Just In
পুজোর আগে উজ্জ্বল ত্বক পেতে ১০টি ঘরোয়া টোটকা!
কথায় বলে মধুরেণ সমাপয়েত। তা সমাপ্তি কেন, দিনের শুরুতেও মধু সমান জাদুকরি। খাঁটি মধু খেলে বা ত্বকে লাগালে জাদুর মতোই কাজ করে।
পুজো তো চলেই এলো। জামাকাপড়ও নিশ্চয়ই ঠিক করা আছে। প্রসাধনী সামগ্রীতে কারও কারাও আলমারি নিশ্চয় ভরে গেছে। শীতের শুরুর অনেক আগেই, শরতের প্রাক্কালে বাতাসে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ কমে আসে। এই সময় জামা কাপড় যেমন খুব তাড়াতাড়ি শুকোয়, ঠিক তেমনই ত্বকও শুকিয়ে খসখস হয়ে যায়। বিশেষত, যাদের ত্বক শুষ্ক, তাঁদের ক্ষেত্রে তো বেশি করে টান ধরে স্কিনে। আর যারা নিয়মিত ত্বকের যত্ন নেন না, তাঁদের ত্বকের কথা তো ছেড়েই দিন। এক্ষেত্রে কারও কারও চামড়া উজ্জ্বলতা হারিয়ে সাদা সাদা দাগে ভরে যায়। আবার যাদের ত্বক কিছুটা তৈলাক্ত, আপাত দৃষ্টিতে তাঁদের ত্বক মসৃণ ও জেল্লাদার মনে হলেও একটু ঠাণ্ডা পড়লেই ত্বকে টান ধরে। তাই সব ধরণের ত্বকের জন্য আর্দ্রতা ও পুষ্টি খুবই জরুরি জিনিস।
এবার আপনার অবশ্যম্ভাবী প্রশ্ন হবে, "আর্দ্রতা আর পুষ্টি, দুটোই তো শুনি দরকারি। কিন্তু এদের মধ্যে পার্থক্যটা কি মশাই?" উদাহরণ দিতে আমিও তবে একটা প্রশ্ন করি। কোনটা বেঁছে নেবেন? সুপার মার্কেটের ডীপ ফ্রিজারে প্যাকেট করা জমানো মাছের টুকরো, নাকি সদ্য কাটা তাজা ইলিশ। উত্তরটা জানা। বিজ্ঞানের এই যুগে আজও তরতাজা জিনিসের কোনও বিকল্প হয় না, তা সে খাবারই হোক বা প্রসাধনী।
আপনার পরের প্রশ্নগুলোও আশা করছিলাম বটে। যেমন, ত্বকের জন্য পুষ্টিকর প্রাকৃতিক জিনিসগুলো কি কি? এরা কি শুধু বাইরে থেকে ত্বকের আর্দ্রতা বাড়ায়, নাকি ভেতর থেকেও পুষ্টি যোগায়? দ্বিতীয় প্রশ্নের উত্তর হল অবশ্যই হ্যাঁ। ত্বকের জন্য দারুণ উপকারি নানা প্রাকৃতিক উপাদান বাইরে ও ভেতর দুদিক দিয়েই আমাদের ত্বককে লালন-পালন করে, বাড়ায় পেলবতা, করে স্বাস্থ্যজ্জ্বল। তা, বোল্ডস্কাই-এর এই প্রতিবেদন থেকে আসুন জেনে নিই না প্রকৃতির এই অসম্ভব উপকারি উপাদানগুলো সম্পর্কে।
১. মধু:
কথায় বলে মধুরেণ সমাপয়েত। তা সমাপ্তি কেন, দিনের শুরুতেও মধু সমান জাদুকরি। খাঁটি মধু খেলে বা ত্বকে লাগালে জাদুর মতোই কাজ করে। শুকনো ত্বক যাদের, তাঁরা এক চা চামচ মধু চামড়ায় মালিশ করুন। ১০ মিনিট পর ধুয়ে নিন, দেখবেন ত্বক নরম ও জেল্লাদার হবে।
২. ফিগ:
ফিগ একটি ডুমুর জাতীয় ফল। দুটি ফিগ নিয়ে বেঁটে নিন। এবার খুব অল্প দুধের সঙ্গে মিশিয়ে নিন। ১ থেকে ২ মিনিট মুখে হালকা করে মালিশ করুন। এরপর জল দিয়ে ধুয়ে, তোয়ালে দিয়ে মুছে নিন।
৩. দুধ:
