Just In
- 5 hrs ago
শুক্র প্রবেশ করল মকর রাশিতে, দেখুন এটি ১২টি রাশির উপর কেমন প্রভাব ফেলবে
- 6 hrs ago
জিভে কালো দাগ? বাড়িতে বসেই সহজ উপায়ে মুক্তি পেতে পারেন
- 13 hrs ago
দৈনিক রাশিফল : লক্ষ্মীবারে লক্ষ্মীলাভ হবে কি? জানতে পড়ুন ২৮ জানুয়ারির রাশিফল
- 21 hrs ago
সিল্কি এবং ঘন চুল পেতে ডায়েটে এই ভিটামিনগুলি অন্তর্ভুক্ত করুন
Don't Miss
প্রতি বৃহস্পতিবার নিয়ম করে ভগবান নরসিমার আরাধনা করা উচিত কেন জানা আছে?
পৃথিবীতে যখনই খারাপ-ভালোর ভারসাম্য বিগড়েছে, তখনই নানা রূপে আবির্ভাব ঘটেছে শ্রী বিষ্ণুর। কখনও শ্রী রামের অবতারে এই ধরাধামে এসে রাবনের মতো অত্যাচারির নাশ করেছেল, তো কখনও কৃষ্ণ রূপে বাঁচায়িছেন মানবতাকে। কখনও আবার আধা সিংহ, আধা মানব রূপে এসে বধ করেছেন হিরণ্যকশিপুর মতো অসুরকে। তাই তো বলি বন্ধু যে কোনও ধরনের বিপদ থেকে যদি নিজেতে বাঁচতে হয়, তাহলে শ্রী বিষ্ণুর শরণাপন্ন হওয়া ছাড়া আর কোনও উপায় নেই। আর শাস্ত্রে যেহেতু বৃহস্পতিবারকে দেবের অরাধনা করার দিন হিসেবে বিবেচিত করা হয়েছে। তাই তো সপ্তাহের এই বিশেষ দিনে দেবের নানা আবতারের পুজো করলে নানা উপকার পাওয়া যায়, বিশেষত শ্রী নরসিমার পুজোর আয়োজন করলে জীাবনের ক্যানভাসটা নানা রঙে ভরে উঠতে সময় লাগে না।
প্রসঙ্গত, সপ্তাহের এই বিশেষ দিনে ভগবান নরসিমার অরাধনা করলে সাধারণত যে যে উপকারগুলি পাওয়া যায়, সেগুলি সম্পর্কে এই প্রবন্ধে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে। তাই তো বলি বন্ধু, দেবের আশীর্বাদে যদি নানা উপতার পাওয়ার ইচ্ছা থাকে, তাহলে এই লেখায় একবার চোখ রোখতে ভুলবেন না যেন!
ভগবত পুরান অনুসারে বহু বছর পূর্বে হিরণ্যকশিপু নামে এক অসুর ছিলেন, যিনি ভগবান ব্রহ্মার আশীর্বাদে বর পেয়েছিলেন যে দিনে হোক কী রাতে, কেউ তাঁকে হত্যা করতে পারবে না, সে মানুষ হোক, কী ভগবান। এমনকী কোনও পশুও না। শুধু তাই নয়, কোনও অস্ত্রও হিরণ্যকশিপুকে ছুঁতে পারবে না। এক কথায় তিনি অমরত্বের সন্ধান পয়েছিলেন। আর সেই আশীর্বাদকে কাজে লাগিয়ে তিনি দেবতা এবং মানুবকুলের উপর শুরু করেছিলেন ভিষণ অত্যাচার। শুধু তাই নয়, যেই শ্রী বিষ্ণুর নাম নিতেন, তাকেই শুলিকাঠে চড়ানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন এই অসুর রাজ।
এক সময় এমন পরিস্থিতি হয়ে গিয়েছিল যে না দেবতা, না মানুষ কারও পক্ষেই সুখে-শান্তি বাস করা আর সম্ভব ছিল না। তাই তো কোনও উপায় না পেয়ে সবাই শ্রী বিষ্ণুর শরণাপন্ন হওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। অরাধনা শুরু হয় সর্বশক্তিমানের। ঠিক এ সময়ই হিরণ্যকশিপু জন্ম দেন এক ছেলে সন্তানের। নাম দেন প্রল্লাদ। আর বিধাতার বিধান দেখুন, যে বিষ্ণুর নাম পর্যন্ত শুনতে নারাজ ছিলেন অসুর রাজ, তার নিজ ছেলেই ছোট থেকেই ভদবান বিষ্ণুর নামে পাগল ছিল। ছেলের এমন পাগলামো দেখে অসুর রাজ এতটাই ক্ষিপ্ত ছিলেন যে বারে বারে নিজ ছেলেকেই মারার পরিকল্পনা করতেন। কিন্তু কোনও বারই সফল হতেন না। একদিন আর সহ্য করতে না পেরে প্রল্লাদকে রাজ দরবারে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেন হিরণ্যকশিপু। বাবার নির্দেশ মতো ঠিক সময়ে হাজির হয়ে যান ছোট প্রল্লাদ। ছেলেকে সামনে দেখে রাগ ফুটতে থাকা অসুর রাজ নির্দেশ দেন "কোথায় তোমার ভঘবান"। উত্তরে পল্লাদ জানান, দেব তো রয়েছেন সব জায়গায়। এই থামের মধ্যেও আছে? রাগত হিরণ্যকশিপু চিৎকার করে ওঠেন। উত্তরে শান্ত ভাবে ছেলে উত্তর দেন, " দেব আছে, প্রতিটি কনায় আথে শুধু বিশ্বাসের সঙ্গে নাম নিলেই চলবে!" আর ঠিক তখনই সেই থাম চিরে বেরিয়ে আসে এক দেব মূর্তি, যার মাথা তো সিংহের মতো, কিন্তু শরীর মানুষের ন্যয়। এমন অজব রুপ দেখে হিরণ্যকশিপুরের কথা বন্ধ হয়ে যায়। এদিক চোখের পলকে ভগবান বিষ্ণুর এই হিংস্র অবতার, হিরণ্যকশিপুকে টেনে-হিঁচড়ে নামিয়ে আনেন সিংহসান থেকে। অবশেষে বধ করেন অসুর রাজকে। সেই থেকেই প্রতি শুক্লা চতুর্দশির চতুর্থ পূর্ণিমার দিন, গোধুলি লগ্নে করা হয়ে থাকে দেবের অরাধনা। কিন্তু শাস্ত্রে বলে শুধু কোনও বিশেষ দিনে নয়, বরং প্রতি বৃহস্পতিবার যাদি ভগবান বিষ্ণুর নরসিমা রুপের অরাধনা করা যায়, তাহলে জীবন সুখ শান্তিতে ভরে ওঠে। মেলে আরও অনেক উপকার। যেমন ধরুন...

