Just In
আমরা কেন দীপাবলি উদযাপন করি তার ৭ টি কারণ
আমাদের মধ্যে অধিকাংশরাই প্রকৃত আধ্যাত্মিক তাৎপর্য না জেনেই এই আলোর উৎসব, দীপাবলির উদযাপন করে থাকি। যদি আপনি কাউকে জিজ্ঞাসা করেন, আমরা দীপাবলি কেন উদযাপিত করি, তাহলে আপনি কিছু অস্পষ্ট উত্তর পাবেন। তারা হয়তো আপনাকে বলবে যে, আমরা দীপাবলিতে বাতি বা প্রদীপ জ্বালাই অথবা দীপাবলিতে আতসবাজি পোড়াই।
আসলে বলতে গেলে এমন অনেকগুলিই কারণ রয়েছে, যার জন্য দীপাবলিকে সর্ব-ভারতীয় কয়েকটি উৎসবের মধ্যে একটি হিসাবে গণ্য করা হয়ে থাকে। ভারতের প্রায় সব জায়গাতেই দীপাবলি উদযাপিত হয়, শুধু তাদের এই উৎসব পালনের পেছনে, পৌরানিক গাঁথা ও ধর্মানুষ্ঠাগুলি আলাদা। আমরা কেন দীপাবলি উদযাপন করি তার কিছু কারণ এখানে দেওয়া হল।
১. রামের অযোধ্যায় প্রত্যাবর্তনঃ অধিকাংশ উত্তরভারতে, প্রভু রামের জয়যুক্ত হয়ে নিজের জন্মভূমিতে প্রত্যাবর্তনকে, দীপাবলি উদযাপনের মাধ্যমে পালন করা হয়ে থাকে। অযোধ্যাবাসী দীপাবলিতে তাদের নায্য ও বিজয়ী রাজাকে স্বাগত করতে প্রদীপ প্রজ্বলিত করে থাকে।
২. লক্ষ্মী পূজা: দীপাবলী সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটি আচার, লক্ষ্মী ও গণেশ পূজা। এই পূজা বছরের সবচেয়ে অন্ধকার রাত অর্থাৎ, আশ্বিন মাসের (চন্দ্র তিথি অনুযায়ী একটি মাস) অমাবস্যায় সম্পন্ন হয়ে থাকে। ঘর-বাড়ি ভালকরে পরিষ্কার করে, প্রদীপ জ্বালানো হয় ও আলপনা আঁকা হয়। প্রদীপের আলোর ঝরনার মাঝে রাতে লক্ষ্মী পূজা করা হয়ে থাকে।
৩. নববর্ষ: ভারতীয় ব্যবসায়ীদের জন্য, দীপাবলি নতুন আর্থিক বছর প্রারম্ভকে বোঝায়। তারা এইদিনে তাদের গতবছরের হিসাবের খাতা বন্ধ করে নতুন বছরের হিসাবের খাতা খোলেন। যেহেতু, দীপাবলি হিন্দু নববর্ষকে সূচিত করে তাই, অনেকেই এই সময়ে নিজেদের ঘর-বাড়ি মেরামত করিয়ে নতুন করে রঙ করান।
৪. কালী পূজাঃ দীপাবলির রাতে, বাংলা, উড়িষ্যা ও বিহারের কিছু অংশে মহাকালী বা নিশি পূজা করা হয়ে থাকে। এটি সম্ভবত সেই দিন, যেদিন পার্বতী তার কালী অবতার গ্রহন করেন এবং অসুরদের মুণ্ডছেদ করতে শুরু করেন। কালী পূজা গভীর রাতে শুরু হয় এবং উষালগ্নের প্রাক্কালে সম্পন্ন হয়।
৫. গুরু নানকঃ কেবলমাত্র হিন্দুরাই নয়, শিখরাও দীপাবলি উদযাপন করে। এর কারণ হল, এইদিনে শিখদের ষষ্ঠ গুরু, গুরু হরগোবিন্দ জি আরো ৬২ জন রাজার সাথে কারাগার থেকে মুক্তিলাভ করেছিলেন। কারারুদ্ধ অবস্থা থেকে মুক্তি পেয়ে তিনি গোল্ডেন টেম্পাল বা স্বর্ণ মন্দির (হরমন্দির সাহিব) দর্শন করেন। অমৃতসরের সকল মানুষেরা বাতি ও প্রদীপ জ্বালিয়ে তাকে স্বাগত করে।
৬. প্রভু মহাবীরঃ অনেকে মনে করেন, ১৫ই অক্টোবর অর্থাৎ যখন আমরা দীপাবলি উদযাপন করে থাকি তার কাছাকাছি সময়ে প্রভু মহাবীর তার মোক্ষ বা নির্বান লাভ করেছিলেন।
৭. আশার আলোঃ দীপাবলির একটি গভীরতম আধ্যাত্মিক মর্ম এর থেকেও আসে যে এটি বছরের সবচেয়ে অন্ধকারতম রাত। তাই অজ্ঞানতা ও নিরাশার অন্ধকারকে দূরীভূত করতে মানুষ, দীপাবলির রাতে প্রদীপ জ্বালায়। তারা অশুভশক্তিকে নিবৃত্ত করতে আতসবাজিও পোড়ায়।
এই ঝলমলে দীপাবলি উদযাপনের পিছনে গভীর উপবিষ্ট কিছু আধ্যাত্মিক কারণ রয়েছে। আপনি কি অন্য কোন কারণেও দীপাবলি উদযাপন করেন?