Just In
ফেসিয়াল হেয়ারের মতো সমস্যা কমাতে কাজে লাগাতে পারেন এই ঘরোয়া পদ্ধতিগুলিকে!
এই লেখায় এমন কিছু ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে আলোচনা করা হল, যাদেরকে কাজে লাগিয়ে মুখমন্ডলে গজিয়ে ওঠা চুলকে সহজেই ঝরিয়ে ফেলা সম্ভব হবে। সেই সঙ্গে ত্বকের স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটে।
এই রোগে ছেলেদের মতো মেয়েদের মুখেও দাড়ি-গোঁফ গজাতে শুরু করে। ফলে লোকসমাজে অপ্রিতিকর পরিস্থিতির সম্মুখিন তো হতে হয়ই, সেই সঙ্গে সৌন্দর্যও কমে চোখে পরার মতো। শুধু কী তাই, অনেকে মহিলা তো এই কারণে মানসিক অবসাদেও ভুগতে শুরু করেন। ফলে শরীরের উপর এত খারাপ প্রভাব পরে যে আয়ু কমে চোখে পরার মতো।
একই ধরনের শারীরিক ক্ষতি যাতে আপনাদের না হয়, তা সুনিশ্চিত করতেই এই প্রবন্ধটি লেখার সিদ্ধান্ত নেওয়া। এই লেখায় এমন কিছু ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে আলোচনা করা হল, যাদেরকে কাজে লাগিয়ে মুখমন্ডলে গজিয়ে ওঠা চুলকে সহজেই ঝরিয়ে ফেলা সম্ভব হবে। সেই সঙ্গে ত্বকের স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটার কারণে সৌন্দর্য বাড়বে চোখে পরার মতো। তাই তো বলি বন্ধু ফসিয়াল হেয়ারের কারণে যদি চিন্তায় থাকেন, তাহলে এই প্রবন্ধটিতে চোখে রাখতে ভুলবেন না যেন!
প্রসঙ্গত, মুখে অস্বাভাবিক হেয়ার গ্রোথকে চিকিৎসা পরিভাষায় "হির্সুটিজম" বলা হয়ে থাকে। বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে মেয়েদের শরীরের অন্দরে বেশি পরিবর্তন হতে শুরু করলে, বিশেষত ইস্ট্রোজেন হরমোনের ক্ষরণ ঠিক মতো না হলে মুখের পাশাপাশি সারা শরীরে চুলের মাত্রা বাড়তে শুরু করে। এক্ষেত্রে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই কিছু করার থাকে না। তবে এই লেখায় যে যে ঘরোয়া চিকিৎসাগুলি সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে, সেগুলিকে যদি কাজে লাগানে যায়, তাহলে কিন্তু দারুন উপকার পাওয়া যায়। এক্ষেত্রে যে যে উপাদানগুলি বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে, সেগুলি হল...
১. চিনি:
একেবারেই ঠিক শুনেছেন! চিনিকে কাজে লাগিয়ে বানানো ফেসিয়াল মাস্ককে কাজে লাগিয়ে বাস্তবিকই ফেসিয়াল হেয়ারের সমস্যা থেকে নিস্তার পাওয়া সম্ভব। এক্ষেত্রে ২ চামচ চিনির সঙ্গে ১ চামচ মধু এবং জল মিশিয়ে নিতে হবে। তারপর মিশ্রনটি এক এক মিনিট ফুটিয়ে নিতে হবে। সময় হয়ে গেলে মিশ্রনটি ঠান্ডা করে মুখের যেখানে যেখানে চুল গড়িয়ে উঠেছে, সেখানে লাগাতে হবে। এবার পরিষ্কার একটা কাপড় ওই মিশ্রনটি যেখানে যেখানে লাগিয়েছেন, সেখানে লাগিয়ে জোরে টেনে চুলগুলি উপড়ে ফেলতে হবে। এইভাবে সারা মুখের অবাঞ্চিত চুলকে ঝড়িয়ে ফললেই দেখবেন সৌন্দর্য বাড়বে চোখে পরার মতো!
২. ময়দা:
এই উপাদানটিকে কাজে লাগিয়ে বানানো ফেসপ্যাক নিয়মিত মুকে লাগালে ত্বকের উপরিঅংশে জমতে থাকা মৃত কোষের আবরণ সরে যায়। সেই সঙ্গে ফেসিয়াল হেয়ারও ঝরে যেতে শুরু করে। ফলে ত্বক উজ্জ্বল এবং প্রাণবন্ত হয়ে উঠতে সময় লাগে না। এখন প্রশ্ন হল ময়দাকে কাজে লাগিয়ে কীভাবে বানাতে হবে ফেসমাস্কটি? এক্ষেত্রে ২ চামচ ময়দার সঙ্গে ১ চামচ দুধের সর, হাফ চামচ দুধ এবং অল্প পরিমাণে হলুদ মিশিয়ে নিতে হবে। এরপর সবকটি উপাদান একসঙ্গে মিশিয়ে বানিয়ে ফেলতে হবে একটি পেস্ট। এবার সেই মিশ্রনটি মুখ লাগিয়ে কম করে ২০ মিনিট অপেক্ষা করে হলকা গরম জল দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে মুখটা। এইভাবে সপ্তাহে ৩-৪ বার যদি ত্বকের পরিচর্যা করতে পারেন, তাহলেই দেখবেন কেল্লা ফতে!
