Just In
প্রেমিক বা প্রেমিকার সঙ্গে ব্রেকআপ হয়েছে নাকি? তাহলে সাবধানে রাখুন হার্টকে!
ইউনিভার্সিটি অব অবের্ডিনের গবেষকদের করা এই পরীক্ষায় দেখা গেছে কোনও সম্পর্ক শেষ হওয়ার সময় মানসিক চাপ এতটাই বেড়ে যায় যে ব্রোকেন হার্ট সিনড্রমে আক্রান্ত হওয়াক আশঙ্কা বৃদ্ধি পায়।
এমন এক তথ্য সামনে এসেছে, যা মজারও, আবার ভয়েরও। সম্প্রতি একটি গবেষণায় দেখা গেছে ভালবাসার সম্পর্কে ছেদ পরলে মানে ইংরেজিতে যাকে ব্রেকআপ বলে, তা ঘটলে হঠাৎ করে হার্ট অ্যাটাকের আশঙ্কা মারাত্মক বৃদ্ধি পায়। তাই সাবধান!
ইউনিভার্সিটি অব অবের্ডিনের গবেষকদের করা এই পরীক্ষায় দেখা গেছে কোনও সম্পর্ক শেষ হওয়ার সময় মানসিক চাপ এতটাই বেড়ে যায় যে ব্রোকেন হার্ট সিনড্রমে আক্রান্ত হওয়াক আশঙ্কা বৃদ্ধি পায়। কী এই ব্রকেন হার্ট সিনড্রোম? গবেষকরা জানাচ্ছেন মন ভাঙলে মানসিক চাপ হঠাৎ করে মারাত্মক বেড়ে যায়। যে কারণে হার্টের উপর এমন চাপ পরে যে হৃদপিন্ডের পক্ষে স্বাভাবিক ছন্দে কাজ করা সম্ভব হয়ে ওঠে না। ফলে স্বাভাবিকভাবেই হার্ট রেটে বৃদ্ধি পেতে শুরু করে, যা এক সময়ে গিয়ে হার্ট অ্যাটাকের আশঙ্কা কয়েক গুণ বাড়িয়ে দেয়। তাই মন ভাঙার পর হার্টের আরও বেশি করে খেয়াল রাখতে হবে। আর এই কাজটি করবেন কিভাবে?
একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে হার্ট ব্রেকের পর যদি কতগুলি নিয়ম মেনে চলা যায়, তাহলে হার্টের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা একেবারে কমে যায়। সেই সঙ্গে মনও চাঙ্গা হয়ে ওঠে। এক্ষেত্রে যে সহজ পদ্ধতিগুলি দারুনভাবে সাহায্য করে থাকে, সেগুলি হল...
১. মন খুলে হাসতে হবে:
একাধিক গবেষণা অনুসারে সম্পর্ক ভাঙার পর হার্টকে সুস্থ রাখতে হাসির কোনও বিকল্প হয় না বললেই চলে। কারণ হাসার সময় আমাদের মস্তিষ্কে ফিল গুড হরমোনের ক্ষরণ বেড়ে যায়। ফলে স্বাভাবিকভাবেই মন খারাপ দে ছুট লাগায়, সেই সঙ্গে হার্টে রক্ত প্রবাহে উন্নতি ঘটায় হৃদপিন্ড চাঙ্গা হয়ে উঠতেও সময় লাগে না। প্রসঙ্গত, সম্প্রতি হওয়া একটি গবেষণায় দেখা গেছে মাত্র ১৫ মিনিট হাসলে আমাদের শরীরের অন্দরে এমন কিছু পরিবর্তন হতে শুরু করে যে শুধু হার্ট নয়, সার্বিকভাবে দেহের সচলতাও বৃদ্ধি পায়।
২. নিয়মিত করতে হবে শরীরচর্চা:
শরীর এবং মনকে চাঙ্গা রাখতে এক্সারসাইজ বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। কারণ হাসার সময় যেমন উপকারি হরমোনের ক্ষরণ বেড়ে যায়, ঠিক তেমনি শরীরচর্চা করার সময়ও একই ঘটনা ঘটে। ফলে মন তো চনমনে হয়ে ওঠেই সেই সঙ্গে ঘামের মাধ্যমে শরীর থেকে সব টক্সিক উপাদান বেরিয়ে যাওয়ার কারণে শরীরও রোগমুক্ত হয়ে ওঠে। প্রসঙ্গত, বেশ কিছু স্টাডিতে দেখা গেছে নিয়মিত ৩০ মিনিট এক্সারসাইজ করলে ব্রেন এবং হার্টের কর্মক্ষমতা এতটা বেড়ে যায় যে আয়ু বৃদ্ধি পেতে সময়ই লাগে না।