ত্বক নরম এবং ভাল রাখাই শুধু নয়, রোদে পোড়ার দাগ দূর করতেও দুধের জুড়ি মেলা ভার। প্রতিদিন দুবার করে ফুল ফ্যাট দুধ দিয়ে মুখ ধুলে অথবা এক বাটি ঠাণ্ডা দুধের ঝাপটা দিয়ে তোয়ালে দিয়ে মুখ পরিষ্কার করলে দারুন উপকার পাওয়া যায়।
৪. অ্যাভোকাডো:
এই ফলটি ত্বকের জন্য খুবই উফকারি। এক্ষেত্রে একটি অ্যাভোকাডো বেঁটে নিয়ে ত্বকে লাগাতে হবে। তারপর কমপক্ষে ১৫ মিনিট অপেক্ষা করার পর দুধ এবং জল দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলতে হবে।
৫. কলা:
একটি পাকা কলা পিষে মুখে কিছুক্ষণ মালিশ করুন। এতে অতিরিক্ত শুষ্ক ত্বকের সমস্যা থেকে ছুটি মিলবে। সেই সঙ্গে স্কিনের জেল্লাও বাড়বে।
৬. বাদাম:
বাদাম তেল অথবা বাদাম পিষে, যে কোনও আকারে ব্যবহার করলেই ত্বকে ভিটামিন- ই-এর প্রবেশ ঘটবে। ফলে অতিরিক্ত শুষ্ক হয়ে যাওয়া ত্বক তরতাজা হয়ে উঠবে। তাহলে কী করবেন প্রথমে? কাঠবাদাম তেল মুখে মালিশ করে নিতে হবে। এরপর ১০টি কাঠবাদাম অল্প দুধের সঙ্গে বেঁটে হালকা করে মুখে মালিশ করতে হবে। এরপর কিছুক্ষণ অপেক্ষা করে দুধ এবং জল দিয়ে মুখ ধুয়ে নিতে হবে। এতে ত্বকে অকালবার্ধক্য আসতে বাধাপ্রাপ্ত হবে এবং ত্বক থাকবে চিরনতুন।
৭. অলিভ:
অলিভে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন উপস্থিত থাকে। তিন থেকে চারটি অলিভ বেঁটে নিয়ে মুখে মাখুন এবং না শোকানো পর্যন্ত রেখে দিন। এরপর ঠাণ্ডা জল দিয়ে মুখ ধুয়ে ভাল করে মুছে নিন। এতে ত্বকের পিএইচ ব্যালান্স সঠিক থাকবে এবং সৌন্দর্যও মারাত্মক রকম বৃদ্ধি পাবে।
৮. পেঁপে:
ত্বকের যত্নে পেঁপের জুড়ি মেলা ভার। পাকা পেঁপে বেঁটে মুখে পাঁচ মিনিট মালিশ করলে খুবই উপকার পাওয়া যায়। এক্ষেত্রে পেঁপে মাখার পর প্রথমে দুধ দিয়ে এবং পরে জল দিয়ে মুখ ধুয়ে নিতে হবে। এমনটা করলে ত্বকের পরিবর্তন হবে চোখে পরার মতো।
৯. চিনি:
মোটা হয়ে যাবেন এই ভয়ে না হয় চিনি এড়িয়ে চলছেন, কিন্তু ত্বকের যত্নে তো একে কাজে লাগাতেই পারেন। কারণ শুষ্ক ত্বকের সমস্যা মেটাতে চিনি দারুণ কাজ দেয়। এক চা চামচ চিনি, এক চা চামচ দুধের সর বা মালাইয়ের সঙ্গে মিশিয়ে হালকা করে মুখে ম্যাসাজ করুন। দুধের বদলে দইও ব্যবহার করতে পারেন। এরপর দশ মিনিট রেখে দিয়ে ঠাণ্ডা জল দিয়ে ধুয়ে নিন। এমনটা কয়েকদিন করলে ফারাকটা আপনি নিজেই বুঝে যাবেন।
১০. অ্যালোভেরা:
অ্যালোভেরা হল এমন একটি গাছ, যা বাগান, টব, ছাদ- যে কোনও জায়গায় লাগালেই বড় হতে থাকে। অ্যালোভেরা জেল শুষ্ক ত্বক এবং উজ্জ্বলহীন ত্বকের সমস্যায় খুবই উপকার করে। একটি পাতা থেকে জেল বের করে মুখে মেখে নিন। ১০ মিনিট রেখে জল দিয়ে ধুয়ে পরিষ্কার করে নিন। এমনটা করলে ত্বকের যে কোনও সমস্যা উধাও হতে সময় লাগবে না।