Just In
প্রতি শুক্রবার মা লক্ষ্মী এবং গণেশ ঠাকুরের পুজো এক সঙ্গে করা উচিত কেন জানা আছে?
মা হলেন ধন এবং সমৃদ্ধির দেবী। তাই তো দেবীর আরধনা করলে অনেক অনেক টাকায় পকেট ভরে উঠতে সময় লাগে না।
এই প্রশ্নের উত্তর তো নিশ্চয় পাবেন, তবে তার আগে বলুন তো জল ছাড়া কি মাছ থাকতে পারে? অক্সিজেন ছাড়া কি বাঁচতে পারে গাছ? না পারেনা, কি তাই তো! ঠিক একই ভাবে ধরুন আপনার কাছে অনেক টাকা রয়েছে, কিন্তু বুদ্ধির জোর নেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার যে এত টাকা আপনি কোথায় ইনভেস্ট করবেন। তাহলে পকেট ভর্তি টাকা থাকার কী অর্থ বলুন! তাই তো প্রতি শুক্রবার মা লক্ষ্মীর সঙ্গে গণেশ ঠাকুরের পুজো করার পরামর্শ দেওয়া হয়ে থাকে। সহজ ভাবে বললে মা হলেন ধন এবং সমৃদ্ধির দেবী। তাই তো দেবীর আরধনা করলে অনেক অনেক টাকায় পকেট ভরে উঠতে সময় লাগে না। সেই সঙ্গে সমৃদ্ধির ছোঁয়া লাগে পরিবারে। অন্য়দিকে, একই দিনে গণেশ দেবের অরাধনা করলে যেমন জ্ঞান এবং বুদ্ধির বিকাশ ঘটে, তেমনি কর্মক্ষেত্রে চরান্ত সফলতা লাভের পথ প্রশস্ত হয়। ফলে সফল জীবনের বৃত্তটা সম্পূর্ণ হতে সময় লাগে না। কারণ বুদ্ধি, জ্ঞান এবং অর্থ যখন সহাবস্থান করে, তখন জীবনের ছবিটা নানা রঙে ভরে উঠতে যে সময় লাগে না, তা কি আর বলার অপেক্ষা রাখে।
প্রসঙ্গত, এমনটাও বিশ্বাস করা হয় যে মা লক্ষ্মী এবং গণেশ দেবের অরাধনা একসঙ্গে করলে জীবন পথে মাথা চাড়া দিয়ে ওঠা যে কোনও সমস্যার পাহাড় সরে যেতে সময় লাগে না, সেই সঙ্গে আরও একাধিক উপকার মেলে। যেমন ধরুন...
১. মা বারে বারে স্থান পরিবর্তন করেন না:
অনেকেই এমনটা বিশ্বাস করেন যে মা লক্ষ্মী কারও গৃহস্থে প্রবেশ করলে সেই পরিবারে সুখ এবং সমৃদ্ধির ছোঁয়া লাগতে সময় লাগে না। সেই সঙ্গে অর্থনৈতিক উন্নতিও ঘটে চোখে পরার মতো। কিন্তু মা যে বেশি দিন একই জায়গায় থাকেন না, তাহলে! বন্ধু এই সমস্যারও সমাধান রয়েছে। কী সমাধান! প্রতি শুক্রবার মা লক্ষ্মীর পাশাপাশি গণেশ দেবের অরাধনা করা শুরু করুন, দেখবেন মা কখনও আপনার গৃহস্থ ছেড়ে যাবেন না। কারণ পুরাণে একটি গল্পের খোঁজ পাওয়া যায়, তা বলা হয়েছে মা লক্ষীর বাচ্চা না হওয়ার কারণে নাকি তিনি বেজায় দুঃখে ছিলেন। এক সময় মা লক্ষ্মীর এই দুঃখ সহ্য় করতে না পেরে মা দুর্গা একটি শর্তে তাঁর ছেলে গণেশ দেবকে, মা লক্ষ্মীকে দত্তক দিওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। শর্তটা ছিল মা লক্ষ্মী ভুলেও কখনও গণেশ দেবকে ছেরে কোথাও যেতে পারবেন না। তাই তো গণেশ যেখানে মা লক্ষ্মীও সেখানেই থাকেন। এই কারণেই তো মায়ের পাশাপাশি গণেশ ঠাকুরের আরাধনা করলে মা লক্ষ্মী কখনই সেই গৃহস্থ ত্যাগ করে যান না। ফলে সুখের ঝাঁপি খালি হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা কমে।
২. মা কখনও রুষ্ট হবেন না:
মা লক্ষ্মী কখনও আপনার উপর রেগে যাক এমনটা নিশ্চয় চান না, তাহলে দেবীর পাশাপাশি গণেশ ঠাকুরের আরাধনা করতে ভুলবেন না যেন! কারণ বাপ্পাকে মা লক্ষ্মী খুবই ভাসবাসেন এবং তাঁকে কথা দিয়েছিলেন যে কেউ যদি গণেশের পুজো করেন, তাহলে আপনা হতেই সেই ভক্তের উপর মা লক্ষ্মীর আশীর্বাদ থাকবে। তাই দেবের অরাধনা করলে মায়ের আশীর্বাদ লাভ করতেও সময় লাগে না। আর একবার মা লক্ষ্মীর আশীর্বাদ লাভ করলে জীবনের ছবিটা বদলে যেতে যে সময় লাগে না, তা কি আর বলার অপেক্ষা রাখে বন্ধু!
