Just In
লক্ষ্মীর আশীর্বাদে সংসার ফুলে ফেঁপে উঠুক এমনটা চান কি? তাহলে এই সলতেগুলি দিয়ে প্রদীপ জ্বালাতে হবে!
হিন্দু শাস্ত্র মতে এই প্রবন্ধে আলোচিত প্রদীপগুলি নিয়মিত জ্বালালে যে কত রকমের উপকার পাওয়া যায়, সে সম্পর্কে আপনি ধরণা করে উঠতে পারবে না!
পুজোর পর প্রদীপ জ্বালান নিশ্চয়? কিন্তু কেন জ্বালান প্রদীপ, সেই উত্তর জানার চেষ্টা করেছেন কখনও?
উত্তরটা যে "না" হবে, সে তো জানা কথাই। তাই তো এই প্রবন্ধে পুজোর সময় নানা ধরনের সলতে ব্যবহার করে প্রদীপ জ্বালানো উচিত কেন, সে সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করার চেষ্টা করা হবে। তবে প্রবন্ধের দ্বিতীয় ধাপে যাওয়ার আগে একটা কথা জানিয়ে রাখি আপনাদের। হিন্দু শাস্ত্র মতে এই প্রবন্ধে আলোচিত প্রদীপগুলি নিয়মিত জ্বালালে যে কত রকমের উপকার পাওয়া যায়, সে সম্পর্কে আপনি ধরণা করে উঠতে পারবে না! তাই তো বলি বন্ধু, আপনি যদি সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকেন বাকি প্রবন্ধটা পড়বেন না, তাহলে যে বেজায় ভুল করবেন, সে কথা বলাই বাহুল্য!
কেন এমন কথা বলছি তাই জানতে ইচ্ছা করছে নিশ্চয়? তাহলে আর অপেক্ষা কেন, চোখ রাখুন বাকি প্রবন্ধে এবং জেনে নিন প্রদীপের আশ্চর্য সব ক্ষমতা সম্পর্কে...
১.কলা দিয়ে তৈরি সলতে:
আম বাঙালির বাড়িতে সাধারণত তুলো বা কাপড় দিয়ে তৈরি সলতে ব্যবহার হয়ে থাকে। তাই হয়তো অনেকেই জানবেন না কলা দিয়েও কিন্তু সলতে বানানো সম্ভব। আর এমন সলতে ব্যবহার করে নিয়মিত সকাল-বিকাল প্রদীপ জ্বালালে এ জীবনে করা নানা পাপের শাস্তির হাত থেকে মুক্তি মেলে। সেই সঙ্গে মানসিক অশান্তিও দূর হয়। ফলে অনন্দে ভরে ওঠে জীবন। তবে এই সব উপকারগুলি পাওয়ার সঙ্গে কলার সলতের সম্পর্কটা ঠিক কোথায় সে সম্পর্কে যদিও জানা যায়নি এখনও। কিন্তু প্রাচীন কালে লেথা একাধিক বই অনুসারে কলার সলতে ব্য়বহার করলে বাস্তবিকই নানাবিধ উপকার পাওয়ার পথ প্রশস্ত হয়।
২. তুলোর সলতে:
শাস্ত্র মতে তুলোর সলতে ব্যবহার করে বানানো প্রদীপ জ্বালালে গৃহস্থে মা লক্ষ্মীর প্রবেশ ঘটে। ফলে পরিবারে সুখ-সমৃদ্ধির ছোঁয়া লাগতে সময় লাগে না। শুধু তাই নয়, অর্থনৈতিক উন্নতি ঘটে চোখে পরার মতো। সেই সঙ্গে টাকা-পয়সা সংক্রান্ত নানাবিধ সমস্যাও মিটে যায় চোখের পলকে! তাই তো বলি বন্ধু, অল্প সময়ে অনেক অনেক টাকার মালিক হয়ে ওঠার স্বপ্ন যদি পূরণ করতে হয়, তাহলে নিত্য পুজোর সময় তুলোর সলতে ব্যবহার করে প্রদীপ জ্বালাতে ভুলবেন না যেন!
