Just In
প্রতি মঙ্গলবার হনুমান জির পুজো করলে কী কী উপকার পাওয়া যায় জানেন?
মঙ্গলবার হনুমান জির পুজো করলে পারিবারিক শান্তি কখনও দূরে পালায় না। শুধু তাই নয়, খারাপ দৃষ্টির প্রভাবও কমতে শুরু করে। মেলে আরও অনেক উপকার।
সপ্তাহের সাত দিন একেক জন দেবতার পুজো করা জন্য বরাদ্দ। হিন্দু শাস্ত্র মতে বিশেষ দিনে সেই বিশেষ দেবতার পুজো করলে ফল মেলে অনেক বেশি। যেমন মঙ্গলবার হনুমান জির পুজো করলে পারিবারিক শান্তি কখনও দূরে পালায় না। শুধু তাই নয়, খারাপ দৃষ্টির প্রভাবও কমতে শুরু করে। মেলে আরও অনেক উপকার। কিন্তু মঙ্গলবারই বা কেন হনুমান জি-এর পুজো করতে বলা হয়?
আসলে মরুথি মঙ্গলবার জন্ম গ্রহণ করেছিলেন। আর সেদিন ছিল পূর্ণমা। তাই তো এমনটা বিশ্বাস করা হয় যে মঙ্গলবার হনুমান জি-এর পুজো করলে দারুন উপকার মেলে। আর যদি কেউ মঙ্গলবার সময় করে উঠতে না পারেন, তাহলে শনিবারও শ্রী হনুমানের পুজো করা যেতে পারে। আসলে শনিবার হনুমান জির পুজো করার পিছনে একটি গল্প কথাকে দায়ি করা যেতে পারে। হিন্দু শাস্ত্রের উপর লেখা একাধিন প্রাচীন গ্রন্থেও এই গল্পের সন্ধান পাওয়া যায়। সেখানে লেখা রয়েছে রাবণ তার ছেলে মেঘনাথকে অপরাজেয় করে তোলার উদ্দেশ্য়ে একবার কঠোর তপস্যা শুরু করেছিলেন। কিন্তু যেন তেন প্রকারেন ভগবান শীব এবং বিষ্ণু এই ক্ষমতা মেঘনাথকে দিতে চাইছিলেন না। সে খবর রাবনের কানে পৌঁছানো মাত্র তিনি নটি গ্রহকে অপহরণ করে এমন এক জায়গায় বন্দি বানিয়ে রাখেন যে সেখান থেকে পালানো এক প্রকার অসম্ভব ছিল। এই সময়ই হনুমান জি, দেবী সীতার খোঁজে লঙ্কায় এসে পৌঁছেছিলেন এবং তিনিই প্রথম দেখতে পান একটি অন্ধকার কুঠুরিতে বন্দি করে রাখা হয়েছে গ্রহদের। এই দেখে তিনি তাদের মুক্ত করে দেন। এই ঘটনার পর নটি গ্রহের অন্যতম শনিদেব এতটাই প্রসন্ন হন যে তিনি হনুমান জিকে আশীর্বাদ করে বলেন তার খারাপ দৃষ্টি কখনও হনুমান জি এবং তার ভক্তদের উপর পরবে না। এই কারণেই তো শনিবার শ্রী হনুমানের পুজো করা হয়ে থাকে।
হনুমান জি-এর পুজো করার জন্য কী কী জিনিসের প্রয়োজন পরে?
