Just In
মনের মতো মানুষকে ভালবাসতে এবং বিয়ে করতে চান? তাহলে মা কাত্যায়নীর মন্ত্র জপ করতে ভুলবেন না!
এমনটা বিশ্বাস করা হয় যে এমন কঠিন পরিবেশে মনের মতো জীবনসঙ্গী পেতে ভাগ্য ভাল না হলে চলবে না, আর ঠিক এই কারণেই মা কাত্যায়নীর মন্ত্র জপ জরুরি।
ভাসবাসার মানে বোঝার পর থেকেই আমারা সকলেই সেই চাতক পাখির মতো অপেক্ষা করি সেই মনের মানুষটার জন্য যে আমাদের মন বুঝবে। বুঝবে অন্তরের কথা। যাকে পাগলের মতো ভাসবাসতে পারা যাবে। দুঃখের দিনে সঙ্গে দেবে। হাত ধরে বলবে "আমি আছি তো!" কিন্তু এমন মানুষের সন্ধান এই কংক্রিটের জঙ্গলে কি পাওয়া সম্ভব?
এই প্রশ্ন উঠছে কেন জানেন? কারণ সমাজ দ্রুত বদলে যাচ্ছে। সেই সঙ্গে মানুষের চাহিদার ধরনেও আসছে বদল। এক সময় মানুষের চরিত্র যেখানে গুরুত্বপূর্ণ ছিল, সেখানে এখন গুরুত্ব পাচ্ছে টাকার গরম। ধীরে ধীরে মানুষ এত "মেটিরালিস্টিক" হয়ে পরছে যে ভাল জামা-কাপড়, জুতো, ফরেন ডেস্টিনেশনে হলিডে এবং শপিং মলে উইকএন্ড, এই সব ইচ্ছা যে পূরণ করতে পারবে তাকেই বেছে নেওয়া হবে জীবনসঙ্গী হিসেবে। এখানে ফিলং-এর কোনও জায়গা নেই। আর ভাসবাসা, তার তো কোনও গুরুত্ব নেইই। এখন "দেনা-পাওনাই" আসল। তাই তো দেখুন সারা দেশের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গেই ডিভোর্স রেট এত বেশি।
এত দূর পড়ার পর ভয় পাচ্ছেন। ভাবছেন আপনার কী হবে? চিন্তা নেই! যদি ভেবে থাকেন টাকার থেকেও বেশি গুরুত্ব দেবেন মানুষটাকে। চাইবেন শুধু ভাসবাসা, আর কিছু না, তাহলে সমাজের বাকি ৯০ শতাংশ ছেলে-মেয়ের মতো ভাবনা ছাড়াতে হবে। নিজেকে স্বতন্ত্র বানাতে হবে। সেই সঙ্গে আরেকটা কাজ করতে হবে। কী কাজ? প্রতিদিন মা কাত্যায়নীর মন্ত্র জপ করতে হবে। কারণ এমনটা বিশ্বাস করা হয় যে এমন কঠিন পরিবেশে মনের মতো জীবনসঙ্গী পেতে ভাগ্য ভাল না হলে চলবে না, আর ঠিক এই কারণেই মা কাত্যায়নীর মন্ত্র জপ জরুরি।
কে এই মা কাত্যায়নী?
হিন্দু শাস্ত্র মতে দেবী দুর্গার নয়টি অবতারের ষষ্ঠ অবতার হল মা কাত্যায়নী। যাঁর পুজো নবরাত্রির ষষ্ঠ দিনে করা হয়ে থাকে। এমন বিশ্বাস যে মা কাত্যায়নীই হলেন মাতৃশক্তির সেই রূপ যিনি মহিষাসুরকে বধ করেছিলেন। প্রসঙ্গত, শাস্ত্রে এমনও দাবি করা হয়েছে যে নিয়মিত মা কাত্যায়নীর আরাধনা করলে আমাদের আশেপাশে উপস্থিত খারাপ শক্তির প্রভাব কমতে শুরু করে। ফলে হঠাৎ করে কোনও খারাপ ঘটনা ঘটার আশঙ্কা যেমন কমে, তেমনি খারাপ সময় কেটে যেতেও সময় লাগে না। ফলে ভাগ্য সহায় হয়ে ওঠার কারণে মনের ছোট থেকে ছোট ইচ্ছা পূরণ হতে সময় লাগে না।
মনের মতো জীবনসঙ্গী মিলতে কীভাবে মা কাত্যায়নীর পুজো করতে হবে?
এমন বিশ্বাস রয়েছে যে মা কাত্যায়নীকে প্রসন্ন করতে পারলে দেবীর আশীর্বাদে মনের মতো জীবনসঙ্গী তো মেলেই, সেই সঙ্গে বৈবাহিক জীবনে কোনও ধরনের অশান্তি বা কলহ মাথা চাড়া দিয়ে ওঠার আশঙ্কাও যায় কমে। প্রসঙ্গত, ভগবত পূরাণে এমন উল্লেখ পাওয়া যায়, প্রাচীন কালে বিবাহযোগ্য মেয়েরা টানা এক মাস মা কাত্যায়নীর মন্ত্র জপ করতেন মনের মতো জীবনসঙ্গীর খোঁজ পেতে। এমনকি ফুল-চন্দন দিয়ে পুজোও করতেন। এমনটা করাতে ফলও যে মিলতো, সে নথীরও খোঁজ মেলে। তাই তো বলি বন্ধুরা, এমন কঠিন সময় আপনাদের সঙ্গে "ধোকা" হোক, তা যদি না চান, তাহলে মাতৃশক্তির শরণাপন্ন হতে দেরি করবেন না যেন!