১. কর্মজীবনে পদন্নতি ঘটে চোখে পরার মতো:
অল্প সময়ে অফিসে চরম সফলতার স্বাদ পেতে চান নাকি? উত্তর যদি হ্যাঁ হয়, তাহলে বন্ধু প্রতি বৃহস্পতিবার সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠে ভগবান বিষ্ণুর এই অবতারের আরাধনা করতে ভুলবেন না যেন! সেই সঙ্গে নরসিমা মন্ত্রও জপ করতে হবে। প্রসঙ্গত, এমনটা যদি নিয়মিত করতে পারেন, তাহলে দেখবেন কর্মজীবনে তরতরিয়ে এগিয়ে যেতে কেউ আপনাকে আটকাতে পারবেন না। সেই সঙ্গে প্রতিপক্ষরা শত চেষ্টা করেও কোনও ক্ষতি করে উঠতে পারবে না।

২. যে কোনও বিপদ থেকে রক্ষা মেলে:
শাস্ত্র মতে প্রতি বৃহস্পতিবার শ্রী নরসিমা মন্ত্র পাঠ করা শুরু করলে খারাপ শক্তি ধারে কাছেও ঘেঁষতে পারে না। সেই সঙ্গে গৃহস্থের অন্দরে এক মাত্রায় পজেটিভ শক্তির বিকাশ ঘঠে যে গুড লাক রোজের সঙ্গী হয়ে ওঠে। ফলে সাফল্য পেতে সময় লাগে না। প্রসঙ্গত, এমনটাও বিশ্বাস করা হয় যে এই শ্রী নরসিমার নামচ্চারণ করলে দেবের আশীর্বাদ সব সময় ভক্তের সঙ্গে থাকে। ফলে খারাপ কোনও ঘটনা ঘটার আশঙ্কা একেবারে কমে যায়।

৩. পরিবারে সুখ-সমৃদ্ধি বজায় থাকে:
এমনটা বিশ্বাস করা হয় যে টানা ৩০ দিন শ্রী নরসিমার মন্ত্র জপ করলে গৃহস্থের অন্দরে থাকা নেগেটিভ এনার্জির প্রকোপ কমতে শুরু করে। ফলে কোনও দিনই সুখের ঝাঁপি খালি হয় না।

৪. ভয় দূর হয়:
টানা ৫ দিন এই মন্ত্র পাঠ করলে মনের অন্দরে জমতে থাকা ভয় দূরে পালায়। সেই সঙ্গে আত্মবিশ্বাস এতটা বেড়ে যায় যে, যে কোনও ধরনের বাঁধার পাহাড় পেরতে সময়ই লাগে না। শুধু তাই নয়, সারাক্ষণ মনের মধ্য়ে দাপাদাপি করতে থাকা খারাপ চিন্তা থেকেও মুক্তি মেলে। ফলে জীবনে কখনো শান্তির অভাব হয় না।

