Just In
মা সরস্বতীর হাতে থাকা বীণা, ময়ূরের পালক এবং পদ্মফুলের ছবি বাড়িতে রাখা উচিত কেন জানা আছে?
প্রতি শুক্রবার দেবীর অরাধনা করার পাশাপাশি যদি মা সরস্বতীর সঙ্গে থাকা বীণা, পদ্মফুল, ময়ূরের পালক এবং রাজহাঁসের মূর্তি বাড়িতে এনে রাখা যায়, তাহলে আরও নানা ধরনের উপর মেলে।
মা হলে জ্ঞানের দেবী, বিদ্যার দেবী। কিন্তু জানেন কি হিন্দু শাস্ত্র অনুসারে দেবীর অরাধনা করলে পড়াশোনা বা কর্মক্ষেত্রই যে শুধু উন্নতি ঘটে, এমন নয়। সেই সঙ্গে আরও নানাবিধ উপকার পাওয়া যায়। যেমন ধরুন- ব্রেন পাওয়ার চোখে পরার মতো বৃদ্ধি পায়। সেই সঙ্গে জ্ঞানের বিকাশ ঘটে, অর্থনৈতিক উন্নতির পথ প্রশস্ত হয়, মনের জোর বাড়ে, পরিবারে সুখ-শান্তি বজায় থাকে এবং খারাপ দৃষ্টির প্রভাবে কোনও ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা যায় কমে।
তবে মজার বিষয় কী জানেন প্রতি শুক্রবার দেবীর অরাধনা করার পাশাপাশি যদি মা সরস্বতীর সঙ্গে থাকা বীণা, পদ্মফুল, ময়ূরের পালক এবং রাজহাঁসের মূর্তি বাড়িতে এনে রাখা যায়, তাহলে আরও নানা ধরনের উপর মেলে। যেমন ধরুন...
১. মায়ের ছবি বা মূর্তি:
বাড়ির ঠাকুর ঘরে মায়ের ছবি বা মূর্তি রাখলে রাখলে সারা বাড়িতে পজেটিভ শক্তির মাত্রা এতটাই বৃদ্ধি পায় যে খারাপ শক্তির প্রভাব কমতে শুরু করে। ফলে কোনও খারাপ ঘটনা ঘটার আশঙ্কা যেমন কমে, তেমনি মায়ের আশীর্বাদে কর্মক্ষেত্রে উন্নতি লাভের সম্ভাবনা যায় বেড়ে। তবে এমনও বিশ্বাস রয়েছে যে পড়ার টেবিলে মায়ের ছবি রাখলে মনোযোগ ক্ষমতার বিকাশ ঘটে। ফলে পড়াশেনায় মন বসতে সময় লাগে না। এই কারণেই তো ছাত্র-ছাত্রীদের পড়ার টেবিলে মায়ের ছবি রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়ে থাকে!
২. বীণার ক্ষমতা:
এমনটা বিশ্বাস করা হয় যে বাড়িতে মায়ের হাতে থাকা বীণার ছবি বা শোপিস রাখলে পরিবারে সুখ-শান্তি বজায় থাকে। বিশেষত বৈবাহিক জীবনে কোনও ধরনের সমস্যা মাথা চাড়া দিয়ে ওঠার আশঙ্কা যায় কমে। সেই সঙ্গে খারাপ চিন্তা যেমন দূরে পালায়, তেমনি ব্রেন পাওয়ারও চোখে পরার মতো বৃদ্ধি পায়। শুধু তাই নয়, এমনটা বিশ্বাস করা হয় যে বাড়িতে বীণা রাখলে সেই গৃহস্থে মায়ের আগমণ ঘটে। ফলে যারা ক্রিয়েটিভ কাজের সঙ্গে যুক্ত, যেমন ধরুন-লেখালেখি, গান, মিউজিক অথবা অর্ট, তাদের কর্মক্ষেত্রে চরম উন্নতি লাভের পথ প্রশস্ত হয়।
৩. রাজহাঁস:
মায়ের বাহন হল রাজহাঁস। তাই তো এই রাজকীয় পাখিটির ছবি বা শোপিস বাড়িতে এনে যদি রাখতে পারেন, তাহলে নানা উপকার পাওয়া যায়। বিশেষত ছাত্র-ছাত্রীদের পড়াশোনায় উন্নতি ঘটার সম্ভাবনা বৃদ্ধি পায়। সেই সঙ্গে পরিবারে কোনও ধরনের কলহ বা সমস্যা মাথা চাড়া দিয়ে ওঠার আশঙ্কা যায় কমে। ফলে সুখ-শান্তির ছোঁয়া লাগে পরিবারে। তাই বলি বন্ধু, বাকি জীবনটা যদি সুখে-শান্তিতে কাটাতে হয়, তাহলে আজই রাজহাঁসের মূর্তি বাড়িতে আনতে ভুলবেন না যেন!
