Just In
- 6 min ago অনলাইন গেমে বাচ্চারা ঘরকুঁনো! জানেন কি স্বাস্থ্যের জন্য় কতটা উপকারি আউটডোর গেম?
- 17 min ago সূর্যগ্রহণের সময় ঘটবে মা দুর্গার আগমন, তবে কি গ্রহণকালে পড়বে মায়ের পূজায় বাধা?
- 14 hrs ago ত্বকের জেল্লা ফেরাতে ম্যাজিকের মত কাজ করবে চালের জল, কীভাবে দেখুন
- 19 hrs ago কোন ডাবে বেশি জল, বাইরে থেকে দেখে বুঝবেন কী ভাবে?
ননী গোপালের পছন্দের খোঁজ রাখেন কি?
ভগবান শ্রীকৃষ্ণের পুজো যদি করতেই হয়, তাহলে তা কার উচিত তাঁর পছন্দের কথা মাথায় রেখেই, তাই না!
শ্রীনন্দ রাখিল নাম নন্দের নন্দন। যশোদা রাখিল নাম যাদু বাছাধন। উপানন্দ নাম রাখে সুন্দর গোপাল। ব্রজবালক নাম রাখে ঠাকুর রাখাল।
এমন হাজার নামে ডাকা হয় তাঁকে। ভয় মিশ্রিত শ্রদ্ধা নয়, বরং সন্তান স্নেহে তাঁকে ভালবাসেন আপামর ভক্তগন। সাশ্রুনেত্রে ডুব দেন ভাবের সাগরে। আর ভক্তবৎসল শ্রীকৃষ্ণ, ভক্তের হৃদয়ে থাকেন ছোট্ট ননী গোপালটি হয়ে। আগামী ১৪ এবং ১৫ই আগস্ট পালন করা হবে জন্মাষ্টমী। তাই তাঁকে ভক্তিভরে স্মরণ করতে কোমর বেঁধে নেমে পড়েছেন ভক্তকুল। তবে যে সে ভাবে নয়। ভগবান শ্রীকৃষ্ণের পুজো যদি করতেই হয়, তাহলে তা কার উচিত তাঁর পছন্দের কথা মাথায় রেখেই, তাই না!
ভগবান শ্রীকৃষ্ণ মানেই পিতাম্বর, ময়ূর পেখম খচিত এক রূপ। কিন্তু এই রূপের ব্যাখ্যা আমরা আর কজনই বা জানি বলুন! শুধু তাই নয়। জন্মাষ্টমী মানে কি জানা আছে? এই দিনই পুণ্য লগ্নে ভগবান শ্রীকৃষ্ণ অবতার রূপে এই ধরাধামে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। সেই কারণেই তো ভারতবর্ষ সহ পৃথিবীর সর্বত্র খুব ধুমধামে করে দিনটি পালন করা হয়। বহু জায়গায় 'মটকি ফোড়' বা মাটির হাড়ি ভাঙার রেওয়াজও আছে। ভগবান শ্রীকৃষ্ণ ছোটবেলায় যেভাবে তাঁর সখাদের সঙ্গে মিলে মাখন চুরি করতেন, সেই লীলাকে স্মরণ করেই এই মাটির হাড়ি ভাঙার রেওয়াজ পালন করা হয়। সেই সঙ্গে এই বিশেষ দিনে ভগবানের পছন্দের সব জিনিস তাঁকে উৎসর্গ করা হয়। যেমন- ময়ুরের পেখম, ননী বা মাখন, বাঁশি, পীতবর্ণের বস্ত্র ইত্যাদি। কিন্তু আমরা কি জানি কেন এগুলি শ্রী কৃষ্ণের খুব প্রিয়?
