Just In
কাঁঠাল খাওয়া কি আদৌ স্বাস্থ্যকর?
ফলের দুনিয়ায় সেরার শিরোপা পাওয়া এই ফলটি খেতে যেমন সুস্বাদু, তেমনি উপাদেয়ও বটে।
ফলের দুনিয়ায় সেরার শিরোপা পাওয়া এই ফলটি খেতে যেমন সুস্বাদু, তেমনি উপাদেয়ও বটে। সেই সঙ্গে ভিটামনি, মিনারেল এবং অন্যান্য উপকারি উপাদানে ঠাসা থাকার কারণে কাঁঠাল খেলে যে শরীরের কোনও ক্ষতিই হয় না, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। বরং প্রায়শই এই ফলটি যদি খাওয়া যেতে পারে, তাহলে মেলে নানান শরীরিক উপকার।
একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে "জ্যাক অব অল ফ্রট" নামে পরিচিত এই ফলটি খাওয়া শুরু করলে দেহের অন্দরে ভিটামিন এবং মিনারেলের পাশাপাশি ফাইটোনিউট্রিয়েন্ট, কার্বোহাইড্রেট, ইলেকট্রোলাইট, ফাইবার, উপকারি ফ্যাট এবং প্রোটিনের মাত্রা বাড়তে শুরু করে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই শরীরের কর্মক্ষমতা বাড়ে। সেই সঙ্গে নানাবিধ রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও হ্রাস পায়, যেমন ধরুন...
১. ত্বকের বয়স কমায়:
স্ট্রেস এবং পরিবেশ দূষণের কারণে কি ত্বকের সৌন্দর্য হারিয়ে যেতে বসেছে? সেই সঙ্গে এমনভাবে বলিরেখা প্রকাশ পয়েছে যে ত্বকের বয়সও গেছে বেড়ে? তাহলে বন্ধু আজ থেকেই কাজে লাগাতে শুরু করুন কাঁঠালকে। দেখবেন দারুন উপকার মিলবে। এক্ষেত্রে কাঁঠালের বীজকে কিছুক্ষণ জলে ভিজিয়ে রাখার পর সেটি গুঁড়ো করে মুখে লাগালে বলিরেখা তো কমবেই, সেই সঙ্গে ত্বকের হারিয়ে যাওয়া সৌন্দর্যও ফিরে আসবে। প্রসঙ্গত, টানা ৬ সপ্তাহ যদি এই ঘরোয়া টোটকাটিকে কাজে লাগাতে পারেন, তাহলে ত্বকের সৌন্দর্য নিয়ে যে আর কোনও চিন্তাই থাকবে না, সে কথা হলফ করে বলতে পারি।
২. কনস্টিপেশনের প্রকোপ কমায়:
আয়ুর্বেদ বিশেষজ্ঞদের মতে নিয়মিত কাঁঠালের বীজ খাওয়া শুরু করলে কোষ্ঠকাঠিন্যের মতো সমস্যা কমতে একেবারে সময়ই লাগে না। আসলে এই প্রাকৃতিক উপাদনটির অন্দরে মজুত রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার, যা বর্জ্যের পরিমাণ বাড়ানোর মধ্যে দিয়ে কনস্টিপেশনের মতো রোগের চিকিৎসায় বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।
৩. প্রোটিনের ঘাটতি দূর করে:
শরীরকে সচল রাখতে জলের পরেই যে উপাদানটির প্রয়োজন পরে, সেটি হল প্রোটিন। তাই তো প্রায়শই কাঁঠাল খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন চিকিৎসকেরা। কারণ এই ফলটির অন্দরে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন, যা দেহের অন্দরে এই উপাদানটির ঘাটতি মেটানোর পাশাপাশি শরীরের গঠনেও সাহায্য করে থাকে।
৪. ভিটামিন এ-এর ঘাটতি মেটায়:
ত্বক এবং চুলের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করার পাশাপাশি দৃষ্টিশক্তির উন্নতিতে এবং কোষের গঠনে এই ভিটামনটি বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। আর এই বিশেষ ভিটামিনটি প্রচুর মাত্রায় রয়েছে কাঁঠালে। তাই তো এই ফলটি খাওয়া শুরু করলে দেহের অন্দরে ভিটামিন এ-এর ঘাটতি হাওয়ার আশঙ্কা একেবারে কমে যায়। ফলে শরীরের কোনও ধরনের ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনাও কমে।
৫. রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করে তোলে:
দীর্ঘদিন সুস্থভাবে বেঁচে থাকতে চান তো? তাহলে কাঁঠাল খেতে ভুলবেন না যেন! কারণ এই ফলটির অন্দরে রয়েছে প্রচুর মাত্রায় ভিটামিন সি এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। এই দুটি উপাদান ইমিউন পাওয়ারকে এতটা বাড়িয়ে দেয় যে ছোট-বড় কোনও রোগই ধারে কাছে ঘেঁষার সুযোগই পায় না। সেই সঙ্গে কমে সংক্রমণে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও।
৬. ক্যান্সার রোগকে দূরে রাখে:
একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে কাঁঠালে উপস্থিত অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ফাইটো নিউট্রিয়েন্ট এবং ফ্লবোনয়েড রক্তে উপস্থিত টক্সিক উপাদানদের বের করে দেয়। সেই সঙ্গে শরীরকে ভিতর থেকে এতটা শক্তিশালী কোরে তোলে যে ক্যান্সার কোষ জন্ম নেওয়ার আশঙ্কা একেবারে কমে যায়। প্রসঙ্গত, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ডি এন এ-কে সুরক্ষা প্রদানের মধ্যে দিয়েও ক্যান্সারে রোগকে দূরে রাখতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।
৭.রক্তচাপকে নিয়ন্ত্রণে রাখে:
কাঁঠালে উপস্থিত পটাশিয়াম শরীরের অন্দরে প্রবেশ করার পর সোডিয়াম লেভেলকে স্বাভাবিক মাত্রায় নিয়ে আসে। ফলে রক্তচাপ কমতে একেবারেই সময় লাগে না। এই কারণেই তো ব্লাড প্রেসারে ভুগতে থাকা রোগীদের রোজের ডায়েটে দু কোয়া করে কাঁঠাল রাখার পরামর্শ দিয়ে থাকেন বিশেষজ্ঞরা। প্রসঙ্গত, শরীরে পটাশিয়ামের পরিমাণ বাড়তে শুরু করলে ইলেকট্রোলাইট ব্যালেন্স ঠিক থাকে। ফলে রক্তেচাপ তো কমেই, সেই সঙ্গে স্ট্রোক এবং হার্ট অ্যাটাকের আশঙ্কাও হ্রাস পায়।
৮.হজম ক্ষমতার উন্নতি ঘটায়:
হে খাদ্যরসিক বাঙালি এদিক-সেদিক খাওয়ার কারণে কী গ্যাস-অম্বলের মতো সমস্যা রোজের সঙ্গী হয়ে উঠেছে? তাহলে তো বেশি করে কাঁঠাল খাওয়া শুরু করতে হবে। কারণ এই ফলটির অন্দরে উপস্থিত ডায়াটারি ফাইবার, একদিকে যেমন পাকস্থলির ক্ষমতা বাড়ায়, তেমনি পাচক রসের ক্ষরণ বাড়িয়ে দেয়। ফলে হজমের উন্নতি ঘটতে সময়ই লাগে না। প্রসঙ্গত, নানাবিধ পেটের রোগের প্রকোপ কমাতেও কাঁঠালের কোনও বিকল্প হয় না বললেই চলে।