Just In
- 25 min ago গরমের মরশুমে সতেজ থাকতে খান এই ৬টি ফল
- 2 hrs ago ইতিমধ্যেই বাংলায় জারি তাপপ্রবাহের সতর্কতা! নিরাপদ থাকার জন্য কী ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন, দেখুন
- 4 hrs ago দিন দিন তাপমাত্রা উর্দ্ধমুখী, গরমে সুস্থ থাকতে কী করবেন, দেখুন
- 7 hrs ago দাম্পত্য জীবনে সুখ থাকবে কন্যা রাশির, আর্থিক লাভ ৫ রাশির, আজকের দিন কেমন যাবে? দেখুন রাশিফল
আনন্দে থাকতে চান? মন খুলে হাসতে চান বাকি জীবন? তাহলে শ্রীরামকৃষ্ণের এই কথাগুলি মেনে চলুন!
একদিন একটু শান্তভাবে বসে ভাবলেই বুঝবেন কী ভিষণ মানসিক টানাপোড়েন এবং লড়াইয়ের মধ্যে দিয়ে কা's আমাদের প্রতিটা দিন। কখনও ভয়, কখনও সংশয়, তো কখনও দুশ্চিন্তার মারে মন খিটখিটে হয়ে যায়, তো কখনও অফিসের কাজের চাপে বা সহকর্মীদের পলিটিক্সের মারে শরীর এবং মন ভেঙে পরে। ফলে দিনের শেষে হাসতে যেন আমরা ভুলে যায়। সেই সঙ্গে পরিবারের সঙ্গেও বাড়তে থাকে দুরত্ব। এমন পরিস্থিতিতে আনন্দের সন্ধান মিলবে কীভাবে বলুন...!
কম-বেশি আমাদের সকলেরই একই অবস্থা। তাই তো সময় এসেছে এমন কিছু নিয়ম মেনে চলার, যা আমাদের অফুরন্ত আনন্দের সন্ধান দিতে পারে, দিতে পারে খুশির ছোঁয়া। কিন্তু কী সেই নিয়ম যা এমন খাওয়া-খাওয়াই দুনিয়ায় আমাদের এতটা অনন্দে রাখতে পারে?
আজ থেক বহু বহু বছর আগে গঙ্গা পাড়ের দক্ষিণেশ্বরে এক মহান আত্মার পায়ের ছাপ পরেছিল। যাকে আমরা সবাই রামকৃষ্ণ পরমহংস দেব নামে চিনে থাকি। তিনি তাঁর জীবনকালে নানা ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে এমন কিছু কথা বলে গেছেন যা আজকের দিনে মেনে চললে দুঃখ আপনার ধারে কাছেও ঘেঁষতে পারবে না। সেই সঙ্গে মন শান্ত হবে। হাজারো উচাটনের মধ্যেও জীবন ফিরে পাবে এক অপার শান্তি। আর এমনটা হলে অফুরন্ত অনন্দে ছোঁয়া পেতে যে সময় লাগবে না, তা কি আর বলার অপেক্ষা রাখে বন্ধু! তাই তো বলি, বাকি জীবনটা যদি সুখে-শান্তিতে এবং অপার অনন্দে কাটাতে চান, তাহলে এই প্রবন্ধে একবার চোখ রাখতে ভুলবেন না যেন।
আসলে এই লেখায় সেই মহান আত্মার বলে যাওয়া এমন কিছু বাণীর উল্লেখ করা হয়েছে, যা মেনে চললে আপনাকে কোনও দিন আর পিছনে ফিরে তাকাতে হবে। তাই বলি বন্ধু, আর অপেক্ষা নয়, চলুন বেরিয়ে পরা যাক অফুরন্ত আনন্দের খোঁজে।
১. যত মত তত পথ:
