Just In
- 6 hrs ago এপ্রিল মাসে ৪ গ্রহের স্থান পরিবর্তন, রাজযোগ ও সৌভাগ্যে ফুলে ফেঁপে উঠবে এই রাশির জাতকরা, দেখুন
- 7 hrs ago আপনার কি ক্রমাগত কান চুলকাচ্ছেন? অজান্তেই ডেকে আনচ্ছেন বড় বিপদ
- 11 hrs ago মসুর ডাল খেতে ভালোবাসেন? কিন্তু অতিরিক্ত খেলে হতে পারে পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া!
- 12 hrs ago অনলাইন গেমে বাচ্চারা ঘরকুঁনো! জানেন কি স্বাস্থ্যের জন্য় কতটা উপকারি আউটডোর গেম?
Don't Miss
দীপাবলির গোপন কথা!
হাতে মাত্র কটা দিন। তার পরেই মেতে ওঠার পালা আলোর উৎসবে। তবে এই উৎসবের সূচনা কি করে হল জানা আছে? মনে রাখতে হবে, ভারতের প্রতিটি উৎসবই ধর্মের সঙ্গে সম্পর্কিত। আর সেই জন্যই যে কোনও উৎসবের উৎপত্তি বা তার বিশদ বর্ণনা পাওয়া যায়, বিভিন্ন পৌরাণিক ঘটনা বা লোক মুখে। সেই একইভাবে দীপাবলি উৎসবের সূচনা হয়? আজ সেই নিয়েই আলোচনা করা হবে এই প্রবন্ধে।
কী কী কারণে এদেশে শুরু হয়েছিল এই উৎসব?
১. সূর্যের আরাধনা:
সেই প্রাচীনকাল থেকেই ভারতবর্ষে দীপাবলি পালিত হয়ে আসছে। মূলত, কার্ত্তিক মাসের পরেই এই উৎসবের সূচনা হয়। পদ্ম পুরাণ, স্কন্ধ পুরাণ সহ অন্যান্য সংস্কৃত সাহিত্যে এই উৎসবের উল্লেখ রয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, দীপাবলিতে দীপ প্রজ্বলনের প্রসঙ্গে স্কন্ধ পুরাণে বলা হয়েছে, এই দীপ বা প্রদীপ সূর্যকে স্মরণ করে জ্বালানো হয়। কারণ, এই ধরিত্রীকে আলো এবং শক্তি প্রদান করে চলেছে একমাত্র সূর্য।
২. কথার মধ্যে কথা:
দিওয়ালি কথাটি এসেছে, সংস্কৃত শব্দ দীপাবলি থেকে। যার অর্থ, ‘দীপ' অর্থাৎ প্রদীপ এবং ‘আবালি' বা সারি থেকে। সুতরাং দীপাবলি কথাটির অর্থ হল, সারিবদ্ধ প্রজ্বলিত প্রদীপ। তাই দিওয়ালি বা দীপাবলিতে ঘরে ঘরে মাটির প্রদীপ, মোমবাতি ইত্যাদি জ্বালানো হয়ে থাকে।
৩. নানা জাতির উৎসব:
দীপাবলি শুধুমাত্র হিন্দুরাই নয়, আরও বহু জাতি পালন করে থাকে। যেমন- জৈন, শিখ প্রভৃতি। তবে এঁদের ক্ষেত্রে এই উৎসব পৌরাণিকতা থেকে একটু আলাদা। কারণ এঁদের বিশ্বাস, অন্ধকারের শেষে আলোর জয়কেই পালন করা হয় দীপাবলির মাধ্যমে। একই সঙ্গে, খারাপ এবং হিংসা- দ্বেষের বিরুদ্ধে সত্যের জয়ই এই উৎসবের মূল কারণ।
৪. ইতিহাস যেখানে পথ দেখায়:
ভারতবর্ষের বিভিন্ন জায়গায় নানারকমভাবে দীপাবলি পালন করা হয়ে থাকে। মূলত, পৌরাণিক কাহিনী, হিন্দু মতাদর্শ, স্থানীয় লোককথা এবং দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা বিশ্বাসের ওপর ভিত্তি করেই এই উৎসব পালন করা হয়ে থাকে।
৫. রামায়ণ এবং মহাভারত:
