Just In
- 9 hrs ago ঠাকুরকে নিত্যভোগ দেওয়ার সময় ঘণ্টা বাজে কেন? জানেন কি এর পিছনের রহস্য
- 10 hrs ago প্রখর রোদ থেকে স্বস্তি পেতে বাড়িতেই বানিয়ে নিন এই শরবতগুলি, ঠান্ডা রাখবে শরীরও
- 13 hrs ago গরমে এই পানীয়গুলি খেলে আপনিও থাকবেন হাইড্রেটেড ও সতেজ
- 15 hrs ago কাঠফাটা রোদ থেকে বাঁচতে কী করবেন? এড়িয়ে চলুন চা-কফি
আপনি কি কোমরের ব্যথায় ভোগেন? অ্যানকাইলোজিং স্পন্ডিলাইটিসের শিকার নন তো?
একটু বেশি হাঁটাহাঁটি করলে কোমরে ব্যথা করছে, অনেকক্ষণ চেয়ারে বসে থাকার পর উঠতে গেলে যেন সোজা হতে পারছেন না। বেশিরভাগ সময় কোমরের এই ব্যথা আমরা গুরুত্ব দিই না। অত্যাধিক পরিশ্রম এবং খারাপ জীবনযাত্রার কারণে কোমরের কাছে ব্যথা হতে পারে। এই ধরণের ব্যথা হলে এড়িয়ে যাবেন না, আপনি অ্যানকাইলোজিং স্পন্ডিলাইটিসের শিকার হতে পারেন। ২০-র গণ্ডি পেরোলেই এই রোগ দেখা দিতে পারে। ঠিকমতো চিকিৎসা না করালে বয়স বাড়লে স্থায়ী অক্ষমতা দেখা দিতে পারে। তাই সাবধান হোন আজ থেকেই।
সম্প্রতি মহারাষ্ট্রে ১০০ জন রোগীর ওপর পরীক্ষা করা হয়েছিল। দেখা গিয়েছে, ৭০ শতাংশ রোগীর সঠিক চিকিৎসাই হয়নি। ফলে বছর তিনেকের মধ্যে তাঁদের শারীরিক অবস্থা অবনতি হয়েছে। চিকিৎসা না হওয়ার কারণ হিসাবে দেখা যাচ্ছে ব্যাক পেনকে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে গুরুত্বই দেননি রোগী। মাত্র ১২ শতাংশ মানুষ অ্যানকাইলোজিং স্পন্ডিলাইটিসের চিকিৎসা করাতে গিয়েছেন। তাই কী রোগ হয়েছে আপনার, সেটা বোঝা জরুরি।
অ্যানকাইলোজিং স্পন্ডিলাইটিসের লক্ষণ
কোমরের নীচের অংশে যন্ত্রণা, শক্ত হয়ে যাওয়া, নড়াচড়া করতে না পারা। সকালের দিকে যন্ত্রণা বেশি অনুভব হয়। অ্যানকাইলোজিং স্পন্ডিলাইটিসে ঘাড়ের যন্ত্রণা, ক্লান্তি আসাও সাধারণ লক্ষণ। যত সময় যাবে সমস্যা বাড়তে থাকে। অ্যানিমিয়া বা শরীরে আয়রনের পরিমাণ কমে গেলেও এই রোগ হতে পারে। ফুসফুসের কার্যক্ষমতা কমে যাওয়া, হালকা জ্বর, ওজন কমে যাওয়া এসবও অ্যানকাইলোজিং স্পন্ডিলাইটিসের লক্ষণ।
অ্যানকাইলোজিং স্পন্ডিলাইটিসে শরীরের যে অঙ্গগুলোয় প্রভাব পড়ে
মেরুদণ্ড ও পেলভিসের জয়েন্ট
কোমরের নীচের অংশ
টেন্ডনস ও লিগামেন্ট যেখানে হাড়ের সঙ্গে জুড়েছে, মূলত মেরুদণ্ডের জায়গায়
আপনার ব্রেস্টবোন এবং পাঁজরের মাঝের কার্টিলেজে
নিতম্ব ও কাঁধের জয়েন্টে
অ্যানকাইলোজিং স্পন্ডিলাইটিসের কারণ
জিনগত কারণে হতে পারে এই রোগ। যাঁদের শরীরে এইচএলএ-বি ২৭ নামের জিন আছে তাঁদের অ্যানকাইলোজিং স্পন্ডিলাইটিস হওয়ার সম্ভাবনা থাকে সবথেকে বেশি।
রিস্ক ফ্যাক্টর
মহিলাদের থেকে পুরুষরা অ্যানকাইলোজিং স্পন্ডিলাইটিসের শিকার হন বেশি।
দেখা গিয়েছে, তরুণদের মধ্যে এই রোগ বেশি দেখা যায়। ২০-৪০ বছরের মানুষ সবথেকে বেশি আক্রান্ত হন।