রামকৃষ্ণ দেব সুযোগ পেলেই বলতেন "যত মত তত পথ"। অর্থাৎ প্রতিটি মানুষ একই দেব-দেবীর পুজো করবেন এমনটা হতে পারে না। সবাই নিজের বিশ্বাস এবং ধরণার উপর ভিত্তি করে বেছে নেবেন নিজ ইষ্ট দবতাকে। আর এমনটাই হওয়া উচিত। তবে তাই বলে ভাববেন না রাম কালী মায়ের পুজো করলে বেশি ফল পাবে, আর শ্যাম শিব ঠাকুরের পুজো করলে কম। কারণ নদীর দিশা আলাদা আলাদা হলেও তারা যেমন সবশেষে মহনায় গিয়ে মিলিতে হয়, তেমনি যে ভগবানেরই আপনি পুজো করুন না কেন, আপনার ভক্তি সাগর গিয়ে মিলবে সেই এক এবং একমাত্র অপার শক্তিতেই। তাই কাকে পুজো করলে ফল মিলবে তা না ভেবে মন যাকে চায়, তার নাম নিন। এক মনে নিন। দেখবেন ফল পাবেই পাবেন।
২. যে কোনও সময় নাম নিলেই ফল মিলবে:
অনেকে ভাবেন সাকাল সকাল উঠে স্নান সেরে ঠাকুর ঘরে গিয়ে দেব-দেবীর সামনে বসে পুজো অর্চনা করলেই কেবল ফল মেলে। কিন্তু জেনে রাখা ভাল যে এই ধরণা একেবারেই ঠিক নয়। কারণ যে কোনও সময়, যে কোনও মুহূর্তে সর্বশক্তিমনানের নাম নিতে পারেন। এমনকি ঘুমতে ঘুমতে তাঁর নাম নিলেও সমান উপকার পাওয়া যায়। শ্রী রামকৃষ্ণ এক্ষেত্রে একটা গল্প প্রায়ই তাঁর ভক্তদের শোনাতেন। তিনি বলতেন কেউ স্বেচ্ছায় নদীতে স্নান করলে তার শরীর য়েমন ভিজে যায়, ঠিক তেমনি যদি কাউকে জোর করে এনে জলে ফেলে দেওয়া হয়, তাহলেও কিন্তু একই ঘটনা ঘটবে। আর যদি কেউ গুমচ্ছে সেই সময় যদি তার গায়ে জল ঢেলে দেওয়া হয়, তাহলেও তো শরীর ভিজে যায়। ঠিক একই ভাবে দেব-দেবীদের নাম যে কোনও সময়ই নিন না কেন, কোনও ক্ষতি নেই কারণ একই ফল পাবেন।
৩. ভগবান মূর্তিতেও থাকেন, থাকেন আমাদের আশেপাশেও:
অনেকে বলেন মূর্তি পুজো ভিত্তিহীন। কেন বলেন জানা নেই! আবার কেউ বাড়িতে মূর্তি প্রতিষ্টা করে ভক্তি ভরে তাঁর পুজো করেন। তাহলে কোনটা ঠিক। কোন পথটাই বা ঠিক? এমন প্রশ্ন আমানাদের মনেও এসেছে নিশ্চয়? যখনই এমন প্রশ্ন কেউ করতেন একটা আজব উত্তর দিতেন রামকৃষ্ণ। তিনি বলতেন ছোট বাচ্চা যখন প্রথম বারের জন্য অক্ষর লিখতে শেখে, তখন সে বড় বড় করে লেখে। ধীরে ধীরে যখন পারদর্শী হয়ে ওঠে, তখন হাতের লেখা ছোট হতে শুরু করে। ঠিক একই ভাবে সর্বশক্তিমানকে এক মনে ডাকতে গেলে যে একাগ্রতার প্রয়োজন পরে, সেই মন তৈরি করতে প্রথমে একটা বড় টার্গেট প্রয়োজন। আর ঠিক এই কারণেই মূর্তি পুজোর প্রয়োজন রয়েছ। আর যখন মনে করবেন মন স্থির হয়ে উঠেছে, তখন খালি চোখে দেওয়ালের দিকে তাকিয়ে তাঁকে ডাকলে দেখবেন মনের আয়নায় সেই দেব-দেবীর ছবি ফুটে উঠেছে। তাই মূর্তি পুজো করলে কোনও ক্ষতি হয় না, বরং মন ধীরে ধীরে শান্ত হয়ে ওঠে। আর মন শান্ত হলে যে কোনও পরিস্থিতিতেই যে সুখে থাকা সম্ভাব হয়, তা কি আর বলার অপেক্ষা রাখে!
