Just In
শনির সাড়ে সাতির খপ্পর থেকে বাঁচতে চান? তাহলে কালী পুজোর দিন মহাকালীর পুজো করতে ভুলবেন না যেন!
শাস্ত্র মতে "কালী" কথার অর্থ হল কাল বা সময়। মা কালী সময়কে নিয়ন্ত্রণ করে। নিয়ন্ত্রণে করেন জন্ম-মৃত্যুর কালকে।
আমার লেখার গত কয়েক দিনের ট্রেন্ড দেখে অনেকে ভাবতে পারেন আমি হয়তো মা কালীর ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর হয়ে গেছি। কারণ কোনও না কোনও লেখার মাধ্যমে অনবরত বলে চলেছি মায়ের পুজোর উপকতারিতা সম্পর্ক। কিন্তু বিশ্বাস করুন কোনও স্বার্থ নিয়ে নয়, বরং মন খুলে আপনাদের জানাতে চাই এমন এক মাতৃশক্তির সম্পর্কে, যার আরাধনা করলে আমাদের সব দিক থেকে উপকার হয়।
কেমন উপকার! প্রথমেই যে উপকারটির কথা বলতে হবে, তা হল শনি গ্রহের খারাপ প্রভাব কেটে যায় যদি বিশেষ দিনে মায়ের পুজোর আয়োজন করা হয় তো। হিন্দু শাস্ত্রের উপর লেখা একাধিক বই অনুসারে দশমহাবিদ্যা অনুসারে মহা কালীর পুজোর আয়োজন করলে শনির প্রকোপ কমে যেতে সময় লাগে না। ফলে জীবন আনন্দে ভরে ওঠে চোখের পলকে। যদি প্রশ্ন করেন শনিবার, শনির প্রকোপ নিয়ে এত আলোচনা কেন? তাহলে উত্তরে বলবো প্রিয় পাঠক, একবার জেনে নিন শনির সাড়ে সাতির খপ্পরে পরলে কী কী ক্ষতি হয়। তাহলে দেখবেন আপনি নিজে থেকেই কালী মায়ের পুজোর আয়োজন করছেন।
শাস্ত্র মতে জন্ম কুষ্টিতে শনি গ্রহের অবস্থান বিগড়ে গেলে নানাবিধ সমস্যা মাথা চাড়া দিয়ে ওঠে। সেই সঙ্গে লেজুড় হয় কর্মক্ষেত্রে নানা ঝামেলা, অর্থনৈতিক সমস্যা, পরিবারিক অশান্তি, বৈবাবিক জীবনে কলহ এবং আরও কত কী! শুধু তাই নয়, শনির প্রভাবে এমন সব ঘটনা ঘটতে শুরু করে যে আনন্দ, খুশি, হাসি- এই সব শব্দগুলির সঙ্গে যে দূরত্ব বাড়তে থাকে এবং ভয়ের বিষয় হল একবার শনির খপ্পরে পরলে প্রায় সাড়ে সাত বছর ধরে দুঃখকে সঙ্গী করে চলতে হয়। ফলে জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠতে সময় লাগে না। আর এমন জীবন কেই বা পেতে চাইবে বলুন! তাই তো বলি বন্ধু এমন মারণ ফাঁদে পরতে না চাইলে এ বছর কালী পুজোর দিন শাস্ত্র মতে মহাকালীর পুজোর আয়োজন করতে ভুলবেন না যেন!
তবে কালী পুজোর দিন মায়ের আরাধনা করলে যে কেবল শনির সাড়ে সাতির খপ্পর থেকেই মুক্তি মেলে, এমন নয়। সেই সঙ্গে বোনাস হিসেবে আরও কিছু সুফল পাওয়ার সম্ভাবনা বাড়ে। যেমন ধরুন...
১. অকাল মৃত্যুর হাত থেকে রক্ষা মেলে:
শাস্ত্র মতে "কালী" কথার অর্থ হল কাল বা সময়। মা কালী সময়কে নিয়ন্ত্রণ করে। নিয়ন্ত্রণে করেন জন্ম-মৃত্যুর কালকে। তাই তো এক মনে দেবীর অরাধনা করলে আকালে মৃত্যুর ঘটার আশঙ্কা যায় কমে। শুধু তাই নয়, মায়ের আশীর্বাদে কোনও দুর্ঘটনা বা কোনও ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কাও যায় কমে।
২. সব রোগ সেরে যায়:
এমন রোগে আক্রান্ত হয়েছেন যার কোনও চিকিৎসা নেই? কোনও চিন্তা নেই বন্ধু, এবার কলী পুজোর দিন মহাকালীর পুজোর আয়োজন করুন এবং দশমহাবিদ্যার নানা নিয়ম মেনে দেবীর আবাহণ ঘটান। দেখবেন মায়ের আশীর্বাদে সব রোগের হাত থেকে মুক্তি মিলবে। হয়তো বন্ধু কথাটা শুনতে একটু আজব লাগছে। কিন্তু বিশ্বাস করুন প্রাচীন, বহু প্রাচীন কালে লেখা একাধিক পুঁথি অনুসারে মা হলেন মাতৃশক্তির আধার। তাই তো এমন শক্তির প্রভাব যদি বাড়ির চার দেওয়ালের মধ্যে বাড়তে থাকে, তাহলে শরীর এবং মন এতটাই চাঙ্গা হয়ে ওঠে যে আয়ু বাড়তে সময় লাগে না। তাই তো বলি, যারা মিরাকেল বিশ্বাস রাখেন, তারা দেবীর পুজোর আয়োজন করতে ভুলবেন না যেন!
৩. ধার-দেনা কি বেড়ে গেছে?