৫. অর্থনৈতিক উন্নতি ঘটবে:
এমনটা বিশ্বাস করা হয় যে এক মনে প্রতিদিন দেবের নাম নিলে অর্থনৈতিক সমস্যা কমতে সময় লাগে না। ফলে পকেট ভর্তি টাকার মালিক হওযার স্বপ্ন পূরণ হয় চোখের পলকে। তবে এখানেই শেষ নয়, শাস্ত্র মতে শ্রী নরসিমার নাম করলে গুড লাক রোজের সঙ্গী হয়। ফলে মনের মতো চাকরি পাওয়ার স্বপ্ন পূরণ হতেও সময় লাগে না।

৬. স্ট্রেস এবং মানসিক অবসাদের প্রকোপ কমে:
আজ যুব সমাজের সিংহভাগই ক্রণিক স্ট্রেসের শিকার। যে কারণে গত কয়েক দশকে আমাদের দেশে ডায়াবেটিস, কোলেস্টেরল এবং হার্টের রোগের মতো মারণ রোগের প্রকোপ এত মাত্রায় বেড়েছে। এমন কোনও ভয়ঙ্কর রোগে যদি আক্রান্ত হতে না চান, তাহলে স্ট্রেসকে নিয়ন্ত্রণে রাখতেই হবে। আর এই কাজে আপনাকে সাহায্য করতে পারেন শ্রী নরসিমা। একেবারেই ঠিক শুনেছেন বন্ধু! আসলে শাস্ত্র মতে দেবের অরাধনা করা শুরু করলে মন শান্ত হয়। ফলে একদিকে যেমন স্ট্রেস লেভেল কমতে থাকে, তেমনি রাগের মাত্রাও কমে চোখে পরার মতো।

৭. কালো যাদুর হাত থেকে রাক্ষা করে:
বৃহস্পতিবার করে যদি সর্বশক্তিমানের নাম জপ করতে পারেন, তাহলে কালো যাদুর প্রভাবে খারাপ কিছু ঘটে যাওয়ার আশঙ্কা হ্রাস পায়। প্রসঙ্গত, একথা তো মানবেন যে আজকের ডেটে আপনার উন্নতি দেখে অনেকেই ইর্ষান্বিত, আর এই কারণে আপনার ক্ষতি করতেও যে অনেকে পিছপা নন, তা নিশ্চয় আর বলার অপেক্ষা রাখে না। এমনকী নানাবিধ ক্ষতি করার উদ্দেশ্যে কেউ কেউ তো ব্ল্যাক ম্যাজিকের সাহায্যও নিয়ে থাকেন। এমন পরিস্থিতিতে নিজেকে এবং পরিবারের বাকি সদস্যদের যে কোনও ধরনের ক্ষতির হাত থেকে বাঁচাতে দেবের অরাধনা করা যে জরুরি, তা কি আর বলার অপেক্ষা রাখে!

৮. আয়ু বাড়ে:
হিন্দু শাস্ত্র মতে নিয়মিত শ্রী নরসিমার আরাধনা করলে দেহের অন্দরে নানা পরিবর্তন হতে শুরু করে। যার প্রভাবে ছোট-বড় সব রোগই দূরে পালায়। ফলে আয়ু বাড়ে চোখে পরার মতো। তাই তো সুস্থ শরীরে, শান্ত মনে দীর্ঘদিন যদি বাঁচতে চান, তাহলে শ্রী নরসিমার নাম জপ করতে ভুলবেন না যেন!

৯. মনের জোর বাড়বে:
এমনটা বিশ্বাস করা হয় যে দেবাদিদেব এবং হনুমানজির আরাধনা করলে মনের জোর যেমন বাড়ে, তেমনি একই উপকার পাওয়া যায় শ্রী নরসিমার পুজো করলেও। আর একবার মনের জোর আকাশ ছুঁলে জীবন পথে চলতে চলতে সামনে আসা যে কোনও বাঁধা পেরিয়ে যেতে যেমন সময় লাগে না, তেমনি স্ট্রেস এবং মানসিক অবসাদের মতো রোগ ঘিরে ধরার আশঙ্কাও হ্রাস পায়।

শ্রী নরসিমা মন্ত্র:
দেবের অরাধনা করার সময় যদি "ওম নরসিমায় বিধমাহে বজ্রনক্ষয়া ধিমাহী তানো সিমহ প্রাচোদায়াত", এই মন্ত্রটি জপ করতে পারেন, তাহলে সর্বশক্তিমান বেজায় প্রসন্ন হন। ফলে চটজলদি উপকার পাওয়ার পথ প্রশস্ত হয়। প্রসঙ্গত, এক মনে "বজ্র নখয় ভিদমাহে তিকশনা দামস্ত্রারায় ধিমাহে তানো নরসিমা প্রাচোদায়াত", এই মন্ত্রটি জপ করলেও কিন্তু সমান উপকার পাওয়া যায়।