Just In
- 10 hrs ago রঙ খেলার পাশাপাশি দোলে এই খাবারগুলি মাস্ট, আপনিও রাখছেন তো তালিকায়?
- 10 hrs ago হোলিতে ভাগ্য বদলাবে কোন রাশির জাতকদের, কাদেরই বা আর্থিক দিকে লাভ হবে, জানেন
- 2 days ago কেন ভারতীয়দের মধ্যে ওবেসিটির হার বাড়ছে, কী তথ্য উঠে এল গবেষণা থেকে, জানুন
- 2 days ago কবে পড়েছে ফাল্গুন পূর্ণিমা, আর্থিক সঙ্কট কেটে সুখের মুখ দেখবেন কোন রাশির ব্যক্তিরা?
যখন তখন রেগে যাচ্ছেন? রাগ কমানোর এই উপায়গুলি চেষ্টা করে দেখুন
বাকি আর পাঁচটা অনুভূতির মত রাগও একটা অনুভুতি যা নিয়ন্ত্রণে থাকলে ভালো কিন্তু অনিয়ন্ত্রিত হলেই মুশকিল।
ভগবানের সবথেকে ভালো সৃষ্টি হলো মানুষ। সুখ দুঃখ কষ্ট আনন্দ সব কিছু নিজের ইচ্ছা মত প্রকাশ করতে পারে। অনুভূতি প্রকাশ করার মধ্যে দিয়ে নিজের খারাপ লাগা বা ভালোলাগা ব্যক্ত করে। সব অনুভূতির কিছু ভালো দিক আছে তেমনি খারাপ দিক আছে। যার মধ্যে মানুষের রাগ অন্যতম। বাকি আর পাঁচটা অনুভূতির মত রাগও একটা অনুভুতি যা নিয়ন্ত্রণে থাকলে ভালো কিন্তু অনিয়ন্ত্রিত হলেই মুশকিল। অতিরিক্ত বা মাত্রাতিরিক্ত রাগে যেমন নিজের শরীর খারাপ হয় তেমনি দৈনন্দিন কাজ, সম্পর্ক, পরিবার নষ্ট হতে পারে।
রাগ করা মোটেই খারাপ জিনিস না। অনেকেই ভাবেন রাগ করা মানেই সেটা শরীরের পক্ষে খারাপ। অনিয়ন্ত্রিত হলে তবেই তা খারাপ। একটা নিদ্রিষ্ট মাত্রা অব্দি রাগ শুধুমাত্র আপনার মনের ভাবলেই ব্যক্ত করে যা অনিয়ন্ত্রিত হলে শুধু আপনার না, অন্যের খারাপ লাগার কারণও হতে পারে। আর বাকি পাঁচটা অনুভূতি যেমন ব্যক্ত করলে আমাদের ভালো লাগে তেমনি রাগও তার ব্যতিক্রম নয়।
কিছু ভুল ধারনা
অনেকেই রাগ করা নিয়ে কিছু ভ্রান্ত ধারণা ধরে নিয়ে থাকেন। যার বশবর্তী হয়ে মানুষ রাগ করে যাবতীয় ভুল ভ্রান্তি করে থাকে। তাই রাগ নিয়ন্ত্রণ করার আগে এই ভুল ধারণা বা ভাবনা গুলোকে ঠিক করতে হবে।
-অনেকে ভাবেন রাগ করা ভালো এবং রাগ জমিয়ে রাখা উচিত না তাহলে তা শরীরের ভিতরে থেকে শরীরের ক্ষতি করবে।
-অনেকে ভাবেন কর্মস্থলে রাগ দেখানো ভালো। এতে নিজের গাম্ভীর্য বজায় থাকবে, বাকি কর্মচারীরা কিছু বলার আগে ভেবে বলবে বা সোজা কথায় কর্মস্থলে সম্ভ্রম পাওয়ার জন্যে রাগ একমাত্র পথ।
-অনেকে ভাবেন রাগ করা বা না করা আমাদের নিজেদের হাতে নেই। এটা সম্পূর্ণ একটা অনিয়ন্ত্রিত পদ্ধতি যা আমাদের মস্তিষ্ক নিয়ন্ত্রণ করে। আসলে এটা পুরোটাই ভুল কথা। খুব ভালো করে চিন্তা করলে দেখা যাবে যে আসলে রাগ আমরা নিজেরা জেনে বুঝে করি। হ্যাঁ, শুনতে অবাক লাগলেও এটাই সত্যি। আচ্ছা, একটা সহজ উদাহরণ দিয়ে ব্যাপারটা বোঝা যাক। ধরে নেওয়া যাক আপনার কর্মস্থলে বা অফিসে আপনার ঊর্ধ্বতন আপনাকে ডেকে কড়া ভাষায় কিছু বললেন যা আপনার শোনার কথা না। সারাদিন বিব্রত থেকে দিনের শেষে ঘরে ফিরে নিজের ছেলে বা স্ত্রীর কোনো কথায় সেই সারাদিনের রাগ ফিরে এলো। আপনি স্ত্রীকে কিছু কথা শোনালেন বা ছোটো বাচ্চাকে কিছু মারলেন। ভেবে দেখলে দেখা যাবে আপনি আপনার ঊর্ধ্বতনদের উপরের রাগ আপনার বাড়ির লোকের উপর মেটালেন। মানে আপনি সেখানেই রাগ প্রকাশ করলেন যেখানে আপনি দেখাতে পারবেন বলে জানতেন। তাহলে এটা শুধু যে অনিয়ন্ত্রিত পদ্ধতি টা বলা সম্পূর্ণ ভুল।
