Just In
বিটের রসকে কাজে লাগিয়ে যে ত্বকের সৌন্দর্য বাড়ানো সম্ভব সে সম্পর্কে জানা আছে কি?
৫৮ ক্যালরি, ১৩ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট, ২ গ্রাম প্রোটিন, সেই সঙ্গে ভিটামিন এ, ক্যালসিয়াম, ভিটামনি সি এবং আয়রনে পরিপূর্ণ এই সবজিটিকে যদি ঠিক ঠিক নিয়ম মেনে কাজে লাগানো যায়, তাহলে ত্বক সুন্দরি হয়ে ওঠে।
৫৮ ক্যালরি, ১৩ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট, ২ গ্রাম প্রোটিন, সেই সঙ্গে ভিটামিন এ, ক্যালসিয়াম, ভিটামনি সি এবং আয়রনে পরিপূর্ণ এই সবজিটিকে যদি ঠিক ঠিক নিয়ম মেনে কাজে লাগানো যায়, তাহলে অপরূপ সুন্দরি হয়ে উঠতে সময়ই লাগে না। কারণ বিটের অন্দরে থাকা প্রতিটি উপাদান কোনও না কোনও ভাবে ত্বকের স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটিয়ে থাকে। আর একবার ত্বকের অন্দরে পুষ্টির ঘাটতি দূর হলে স্কিন টোনের উন্নতি ঘটতে যেমন সময় লাগে না, তেমনি সৌন্দর্যও বাড়ে চোখে পরার মতো।
প্রসঙ্গত, বিটের রস যে কেবল ত্বকের সৌন্দর্য বাড়াতেই কাজে লাগে, এমন নয়। নিয়মিত যদি এই সবজিটি খাওয়া যেতে পারে, তাহলে একাধিক শারীরিক উপকারও পাওয়া যায়। যেমন ধরুন লিভার ফাংশনের উন্নতি ঘটে, অ্যানিমিয়ার মতো রোগের প্রকোপ কমে, দেহের অন্দরে প্রদাহের মাত্রা কমে, শরীরে জমতে থাকা বিষের মাত্রা কমায়, রক্তচাপকে নিয়ন্ত্রণে রাখে এবং আর্থ্রাইটিসের মতো রোগের প্রকোপ কমায়। তাই বুঝতে নিশ্চয় অসুবিধা হচ্ছে না যে বিট খাওয়া শুরু করলে এক নয়, একাধিক উপকার পাওয়া যায়। তাই সুস্থ শরীর এবং সুন্দর ত্বকের অধিকারি হয়ে উঠতে যদি চান, তাহলে বিটের সঙ্গে বন্ধুত্ব পাতাতে ভুলবেন না যেন!
এখন প্রশ্ন হল বিটের রসকে ব্যবহার করে ত্বকের পরিচর্যা করলে কী কী উপকার পাওয়া যায়?
১.ত্বকের বয়স কমে:
একাধিক সমীক্ষায় দেখা গেছে স্ট্রেস এবং পরিবেশ দূষণের কারণে অসময়েই ত্বক বুড়িয়ে যাওয়ার ঘটনা ক্রমশ বাড়ছে। ফলে কম বয়সেই ত্বক হারিয়ে ফেলছে তার সৌন্দর্য, সেই সঙ্গে বলিরেখায় ছেয়ে যাচ্ছে সারা মুখ! এমন পরিস্থিতির শিকার যদি আপনিও হয়ে থাকেন, তাহলে আজ থেকেই বিটের রসের সাহায্যে ত্বকের পরিচর্যা শুরু করুন। দেখবেন ত্বকের বয়স কমতে সময় লাগবে না। এক্ষেত্রে বিটকে ছোট ছোট টুকরো করে মিক্সিতে ফেলে জুস বানিয়ে নিতে হবে। এরপর তুলোর সাহায্যে সেই জুস ধীরে ধীরে সারা মুখে লাগিয়ে কম করে ১০ মিনিট অপেক্ষা করতে হবে। সময় হয়ে গেলে ভাল করে ধুয়ে ফেলতে হবে সারা মুখ। প্রসঙ্গত, সপ্তাহে একবার এইভাবে ত্বকের পরিচর্যা করলেই সুফল মিলতে শুরু করবে।
২. ত্বকের দাগ মেটায়:
নানা কারণে অনেক সময়ই সারা মুখে কালো ছোপ ছোপ দাগে ছেয়ে যায়। ফলে স্বাভাবিকভাবেই সৈন্দর্য কমতে সময় লাগে না। এক্ষেত্রেও যদি বিটের রসকে ঠিক ঠিক নিয়ম মেনে কাজে লাগানো যায়, তাহলে অল্প সময়ে দাগ মিলিয়ে যেতে সময় লাগে না। এখন প্রশ্ন হল, এমন ধরনের ত্বকের সমস্যা কমাতে কীভাবে ব্যবহার করতে হবে বিটের রসকে? প্রথমে পরিমাণ মতো বিটের রস বানিয়ে নিতে হবে। তারপর সেই রস ভাল করে সারা মুখে লাগিয়ে কিছু সময় অপেক্ষা করতে হবে। সময় হয়ে গেলে হালকা গরম জলে ধুয়ে ফেলতে হবে সারা মুখ। প্রসঙ্গত, বিটের রসে উপস্থিত ভিটামিন সি এক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। আসলে ত্বকের অন্দরে এই ভিটামিনটির মাত্রা যত বাড়তে শুরু করে, তত টক্সিক উপাদানেরা বেরিয়ে যেতে শুরু করে, সেই সঙ্গে কোলাজেনের উৎপাদনও বেড়ে যায়। ফলে দাগ মিলিয়ে গিয়ে ত্বক উজ্জ্বল হয়ে উঠতে সময় লাগে না।
