Just In
- 12 hrs ago ঠাকুরকে নিত্যভোগ দেওয়ার সময় ঘণ্টা বাজে কেন? জানেন কি এর পিছনের রহস্য
- 14 hrs ago প্রখর রোদ থেকে স্বস্তি পেতে বাড়িতেই বানিয়ে নিন এই শরবতগুলি, ঠান্ডা রাখবে শরীরও
- 16 hrs ago গরমে এই পানীয়গুলি খেলে আপনিও থাকবেন হাইড্রেটেড ও সতেজ
- 18 hrs ago কাঠফাটা রোদ থেকে বাঁচতে কী করবেন? এড়িয়ে চলুন চা-কফি
মা দুর্গায় নমহ: মায়ের মূর্তি বা ছবি বাড়িতে রাখার সময় কী কী নিয়ম মেনে চলা উচিত জানা আছে?
আপনার বাড়িতে মা দূর্গা, কালী অথবা দেবীর আর কোনও রূপের ছবি বা মূর্তি যদি থাকে তাহলে এই প্রবন্ধে চোখ রাখতে ভুলবেন না যেন!
প্রতি শুক্রবার দুর্গা মন্ত্র জপ করার মধ্যে দিয়ে দেবীর আরাধনা করলে যে নানা উপকার পাওয়া যায়, সে সম্পর্কে নিশ্চয় আপনাদের সবারই জানা আছে। কিন্তু ঠাকুর ঘরের ঠিক কোন স্থানে মায়ের মূর্তি বা ছবি রাখা উচিত, সে সম্পর্কে মনে হয় অনেকেই খোঁজ রাখেন না। তাই তো বলি বন্ধু, আপনার বাড়িতে মা দূর্গা, কালী অথবা দেবীর আর কোনও রূপের ছবি বা মূর্তি যদি থাকে তাহলে এই প্রবন্ধে চোখ রাখতে ভুলবেন না যেন!
হিন্দু ধর্মের আধার হিসেবে যে বইগুলিকে চিহ্নিত করা হয়ে থাকে, সেগুলিতে এমনটা দাবি করা হয়েছে যে প্রতি শুক্রবার মায়ের অরাধনা করলে নানাবিধ উপকার পাওয়ার পথ প্রশস্ত হয়, যেমন ধরুন: রোগ-ব্যাধি দূরে পালায়, পরিবারে সুখ-শান্তি বজায় থাকে, অর্থনৈতিক উন্নতির পথ প্রশস্ত হয়, যে কোনও সমস্যা মিটে যায়, কর্মক্ষেত্রে চরম উন্নতির লাভের সম্ভাবনা বাড়ে এবং গ্রহ দোষ কেটে যেতেও সময় লাগে না। তবে এই সব উপকার তখনই মিলবে, যখন ঠিক ঠিক বাস্তু নিয়ম মেনে মায়ের আসন পাতা হবে। তাহলে আর অপেক্ষা কেন বন্ধু, চলুন জেনে নেওয়া যাক দুর্গা মূর্তি স্থাপনের নানা বাস্তু নিয়ম সম্পর্কে...
১. দিক নির্ধারণ:
বাস্তু শাস্ত্র অনুসারে বাড়ির যে কোনও জায়গায় দুর্গা মূর্তি স্থাপন করা যায় না। বরং এক্ষেত্রে একটি জিনিস খেয়াল রাখা এতান্ত প্রয়োজন, তা হল বাস্তুশাস্ত্র অনুসারে মায়ের মূর্তি রাখার আদর্শ জায়গা হল হল দক্ষিণ-পূর্ব দিক, নয়তো দক্ষিণ দিক। আসলে এমনটা বিশ্বাস করা হয় যে বাড়ির এই নির্দিষ্ট দিকে দেবীকে স্থাপন করলে সারা গৃহস্থে পজেটিভ শক্তির বিকাশ ঘটে। ফলে হারিয়ে যাওয়া মানসিক শান্তি ফিরে আসতে যেমন সময় লাগে না, তেমনি স্ট্রেস এবং মানসিক অবসাদের প্রকোপ কমে চোখের পলকে।
২. মাটির প্রদীপ:
দেবীকে প্রতিষ্টা করার পর বাড়ির দক্ষিণ পূর্ব কোণে মাটির প্রদীপ জ্বালাতে হবে এবং সেই প্রদীপ যেন আগামী ৯ দিন পর্যন্ত জ্বলতে থাকে, সেদিকে নজর রাখতে হবে। আসলে এমনটা করলে মা জাগ্রত হয়ে ওঠেন। ফলে দেবীর আশীর্বাদে কোনও ধরনের বিপদ ঘটার আশঙ্কা আর থাকে না বললেই চলে। প্রসঙ্গত, বাড়ির দক্ষিণ-পূর্ব কোণকে বাস্তুশাত্রে "বাস্তু যোন অব ফায়ার" বলা হয়ে থাকে। তাই তো এই স্থানে প্রদীপ জ্বালালে যে কোনও ধরনের বাস্তু দোষ কেটে যেতে সময় লাগে না। ফলে পরিবারের কারও কোনও বিপদ ঘঠার আশঙ্কা আর থাকে না বললেই চলে।