উদ্দেশ্য
রাগ তাহলে কেন নিয়ন্ত্রণ করবেন? যদি আর পাঁচটা অনুভূতির মত এটাও একটা অনুভুতি হয়? আসলে রাগ এমন একটা অনুভুতি যা একটু অনিয়ন্ত্রিত হলে তা আমাদের সামলানোর বাইরে চলে যায়। সাথে সাথে অতিরিক্ত রাগ আমাদের শরীরের প্রেসার, সুগার এবং অন্যান্য নানা স্নায়ুঘটিত রোগের সমস্যা নিয়ে আসে। হৃদ্ঘটিত সমস্যা বেশি করে নিয়ে আসে। যারা মাইগ্রেইনের সমস্যায় ভোগেন তাদের পক্ষে এই রাগ অত্যন্ত ক্ষতিকারক। তাছাড়া রাগের বশে আমরা অনেক সময় লক্ষ্য রাখি না যে কাকে কি বলছি। ফলে অনেক সময় নিজের আপন কাউকে কিছু খারাপ কথা বলে কষ্ট দিয়ে থাকি, যা থেকে পরে আমাদের অনুতাপ হয়। এছাড়াও কাজে বা পড়াশুনায় মনোযোগ দিতে বা পারিপার্শ্বিক জগতের সাথে যোগাযোগ বা সম্পর্ক রাখতে এই রাগ বাধা দেয় সবসময়। রাগ নিয়ন্ত্রণ করা সহজ কাজ না। অনেক ধৈর্য এবং সময় দিয়ে করতে হয় কিন্তু একবার শিখে গেলে এর প্রভাব অনেক আমাদের জীবনে।
আসুন আজকের আলোচনায় জেনে নেওয়া যাক কিছু সহজ উপায়ে কিভাবে নিজের রাগ নিয়ন্ত্রণ করবেন।
১. কারণ খুঁজুন
কখনো কোনো সময় রাগ হচ্ছে মনে হলে নিজের মনে ভাবুন কেন আমার রাগ হচ্ছে? ঠিক কোন জিনিসটা আমার খারাপ লাগছে? তা কী আমার কোনো কারণে হচ্ছে বা আমার কোনো প্রত্যাশার ফল যা আপনার করা উচিত হয়নি! অনেকসময় কারণ খুঁজতে খুঁজতে রাগ প্রশমিত হতে থাকে কারণ যে কেউ বুঝতে পারে যে তার রাগ করা এখন সমিচিন হচ্ছে কিনা।
২. বলার আগে ভাবুন
কাউকে রাগের বশবর্তী হয়ে কিছু বলার আগে ভাবুন কি বলছেন। আদৌ সেই কথা আপনার বলা উচিত কিনা বা যাকে উদ্দেশ্য করছেন তার সোনার কোন দরকার আছে কিনা। বলার পর আক্ষেপের থেকে ভালো আগে ভেবে চিন্তে বলা।
৩. সময় নিন
যখনই রাগ হচ্ছে খুব তখনই সেই রাগ প্রকাশ না করে আছে নিজেকে শান্ত করুন। তারপর আস্তে আস্তে ধীরে নিজের রাগকে প্রকাশ করুন যাতে অনিয়ন্ত্রিত হয়ে আপনার রাগ কাউকে আহত না করে মানুষিক বা শারীরিক ভাবে।
৪. ব্যায়াম এবং যোগ
অবসর সময়ে একটা সময়ের জন্যে ধ্যান করা অভ্যেস করুন। ধ্যান আপনার মন সংযোগ বাড়াতে সাহায্য করে। ফলে আপনার মন এবং মস্তিষ্ক রাগের দিকে মন না দিয়ে আপনার বিকাশে সাহায্য করবে। সকালে উঠে শরীরচর্চা করুন।
৫. নিজেকে ভাবুন
অনেক সময় আমরা কথা বলতে গিয়ে কাউকে উদ্দেশ্য করে কোন উদাহরণ দিতে গিয়ে কাউকে ছোটো করি বা তার রাগের কারণ হই। চেষ্টা করুন নিজেকে দিয়ে উদাহরণ দেওয়া। আপনি যদি আপনার সমালোচনার কারণ হন, বাকি কেউ আপনাকে ছোটো করতে আসবে না।
৬. ক্ষমা
ক্ষমা করতে শিখুন। অমুক লোক অমুক দিন ওই কথা বলেছিল তার যোগ্য জবাব দেওয়া হয় নি। কিংবা অমুকজন আপনাকে খারাপ কথা বললো তাই আপনাকেও বলতে হবে এই অভ্যেস ত্যাগ করুন। ক্ষমা করতে শিখুন মানুষ কে। দোষ গুণের উর্ধে উঠে যদি মানুষকে ক্ষমা করতে দেখেন তাহলেই আপনার নিজের রাগের কারণ গুলো কমতে থাকবে।
৭. রসবোধ
নিজের মধ্যে রসবোধ এনার চেষ্টা করুন। সবসময় মুখ গোমড়া করে দুনিয়াকে দেখলে পুরো দুনিয়াই আপনার বিপরীতে মনে হবে। চেষ্টা করুন রাস্তায় বেরোলে, ট্রেন বা গাড়িতে কোনো সমস্যা হলে সেটা অন্যের অসুবিধা বোঝার মধ্যে দিয়ে কৌতুক দিয়ে জয় করতে। এতে অন্যের খুশির কারণ আপনি হবেন। রাগ কমবে এবং দিন ভালো যাবে।