৩. খারাপ শক্তির প্রকোপ কমে যায়:
বিশ্বাস করুন বা না করুন একথা মানতেই হবে যে আমাদের আশেপাশে পজেটিভ শক্তি যেমন রয়েছে, তেমনি রয়েছে নেগেটিভ বা খারাপ শক্তিও। আর কোনওভাবে যদি এই খারাপ শক্তির মাত্রা বাড়তে শুরু করে, তাহলে কিন্তু বেজায় বিপদ। কারণ সেক্ষেত্রে নানাবিধ খারাপ ঘটনা ঘটার আশঙ্কা যেমন বাড়ে, তেমনি হঠাৎ করে কোনও দুর্ঘটনার কবলে পরার সম্ভাবনাও থাকে। তাই তো বলি বন্ধু নিজেকে এবং পরিবারের বাকি সদস্যদের নানাবিধ বিপদ থেকে বাঁচাতে শুক্রবার করে এমন বিশেষ পুজো করতে ভুলবেন না যেন! কারণ এমনটা বিশ্বাস করা হয় যে মা লক্ষ্মীর পাশাপাশি গজাননের মন্ত্র জপ করা শুরু করলে বাড়ির প্রতিটি অংশে পজেটিভ শক্তির মাত্রা এতটাই বেড়ে যায় যে খারাপ শক্তি ঘর ছাড়া হতে সময় লাগে না।
৪.অনেক অনেক টাকার মলিক হয়ে ওঠার স্বপ্ন পূরণ হয়:
যেমনটা আগেও আলোচনা করা হয়েছে যে মা লক্ষ্মী এবং গণেশ দেবের পুজো এক সঙ্গে করলে বড়লোক হয়ে ওঠার স্বপ্ন পূরণ হতে সময় লাগে না। শুধু তাই নয়, এমনটাও বিশ্বাস করা হয় যে এমন বিশেষ পুজোর আয়োজন করলে টাকা-পয়সা সংক্রান্ত যে কোনও সমস্যা মিটে যেতে সময় লাগে না। সেই সঙ্গে সঞ্চয়ের পরিমাণও বৃদ্ধি পায়।
৫. রোগ-ব্যাধি দূরে পালায়:
এমনটা বিশ্বাস করা হয় যে প্রতি শুক্রবার মায়ের অরাধনা করারা পাশাপাশি যদি বাপ্পার পুজোও করা যায়, তাহলে গৃহস্থের প্রতিটি কোণায় পজেটিভ শক্তির মাত্রা বৃদ্ধি পেতে শুরু করে, যার প্রভাবে শরীর এবং মস্তিষ্কের ক্ষমতা এতটাই বৃদ্ধি পায় যে ছোট-বড় সব রোগই দূরে পালায়। শুধু তাই নয় শরীরের সৌন্দর্যও বৃদ্ধি পায় চোখে পরার মতো। তাই তো বলি বন্ধু বাকি জীবনটা যদি সুখে-শান্তিতে কাটাতে হয়, তাহলে মায়ের পাশাপাশি দেবের অরাধনা করতে ভুলবেন না যেন!
৬. ব্যবসায় চরম উন্নতির স্বাদ মেলে:
আপনি কি কোনও ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত? তাহলে বন্ধু প্রতি শুক্রবার মা লক্ষ্মী এবং গণেশ দেবের পুজো করতে ভুলবেন না যেন! কারণ এমনটা বিশ্বাস করা হয় যে এমন বিশেষ পুজোর আয়োজন করলে গৃহস্থে মায়ের প্রবেশ ঘটে। সেই সঙ্গে দেবের আশীর্বাদে জ্ঞান এবং বুদ্ধির বিকাশ ঘটে। ফলে ব্যবসায় একের পর এক সফলতা লাভের সম্ভাবনা যায় বেড়ে। সেই সঙ্গে ব্যবসা সংক্রান্ত নানাবিধ সমস্যা মিটে যেতেও সময় লাগে না।
৭. কর্মক্ষেত্রে পদন্নতি ঘটে:
একেবারেই ঠিক শুনেছেন বন্ধু! মা এবং দেবকে একসঙ্গে প্রতিষ্টিত করে এত মাত্রায়পজেটিভ শক্তির বিকাশ ঘটে যে তার প্রভাবে কর্মক্ষেত্রে চটজলদি প্রমোশন পাওয়ার সম্ভাবনা বৃদ্ধি পায়, সেই সঙ্গে প্রতিপক্ষদের নিকেশ ঘটতেও সময় লাগে না। তাই তো বলি বন্ধু ৩০ পেরতে না পেরতেই যদি বাড়ি,গাড়ি এবং মোটা মাইনের মালিক হয়ে উঠতে চান, তাহলে শুধু শুক্রবার নয়, প্রতিদিন মা লক্ষ্মী এবং গণেশ ঠাকুরের পুজো করতে ভুলবেন না যেন!