নানা কারণে টাকার সমস্যায় যারা ভুগছেন তারা একবার বিশ্বাস করে মায়ের অরাধনা করা শুরু করুন। দেখবেন সুফল পাবেই পাবেন! এমনটা বিশ্বাস করা হয যে মাকে একবার প্রসন্ন করতে পারলে তাঁর আশীর্বাদে টাকা-পয়সা সংক্রান্ত নানা ঝামেলা মিটে যেতে সময় লাগে না, তেমনি সঞ্চয়ও বাড়ে চোখে পরার মতো। নিশ্চয় বুঝতে পরেছেন বন্ধু, মাহকালীর আরাধনা করলে শুধু টাকা-পয়সা সংক্রান্ত ঝামেলাই মেটে না, সেই সঙ্গে বড়লোক হয়ে ওঠার স্বপ্নও পূরণ হয়।
৪. অফিসের বড়কর্তা হয়ে ওঠার স্বপ্ন পূরণ করতে:
একেবারেই ঠিক শুনেছেন! দশমহাবিদ্যা অনুসারে মা কালীর অরাধনা করলে বাড়ির প্রতিটি কোণায় পজেটিভ শক্তির মাত্রা এতটা বেড়ে যায় যে খারাপ সময় কেটে যেতে সময় লাগে না, সেই সঙ্গে গুড লাকও রোদের সঙ্গী হয়ে ওঠে। ফলে চাকরি হোক কী ব্যবসা, সবক্ষেত্রেই উন্নতির পথ প্রশস্ত হয়। শুধু তাই নয়, মায়ের আশীর্বাদে প্রফেশনাল রাইভালদেরও নিকেশ ঘটে। ফলে কর্মজীবন সংক্রান্ত নানা ঝামেলা মিটে যেতেও সময় লাগে না।
৫. বৈবাহিক জীবন সুখে-শান্তিতে কাটে:
এমনটা বিশ্বাস করা হয় যে বিশেষ বিশেষ দিনে মায়ের পুজোর আয়োজন করলে আমাদের চারিপাশে উপস্থিত খারাপ শক্তির প্রভাব কমতে শুরু করে। আর এমনটা যখন হয়, তখন পরিবারে সুখ-সমৃদ্ধির ছোঁয়া লাগতে যেমন সময় লাগে না, তেমনি পরিবারের অন্দরে কোনও ধরনের ঝামেলা বা কলহ মাথা চাড়া দিয়ে ওঠার আশঙ্কাও যায় কমে। সেই সঙ্গে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যেকার সম্পর্কেরও উন্নতি ঘটে।
৬. চাকরি হারানোর আশঙ্কা কমে:
মাকে একবার প্রসন্ন করতে পারলে তিনি তাঁর ভক্তদের হাত কখনও ছাড়েন না। আর যাদের উপর মা কালীর আশীর্বাদ রয়েছে, তাঁদের কোনও ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা থাকে না বললেই চলে। বিশেষত হঠাৎ করে চাকরি হারানোর আশঙ্কা যেমন কমে, তেমনি কোনও ধরনের বিপদ ঘটার সম্ভবনাও আর থাকে না। শুধু তাই নয়, জীবন পথে চলতে চলতে সামনে আসা যে কোনও সমস্যা মিটে যেতেও সময় লাগে না। তাই তো বলি বন্ধু, বাকি জীবনটা যদি নিরাপদে কাটাতে হয়, তাহলে মায়ের শরণাপন্ন হতে দেরি করবেন না যেন!
৭. সম্মানহানীর আশঙ্কা যায় কমে:
একটু গভীরে গিয়ে ভাবলে বুঝতে পারবেন আমারা সারা জীবন শুধু অর্থ রোজগার করি না, তার সঙ্গে সম্মানের পুঁজি যাতে ক্রমশ বাড়ে সে চেষ্টাও করে যাই। তাই যাতে কোনও ভাবে আমাদের সম্মানহানী না ঘটে সেদিকে আমাদের সদা নজর থাকে। কিন্তু তবু কী রক্ষা মেলে। কোনও না কোনও সময়, কোনও না কোনও খারাপ মানুষ সম্মানহানীর চেষ্টা করেই থাকেন। তবে মাকে যদি সঙ্গে রাখেন, তাহলে আর কোনও চিন্তা নেই! কারণ এমনটা বিশ্বাস করা হয় যে নিয়মিত মায়ের নাম নিলে এবং কালী পুজোর সময় মহাকালীর পুজোর আয়োজন করলে মা এতটাই প্রসন্ন হন যে তাঁর আশীর্বাদে ভক্তের সম্মানহানী হওয়ার আশঙ্কা তো কমেই, উপরন্তু সামাজিক সম্মান বৃদ্ধি পায় চোখে পরার মতো।
৮. গ্রহ দোষ কেটে যায়:
বৈদিক অ্যাস্ট্রোলজি অনুসারে আমাদের জীবনকে নিয়ন্ত্রণ করে থাকে ৯ টি গ্রহ-নক্ষত্র। এই নবগ্রহের অবস্থানের উপর অনেক কিছুই নির্ভর করে থাকে। শুধু তাই নয়, কোনও গ্রহ বা নক্ষত্রের অবস্থান যদি বিগড়ে যায়, তাহলে নানাবিধ ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কাও যায় বেড়ে। যেমন ধরুন বৃহস্পতি গ্রহের অবস্থান দুর্বল হয়ে পরলে কর্মক্ষেত্রে নানা বাঁধা আসতে শুরু করে, সেই সঙ্গে টাকা-পয়সা সংক্রান্ত নানা ঝামেলাও মাথা চাড়া দিয়ে ওঠে। এমন পরিস্থিতিকে কি করণীয়? এবছর থেকে কালী পুজোর করা শুরু করুন। দেখবেন গ্রহ দোষের প্রকোপ কমতে সময় লাগবে না।