Just In
দ্রুত ওজন কমাতে চান কী?
প্রতিদিন ১০০ গ্রাম তরমুজ খেলে শরীরে জলের অভাব দূর হয়, সেই সঙ্গে ফলটিতে উপস্থিত অ্যামাইনো অ্যাসিড অতিরিক্ত ফ্যাট ঝরিয়ে ফেলতেও বিশেষ ভূমিকা নেয়।
অবশেষে যুদ্ধ হেরে শেষ নিশ্বাস ত্য়াগ করলেন ইমন আহামেদ। বিশ্বের সবথেকে স্থুলকায় মানুষের তকমা পাওয়া ইমনের জীবন মোটেই সহজ ছিল না। জন্ম নিয়েছিলেন প্রায় ৮ কেজি ওজন নিয়ে। তার পর জীবন যত এগিয়েছে, তত ওজন কমার নাম তো নেয়নি, উল্টে বেড়েছে মাত্রাহীনভাবে। অবশেষে উপায় না পেয়ে কযেক মাস আগে মুম্বাইয়ে এসে ওজন কমানোর সার্জারিও করেছেন। কিন্তু শেষ রক্ষা হল না। কোলেস্টেরল, হার্টের রোগ, ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ সহ একাধিক মারণ রোগে আক্রান্ত হয়ে দুদিন আগেই আবু ধাবির এক বেসরকারি হাসপাতালে নিজের জীবনের শেষ সময়টা কাটালেন ইমন আহামেদ।
আপনি হয়তো ভাবছেন হঠাৎ করে ইমনের কথা বলছি কেন, তাই তো? আসলে ওজন বৃদ্ধি পেলে কী কী সমস্যা হতে পারে, তা জেনে নেওয়াটা একান্ত প্রয়োজন। না হলে যে কোনও সময় হয়ে যেতে পারে যে কোনও বিপদ! বলতেই পারেন, ইমনের ওজন ছিল তো ৫০০ কিলো। আর আমার তো মাত্র ৮০, তাহলে ভয় কী? আসলে কী জানেন ওজন ৫০০ হোক ১০০, শরীরে অতিরিক্ত ফ্যাট জমতে থাকলে ক্ষতি একই রকমের হয়ে থাকে। এক্ষেত্রে প্রথমেই রক্তে খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা বৃদ্ধি পায়। সেই সঙ্গে লেজুড় হয় উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস এবং সবশেষে হার্টের রোগ। শুধু তাই নয়, ওবেসিটির কারণে হঠাৎ করে হার্ট অ্যাটাক হওয়ারও আশঙ্কাও থাকে। তাই তো প্রথম থেকেই সাবধান হাওয়ার প্রয়োজন রয়েছে। না হলে কিন্তু বেজায় বিপদ!
সবই তো বুঝলাম, কিন্তু সমস্যাটা হল জিমে যাওয়ার যেসময় নেই হাতে! তাহলে উপায়! এমন পরিস্থিতির শিকার অনেকেই। ওজন বাড়ছে, তবু ৩০ মিনিট খরচ করে শরীরচর্চা করা অনেকের পক্ষেই সম্ভব হয় না। তবে চিন্তা নেই! আজ এই প্রবন্ধে ওজন কমানোর এক অন্য পদ্ধতি সম্পর্কে আলোচনা করা হবে। এক্ষেত্রে এমন কতগুলি ফলের বিষয়ে আলোচনা করবো আজ, যা প্রতিদিন খেলে ওজন তো কমবেই, সেই সঙ্গে নানাবিধ জটিল রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও হ্রাস পাবে।
প্রসঙ্গত, ওজন কমাতে সাধারণত যে যে ফলগুলি বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে, সেগুলি হল...
১. তরমুজ:
প্রতিদিন এই ফলটি মাত্র ১০০ গ্রাম করে খেলে শরীরে জলের অভাব দূর হয়, সেই সঙ্গে তরমুজে উপস্থিত অ্যামাইনো অ্যাসিড শরীরে জমে থাকা অতিরিক্ত ফ্যাট ঝরিয়ে ফেলতেও বিশেষ ভূমিকা নেয়।
২. পেয়ারা:
এতে উপস্থিত ফাইবার হজম ক্ষমতার উন্নতিতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। আর একবার হজম ঠিক মতো হতে থাকলে দেহে চর্বি জমার আশঙ্কা অনেকাংশেই হ্রাস পায়। শুধু তাই নয়, ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার খেলে অনেকক্ষণ পেট ভরে থাকে। ফলে বারে বারে খাবার খাওয়ার ইচ্ছা কমে যায়। এই কারণেও ওজন বাড়ার সম্ভাবনা কমতে থাকে। প্রসঙ্গত, পেয়ারায় উপস্থিত ফাইবার কনস্টিপেশনের মতো সমস্যা দূর করতেও দারুনভাবে সাহায্য করে থাকে।
৩. নাশপাতি:
ভিটামিন সি এবং ফাইবারে সমৃদ্ধি এই ফলটি প্রতিদিন খেলে ওজন কমতে বাধ্য। কারণ যেমনটা একটু আগেই আলোচনা করা হয়েছে যে ওজন হ্রাসে ফাইবারের বিকল্প কিছু হয় না বললেই চলে। আর ভিটামিন সি এক্ষেত্রে কী ভূমিকা নেয়? বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে শরীরে এই বিশেষ ভিটামিনটির মাত্রা বৃদ্ধি পেলে রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা মারাত্মক শক্তিশালী হয়ে ওঠে। ফলে নানাবিধ সংক্রমণে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা হ্রাস পায়।
৪. কমলা লেবু:
দিনে ১০০ গ্রাম কমলা লেবু খেলে শরীরে মাত্র ৪৭ ক্যালরির প্রবেশ ঘটে। সেই সঙ্গে ভিটামিন সি সহ আরও এমন কিছু উপকারি উপাদান দেহের অন্দরে যায়, যাদের প্রভাবে ওজন তো কমেই, সেই সঙ্গে সার্বিকভাবে শরীরও চাঙ্গা হযে ওঠে। এক কথায় ওজন কমাতে এবং নানাবিধ রোগ থেকে দূরে থাকতে কমলা লেবুর মতো সাইট্রাস ফলের সঙ্গে বন্ধুত্ব করতেই হবে।
৫. জাম:
এতে রয়েছে প্রচুর মাত্রায় অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, যা হজম ক্ষমতার উন্নতি ঘটায়। সেই সঙ্গে রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করে তুলতে, খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে এবং উচ্চ রক্তচাপকে নিয়ন্ত্রণে রাখতেও বিশেষ ভূমিকা নেয়।
৬. লিচু:
এই ফলটি খাওয়া মাত্র শরীরে অ্যাডিনোফেকটিন এবং লেপটিন নামে দুটি হরমোনের ক্ষরণ বেড়ে যায়, যা শরীরে জমে থাকা অতিরিক্ত চর্বি ঝরিয়ে ফেলতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। শুধু তাই নয়, হজম ক্ষমতার উন্নতিতেও এই দুটি হরমোন সাহায্য করে থাকে।
৭. পিচ:
এই ফলটির শরীরে মজুত রয়েছে প্রায় ৮৯ শতাংশ জল এবং প্রচুর মাত্রায় ফাইবার। যে কারণে পিচ খাওয়া মাত্র পেটটা ভরে যায়। ফলে অতিরিক্ত খাবার খাওয়ার প্রবণতা কমে যাওয়ার কারণে ওজনও কমতে শুরু করে।