৪. ময়ূরের পালক:
শুধু হিন্দু শাস্ত্রেই নয়, বাস্তুশাস্ত্রেও ময়ূরের পালকের নানা গুণাগুনের উপরে আলোকপাত করা হয়েছে। আসলে এমনটা বিশ্বাস করা হয় যে বাড়িতে ময়ূরের পালক রাখলে মা সরস্বতীর আশীর্বাদ তো মেলেই, সেই সঙ্গে শ্রী কৃষ্ণও বেজায় সন্তুষ্ট হন। ফলে জীবন অনন্দে ভরে উঠতে সময় লাগে না। প্রসঙ্গত, এমনটাও বিশ্বাস করা হয় যে পড়ার বইয়ে ময়ূরের পালক রেখে দিলে একদিকে যেমন জ্ঞানের বিকাশ ঘটে, তেমনি খারাপ শক্তির মাত্রাও কমতে শুরু তরে। ফলে নেগেটিভ এনার্জির কারণ কোনও ধরনের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা যায় কমে।
৫. পদ্ম ফুল:
শাস্ত্র মতে বাড়ির ঠাকুর ঘরে পদ্মফুলের ছবি বা সোপিস এনে রাখলে মা সরস্বতী যেমন সন্তুষ্ট হন, তেমনি মা লক্ষ্মীরও নেক নজর পরে সেই গৃহস্থে। ফলে একদিকে জ্ঞান, বুদ্ধি এবং চেতনার যেমন বিকাশ ঘটে, তেমনি মা লক্ষ্মীর আশীর্বাদে চরম অর্থনৈতিক উন্নতি ঘটতেও সময় লাগে না।
এখন প্রশ্ন হল মা সরস্বতীর পুজো কী কী নিয়ম মেনে করলে এত সব উপকার পাওয়া যেতে পারে, সে সম্পর্কে কোনও জ্ঞান আছে কি?
১. প্রথম ধাপ:
প্রতি শুক্রবার যদি মায়ের অরাধনা করতে পারেন, তাহলে সবথেকে বেশি উপকার পাওয়া যায়। এক্ষেত্রে পুজোর দিনে সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠতে হবে। এরপর এক বালতি জলে তুলসি এবং নিম পাতা ফেলে সেই জল দিয়ে স্নান সেরে সাদা বা হলুদ রঙের জামা-কাপড় পরতে হবে। সএবার ঠাকুর ঘরটা ভাল করে পরিস্কার করার পালা। যখন পরিস্কার হয়ে যাবহে তখন শুরু করতে হবে পুজোর আয়োজন।
২. পুজোর জন্য কী কী জিনিসের প্রয়োজন পরবে:
মায়ের ছবি বা মূর্তির সামনে একটি তমার ঘটি রেখে তাতে গঙ্গা জল, আম পল্লব এবং আম পল্লবের উপরে নারকেল রাখতে হবে। নারকেলের উপরে ভাল করে সিঁদুর, হলুদ এবং চন্দন লেপে দিতে ভুলবেন না যেন! প্রসঙ্গত, এক্ষেত্রে একটি বিষয় মাথায় রাখতে হবে। তা হল মায়ের পুজো শুরু করার আগে একটি সাদা কাপড়ের উপরে মায়ের ছবি বা মূর্তিটি প্রতিষ্টিত করতে হবে। তারপর ফুল, বেল পাতা, সিঁদুর, দুবা ঘাস, পান পাতা এবং ফল সহযোগে শুরু করতে হবে পুজো। এই সময় ধূপ-ধুনো এবং অল্প পরিমাণে কপ্পুর জ্বালিয়ে নিতে ভুলবেন না যেন!
৩. গণেশ পুজো মাস্ট:
মা সরস্বতীর পুজো শুরুর আগে অবশ্যই গণেশ ঠাকুরের পুজো করে নিতে ভুলবেন না যেন! এক্ষেত্রে এক মনে গণেশ মন্ত্র জপ করার মধ্যে দিয়ে করতে হবে বাপ্পার অরাধান। প্রসঙ্গত, দেবের অরাধনা করার পর শুরু করতে মায়ের পুজো।
৪. মা সরস্বতী মন্ত্র:
এমনটা বিশ্বাস করা হয় যে মাযের পুজো শেষে "ওম ইং হ্রিং শ্রিং ভাগ্যদেবায় সরস্বতায় নমহ", এই মন্ত্রটি কম করে ২১ বার জপ করলে দেবী এতটাই প্রন্ন হন যে নানাবিধ উপকার মিলতে সময় লাগে না।