Just In
- 2 hrs ago আপনার সুন্দর নখ ভেঙে গিয়েছে? ভাঙা নখ ঠিক করার কিছু ঘরোয়া টোটকা
- 4 hrs ago ধূমপান ছাড়তে চান, কিন্তু পারছেন না! মৃত্য়ুর হাত থেকে বাঁচতে মেনে চলুন এই উপায়গুলি
- 6 hrs ago উচ্চ কোলেস্টেরল দূর করতে এক কাপ লবঙ্গ চা যথেষ্ট, ভাবচ্ছেন বানাবেন কীভাবে?
- 8 hrs ago ৫০ বছর পর বিরল সূর্যগ্রহণ, কোথায়, কিভাবে দেখতে পাবেন? জানুন
মাটির ভাঁড়ে চা খাওয়া কি স্বাস্থ্যকর?
বারে বারে ফুটতে ফুটতে স্বাদ হারিয়ে ফেলা চাও যেন সুস্বাদু হয়ে ওঠে মাঠির ভাঁড়ে। তাই তো বই পাড়ার রকের আড্ডায় এক হাতে কয়েক পয়সার ভাঁড়ের চা, আর অন্য হাতে সমরেশ-সুনীলের অমর সৃষ্টির মধ্যে বন্ধুত্ব হতে সময়ই লাগে না। সেই সঙ্গে এক দুটো পিঁয়াজি জুটে গেলে তো কথাই নেই! তখন তো মাটির গন্ধ মাখা চায়ের পেয়ালার প্রতিটা চুমুক যেন মন এবং শরীরে অনন্দের ঝড় তোলে। তাই না! কিন্তু প্রশ্ন হল এমন মাটির ভাঁড়ে চা খাওয়া কি নিরাপদ?
শুধু আমাদের রাজ্যে নয়, সারা উত্তর ভারতে মাটির ভাঁড়ে চা খাওয়ার রেওয়াজ রয়েছে। তাই বৃহত্তর জনস্বার্থে এ প্রশ্নের উত্তর জানাটা খুব দরকারি যে ভাঁড়ের চায়ের সঙ্গে কোনও ধরনের শারীরিক সমস্যার যোগ রয়েছে কিনা। প্রসঙ্গত, গত কয়েক দশক আগে এই প্রশ্নের উত্তর জানতে একাধিক গবেষণা শুরু হয়। তাতে যে ফল পাওয়া যায়, তা বাস্তবিকই চমকপ্রদ!
কি ছিল সেই সব রিপোর্টে? চলুন একবার নজর ফেরানো যাক।
প্লাস্টিকের কাপ মারাত্মক ক্ষতিকারক:
বিজ্ঞানীদের মতো মাটির ভাঁড়ে চা খেলে শরীরের কোনও ক্ষতিই হয় না। কিন্তু প্লাস্টিকের কাপে গরম পানীয় খাওয়া একেবারেই চলবে না। কারণ গরমের সংস্পর্শে আসার পর প্লাস্টিকের শরীরে থাকা একাধিক কেমিকেল তার খেল দেখাতে শুরু করে। পানীয়তে মিশতে থাকা এইসব কেমিকাল শরীরের পক্ষে একেবারেই ভাল নয়। কিছু ক্ষেত্রে তো এই সব রাসায়নিকের কারণে ক্যান্সার রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও বৃদ্ধি পায়। অন্যদিকে মাটির ভাঁড়ে চা খেলে এমন কোনও আশঙ্কাই থাকে না। তাই নিশ্চিন্তে মাটির পেয়ালায় চা পান চলতেই পারে।
প্লাস্টিকের কাপ আর শরীর:
গবেষণা অনুসারে প্লাস্টিকের কাপ বানাতে সাধারণত যে যে উপাদান ব্যবহার করা হয়, সেগুলি বেশি মাত্রায় শরীরে প্রবেশ করলে ক্লান্তি, হরমোনাল ইমব্যালেন্স, মস্তিষ্কের ক্ষমতা কমে যাওয়া সহ একাধিক রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই এই বিষয়ে সাবধান হওয়াটা জরুরি।
মাটির ভাঁড় পরিবেশ বান্ধব:
মাটির ভাঁড়ে চা খাওয়ার পর তা আমরা এদিক সেদিক ফেলে দিন। তাই তো! কিন্তু তাতে পরিবেশের কোনও ক্ষতি হয় না। কারণ তা ধীরে ধীরে মাটির সঙ্গে মিশে যায়। ফলে প্রাকৃতিক উপাদান দিয়ে তৈরি বানানো জিনিস প্রকৃতির কোলেই মিশে যায়। কিন্তু প্লাস্টিকের ক্ষেত্রে কিন্তু এমনটা হয় না। বরং পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট করতে শুরু করে। যার মারাত্মক প্রভাব পরে আমাদের শরীরের উপর।
স্টিলের গ্লাসে চা খাওয়া চলতে পারে কি?