৩. পুজোর নিয়ন:
বাস্তু বিশেষজ্ঞদের মতে প্রতি শুক্রবার মায়ের আরাধনা করার সময় এমন জায়গায় বসবেন যাতে আপনার মুখ পূর্ব দিকে নয়তো উত্তর দিকে থাকে। কারণ এণনটা বিশ্বাস করা হয় যে এই নিয়মটি মেনে দেবীর অরাধনা করলে নাকি আরও বেশি মাত্রায় উপকার পাওয়া যায়।
৪. ঠাকুর ঘর:
দেবী দুর্গা হলেন শক্তির আধার। তাই তো মাকে একবার প্রসন্ন করতে পারলে জীবনের ছবিটা আরও সুন্দর হয়ে উঠতে যে সময় লাগে না, তা তো বলাই বাহুল্য। তবে মাকে প্রসন্ন করতে একটা অতি সামান্য বিষয়ের দিকে নজর রাখতে হবে। তবে গিয়ে কিন্তু দেবীর আগমণ ঘটবে আপনার গৃহস্থে। কী নিয়ম তাই ভাবছেন নিশ্চয়? মায়ের অরাধনা করার আগে ভাল করে ঠাকুর ঘর পরিষ্কার করে নিতে ভুলবেন না যেন! এই সময় মায়ের ছবি বা মূর্তি গঙ্গা জলে ভেজানো কাপড় দিয়ে পরিষ্কার করে নিতে হবে। সেই সঙ্গে খেয়াল রাখতে হবে দেবীর আসন যেখানে পেতেছেন তার আশেপাশে যেন কোনও নোংড়া কাপড় না থাকে।
৫. বাথরুম বা কিচেনের সামনে নয়:
দেবীকে প্রতিষ্টা করার সময় খেয়াল রাখবেন তাঁর আসন যেন বাথরুম বা রান্না ঘরের সামনে পাতা না হয়। এমনকী ওয়াশরুমের দেওয়ালের সংস্পর্শেও যাতে দেবীর আসন না আসে, সেদিকেও নজর রাখতে হবে। আসলে বাড়ির এই দুই অংশ নানা কারণে একেবারেই পবিত্র হয় না। তাই তো এমন জায়গায় দেবীকে প্রতিষ্টা করলে মা বেজায় ক্ষুন্ন হন। ফলে দিনের পর দিন দেবীর অরাধনা করা হলেও কিন্তু কোনও সুফল মেসার সম্ভাবনা থাকে না।
৬. পুজো সামগ্রী:
বাস্তু বিশেষজ্ঞদের মতে দেবী দুর্গার আরাধনায় ব্যবহৃত নানা পুজো সামগ্রী রাখতে হবে ঠাকুর ঘরের দক্ষিণ-পূর্ব দিকে নয়তো দক্ষিণ দিকে।
৭. ঠাকুর ঘরের রং:
এমনটা বিশ্বাস করা হয় যে বাসন্তী রং মায়ের বেজায় পছন্দের। তাই তো ঠাকুর ঘরে এমন রং করলে মা বেজায় প্রসন্ন হন। আর দুর্গা মা যখন খুশি হন, তখন তাঁর ভক্তের জীবনে যে কখনও অনন্দের ঘাটতি হয় না, তা তো বলাই বাহুল্য! তাই তো বলি বন্ধু মায়ের আশীর্বাদে মনের সব ইচ্ছা পূরণ হোক, এমনটা যদি চান, তাহলে ঠাকুর ঘরে হালকা হলুদ বা বাসন্তি রং করতে ভুলবেন না যেন!
৮. কালো বা নীল রং নৈব নৈব চ:
ঠাকুর ঘর বা দেবীর মূর্তি সাজানোর সময় ভুলেও এই দুটি রঙের কোনও কিছু ব্যবহার করা চলবে না। আসলে বাস্তু বিশেষজ্ঞদের মতে কালো এবং নীল মোটে শুভ রং নয়। তাই তো ঠাকুর ঘরে এদের প্রবেশ ঘটলে সারা বাড়িতে খারাপ শক্তির মাত্রা বৃদ্ধি পাওয়ার আশঙ্কা থাকে। আর এমনটা হলে নানাবিধ বিপদ ঘটার সম্ভাবনাও বেড়ে যায়। তাই সাবধান বন্ধু সাবধান!
৯. রঙিন আলপোনা বা রাঙ্গলি:
এমনটা বিশ্বাস করা হয় দেবীর অরাধনা করার সময় রঙবেরঙের আলপনা আঁকলে দেবী বেজায় প্রসন্ন হন। সেই সঙ্গে সারা বাড়িতে পজেটিভ শক্তির মাত্রা একটা বেড়ে যায়, যে পরিবারের প্রতিটি সদস্যের জীবন সুন্দর হয়ে উঠতে সময় লাগে না। সেই সঙ্গে খারাপ সময়ও কেটে যায়। ফলে পরিবারে সুখ-সমৃদ্ধির ছোঁয়া লাগে।