৩.খেতে হবে পুষ্টিকর খাবার:
হার্টকে ভাল রাখতে বিশেষ কিছু খাবারের ভূমিকাকে একেবারেই অস্বীকার করা সম্ভব নয়। একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে নিয়মিত যদি মাছ, বাদাম, জাম, বিনস, পালং শাক, নানা ধরনের ফল, টমাটো এবং ব্রকলি খাওয়া যায়, তাহলে হার্টকে নিয়ে আর কোনও চিন্তাই থাকে না। কারণ এইসব পুষ্টিকর খাবারে উপস্থিত নানাবিধ উপকারি উপাদান, যেমন- ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড, বিটা-ক্যারোটিন, পটাশিয়াম, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ভিটামিন সি সহ আরও সব মিনারেল হার্টকে সুস্থ-সবল রাখতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।
৪. কোথাও থেকে ঘুরে আসতে পারেন:
মন ভাল করতে ভ্রমণের কোনও বিকল্প হয় না বললেই চলে। কারণ নতুন নতুন জায়গা ঘরলে একদিকে যেমন মন ভাল হয়ে ওঠে, তেমনি জীবনের ফোকাসটা অন্যদিকে ঘুরে যাওয়ার কারণে দুঃখ ভুলতে সময় লাগে না। আর দুঃখকে যদি একবার বাগে এনে ফেলতে পারেন, তাহলে তো আর কোনও চিন্তাই নেই।
৫. পরিবার এবং বন্ধুদের সঙ্গে সময় কাটান:
যখনই দেখবেন মনটা একেবারে ভাল যাচ্ছে না, তখনই সময় নষ্ট না করে যতটা বেশি সময় সম্ভব পরিবার এবং বন্ধুদের সঙ্গে সময় কাটানোর চেষ্টা করবেন। তাহলেই দেখবেন স্ট্রেস এবং মন খারাপ দূরে পালাতে সময় লাগবে না। আসলে পছন্দের মানুষদের সঙ্গে সময় কাটানোর সময় আমাদের মস্তিষ্কের অন্দরে এন্ডোরফিন নামক এক ধরনের হরমোনের ক্ষরণ খুব বেড়ে যায়, যা নিমেষে মন ভাল করে দিতে বিশেষ ভূমিকা নিয়ে থাকে।
৬. আবারও ভালবাসতে শুরু করুন:
একটা সম্পর্ক ভেঙে যাওয়া মানে জীবন শেষ হয়ে যাওয়া, এমন নয় কিন্তু! তাই বন্ধু দুঃখকে ভোলানোর চেষ্টা করুন। নতুনভাবে বাঁচার চেষ্টা করুন। নতুন নতুন মানুষের সঙ্গে মেলামেশা শুরু করুন। কে বলতে পারে হয়তো আরও ভাল কোনও মানুষ আপনার জন্য অপেক্ষা করে রয়েছে। এই সব শুনে যদি বলেন, "ডায়লগ মারা সোজা। করা কঠিন!" তাহলে বলবো বন্ধু সম্পর্ক হল অনেকটা চাবির মতো। আর তালা হল ভালবাসা। তাই যথক্ষণ না পর্যন্ত চাবির জরিদার, সেই সঠিক তালার সন্ধান না পাচ্ছেন, ততদিন চেষ্টা তো চলিয়ে যেতে হবেই, তাই না! আর একথা তো ভুলে গেলে চলবে না যে মন ভাঙার সঙ্গে হার্ট অ্যাটাকের গভীর সম্পর্ক রয়েছে। তাই বেঁচে থাকার তাগিদে মুভ অন করতেই হবে বন্ধু!