৩. ত্বকের হারিয়ে যাওয়া আদ্রতা ফিরে আসে:
অনেক কারণেই আমাদের ত্বক আদ্রতা হারিয়ে ফেলতে পারে। এমনটা হলে তৎক্ষনাত যদি ব্যবস্থা নেওয়া না যায়, তাহলে বলিরেখা প্রকাশ পেতে শুরু করে। সেই সঙ্গে দ্রুত সৌন্দর্য কমে যেতেও সময় লাগে না। এখন প্রশ্ন হল, কীভাবে ত্বকের ড্রাইনেস কমানো সম্ভব? এক্ষেত্রে নিয়মিত বিট রুটের সাহায্যে ত্বকের পরিচর্যা করা শুরু করুন। দেখবেন স্কিনের হারিয়ে যাওয়া আদ্রতা ফিরে আসতে সময় লাগবে না। সেই সঙ্গে ত্বক তুলতুলে এবং নরম হয়ে উঠবে।
৪. মৃত ত্বকের স্থর সরিয়ে ফেলে:
প্রতিনিয়ত মৃত কোষেরা ত্বকের উপরিঅংশে জমতে থাকে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই ত্বকের ছিদ্র বন্ধ হয়ে গিয়ে একদিকে যেমন নানাবিধ স্কিন ডিজিজে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বৃদ্ধি পায়, তেমনি ত্বকের সৌন্দর্য কমে যেতেও সময় লাগে না। আপনি যদি একই ধরনের সমস্যার শিকার হতে না চান, তাহলে আজ থেকেই ত্বকের পরিচার্যায় বিটকে কাজে লাগান। দেখবেন হাতে-নাতে ফল পাবেন। কারণ বিটের রসের অন্দরে থাকা একাধিক উপাকারি উপাদান ত্বকের উপরে জমতে থাকা মৃত কোষের আবরণকে সরিয়ে ফেলে। ফলে ত্বক উজ্জ্বল এবং প্রাণবন্ত হয়ে উঠতে সময় লাগে না।
৫. চুলের সৈন্দর্য বৃদ্ধি পায়:
শুধু ত্বকের সৌন্দর্য বাড়াতে নয়, চুলের স্বাস্থ্যের উন্নতিতেও এই প্রকৃতিক উপাদানটি বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। এক্ষেত্রেও নিয়মিত বিটের রস দিয়ে নিয়মিত চুল ধুতে হবে। এমনটা করলে স্কাল্পের অন্দরে পটাশিয়ামের মাত্রা বৃদ্ধি পেতে শুরু করবে। ফলে মাত্রাতিরিক্ত হারে চুল ঝরে পড়ার আশঙ্কা কমবে। সেই সঙ্গে মিলবে আরও অনেক উপকার।
৬. ফর্সা ত্বক পেতে সাহায্য করবে:
চটজলদি স্কিন টোনের উন্নতি ঘটাতে চান নাকি? তাহলে ১ চামচ বিটের রসের সঙ্গে ১ চামচ লেবুর রস মিশিয়ে একটি মিশ্রন বানিয়ে ফেলুন। তারপর সেই মিশ্রনটি ভাল করে ত্বকে লাগিয়ে ১৫ মিনিট অপেক্ষা করুন। সময় হয়ে গেলে ঠান্ডা জল দিয়ে ভাল করে মুখটা ধুয়ে ফেলুন। এইভাবে যদি প্রতিদিন রাত্রে শুতে যাওয়ার আগে ত্বকের খেয়াল রাখতে পারেন, তাহলে ফর্সা ত্বক পাওয়ার স্বপ্ন পূরণ হতে দেখবেন সময় লাগবে না।
৭. ব্রণর প্রকোপ কমায়:
বয়ঃসন্ধিকালে ব্রণ সমস্যা হওয়াটা খুবই স্বাভাবিক ঘটনা। কিন্তু আপনি যদি বিটের সঙ্গে বন্ধুত্ব পাতান, তাহলে এমন ধরনের ত্বকের রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা একেবারেই কম যায়। এক্ষেত্রে ২ চামচ বিটের রসের সঙ্গে ১ চামচ দই মিশিয়ে একটি পেস্ট বানিয়ে নিতে হবে। এই পেস্টটি নিয়মিত মুখে লাগালে ব্রণর প্রকোপ তো কমবেই, সেই সঙ্গে ব্রণর দাগ মিলিয়ে যেতেও সময় লাগবে না।