জিনগত কারণে সবথেকে বেশি এই রোগ হয়।
সমস্যা
নতুন হাড় গঠন
অ্যানকাইলোজিং স্পন্ডিলাইটিস মূলত মেরুদণ্ডের রোগ। এই রোগে নতুন হাড় গঠন হয়। নতুন হাড়টি ধীরে ধীরে মেরুদন্ডের মধ্যবর্তী ব্যবধানটি কমিয়ে দেয় এবং শেষ পর্যন্ত কশেরুকার অংশগুলিকে ফিউজ করে। মেরুদণ্ডের সেই অংশটি শক্ত হয়ে যায়। আপনার পাঁজর শক্ত হয়ে যেতে পারে, ফুসফুসের ক্ষমতা এবং কার্যকারিতা কমে যায়।
হাড় ক্ষয়ে যাওয়া
রোগের প্রাথমিক পর্যায়ে অনেকের হাড় পাতলা হয়ে যায়। দুর্বল কশেরুকা ক্ষয়ে যেতে পারে। ভার্টিব্রাল ফ্র্যাকচারগুলি চাপ তৈরি করতে পারে এবং মেরুদণ্ডের মধ্যে দিয়ে যাওয়া স্নায়ুগুলিকে আহত করতে পারে।
চোখের যন্ত্রণা
অ্যানকাইলোজিং স্পন্ডিলাইটিসে চোখের যন্ত্রণা হয়। চোখের ত্বকে ব্যথা, হালকা সংবেদনশীলতা এবং অস্পষ্ট হয়ে যায় দৃষ্টি। এই লক্ষণগুলি দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।
হৃদযন্ত্রের সমস্যা
অ্যানকাইলোজিং স্পন্ডিলাইটিস দেহের বৃহত্তম ধমনী এওর্টায় সমস্যা তৈরি করতে পারে। এওর্টা স্ফীত হয়ে গিয়ে এটি হৃৎপিণ্ডের অর্টিক ভাল্বের আকারকে বিকৃত করে, যার ফলে অর্টিক ভাল্বের ক্রিয়াকলাপে বাধা তৈরি হয়।
অ্যানকাইলোজিং স্পন্ডিলাইটিসের চিকিৎসা
এই রোগের কোনও নিরাময় না থাকলেও চিকিৎসার মাধ্যমে যন্ত্রণা কমানো যায়। সঠিক সময়ে চিকিৎসা করালে উপসর্গ কমতে শুরু করে। হাড়ের বিকৃতির মতো জটিল সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
ওষুধ
আইবুপ্রোফেন, নাপ্রোজেনের মতো ননস্টিরয়ডাল অ্যান্টি-ইনফ্লামেটরি ড্রাগস যন্ত্রণা কমাতে সাহায্য করে। এই ওষুধ কাজ না করলে চিকিৎসক আরও কড়া ডোজের ওষুধ প্রেসক্রাইব করতে পারেন।
সার্জারি
অ্যানকাইলোজিং স্পন্ডিলাইটিসের কারণে হাঁটু বা হিপ জয়েন্টের ক্ষতি হলে জয়েন্ট রিপ্লেসমেন্ট করাতে হতে পারে।
ওষুধ ছাড়াও খাওয়াদাওয়া, এক্সাসাইজের মাধ্যমেও এই রোগ সেরে যায়। মোশন এক্সাসাইজ, স্ট্রেন্থ ট্রেনিং এক্সাসাইজ জয়েন্টের শক্তি বাড়ায়, তাদের সচল করে।
গরম ও ঠান্ডা থেরাপি
গরম জলে স্নান বা গরম সেঁক দিলে হাড়ের ব্যথা কমে। আবার আইস প্যাক লাগালে জয়েন্টের সমস্যা মেটে।
ম্যাসাজ থেরাপি
সঠিক মাসাজ হাড়ের একাধিক সমস্যা দূর করে। মেরুদণ্ড, জয়েন্টগুলোকে সচল রাখতে ম্যাসাজ উপকারি।
ডায়েট
ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিডসমৃদ্ধ খাবার যেমন মাছ, বাদাম অ্যাঙ্কালসিং স্পন্ডালাইসিসের সমস্যা মেটাতে সাহায্য করে।
ফল, শাকসবজি, শস্যদানা, দইয়ের মতো খাবার খান অ্যাঙ্কালসিং স্পন্ডালাইসিস থাকলে।
এইসমস্ত নিয়মগুলো মেনে চললে অ্যাঙ্কালসিং স্পন্ডালাইসিসের সমস্যা অনেকটাই মিটবে।