Just In
ব্রহ্ম মুহূর্তে ঘুম থেকে উঠলে কী কী উপকার পেতে পারেন জানা আছে?
ভোর হওয়ার দেড় ঘন্টা আগের সময়কে হিন্দু শাস্ত্রে বহ্ম মুহূর্তে বলা হয়ে থাকে। এমনটা বিশ্বাস করা হয় যে ভগবান ব্রহ্মা জগত সংসারকে সৃষ্টি করেছিলেন এই বিশেষ সময়ে।
ভোর হওয়ার দেড় ঘন্টা আগের সময়কে হিন্দু শাস্ত্রে বহ্ম মুহূর্তে বলা হয়ে থাকে। এমনটা বিশ্বাস করা হয় যে ভগবান ব্রহ্মা জগত সংসারকে সৃষ্টি করেছিলেন এই বিশেষ সময়ে। তাই তো এই পবিত্র মুহূর্তেকে ব্রহ্ম সময় বলে বিবেচিত করা হয়ে থাকে। প্রসঙ্গত, এই সময় নিয়মিত ঘুম থেকে উঠলে মন এবং মস্তিষ্কের ক্ষমতা বৃদ্ধি পেতে শুরু করে। সেই সঙ্গে আধ্যাত্মিক ক্ষমতার এত মাত্রায় বিকাশ ঘটে যে জীবন বদলে যেতে সময় লাগে না।
হিন্দু শাস্ত্রে এমনটা উল্লেখ পাওয়া যায় যে ব্রহ্ম মুহূর্তে পরিবেশ এতটাই শান্ত থাকে যে এই সময় প্রকৃতিতে পজেটিভ শক্তির মাত্রা বাড়তে শুরু করে। যার প্রভাবে নানাবিধ উপকার মেলে। যেমন ধরুন...
১. মস্তিষ্কের ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়:
এমনটা বিশ্বাস করা হয় যে এই বিশেষ সময়ে ঘুম থেকে উঠে হাত-মুখ ধুয়ে যদি কম করে ৩০ মিনিট "ওম" উচ্চারণ করে এক মনে প্রাণায়ম করা যায়, তাহলে মস্তিষ্কের ক্ষমতা বৃদ্ধি পেতে শুরু করে। সেই সঙ্গে গৃহস্থের অন্দরে পজেটিভ শক্তির মাত্রা এতটা বেড়ে যায় যে জীবন পথে মাথা চাড়া দিয়ে ওঠা বাঁধার পাহাড় সরে যেতে সময় লাগে না। সেই সঙ্গে গুড লাক রোজের সঙ্গী হয়। ফলে চরম সফলতার স্বাদ পেতে সময় লাগে না। প্রসঙ্গত, শাস্ত্র মতে প্রকৃতির অন্দরে প্রচুর পরিমাণে মজুত থাকে। এই শক্তিকে যদি একবার কাজে লাগাতে পারেন, তাহলে জীবন বদলে যেতে সময় লাগে না। আর ব্রহ্ম মুহূর্তে হল সেই সময়, যখন আপনি প্রাণায়মের বলে সেই শক্তিকে কাজে লাগানোর সুযোগ পেতে পারেন। তাই তো বলি বন্ধু, জীবনকে সুন্দর করে তুলতে এই সুযোগ হাত ছাড়া করবেন না যেন!
২. জ্ঞানের বিকাশ ঘটে:
ভোর হওয়ার দেড় ঘন্টা আগে ঘুম থেকে উঠে প্রকৃতির মাঝে কিছু সময় কাটান। দেখবেন দিনের পর দিন এমনটা করলে আপনার ভাবনা-চিন্তায় ফারাক আসতে শুরু করবে। সেই সঙ্গে মন এতটাই শান্ত হয়ে যাবে যে রাগ দূরে পালাবে, আর যেমনটা আপনাদের সবারই জানা আছে যে রাগ হল সেই আগুন যা জীবনকে নিমেষে পুড়িয়ে ছাই করে দেয়। তাই বন্ধু এই আগুনের ধ্বংসলীলার থেকে যদি বাঁচতে চান, তাহলে কিন্তু সকাল সকাল অ্যালার্মটা সেট করতে ভুলবেন না যেন!