পুজো শুরু করার আগে হনুমান জির মূর্তি বা ছবির সামনে প্রদীপ, ধূপ, কলা, জল, ফুল, সিঁদুর এবং লাল কাপড় রাখতে হবে। প্রশ্ন করতে পারেন লালা কাপড় কেন? আসলে শাস্ত্র মতে লাল কাপড় পরা হনুমান জি-এর মূর্তি বাড়িতে রাখা বেজায় শুভ। সেই কারনেই মরুথির পুজো করার সময় লাল কাপড় নিবেদন করার পরামর্শ দেওয়া হয়ে থাকে।
পুজোর নিয়ম:
এক্ষেত্রে প্রথমে পুজোর জায়গাটা ভাল করে পরিষ্কার করে নিতে হবে। তারপর সেখানে লালা কাপড়ের উপর হনুমান জির ছবি বা মূর্তি প্রতিষ্টা করে শুরু করতে হবে পুজো। তবে তার আগে ঠাকুরের মূর্তিটাও জল দিয়ে ভাল করে পরিষ্কার করে নিতে ভুলবেন না যেন! এবার ঠাকুরের গায়ে সিঁদুর লাগাতে হবে অল্প করে। তারপর প্রদীপটা জ্বালিয়ে দেবকে পরিয়ে দিতে হবে মালা এবং ফুল। এই সময় হনুমান চাল্লিশাও পাঠা করা যেতে পারে।
মনে রাখা জরুরি:
হনুমান জি-এর পুজো করার আগে ভাল করে স্নান সেরে নিতে হবে। আর পুজোর পরে সেদিন যদি সম্ভব হয়, তাহলে নিরামিষ খাবার খাওয়াই শ্রেয়। প্রসঙ্গত, পুজোর সময় মনে করে হনুমান জি-কে পাঁচটি কলা নিবেদন করতে ভুলবেন না যেন! কারণ এই ফলটি তাঁর বেজায় প্রিয়।
প্রতি মঙ্গলবার মারুথির পুজো করলে কী কী ফল মেলে?
শাস্ত্র মতে প্রতি মঙ্গলবার সকালে উঠে স্নান সেরে যদি হনুমান জি-এর পুজো করা যায়, তাহলে একাধিক ফল মেলে। যেমন ধরুন...
১. মনোবল বাড়ে:
এমনটা বিশ্বাস করা হয় যে প্রতি মঙ্গলবার দেবের পুজো করার পাশাপাশি যদি হনুমান চল্লিশা পাঠ করা যায়, তাহলে মনের অন্দরে লুকিয়ে থাকা ভয় কাটতে শুরু করে। সেই সঙ্গে মনের জোর এতটা বেড়ে যায় যে কোনও বাঁধা পেরতেই সময় লাগে না। ফলে চলার পথটা বেজায় সহজ হয়ে যায় বৈকি।
২. অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নতি ঘটে:
হনুমান জি তাঁর ভক্তদের বেজায় ভালবাসেন। তাই তো নিয়মিত তাঁর পুজো করলে যে কোনও ধরনের অর্থনৈতিক কষ্ট কমে যেতে শুরু করে। সেই সঙ্গে পরিবারে সুখ, শান্তি এবং সমৃদ্ধির আগমণ ঘটে। প্রসঙ্গত, অনেকেই আমাদের উপর খারাপ দৃষ্টি দিয়ে থাকেন। এই কু-দৃষ্টির প্রভাব কাটতে সময় লাগে না যদি নিয়মিত হানুমান চল্লিশা পাঠ করা যায়। শুধু তাই নয়, জীবনের যে কোনও বাঁকে কেনও ধরনের দুর্ঘটনা ঘটার সম্ভাবনাও হ্রাস পায়।
৩. যে কোনও মনের ইচ্ছা পূরণ হয়:
এমনটা বিশ্বাস করা হয় যে প্রতি মঙ্গলবার হনুমান জি-এর পুজো করলে যে মনের ইচ্ছা পূরণ হতে সময় লাগে না। শুধু তাই নয়, নিয়মিত দেবের আরাধনা করলে মনের মতো চাকরি পাওয়ার সম্ভাবনাও বাড়ে।
৪. বুদ্ধির বিকাশ ঘটে:
শাস্ত্র মতে হনুমান জি-এর পুজো করা শুরু করলে ধীরে ধীরে মস্তিষ্কের ক্ষমতা বৃদ্ধি পেতে শুরু করে। ফলে বুদ্ধির বিকাশ ঘটতেও সময় লাগে না। আর বুদ্ধির ধার বাড়তে শুরু করলে চাকরি হোক কী ব্যবসা, যে কোনও ক্ষেত্রেই সাফল্য পাওয়ার সম্ভাবনা বাড়ে।
৫. ভাগ্য ফিরতে শুরু করে:
এমনটা বিশ্বাস করা হয় যে প্রতি মঙ্গলবার হনুমান জির পুজো করা শুরু করলে খারাপ ভাগ্যের দোষ কাটতে শুরু করে। ফলে গুড লাক সঙ্গী হয়। আর এমনটা হলে সাফল্য যে রোজের সঙ্গী হয়, তা কী আর বলে দিতে হবে!