ময়ূর পেখম:
ভগবান শ্রী কৃষ্ণের ছবি বা মূর্তিতে তাঁর মাথায় একটি ময়ূরের পালক দেখা যায়। ভগবানের স্পর্শে তা যেন আরও রঙিন হয়ে ওঠে। ভগবান শ্রীকৃষ্ণের এই রূপ বর্ণিত হয়েছে বিভিন্ন পৌরাণিক কাহিনীর মধ্যে দিয়ে। একটি ক্ষেত্রে বলা হয়েছে, ময়ূরকূলের রাজা ভগবান শ্রীকৃষ্ণের বাঁশির সুরে মুগ্ধ হয়েছিলেন। আর সেই কারণেই তিনি ভগবান শ্রীকৃষ্ণকে ময়ূর পালক উপসর্গ করেছিলেন। অন্যদিকে আরেক লেখায় উল্লেখ রয়েছে, পালক পিতা নন্দ গোপাল ভগবান শ্রীকৃষ্ণকে ছোটবেলায় তাঁর কেশসজ্জা করাতেন ময়ূর পালকের দ্বারা। তাই ননী গোপাল হোক বা ভগবান শ্রীকৃষ্ণ, যে রূপেই ভগবানকে স্মরণ করা হোক না কেন, ময়ূর পালক তাঁর লীলার অঙ্গ হিসাবে আজও অধিষ্ঠিত।
ননী বা মাখন:
ভগবানের সব লীলার মধ্যে অন্যতম একটি লীলা হল মাখন চুরি। মা যশোদা সহ গ্রামের সকল নারীই মাখন তৈরি করতে সিদ্ধহস্ত ছিলেন। অন্যদিকে, সখাদের নিয়ে সেই মাখন চুরি করতেন ছোট্ট গোপাল। শুধু নিজের নয়, গ্রামের প্রায় সব বাড়ি থেকেই তিনি মাখন চুরি করতেন। ধরাও পড়তেন, মা যশোদার কাছে বকুনিও খেতেন। তবে মাখন চুরি করে খাওয়া একটুও কমেনি। আর এই লীলা থেকেই ভগবান শ্রী কৃষ্ণের আরেক নাম ‘মাখন চোর'। আপামর ভক্তকুলও জন্মাষ্টমীতে তাঁদের স্নেহের পরশে ভগবান শ্রীকৃষ্ণকে মাখন বা ননী উৎসর্গ করে থাকেন।
পীতবর্ণ:
ভগবান শ্রী কৃষ্ণের সবথেকে প্রিয় রং হলুদ। তাই প্রতিটি মূর্তি এবং ছবিতে তাঁর পরিধান পিত বর্ণ বা হলুদ রঙের হয়ে থাকে। এমনকি ভগবান শ্রীকৃষ্ণকে যে ফল নিবেদন করা হয় তাও অনেক সময় শুধুমাত্র হলুদ রঙেরই হয়ে থাকে।
বাঁশি:
তাঁর বাঁশির সুরে বিশ্বজগৎ আচ্ছন্ন। শুধুমাত্র মানুষ নন, বনের পক্ষীকুল থেকে গোকুল সকলেই মোহিত হতেন ভগবান শ্রীকৃষ্ণের বাঁশির সুরে। আর কে না জানেন, শ্রী রাধিকা এমনকি তাঁর সখীরাও এই সুরেই নিজেদের হারিয়ে ফেলতেন। ভগবান শ্রীকৃষ্ণ এক যাযাবরের কাছ থেকে এই বাঁশি উপহার পেয়েছিলেন। বাঁশিতে সুর তোলাও শিখিয়েছিলেন তিনিই। ভগবান শ্রীকৃষ্ণের বাঁশি তাঁর বহু লীলার সঙ্গী। কারণ এই বাঁশি ছাড়া যেন ভগবানকে ভাবা যায় না। বাঁশির সুরও ভগবানকে ছাড়া অসম্পূর্ণ। তাই যুগে যুগে বহু গান এবং কবিতা রচিত হয়েছে ভগবান এবং তাঁর বাঁশিকে কেন্দ্র করে।
গবাদি পশু বা গরু:
হাতে ধরা বাঁশি আর সঙ্গী এক গবাদি পশু বা গোরু। ভগবান শ্রীকৃষ্ণের এই রূপ পৃথিবীর সর্বত্র পূজিত। বাল্যকালে ভগবান শ্রীকৃষ্ণ একজন রাখাল ছিলেন। প্রতিদিন তিনি তাঁদের গৃহপালিত গোরুগুলিকে জঙ্গলে নিয়ে যেতেন এবং সন্ধ্যা হলে তাঁদের নিয়ে ঘরে ফিরতেন। দিনের অধিকাংশ সময় এই গবাদি প্রাণীদের সঙ্গে অতিবাহিত করায় ভগবানের বহু লীলার সাক্ষী এরা।
এবার নিশ্চয় জেনে গেছেন যে ভগবান শ্রীকৃষ্ণের প্রিয় জিনিসগুলি কি কি এবং কেন। আর একটা মাত্র জিনিসই বলা বাকি রয়েছে। তা হল, জন্মাষ্টমীর পুণ্যতিথিতে আপনাদের সকলের ভালো কাটুক বোল্ডস্কাই-এর তরফে রইল অগ্রিম শুভেচ্ছা।