পৌরাণিক গ্রন্থ রামায়ণে বলা হয় যে, দীর্ঘ বনবাসের পর শ্রী রাম, তাঁর ভ্রাতা লক্ষণ এবং স্ত্রী সীতার ফিরে আসাকে পালন করতেই দীপাবলির সূচনা হয়। আবার অন্য মহাগ্রন্থ মহাভারতে বলা হয় যে, পাণ্ডবদের বনবাসের পর ফিরে আসাকে চিহ্নিত করতেই দীপাবলির সূচনা হয়। আবার অন্যদিকে এও ধারণাও আছে যে, ধনসম্পদের দেবী লক্ষ্মীকে স্মরণ করার জন্যই দীপাবলি পালন করা হয়। মোট পাঁচ দিন ধরে এই উৎসব চলে। পৌরাণিক মতে, শুভ এবং অশুভের যুদ্ধে প্রথম দিন দেবী লক্ষ্মী দুধের সাগর থেকে উৎপত্তি হন এবং সেই রাতেই তিনি বিষ্ণুকে নিজের স্বামী রূপে বরণ করেন। আবার এই বর্ণনাও বহু জায়গায় পাওয়া যায় যে, এই বিশেষ দিনে ভগবান শ্রী বিষ্ণু দেবী লক্ষ্মীর কাছে বৈকুণ্ঠধামে ফিরে এসেছিলেন। এইসব নানা পৌরাণিক কাহিনী মতেই দেশের নানা প্রান্তে দীপাবলি পালন করা হয়ে থাকে। প্রসঙ্গত, এই বিশেষ দিনে, দেশের নানা প্রান্তে নানা দেবদেবীর পুজোও হয়ে থাকে। যেমন- কোথাও কালী ঠাকুরকে আরাধনা করা হয়। আবার কোথাও গনেশ, কোথাও সরস্বতী, আবার কোথাও ধনের দেবতা কুবেরকে পুজো করা হয়।
৬. নানা দেবের আগমণ ঘটে:
এই সময়ে পশ্চিমবঙ্গে কালী ঠাকুর পুজো করা হয়। একইসঙ্গে বহু বাড়িতে লক্ষ্মী পুজোও হয়। অন্যদিকে, উত্তর ভারতের বেশ কিছু জায়গায় এদিন ভগবান শ্রী কৃষ্ণকে স্মরণ করা হয়। আবার কোথাও কোথাও অন্নকূটের ব্যবস্থাও করা হয়ে থাকে। সেখানে ৫৬ বা ১০৮ রকমের ভোগ বা রান্না ভগবান শ্রী কৃষ্ণের সামনে নিবেদন করা হয়।
৭. স্মরণ করা হয় মহাবীরকেও :
জৈনধর্ম মতে, দীপাবলিকে অন্যভাবে ব্যাখ্যা করা হয়েছে। এই দিনটি জৈন ধর্মাবলম্বীরা মহাবীরকে স্মরণের মধ্য দিয়ে অতিবাহিত করেন। আচার্য ভদ্রবাহুর লেখা কল্পসুত্র থেকে জানা যায় যে, ৫২৭ খৃষ্ট পূর্বাব্দে জৈন শেষ তীর্থঙ্কর মহাবীর কার্ত্তিক মাসের চতুর্দশীতে মোক্ষ লাভ করেন এবং সেই সময়ে অনেক ভগবান সেই স্থানে এসে উপস্থিত হন। এই বিশেষ দিনটিকে পালন করতে তাই জৈন ধর্মাবলম্বীরা মহাবীরকে স্মরণ করেন।
৮. বন্দি ছোড় উৎসব:
শিখ ধর্মাবলম্বীরাও এই দিনটিতে গুরু গোবিন্দ সিং-কে স্মরণ করে থাকেন। মোঘল রাজা জাহাঙ্গীর, গুরু গোবিন্দ সিংকে গোয়ালিয়র রাজপ্রাসাদে বন্দি করে রাখেন। এরপর গুরু গোবিন্দ সিং জাহাঙ্গীরের কবল থেকে পালিয়ে এসে স্বর্ণ মন্দিরে চলে আসেন। সেই বিশেষ ঘটনাকে স্মরণ করেই আপামর শিখ সম্প্রদায় বন্দি ছোড় দিবস পালন করে থাকেন।
৯. অন্ধকারের উপর বিজয়:
মোট পাঁচদিন ধরে দীপাবলি পালন করা হয়। আশ্বিন মাসের শেষ এবং কার্ত্তিক মাসের শুরুতে এই উৎসব পালন করা হয়। এবং এই সময়ের সবথেকে অন্ধকারতম অমাবস্যার দিনটিতেই দীপাবলি পালন করা হয়ে থাকে। এই কারণেই ভারতবর্ষের প্রায় প্রতিটি ঘরেই প্রদীপ, মোমবাতি জ্বালানো হয় এবং অন্ধকারকে আলোর মাধ্যমে জয় করা হয়। এছাড়াও এই দিন, আতসবাজি, নানা শব্দবাজি পোড়ানো হয়ে থাকে।
১০. নানা স্বাদের পাখোয়ান:
ভারতীয়রা বেশ কিছুদিন আগে থেকেই দীপাবলির আনন্দে মেতে ওঠেন। এই সময় নানা উৎসবের পাশাপাশি সুস্বাদু রান্না প্রায় প্রতিটি বাড়িতে হয়ে থাকে।