Just In
বিদেশি আক্রমণের কারণে বাড়ছে ডেঙ্গুর প্রকোপ!
গত ৬০ বছর ধরে চলা এক গবেষণার রিপোর্ট সম্প্রতি প্রকাশ করেছে একদল চিনা গবেষক। তাতে দেখা গেছে আমাদের দেশে ডেঙ্গুর প্রকোপ বৃদ্ধির পিছনে থাইল্যান্ডের মাশাদের হাত রয়েছে।
গত কয়েক বছরের তুলনায় এ বছর ডেঙ্গুর প্রকাপ মাত্রা ছাড়াবে এমনই ধারণা চিকিৎসকেদের। কারণ গত বছর এই সময় যত সংখ্যক মানুষ এই মারণ রোগের শিকার হয়েছিল, তার থেকে অনেক বেশি মানুষ এখন ডেঙ্গুর কারণে হাসপাতালে শয্যাশায়ী। আর এমন পরিস্থিতির পিছনে দায়ি বিদেশি আক্রমণ!
সেই ৭১২ বি সি-তে প্রথম ভারতের উপর আক্রমণ চালিয়েছিল বিদেশি শক্তি। সেবার সেই আক্রমণের নেতৃত্বে ছিল আফগান যোদ্ধা মহম্মদ বিন কাসিম। তার আগে আলেকজান্ডার দা গ্রেট চেষ্টা করেছিলেন বটে, তবে সেভাবে সফল হতে পারেন নি। কিন্তু মহম্মদ বিন কাসিমের পর থেকে একের পর এক আক্রমণের শিকার হতে হয়েছে ভারতবর্ষকে। আজ, এই ২০১৭ সালে হয়তো সেভাবে কোনও দেশ আক্রমণ করার সাহস পায় না ভারতকে, কারণ আমাদের দেশের ক্ষমতা এখন আকাশ ছোঁয়া। কিন্তু গবেষণা বলছে আক্রমণ চলছে এখনও। তবে কোনও দেশ এক্ষেত্রে দায়ি নয়। এর পেছনে রয়েছে মশাদের হাত। মানে! মশারা কীভাবে আক্রমণ করছে?
গত ৬০ বছর ধরে চলা এক গবেষণার রিপোর্ট সম্প্রতি প্রকাশ করেছে একদল চিনা গবেষক। তাতে দেখা গেছে আমাদের দেশে ডেঙ্গুর প্রকোপ বৃদ্ধির পিছনে থাইল্যান্ডের মাশাদের হাত রয়েছে। আসলে প্রতি বছর প্রচুর সংখ্যক ভারতীয় থাইল্যান্ড এবং তৎসংলগ্ন অঞ্চলে ঘুরতে অথবা নান কাজে এসে থাকেন। সেদেশে তাদের শরীরে প্রবেশ করা ডেঙ্গু ভাইরাস চলে আসে আমাদের দেশে। আর একবার ডেঙ্গুর ভাইরাস বহনকারি মানুষটিকে যদি একটা মাশা কামড়ে দেয় তাহলেই সব শেষ। কারণ সেই মশাটি মরার আগে পর্যন্ত আরও অনেকের শরীরে ডেঙ্গু ভাইরাস ভরে দিয়ে চলে যায়। ফলে বন্যার জলের মতোই সব বাঁধাকে উপেক্ষা করে বাড়তে শুরু করে রোগের প্রকোপ। প্রসঙ্গত, ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হলে সাধারণ জ্বর, মাথা যন্ত্রণা এবং রক্তচাপ কমে যাওয়ার মতো লক্ষণগুলি দেখা যায়। সেই সঙ্গে রোগীর শরীরে প্লেটলেট কাউন্ট চোখে পরার মতো কমে যায়। এক্ষেত্রে হাসাপাতালে ভর্তি হয়ে যথাযথ চিকিৎসা করার প্রয়োজন পরে।
প্রতি বছর সারা বিশ্বে প্রায় ৩৯০ মিলিয়ান মানুষ ডেঙ্গু রোগের শিকার হয়। বিশেষত এশিয়া মহাদেশে এই রোগের প্রকোপ গত কয়েক বছরে মারাত্মক বৃদ্ধি পয়েছে, যার পিছনে অন্যতম কারণ হল এয়ার ট্রাভেল।
চিনা গবেষকেরা কেস স্টাডিটি করাকালীন ১৯৫৬ সালের পর থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত নথি বিশ্লেষণ করেছিলেন। সেই সঙ্গে এশিয়া মহাদেশের ২০ টি দেশে থেকে সংগ্রহিত ২,২০২ রকমের ডেঙ্গু ভাইরাসের জেনেটিক সিকোয়েন্স পরীক্ষা করে দেখা হয়েছিল। এইসব পরীক্ষার পর দেখা গেছে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এক দেশ থেকে আরেক দেশে যাতায়াত যত বেড়েছে, তত এমন ধরনের রোগের প্রসার বৃদ্ধি পেয়েছে। শুধু তাই নয়, যে তিনটি ডেঙ্গু ভাইরাসে সবথেকে বেশি মানুষ আক্রান্ত হয়ে থাকেন, সেই "ডি ই এন ভি-১,২ এবং ৩" ভাইরাসগুলি এশিয়া মহাদেশে, বিশেষত চিন, কাম্বোডিয়া, ইন্দোনেশিয়া এবং সিঙ্গাপুরে ছড়িয়ে পরেছে মূলত এয়ার ট্রাভেল-এর কারণে। আর যে দেশে থেকে বেশি সংখ্যায় ডেঙ্গু ভাইরাস প্লেনে চেপে এসেছে, সেই দেশটির নাম হল থাইল্যান্ড। তাই ভারতীয়দের পাশাপাশি ডেঙ্গু কবলিত বাকি দেশের নাগরিকদের কাছে গবেষকরা অনুরোধ করেছেন যে তারা যেন থাইল্যান্ডে থাকাকালীন অতিরিক্ত সাবধান থাকেন, না হলে কিন্তু আগামী দিনে ডেঙ্গুর প্রকোপ আরও বাড়বে বই কমবে না।