৪. ভগবান হলেন কল্প বৃক্ষ:
আমরা ভগবানের সামনে এসে মনের কথা বলি। নিজেদের মনের নানা স্বপ্ন রেখে দিই সর্বশক্তিমানের সামনে। কিন্তু তবু মনের কোণায় একটা সন্দেহ থেকেই যায় যে "ভগবান কে বললাম বটে। কিন্তু তিনি কি আমার স্বপ্ন পূরণ করবেন?"। এমন বিশ্বাস এবং খারাপ চিন্তার কারণেই কিন্তু আমাদের সব স্বপ্ন পূরণ হয় না। এক্ষেত্রে পরমহংসদেব এক মজার গল্প শোনাতেন। তিনি বলতেন ভগবান হলেন সেই কল্প বৃক্ষ, যার নিচে বসে এক গবীর ভাবলেন আমি যদি রাজা হয়ে উঠতাম, তাহলে বেশ হত। যেই ভাবনা আমনি সে রাজা হয়ে উঠলো। এরপর সে ভাবলো এবার যদি এক সুন্দরী আমার স্ত্রী হতেন, তাহলে কেমন হয়! সেই স্বপ্নও পূরণ হল। এবার কোনও এক অজানা কারণে সে মনে মনে ভাবতে থাকলো হঠাৎ করে যদি একটা বাঘ এসে যায়, তাহলে তো তার মৃত্যু নিশ্চিত। যেই না ভাবনা, আমনি কোথা থেকে একটা বাঘ এসে তাকে খেয়ে ফেললো। একই ভাবে ভগবানের নাম নেওয়ার সময় ভালো কথা ভাবলে ভালো ফল পাবেন, আর যত খারাপ ভাববেন, তত খারাপ হওয়ার আশঙ্কা যাবে বেড়ে।
৫. ভগবান ছাড়া বাঁচা সম্ভব?
একথা তো মানবেন যে আমাদের আশেপাশে উপস্থিত খারাপ শক্তি যেমন সারাক্ষণ আমাদের ক্ষতি করতে চাইছে, তেমনি শুভ শক্তি, যাকে ভগবান নামেও ডাকা যেতে পারে, সেও চেষ্টা চালাচ্ছে আমাদের উদ্ধার করতে। তাই ভগবান ছাড়া কি সত্যিই বাঁচে থাকা সম্ভব? মনে তো হয় না। একই কথা শ্রী রাম কৃষ্ণও বলতেন। তাঁর মত ছিল একটা প্রদীপ যেমন তেল ছাড়া জ্বলতে পারে না, তেমনি একজন মানুষের পক্ষে ভগবান চাড়া বাঁচা কোনও ভাবেই সম্ভব নয়।
৬. জীবনের কী লক্ষ হওয়া উচিত?
আমরা সবাই আজ টাকার পিছনে ছুটছি। টাকা, বাড়ি-গাড়ি, জাগতিক কমফোর্ট পেলেই আমাদের জীবন সার্থক এমনটা ভেবে নিয়েছি আমরা। কিন্তু একথা ভুলে গেছি যে টাকা দিয়ে কেনা জিনিস সাময়িক কালের জন্য মনকে খুশি দিতে পারে ঠিকই, কিন্তু দীর্ঘক্ষণের জন্য নয়। তাই টাকার পিছনে না ছুটে আশেপাশের মানুষদের কীভাবে আনন্দে রাখা যায়, সে চেষ্টা করুন। সবাইকে মন-প্রাণ দিয়ে ভালবাসুন। দেখবেন এতটাই অনন্দের সন্ধান পাবেন যে দুঃখ ধারে কাছেও ঘেঁষতে পারবে না।