে থাকা সম্ভব, সেটাই এখন প্রশ্ন হওয়া উচিত!
যেমনটা আগেও আলোচনা করা হয়েছে যে বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে নানাবিধ প্রকৃতিক উপাদান ডেঙ্গু রোগের প্রকোপ হ্রাসে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। তাই যতদিন না ডেঙ্গু ভ্যাকসিন বাজারে আসছে ততদিন হাতের কাছে সব রকমের অস্ত্র মজুত রাখাটা যে মাস্ট, তা নিশ্চয় আর বলে দিতে হবে না! প্রসঙ্গত, প্রতি বছর ভারতের পাশাপাশি দক্ষিণ এশিয়ার একাধিক দেশের প্রায় লক্ষ লক্ষ মানুষ এই রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকেন। সম্প্রতি জাপানি গবেষকদের প্রকাশ করা এক রিপোর্ট অনুসারে গত কয়েক দশকে নানা কারণ সমগ্র বিশ্ব জুড়েই ডেঙ্গু জ্বরের প্রকোপ চোখে পরার মতো বৃদ্ধি পয়েছে, যে কারণে বছর পিছু ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্তের সংখ্যা ৫০০ মিলিয়ানে এসে ঠেকেছে। শুধু তাই নয়, বিশ শতকের পর থেকে প্রায় ১০০ টা দেশে এই ভাইরাল ইনফেকশন প্রায় মহামারীর আকার ধারণ করেছে। এমন পরিস্থিতিতে কীভাবে ঘরে বসেই ডেঙ্গু ফিবারের চিকিৎসা করা যেতে পারে, সে বিষয়ে জেনে নেওয়াটা কি জরুরি মনে হয় না?
একাধিক প্রকৃতিক উপাদানকে কাজে লাগিয়ে খুব সহজেই ডেঙ্গু জ্বরকে কাবু করা সম্ভব। এক্ষেত্রে সাধারণত যে যে উপাদানগুলির প্রয়োজন পরবে, সেগুলি হল...
১. কমলা লেবুর রস:
এতে উপস্থিত অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং ভিটামিন সি ডেঙ্গু জ্বরের লক্ষণ কমানোর পাশাপাশি ভাইরাসের প্রকোপ কমাতেও বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। শুধু তাই নয়, কমলা লেবুর রস একদিকে যেমন রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার উন্নতি ঘটায়, তেমনি শরীরে উপস্থিত ক্ষতিকর টক্সিনকেও বার করে দেয়। ফলে স্বাভাবিকভাবেই রোগের প্রকোপ কমতে শুরু করে। প্রসঙ্গত, কমলা লেবুতে উপস্থিত ভিটামিন সি কোষেদের ক্ষত সারাতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেয়। ফলে সার্বিকভাবে শরীর চাঙ্গা হয়ে উঠতে একেবারে সময়ই লাগে না।
২. নিম পাতা:
ডেঙ্গুর মতো ভাইরাল জ্বরের প্রকোপ কমাতে নিম পাতার কোনও বিকল্প হয় না বললেই চলে। আসলে এই প্রকৃতিক উপাদানটিতে উপস্থিত বেশ কিছু কার্যকরী উপাদান শরীরে প্লেটলেট কাউন্ট বাড়ানোর পাশাপাশি শ্বেত রক্ত কণিকার মাত্রা বৃদ্ধিতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। এখানেই শেষ নয়, দেহের রোগ প্রতিরোধি ক্ষমতাকে শক্তিশালী করে তুলে ডেঙ্গু ভাইরাসের প্রভাবকে দ্রুত কমিয়ে ফেলতেও নিম পাতা সাহায্য করে থাকে।
৩. জল:
ডেঙ্গু ফিবারে আক্রান্ত হলে শরীরে জলের মাত্রা কমতে শুরু করে। তাই এই সময় পর্যাপ্ত পরিমাণ জল খাওয়া একান্ত প্রয়োজন। এমনটা করলে ডেঙ্গুর বেশ কিছু লক্ষণ নিমেষে কেমে যায়, যেমন- মাথা যন্ত্রণা, পেশির ব্যথা বা ক্র্যাম্প, ডিহাইড্রেশন প্রভৃতি। প্রসঙ্গত, শরীরে জলের মাত্রা বাড়লে দেহে উপস্থিত টক্সিক উপাদানের মাত্রাও কমতে শুরু করে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই ভাইরাল ইনফেকশনের প্রকোপ কমতে শুরু করে।
৪. পেঁপে পাতা:
প্লেটলেট কাউন্ট বাড়ানোর পাশাপাশি শরীরে ভিটামিন সি-এর মাত্রা বৃদ্ধিতে পেঁপে পাতা দারুনভাবে কাজে আসে। সেই সঙ্গে দেহে অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের মাত্রা বাড়িয়ে তুলে ডেঙ্গু জ্বরের নানাবিধ লক্ষণ কমাতেও এই প্রকৃতিক উপাদানটি সাহায্য করে থাকে। প্রসঙ্গত, প্রতিদিন পেঁপে পাতার রস খাওয়াতে হবে রোগীকে। তবেই উপকার মিলবে।
৫. তুলসি পাতা:
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর মধ্যে দিয়ে ডেঙ্গু রোগের প্রকোপ কমাতে তলসি পাতা দারুনভাবে কাজে আসে। সেই কারণেই তো আয়ুর্বেদ বিশেষজ্ঞরা এমন রোগীদের নিয়মিত তুলসি পাতা খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন।