Just In
নিয়মিত কাঁচা টমাটো খাওয়া উচিত কেন জানা আছে?
রান্নায় এই সবজিটির ব্যবহার বাঙালিরা প্রায়শই করেই থাকেন। কিন্তু কাঁচা টমাটো খাওয়ার অভ্য়াস সচরাচর পূর্ব ভারতে খুব একটা চোখে পরে না।
রান্নায় এই সবজিটির ব্যবহার বাঙালিরা প্রায়শই করেই থাকেন। কিন্তু কাঁচা টমাটো খাওয়ার অভ্য়াস সচরাচর পূর্ব ভারতে খুব একটা চোখে পরে না। কিন্তু একথা বলতে দ্বিধা নেই যে রান্নার পরিবর্তে যদি কাঁচা অবস্থায় নিয়মিত ২-৩ টে করে টমাটো খাওয়া যায়, তাহলে দারুন উপকার মেলে। কারণ এই সবজিটির অন্দরে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে জল, যা দেহের অন্দরে জলের ঘাটতি দূর করতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। সেই সঙ্গে রয়েছে লাইকোপেন, বিটা-ক্যারোটিন এবং ক্লোরোজেনিক অ্যাসিডের মতো উপকার উপাদান, যা নানাভাবে শরীরের উপকারে লেগে থাকে। যেমন ধরুন...
১. দৃষ্টশক্তির উন্নতি ঘটে:
টমাটোর অন্দরে থাকা ভিটামিন এ, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং বিটা-ক্যারোটিন শরীরে প্রবেশ করার পর রেটিনার কর্মক্ষমতাকে এতটা বাড়িয়ে দেয় যে দৃষ্টিশক্তির উন্নতি ঘটতে সময় লাগে না। শুধু তাই নয়, চোখ সম্পর্কিত নানাবিধ রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও কমে।
২. চুলের সৌন্দর্য বাড়ে:
চুলের ঔজ্জ্বল্য বৃদ্ধিতে ভিটামিন-এ-এর কোনও বিকল্প হয় না বললেই চলে। আর এই উপাদানটি প্রচুর মাত্রায় রয়েছে টমাটোতে। তাই দীর্ঘদিন যদি চুলকে সুন্দর রাখতে চান, তাহলে কী করণীয়, তা নিশ্চয় আর আলাদা করে বলে দিতে হবে না। প্রসঙ্গত, দৃষ্টিশক্তির উন্নতিতেও ভিটামিন-এ বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।
৩. হজম ক্ষমতার উন্নতি ঘটে:
টমাটোয় রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার। এই উপাদানটি শরীরে প্রবেশ করার পর এমন খেল দেখায় যে হজমে সহায়ক পাচক রসের ক্ষরণ বেড়ে যায়। ফলে গ্যাস-অম্বল এবং বদ-হজমের মতো সমস্যা কমতে সময় লাগে না। প্রসঙ্গত, কনস্টিপেশনের মতো রোগের প্রকোপ কমতেও ফাইবার বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।
৪. অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের ঘাটতি দূর করে:
কখনও খাবারের সঙ্গে তো কখনও অন্যভাবে আমাদের শরীরে টক্সিক উপাদানের প্রবেশ ঘটে। এই ক্ষতিকারক উপাদানগুলি যাতে শরীরের কোনও ক্ষতি করতে না পারে সেদিকে খেয়াল রাখে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। সেই সঙ্গে একাধিক রোগের হাত থেকেও রক্ষা করে। টমাটো যেহেতু অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ, তাই তো শরীরকে সুস্থ রাখতে নিয়মিত কাঁচা টমাটো খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন চিকিৎসকেরা।
৫. ত্বকের সৌন্দর্য বাড়ায়:
টমাটোয় উপস্থিত লাইকোপেন নামে একটি উপাদান ত্বকের সৌন্দর্যতা বৃদ্ধিতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। এক্ষেত্রে আরেকভাবেও এই সবজিটিকে কাজে লাগাতে পারেন। কীভাবে? ১০-১২ টা টমাটো নিয়ে ভেতরটা পরিষ্কার করে নিন। তারপর টমনাটোর স্কিনটা ভুল করে সারা মুখে কিছুক্ষণ লাগিয়ে রাখুন। ১০ মিনিট পরে ভাল করে মুখটা ধুয়ে নিন। সপ্তাহে কয়েকবার এমনভাবে ত্বকের পরিচর্যা করলে দেখবেন বলিরেখা কমতে শুর করবে। সেই সঙ্গে স্কিনের ঔজ্জ্বল্যও বৃদ্ধি পাবে।
৬. ব্লাড ক্লটের সম্ভাবনা দূর হয়:
একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে নিয়মিত কাঁচা টমাটো খাওয়া শুরু করলে রক্ত জমাট বেঁধে যাওয়ার মতো মারণ সমস্যা মাথা চাড়া দিয়ে ওঠার আশঙ্কা যায় কমে। সেই সঙ্গে হার্টের কোনও ধরনের ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনাও আর থাকে না। ফলে স্বাভাবিকভাবেই আয়ু বাড়ে চোখে পরার মতো।
৭. ধূমপানের কুপ্রভাব থেকে বাঁচায়:
টমাটোয় রয়েছে কিউমেরিক এবং ক্লোরোজেনিক অ্যাসিড, যা কার্সিনোজের প্রভাব থেকে শরীরকে রক্ষা করে। ফলে ক্যান্সার রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা হ্রাস পায়। তাই যারা একান্তই ধূমপান ছাড়তে পারছেন না, তারা দয়া করে দিনে ২-৩ টে কাঁচা টমাটো খাওয়া শুরু করুন। দেখবেন উপকার পাবেন।
৮. ক্যান্সার রোগকে দূরে রাখে:
একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে টমাটোয় উপস্থিত লাইকোপেন প্রস্টেট, কলোরেকটাল এবং স্টমাক ক্যান্সার রোধে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। আসলে লাইকোপেন হল একটি প্রাকৃতিক অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, যা কোষের বিভাজন ঠিক মতো হতে সাহায্য করে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই ক্যান্সার সেলের জন্ম নেওয়ার আশঙ্কা কমে। আর যদি একবার ক্যান্সার কোষ জন্ম নিয়েও নেয়, তাহলেও যাতে তার বৃদ্ধি দ্রুত গতিতে না হয়, সেদিকে টমাটো খেয়াল রাখে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই এই মারণ রোগ শরীরকে ক্ষয় করার সুযোগ পায় না।
৯. হার্টের কর্মক্ষমতা বাড়ায়:
টমাটোয় উপস্থিত ভিটামিন বি এবং পটাশিয়াম, শরীরে কোলেস্টেরলের মাত্রাকে নিয়ন্ত্রণে রাখে। সেই সঙ্গে রক্তচাপকে স্বাভাবিক রাখতেও বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই হার্টের ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা হ্রাস পায়। প্রসঙ্গত, যাদের পরিবারে হাই কোলেস্টেরল এবং ব্লাড প্রেসার রোগের ইতিহাস রয়েছে তারা আজ থেকেই কাঁচা টমাটো খাওয়া শুরু করুন। দেখবেন আয়ু বাড়বেই বাড়বে।
১০. হাড়কে শক্তপোক্ত করে:
ক্যালসিয়াম এবং ভিটামিন-কে সমৃদ্ধি হওয়ার কারণে হাড়ের স্বাস্থ্যের উন্নতিতে টমাটোর কোনও বিকল্প হয় না বললেই চলে। তাই তো বুড়ো বয়সে অস্টিওপোরোসিসের মতো রোগের হাত থেকে বাঁচতে এখন থেকেই টমাটো খাওয়া শুরু করুন। দেখবেন উপকার পাবেন।
১১. রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে চলে আসে:
টমাটোয় উপস্থিত মিনারেল এবং ভিটামিন শরীরে প্রবেশ করার পর শিরা-ধমনীর উপর রক্তের প্রেসার কমতে শুরু করে। ফলে ব্লাড প্রসোর নিয়ন্ত্রণে চলে আসতে সময় লাগে না। তাই তো বলি বন্ধু, এই মারণ রোগ থেকে যদি দূরে থাকতে চান, তাহলে নিয়মিত ২-৩ টে করে টমাটো খেতে ভুলবেন না যেন!