Just In
- 3 hrs ago প্রেম জীবনে উত্তেজনা মেষ-তুলার, সতর্ক থাকতে হবে ৩ রাশিকে, দেখুন আজকের রাশিফল
- 19 hrs ago ঠাকুরকে নিত্যভোগ দেওয়ার সময় ঘণ্টা বাজে কেন? জানেন কি এর পিছনের রহস্য
- 21 hrs ago প্রখর রোদ থেকে স্বস্তি পেতে বাড়িতেই বানিয়ে নিন এই শরবতগুলি, ঠান্ডা রাখবে শরীরও
- 23 hrs ago গরমে এই পানীয়গুলি খেলে আপনিও থাকবেন হাইড্রেটেড ও সতেজ
করোনা ভাইরাস : সামাজিক দূরত্ব কী? জেনে নিন কোভিড-১৯ প্রতিরোধে এর গুরুত্ব
মারণ কোভিড-১৯ এর কবলে দেশ। ক্রমশ আতঙ্ক গ্রাস করছে মানুষের রন্ধ্রে-রন্ধ্রে। দিন দিন বেড়েই চলেছে আক্রান্তের সংখ্যা, পাল্লা দিয়ে বাড়ছে মৃত্যুর সংখ্যাও। দিশেহারা জনজীবন। হাজারো সমস্যাকে মানিয়ে নিয়ে বাঁচার তাগিদে সকলেই মেনে চলছেন সরকার এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দেওয়া নির্দেশিকাকে। তাও যেন পিছু ছাড়ছে না আতঙ্ক। তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, এই মারণ ভাইরাস থেকে বাঁচার অন্যতম পথ হল সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা।
সরকারের নির্দেশ অনুযায়ী দেশজুড়ে চলছে লকডাউন। মানুষ কার্যত গৃহবন্দি থেকেই লড়ে যাচ্ছে করোনার বিরুদ্ধে। এহেন পরিস্থিতিতে পরিবার, বন্ধু-বান্ধব, সহকর্মী সকলের সঙ্গে যোগাযোগ প্রায় বিচ্ছিন্ন বললেই চলে। কিন্তু, প্রাণ বাঁচাতে গেলে নিজেদের এইটুকু মেনে চলতেই হবে। তবে, এখনও পর্যন্ত অনেকেই সঠিকভাবে জানেন না সামাজিক দূরত্ব বা সোশ্যাল ডিস্ট্যান্স কী? করোনা প্রতিরোধের ক্ষেত্রে এর গুরুত্বই বা কতটুকু? তবে চলুন এর সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।
সোশ্যাল ডিস্ট্যান্স বা সামাজিক দূরত্ব কী?
সামাজিক দূরত্বের সংজ্ঞা বা অর্থ কিন্তু অত্যন্ত সহজ। কথায় আছে "Man can't live without bread alone", মানুষ একা খেয়ে পরে বাঁচতে পারে না, তারা সকলের সঙ্গে সুখ-দুঃখ সমানভাবে ভাগ করে নিয়ে বেঁচে থাকতে চায়। কারণ, মানুষ সামাজিক জীব। কিন্তু, করোনা ভাইরাস এই সংজ্ঞাকে একেবারে বদলে দিয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে এই সামাজিক দূরত্ব হল, স্বাস্থ্যবিধি মেনে একে অপরের থেকে নিরাপদ দূরত্বে বসবাস করা, অর্থাৎ রোগটিকে নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ করতে বাড়ির বাইরে নিজের এবং অন্যান্য ব্যক্তির মধ্যে ৬ ফুট দূরত্ব বজায় রাখা, বিশাল সমাবেশ এড়ানো এবং জনসমাগমের জায়গা থেকে দূরে থাকাই হল সোশ্যাল ডিস্ট্যান্স বা সামাজিক দূরত্ব। সামাজিক দূরত্ব-কে শারীরিক দূরত্বও বলা হয়ে থাকে।
কোভিড-১৯ যদি আপনার এলাকার মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে, তখন সেখানকার প্রত্যেকেরই উচিত বাড়ির বাইরে কোনও ব্যক্তির সঙ্গে যোগাযোগ না রাখা। নিজেদের গৃহবন্দি অবস্থায় রাখা অত্যন্ত প্রয়োজন। যেহেতু রোগের লক্ষণ প্রকাশ হওয়ার আগেই ভাইরাসটি অন্যের শরীরে ছড়িয়ে পড়ে তাই অন্যের থেকে দূরে থাকা অত্যন্ত প্রয়োজন। বিশেষ করে যারা খুব অসুস্থতায় ভোগেন তাদের জন্য সামাজিক দূরত্ব খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