৩. গোলাপ জলে ভেজানো সলতে:
মা লক্ষ্মী এবং গণেশ দেবের আশীর্বাদে বাকি জীবনটা সুখে-শান্তিতে এবং নিরাপদে কাটাতে চান নাকি? তাহলে ছোট একটা সাদা কাপড় নিয়ে তা গোলাপ জলে ভিজিয়ে ততক্ষণ রেখে দিন, যতক্ষণ না ভাল রকম শুকিয়ে যাচ্ছে। তারপর সেই কাপড়টি সলতের মতো করে প্রদীপে রেখে নিয়মিত সকাল-বিকাল জ্বালান, তাহলেই দেখবেন কেল্লা ফতে!
৪. হলুদ কাপড় দিয়ে বানানো সলতে:
বৈবাহিক জীবন কি একেবারেই সুখ-শান্তিতে কাটছে না? তাহলে বন্ধু আজ থেকেই নিয়ম করে এই বিশেষ ধরনের সলতিটি ব্যবহার করা শুরু করুন। দেখবেন ফল পাবেন একেবারে হাতে নাতে। আসলে এমনটা অনেকেই বিশ্বাস করেন যে হলুদ কাপড় দিয়ে বানানো সলতে যদি প্রদীপ জ্বালানোর সময় ব্যবহার করা হয়, তাহলে সারা বাড়িতে পজেটিভ শক্তির মাত্রা বৃদ্ধি পেতে শুরু করে, যার প্রভাবে একদিকে যেমন স্বামী-স্ত্রীর মধ্যেকার সম্পর্কের উন্নতি ঘটে, তেমনি পরিবারের অন্দরে সুখের ঝাঁপি খালি হয়ে যাওয়ার আশঙ্কাও হ্রাস পায়। প্রসঙ্গত, এমনটাও অনেকে বিশ্বাস করেন যে প্রতি শুক্রবার এই বিশেষ ধরনের প্রদীপটি যদি জ্বালানো যায়, তাহলে দেবী পার্বতী বেজায় প্রসন্ন হন। ফলে মায়ের আশীর্বাদে জীবনের প্রতিটি মুহূর্ত অনন্দে ভরে উঠতে সময় লাগে না।
৫. লাল কাপড় দিয়ে বানানো সলতে:
হাজারো চেষ্টা করেও কি মা-বাবা হওয়ার স্বপ্ন পূরণ হচ্ছে না? তাহলে বন্ধু আজ থেকেই লাল কাপড় দিয়ে সলতে বানিয়ে প্রদীপ জ্বালানো শুরু করুন, তাহলেই দেখবেন কেল্লা ফতে!
আমাদের জীবনের সুখ-দুঃখের সঙ্গে প্রদীপের সলতের যোগটা যে বেজায় নিবিড়, তা তো আর বলার অপেক্ষা রাখে না। কিন্তু একথা জানেন কি বিভিন্ন দেব-দেবীদের সামনে প্রদীপ জ্বালালে এক এক ধরনের উপকার পাওয়া যায়। যেমন ধরুন...