মঙ্গল দোষও কেটে যায়:
একথা নিশ্চয় অনেকেরই জানা আছে যে কারও কুষ্টিতে মঙ্গল দোষ থাকলে মনের মতো জীবনসঙ্গী মিলতে যেমন সময় লাগে, তেমনি বিবাহজনিত নানা সমস্যা মাথা চাড়া দিয়ে উঠতেও সময় লাগে না। এমন ক্ষেত্রেও কাত্যায়নী মায়ের পুজো করার পাশাপাশি যদি কাত্যায়নী মন্ত্র জপ করা যায়, তাহলে মঙ্গল দোষ কেটে যেতে সময় লাগে না।
কাত্যায়নী মন্ত্র:
শাস্ত্রে দুটি মন্ত্রের উল্লেখ পাওয়া যায়। এই দুটি মন্ত্রের কোনও একটি নিয়মিত পাঠ করা শুরু করলে বিবাহ সংক্রান্ত নানা ঝামেলা মিটে যেতে যেমন সময় লাগে না। তেমনি মনের মতো জীবনসঙ্গীও মেলে। প্রসঙ্গত, মন্ত্র দুটি হল- ১. "কাত্যায়নী মহামায়ে মহায়োগনিনাথেশ্বরী। নন্দোপুস্তম দেবীপাতিম মে কুরু তে নমহ"। ২. "ওম হ্রিং কাত্যায়নী সোয়াহা।। হ্রিং শ্রিং কাত্যায়নী সোয়াহা।।"
কাত্যায়নী মন্ত্র পাঠের আরও উপকারিতা:
মাতৃশক্তির এই বিশেষ রূপের আরাধনা করলে যে শুধু মনের মতো জীবনসঙ্গী মেলে, এমন নয়, সেই সঙ্গে আরও নানাবিধ উপকার পাওয়া যায়। যেমন ধরুন...
১.স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে সম্পর্কের উন্নতি হয়:
এমনটা বিশ্বাস করা হয় যে নিয়মিত কাত্যায়নী মন্ত্র জপ করলে বৈবাহিক জীবনে কোনও ধরনের অশান্তি মাথা চাড়া দিয়ে ওঠার আশঙ্কা যেমন কমে, তেমনি কোনও কারণে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যেকার সম্পর্কের অবনতি ঘটার আশঙ্কাও কমে। তাই তো বলি বন্ধু, প্রিয় মানুষটার সঙ্গে যদি বাকি জীবনটা সুখে-শান্তিতে কাটাতে চান, তাহলে মায়ের শরণাপন্ন হতে দেরি করবেন না যেন!
২. পরিবারে সুখ-শান্তির ছোঁয়া লাগে:
নিয়মিত মায়ের এই বিশেষ রূপের আরাধনা করলে গৃহস্থের প্রতিটি কোণায় পজেটিভ শক্তির মাত্রা বৃদ্ধি পেতে শুরু করে। ফলে পরিবারের সদস্যদের মধ্যে কোনও ধরনের অশান্তি মাথা চাড়া দিয়ে ওঠার আশঙ্কা যায় কমে। সেই সঙ্গে নানাবিধ সমস্যাও মিটে যায়। ফলে পরিবারে সুখ-শান্তির ছোঁয়া লাগতে সময় লাগে না।
৩. বাবা-মা হওয়ার স্বপ্ন পূরণ হয়:
হাজারো চেষ্টা করেও কি বাবা-মা হওয়ার স্বপ্ন পূরণ হচ্ছে না? কোনও চিন্তা নেই বন্ধু! মনে বিশ্বাস নিয়ে মা কাত্যায়নীর আরাধনা শুরু করুন। সঙ্গে মন্ত্র পাঠ তো আছেই। এমনটা করলে দেখবেন সুফল পাবেন একেবারে হাতে-নাতে...!
৪. "লাভ ম্যারেজ" করতে কোনও সমস্যা হয় না:
ভালবাসার মানুষকে বিয়ে করার মতো সুখের মুহূর্ত আর কি হতে পারে বলুন! কিন্তু ভালবাসলেই তো হল না। অনেক সময় এমন বিয়ের পথে হাজারো সমস্যা মাথা চাড়া দিয়ে ওঠে। ফলে অনেক সময়ই স্বপ্ন ভঙ্গ হতে সময় লাগে না। কিন্তু মা কাত্যায়নীর যদি অরাধনা করেন, তাহলে দেখবেন "আগ কী দারিয়া" পেরিয়ে লক্ষে পৌঁছাতে সময় লাগবে না।
কাত্যায়নী মন্ত্র পাঠের নিয়ম:
প্রতিদিন সাকলে উঠে স্নান সেরে লাল জামা-কাপড় পরে ঠাকুর ঘরে এসে বসতে হবে। প্রথমে ঠাকুরের আসন পরিষ্কার করে মা কাত্যায়নীর ছবি বা মূর্তি লাল কাপড়ে স্থাপন করতে হবে। এরপর মায়ের সামনে লাল ফুল নিবেদন করে হাতে চন্দন মালা নিয়ে শুরু করতে হবে মন্ত্র পাঠ। এইভাবে প্রতিদিন মায়ের অরাধনা করলে দেখবেন উপকার মিলবেই মিলবে।