বাড়িতে চলতে পারে। কিন্তু রাস্তার দোকানে স্টিলের গ্লাসে চা পান থেকে বেরত থাকতে হবে। না হলে কিন্তু বেজায় বিপদ! কারণ স্টিলের গ্লাস ভাল করে না ধুলে তাতে একাধিক ক্ষতিকর জীবাণু এসে বাসা বাঁধে, যা শরীরে প্রবেশ করা মাত্র সংক্রমণের আশঙ্কা বেড়ে যায়। শুধু তাই নয়, যে জল দিয়ে গ্লাসটা ধোয়া হচ্ছে সেই জলও যদি পরিষ্কার না হয়, তাহলেও শরীর খারাপ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। কিন্তু দেখুন মাটির ভাঁড় কখনই ধোয়ার প্রয়োজন পরে না। ফলে সংক্রমণের আশঙ্কা থাকে না বললেই চলে।
চায়ের কাপ থেকে শরীরের ক্ষয়:
অপরিষ্কার চায়ের কাপে ব্য়বহার করতে থাকলে এক সময় গিয়ে ডায়ারিয়া, স্টামাকের কর্মক্ষমতা কমে যাওয়া এবং হজমের সমস্যা হওয়ার মতো রোগ মাথা চাড়া দিয়ে উঠতে পারে। তাই যেখান-সেখান থেকে চা খাওয়ার আগে একবার দেখে নেবেন গ্লাসটা পরিষ্কার আছে কিনা। না হলে কিন্তু...
মাটির ভারের গুণের শেষ নেই:
গবেষণা বলছে মাটির কাপ বা গ্লাস প্রকৃতিতে অ্যালকালাইন। অর্থাৎ এতে কিছু পান করলে তা শরীরে প্রবেশ করা মাত্র অ্যাসিডের মাত্রা কমাতে শুরু করে। ফলে শরীর সার্বিকভাবে চাঙ্গা হয়ে ওঠে। তাই যারা গ্যাস-অম্বলে খুব ভুগে থাকেন তাদের মাটির গ্লাসে জল খাওয়ার পরামর্শ দেন চিকিৎসকেরা।
প্লাস্টিক বনাম মাটির ভাঁড়:
একটা কেমিকাল দিয়ে তৈরি। আরেকটা একেবারে প্রকৃতিক উপাদান দিয়ে। তাই বুঝতে নিশ্চয় অসুবিধা হচ্ছে না যে কোনও জিনিসটা শরীরের পক্ষে ভাল, আর কোনটা খারাপ। প্রসঙ্গত, যেমনটা আগেও আলোচনা করা হয়েছে, সাধারণত যে যে রাসায়নিক ব্য়বহার করে কম পয়সার প্লাস্টিকের কাপ তৈরি করা হয়, সেগুলি এতটাই খারাপ যে ধীরে ধীরে আমাদের আয়ু পর্যন্তও কমিয়ে দেয়। তাই সাবধান হওয়াটা জরুরি!