৩.ময়দা এবং গোলাপ জল:
ফসিয়াল হেয়ারকে ঝরিয়ে ফেলতে এই দুই প্রকৃতিক উপাদানের কোনও বিকল্প নেই বললেই চলে। তবে এক্ষেত্রে জেনে রাখা ভাল যে এই ফেসপ্যাকটি মুখে লাগাতে শুরু করলে যে শুধু অযাচিত চুল ঝরে যায়, তা নয়। সেই সঙ্গে ত্বকের অন্দরে পুষ্টির ঘাটতি দূর হয়। ফলে মুখের সৌন্দর্যতা বৃদ্ধি পেতে সময় লাগে না। শুধু তাই নয়, ব্রণ এবং অ্যাকনের মতো ত্বকের রোগের প্রকোপ কমতেও সময় লাগে না। প্রসঙ্গত, এই ফেসপ্যাকটি বানাতে প্রয়োজন পরবে দেড় চামচ গোলপ জল এবং ২ চামচ ময়দার। এই দুটি উপাদান পরিমাণ মতো মিশিয়ে নেওয়ার পর তাতে ১ চামচ লেবুর রস মিশিয়ে বানিয়ে ফেলতে হবে একটি পেস্ট। এবার সেই পেস্টটা সারা মুখে লাগিয়ে ২০-২৫ মিনিট অপেক্ষা করতে হবে। সময় হয়ে গেলে ঠান্ডা জল দিয়ে ধুয়ে ফলতে হবে পেস্টটা। প্রসঙ্গত, সপ্তাহে কম করে ৪ বার এই ফেসপ্যাকটি লাগালে দেখবেন দারুন উপকার মিলবে।
৪. পুদিনা চা:
বেশ কিছু স্টাডিতে দেখা গেছে দেহের অন্দরে হরমোনাল ইমব্যালেন্স দেখা দিলেই মূলত মুখে চুল গজিয়ে ওঠার সমস্যা মাথা চাড়া দিয়ে ওঠে। তাই তো কোনওভাবে যদি হরমোনের ক্ষরণকে ঠিক রাখা যায়, তাহলে ফেসিয়াল হেয়ারের মতো সমস্যা ধারে কাছেও ঘেঁষতে পারে না। আর এই কাজটি করবেন কীভাবে? এক্ষেত্রে নিয়মিত পুদিনা পাতা দিয়ে বানানো চা খেতে হবে, তাহলেই দেখবেন কেল্লা ফতে!
৫. লেবুর রস এবং মধু:
এই দুই প্রাকৃতিক উপাদান দিয়ে তৈরি ফেসিয়াল মাস্ক একদিকে যেমন ত্বকের উপরে জমে থাকা মৃত কোষেদের ধুয়ে ফেলে, তেমনি অতিরিক্ত চুল ঝরে যেতেও সময় নেয় না। শুধু তাই নয়, মধুতে উপস্থিত অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল এবং অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদান নানাবিধ ত্বকের রোগকে দূরে রাখতেও বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। এখন প্রশ্ন হল, এই ফেসিয়াল মাস্কটি বানাবেন কীভাবে? এক্ষেত্রে ১ চামচ লেবুর রসের সঙ্গে ৪ চামচ মধু মিশিয়ে নিতে হবে। এরপর সেই মিশ্রনটি মুখে লাগিয়ে কম করে ১৫-২০ মিনিট অপেক্ষা করতে হবে। সময় হয়ে গেলে একটা পরিষ্কার কাপড় গরম জলে চুবিয়ে ধীরে ধীরে মুখটা ধুয়ে ফেলতে হবে। এইভাবে সপ্তাহে ২ বার ত্বকের পরিচর্যা করলেই দেখবেন একটাও ফসিয়াল হেয়ারকে খুঁজে পাওয়া যাবে না।
৬. ডিম, চিনি এবং ময়দা:
ফেসিয়াল হেয়ারকে চটজলদি ঝরিয়ে ফেলতে এই ফেসিয়াল মাস্কটির কোনও বিকল্প হয় না বললেই চলে। এক্ষেত্রে একটা ডিমের কুসুমের সঙ্গে ১ চামচ চিনি এবং দেড় চামচ ময়দা মিশিয়ে একটা পেস্ট বানিয়ে নিন। তারপর মিশ্রনটি মুখে লাগিয়ে ১৫-২০ মিনিট অপেক্ষা করুন। যখন দেখবেন পেস্টটা শুকিয়ে যেতে শুরু করেছে, তখন ঠান্ডা জল দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে মুখটা।