আরও পড়ুন : করোনা ভাইরাস : কোয়ারান্টিনের সময় যে খাবারগুলি আপনার ওজন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করবে
করোনা প্রতিরোধের ক্ষেত্রে এর গুরুত্ব
আমরা সকলেই জানি কোনওরকম লক্ষণ ছাড়াই কোভিড -১৯, সংক্রামিত ব্যক্তির শরীর থেকে অন্যের শরীরে অনায়াসে প্রবেশ করতে পারে। মূলত দীর্ঘসময় ধরে সংক্রামিত ব্যক্তির সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগে থাকার ফলে এই ভাইরাসটি তাড়াতাড়ি ছড়িয়ে পড়ে। কারণ, সংক্রমিত ব্যক্তির কাশি বা হাঁচি থেকে নির্গত লালা রসের মাধ্যমে পাশে থাকা যেকোনও সুস্থ ব্যক্তির শরীরে এই ভাইরাসটি প্রবেশ করে। আপনি যদি কোনও ব্যক্তির থেকে ছয় ফুটের দূরত্ব বজায় রাখেন তবে ভাইরাসটি সহজেই আপনার শরীরে প্রবেশ করতে পারে না। আবার, ভাইরাস রয়েছে এমন কোন বস্তুকে স্পর্শ করলে তা থেকেও ছড়াতে পারে আপনার শরীরে। সেক্ষেত্রে নিজেকে সুরক্ষিত রাখতে সামাজিক দূরত্ব মেনে চলা অত্যন্ত প্রয়োজন। তবেই হয়তো প্রতিরোধ করতে পারবেন নোভেল করোনা ভাইরাস-কে। চিকিৎসক এবং বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ অনুযায়ী, প্রত্যেকেরই এই সময়ে নিজেদের এবং পরিবারের সুরক্ষার জন্য সোশ্যাল ডিস্ট্যান্স বা সামাজিক দূরত্ব মেনে চলা উচিত।
সামাজিক দূরত্ব মেনে চলার ক্ষেত্রে দেখে নিন কী করবেন এবং কী করবেন না।
কী করবেন
১) সামাজিক দূরত্ব মেনে চলতে নিজের বাড়িতেই থাকুন।
২) ওষুধ ও প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কিনতে গেলে নিজের বাড়ির এলাকার মধ্যে কিনুন। এলাকা ছাড়িয়ে দূরে কোথাও যাবেন না।
৩) বাইরে বেরোলেই মাস্ক ব্যবহার করুন এবং অন্য ব্যক্তির থেকে ২ মিটার (৬ ফুট) দূরত্ব বজায় রাখুন।
৪) শারীরিক কোনও সমস্যা দেখা দিলে ডাক্তার-কে ফোন করুন।
৫) বাইরে থেকে এলে সোজা বাথরুমে গিয়ে স্নান করুন অথবা নিজের জামা কাপড় পরিবর্তন করে তা ধুয়ে ফেলুন এবং হাত, পা, মুখ ভাল করে সাবান দিয়ে ধুয়ে নিন।
৬) রান্না করার আগে ও পরে, বাড়ির কোনও অসুস্থ ব্যক্তির যত্ন নেওয়ার আগে এবং পরে অ্যালকোহল যুক্ত হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করুন।
৭) কিছু কেনাকাটা বা ওষুধ কেনার ক্ষেত্রে চেষ্টা করুন অনলাইন অর্ডার করতে।
৮) কল, ভিডিও কল, টেক্সট ইত্যাদির মাধ্যমে বন্ধু পরিবার এবং সহকর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।
৯) হোম ডেলিভারির ক্ষেত্রে জিনিসগুলি-কে আপনার বাড়ির দরজায় দেখে যেতে বলুন। হাতে স্যানিটাইজার ব্যবহার করে জিনিসগুলি তুলুন।
কী করবেন না
১) পার্লারে যাওয়া বন্ধ রাখুন।
২) অত্যন্ত প্রয়োজন ছাড়া ডাক্তারের সমস্ত অ্যাপোয়েন্টমেন্টগুলি এড়িয়ে চলুন।
৩) অতিথিদের বাড়িতে প্রবেশ করতে দেবেন না।
৪) বাড়ির বাচ্চাদের বাইরে যেতে দেবেন না।
৫) বড়ো বা ছোট জমায়েত এড়িয়ে চলুন।