৮. গুড লাক সঙ্গ নেয়:
একথা তো মানতেই হবে যে এই মানব জীবনকে যদি সফল করে তুলতে হয়, তাহলে পরিশ্রমের পাশাপাশি ভাগ্যের সঙ্গ থাকাটাও জরুরি। কারণ শুধুমাত্র পরিশ্রমের উপর ভরসা করে সফলতার স্বাদ পাওয়াটা কিন্তু বেজায় কঠিন। তাই তো প্রশ্ন হল, গুড লাককে রোজের সঙ্গী বানানো যায় কীভাবে? এ জন্য বন্ধু, গণেশ ঠাকুর এবং মা লক্ষ্মীর পুজো এসঙ্গে করতে হবে। তাহলেই দেখবেন ভাগ্য ফিরতে যাবে, সেই সঙ্গে কোনও ধরনের খারাপ ঘটনা ঘটার আশঙ্কা আর থাকবে না।
৯.মনের যে কোনও ইচ্ছা পূরণ হয়:
গৃহস্থে যখন পজেটিভ শক্তির মাত্রা বাড়তে শুরু করলে গুড লাক রোজের সঙ্গী হয়ে ওঠে। আর এমনটা যখন হয়, তখন মনের ছোট থেকে ছোটতর ইচ্ছা পূরণ হতে যে সময় লাগে না, তা কি আর বলার অপেক্ষা রাখে।
১০. পড়াশোনায় উন্নতি ঘটে:
শাস্ত্র মতে প্রতিদিন মায়ের পুজো করার পাশাপাশি যদি গণেশ দেবের অরাধনা করা যায়। তাহলে জ্ঞান এবং বুদ্ধির বিকাশ ঘটতে সময় লাগে না। সেই সঙ্গে মস্তিষ্কের ক্ষমতাও বৃদ্ধি পায়। ফলে বাচ্চাদের মনোযোগ ক্ষমতা উন্নতি ঘটতে সময় লাগে না। আর এমনটা হলে পড়াশোনায় তো উন্নতি ঘটই, সেই সঙ্গে পরিবারের বাকি সদস্যদের কর্মক্ষেত্রে উন্নতি লাভের পথও প্রশস্ত হয়। প্রসঙ্গত, যারা ব্যবসা করেন, তারা যদি তাদের অফিসে মা এবং দেবের মূর্তি রাখতে পারেন, তাহলে ব্যবসায় উন্নতি ঘটতে সময় লাগে না।
১১. ভুল সিদ্ধান্ত নেওয়ার আশঙ্কা কমে:
এমনটা বিশ্বাস করা হয় যে শুক্রবার করে দেব এবং দেবীর পুজো একসঙ্গে করলে জীবনের প্রতিটি বাঁকে সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার সম্ভাবনা যায় বেড়ে। আর বেশিরভাগ সিদ্ধান্ত যখন ঠিক হয়, তখন জীবনের ছবিটা বদলে যেতে যে সময় লাগে না, তা কী আর বলার অপেক্ষা রাখে।
১২. ভূত-প্রেত সব থাকবে দূরে থাকবে:
অনেকে বিশ্বাস করেন যে গণেশ ঠাকুরের পুজো করার পাশপাশি মা লক্ষ্মীর আরাধনা করলে কালো যাদুর কারণে কোনও ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা যেমন কমে, সেই সঙ্গে ভূত-প্রেতের খপ্পরে পরার আশঙ্কাও যায় কমে। প্রসঙ্গত, অনেকেই হয়তো বিশ্বাস করবেন না, কিন্তু এই ধরণার মধ্য়ে কোনও ভুল নেই যে ইর্ষান্বিত হয়ে এই ২১ শতকেও কিন্তু অনেকে তুকতাকের সাহায্য নিয়ে লোকের ক্ষতি করে থাকে। আর এমনটা যে কেউ আপনার সঙ্গে করার চেষ্টা করছে না, সে বিষয়ে আপনি কি নিশ্চিত? তাই তো বলি বন্ধু, সুখে-শান্তিতে এবং নিরাপদে যদি থাকতে চান, তাহলে গণেশ দেব এবং মা লক্ষ্মীকে সঙ্গে রাখতে ভুলবেন না যেন!