৩. লক্ষী-সরস্বতী মন্ত্র:
শাস্ত্র মতে ব্রহ্ম মুহূর্তে উঠে লক্ষ্মী- সরস্বতী মন্ত্র পাঠ করা শুরু করেল পরিবেশে উপস্থিত প্রাণ শক্তি, যাকে ভাইটাল লাইফ এনার্জিও বলা হয়, তা এত মাত্রায় অ্যাকটিভ হয়ে যায় যে কোনও ধরনের দুর্ঘটনা বা খারাপ ঘটনা ঘটার আশঙ্কা হ্রাস পায়। শুধু তাই নয়, গৃহস্থের অন্দরে শুভ শক্তির মাত্রা বেড়ে যাওয়ার কারণে সুখ-শান্তির ঝাঁপি কখনও খালি হয় না। প্রসঙ্গত, মন্ত্রটি হল: "কার্গারা ভাস্তে লক্ষ্মী, করমআধ্যায়া সরস্বতী..."।
৪. ফুসফুসের ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়:
একাধিক গবেষণায় দেখা গেছেন ব্রহ্ম মুহূর্তে পরিবেশে ফ্রেশ অক্সিজেনের পরিমাণে প্রায় ৪১ শতাংশ-এ এসে পৌঁছায়। তাই তো এই সময় ঘুম থেকে উঠে কিছু সময় গাছা-গাছালির মধ্যে কাটালে শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা বাড়তে শুরু করে। ফলে একদিকে যেমন ফুসফুসের ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়, তেমনি শরীরের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গগুলির ক্ষমতাও বাড়তে থাকে। ফলে রোগভোগের আশঙ্কা হ্রাস পায়।
৫. ওজন হ্রাসের সম্ভাবনা বাড়ে:
সম্প্রতি প্রায় ৯০ হাজার মানুষের উপর করা এক গবেষণায় দেখা গেছে সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠলে শরীরের অন্দরে এমন কিছু পরিবর্তন হতে শুরু করে যে তার প্রভাবে মেদ ঝরার প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত হয়। ফলে ওজন নিয়ন্ত্রণে চলে আসতে সময় লাগে না। শুধু তাই নয়, রক্তে শর্করার মাত্রাও ঠিক থাকে। ফলে জীবনে কোনও দিন ডায়াবেটিসের মতে মারণ রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে না। প্রসঙ্গত, বেশ কিছু স্টাডিতে এও প্রমাণিত হয়েছে যে ব্রহ্ম মুহূর্তে ঘুম থেকে উঠলে মস্তিষ্কের ক্ষমতা এতটা বেড়ে যায় যে মানসিক অবসাদ বা ডিপ্রেশনের মতো রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা কমে।
৬. শিব মন্ত্রের ক্ষমতা বেড়ে যায়:
ব্রহ্ম মূহুর্তে ঘুম থেকে উঠে ঠাকুর ঘর পরিষ্কার করে এক মনে যদি "ওম নম শিবায়", এই মন্ত্রটি জপ করা যায়, তাহলে জীবনে সফলতা লাভ করার সম্ভাবনা বাড়তে থাকে। সেই সঙ্গে অর্থনৈতিক উন্নতি লাভের পথও প্রশস্ত হয়। তাই তো বলি বন্ধু, অল্প সময়ে যদি পকেট ভর্তি টাকার মালিক হয়ে উঠতে চান, তাহলে সকাল সকাল ঘুম থেকে ওঠা কিন্তু মাস্ট!
৭. সত্ত গুণের বিকাশ ঘটে:
এমনটা বিশ্বাস করা হয় যে ব্রহ্ম মুহূর্তে ঘুম থেকে ওঠা শুরু করলে আমাদের সত্ত গুণের বিকাশ ঘটতে শুরু করে। ফলে হারিয়ে যাওয়া মানসিক শান্তি ফিরে আসে। সেই সঙ্গে ধৈর্য যেমন বাড়ে, তেমনি মানুষের প্রতি ভালবাসাও বাড়তে থাকে। ফলে পরিবারে সুখ-সমৃদ্ধির ছোঁয়া লাগতে সময় লাগে না। শুধু তাই নয়, জীবন পথ চলতে চলতে দুঃখের সঙ্গে দেখা হয়ে যাওয়ার আশঙ্কাও হ্রাস পায়।
এবার বুঝতে পরেছেন তো ব্রহ্ম মুহূর্তে ঘুম থেকে ওঠার প্রয়োজন কতটা..!