১. গণেশ ঠাকুরের সামনে প্রদীপ জ্বালালে:
অল্প সময়ে কর্মক্ষেত্রে চরম উন্নতি লাভ করতে যদি চান, তাহলে বাড়ির ঠাকুর ঘরে রাখা গণেশ দেবের সামনে অফিস বেরনোর আগে প্রদীপ জ্বালানো শুরু করুন। দেখবেন মনের ইচ্ছা পূরণ হতে সময় লাগবে না। প্রসঙ্গত, গণেশ দেব হলেন সমৃদ্ধির দেবতা। তাই তো প্রতিদিন বাপ্পার সামনে দিয়া জ্বালালে দেব বেজায় প্রসন্ন হন। ফলে পরিবারে সুখ এবং সমৃদ্ধির ছোঁয়া লাগতে সময় লাগে না।
২. হনুমানজির সামনে প্রদীপ জ্বালালে:
একেবারে ঠিক শুনেছেন! দিনের পর দিন যদি খারাপ স্বপ্ন আসতে থাকে, তাহলে তা বন্ধ করারও কিন্তু উপায় আছে। এক্ষেত্রে পঞ্চমুখি হনুমানজির ছবি বা মূর্তির সামনে প্রদীপ জ্বালিয়ে ঘুমতে যেতে হবে। এমনটা করলে খারাপ স্বপ্ন আসার আশঙ্কা হ্রাস পাবে। সেই সঙ্গে মনের অন্দরে সুকিয়ে থাকা ভয় দূর হবে এবং গৃহস্থের অন্দরে খারাপ শক্তির আগমণ ঘটার সম্ভাবনাও যাবে কমে। ফলে কোনও ধরনের খারাপ ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা আর থাকবে না।
৩. সূর্য দেবতার সামনে প্রদীপ জ্বালালে:
এমনটা বিশ্বাস করা হয় যে প্রতিদিন সূর্য দেবতার সামনে প্রদীপ জ্বালালে দেব এতটাই প্রসন্ন হন যে ছোট-বড় কোনও রোগই ধারে কাছে ঘেঁষতে পারে না। প্রসঙ্গত, আপনাদের জানিয়ে রাখি রবিবার হল সূর্য দেবের দিন। তাই এদিন সাকাল সকাল উঠে স্নান সেরে যদি সূর্যদেবকে জল দান করতে পারেন, তাহলে আরও অনেক উপকার মেলে।
৪. রাম দরবারের সামনে প্রদীপ জ্বালালে :
রাম,লক্ষণ, সীতা এবং হনুমানজি একসঙ্গে রয়েছেন এমন ছবির সামনে প্রতিদিন প্রদীপ জ্বালালে গৃহস্থের অন্দরে উপস্থিত খারাপ শক্তি দূরে পালায়। ফলে পরিবারের অন্দরে কোনও কলহ বা বিবাদ মাথা চাড়া দিয়ে ওঠার আশঙ্কা যেমন হ্রাস পায়, তেমনি ভায়ে-ভায়ে হওয়া বিবাদ বা ঝগড়া মিটে যেতেও সময় লাগে না।
৫. দেবাদিদেবের সামনে প্রদীপ জ্বালালে:
একথা তো সবাই জানেন যে প্রতি সোমবার দেবাদিদেবকে দুধ দিয়ে স্নান করালে মনের মতো জীবনসঙ্গী পাওয়া যায়। কিন্তু একথা কি জানা আছে যে প্রতিদিন রাধা-কৃষ্ণের সামনে প্রদীপ জ্বালালে মনের মতো লাইফ পার্টনার তো মেলেই, সেই সঙ্গে বৈবাহিক জীবনে কোনও সমস্যা মাথা চাড়া দিয়ে ওঠার আশঙ্কাও হ্রাস পায়। তবে এক্ষেত্রে একটি বিষয় মাথায় রাখতে হবে। তা হল রাধা-কৃষ্ণের ছবির সামনে ভুলেও সকালবেলা প্রদীপ জ্বালাবেন না যেন! এক্ষেত্রে দিয়া জ্বালাতে হবে সন্ধ্যাবেলায়। কারণ এমনটা করলে তবেই কিন্তু উপকার মেলে।
৬. ধন দেবকার সামনে প্রদীপ জ্বালালে:
শত চেষ্টা করেও কি টাকা জমাতে পারছেন না? এদিকে প্রতিদিন যেন খরচের মাত্রা বেড়েই চলেছে? তাহলে বন্ধু উত্তর দিকে ধন দেবতা কুবেরের ছবি বা মূর্তি রেখে প্রতিদিন দেবের সামনে প্রদীপ জ্বালানো শুরু করুন। দেখবেন অর্থনৈতিক সমস্যা তো মিটে যাবেই, সেই সঙ্গে অনেক অনেক টাকার মালিক হয়ে ওঠার স্বপ্ন পূরণ হতেও দেখবেন সময় লাগবে না।