Just In
ঠাকুর ঘরে ঠিক কতগুলি ঠাকুরের মূর্তি বা ছবি রাখা শুভ জানা আছে?
হিন্দু ধর্মে প্রচলিত নানা প্রথার উপর লেখা একাধিক বইয়ে এমনটা উল্লেখ পাওয়া যায় যে বাড়ির মন্দিরে কী কী ঠাকুর রাখা হবে, কোন কোন জায়গায় রাখা হবে, এসবেরই একটা নিয়ম আছে।
খেয়াল করে দেখবেন প্রায় প্রতিটি বাড়িতেই একাধিক ঠাকুরের মূর্তি থাকে। কোনও কোনও সময় তো একই ঠাকুরের নানা রুপের নানা ধরনের মূর্তি শোভিত থাকে আমাদের ঠাকুর ঘরে। কিন্তু এমনটা করা কি আদৌ উচিত?
হিন্দু ধর্মে প্রচলিত নানা প্রথার উপর লেখা একাধিক বইয়ে এমনটা উল্লেখ পাওয়া যায় যে বাড়ির মন্দিরে কী কী ঠাকুর রাখা হবে, কোন কোন জায়গায় রাখা হবে, এসবেরই একটা নিয়ম আছে। এই নিয়মগুলি ঠিক মতো মানা না হলে কিন্তু ভালর থেকে খারাপ হওয়ার আশঙ্কা যাবে বেড়ে। তাই এই বিষয়গুলি সম্পর্কে জেনে নেওয়া উচিত। আর এই কারণেই তে এই প্রবন্ধে এমন একটি বিষয়ের উপর আলোকপাত করার চেষ্টা করা হবে, যা নিয়ে আম বাঙালি কোনও সময় ভেবে দেখার চেষ্টাই করেনি।
কী বিষয়? আচ্ছা আপনাদের কি জানা আছে ঠাকুর ঘরে ঠিক কতগুলি মূর্তি রাখা উচিত বা একই ঠাকুরের মূর্তি একাধিক রাখলে কী কী ক্ষতি হতে পারে? জানা নেই তো? কোনও চিন্তা নেই! কারণ এই বিষয়গুলির উপরই বিস্তারিত আলোচনা করার চেষ্টা করা হবে এই প্রবন্ধে।
১. মা দূর্গা, লক্ষী এবং সরস্বতী:
হিন্দু শাস্ত্র মতে এমনটা বিশ্বাস করা হয় যে ঠাকুর ঘরে এই তিন দেবীর মূর্তি রাখলে পরিবারে সুখ-শান্তি বজায় থাকে। অর্থনৈতিক উন্নতিও ঘটে চোখে পারর মতো। সেই সঙ্গে লোকের খারাপ দৃষ্টির মার থেকেও বেঁচে থাকা সম্ভব হয়। কিন্তু এক্ষেত্রে একটি বিষয় মাথায় রাখা একান্ত প্রয়োজন। তা হল ভুলেও এই তিন দেবীর মূর্তি যেন তিনটে করে ঠাকুর ঘরে না থাকে। যেমন ধরুন মা দূর্গার তিনটে রুপের আলাদ আলাদ ছবি রাখা একেবারেই চলবে না। একই নিয়ম মানতে হবে দেবী লক্ষী এবং সরস্বতীর ক্ষেত্রেও। কারণ এই নিয়ম না মানলে ভাগ্য খারাপ দিকে ঘুরে যেতে সময় লাগে না। আর যেমনটা আপনাদের সবারই জানা আছে যে আপনি যতই গুণবান হোন না কেন, খারাপ ভাগ্য আপনার সঙ্গ নিলে জীবনে কোনও কিছুই ঠিক পথে এগোয় না। সেই সঙ্গে খারাপ কিছু ঘটে যাওয়ার আশঙ্কাও বৃদ্ধি পায়।
২. গণেশের মূর্তি:
বাড়িতে বাপ্পার মূর্তি রাখা একান্ত প্রয়োজন। কারণ সমৃদ্ধির পথ প্রশস্ত করেন এই ভগবানই তো, তাই না! কিন্তু একথা জানা আছে কি ঠাকুর ঘরে কখনই তিনটে গণেশের ছবি বা মূর্তি রাখা উচিত নয়। কারণ এমনটা করলে খারাপ ভাগ্য পিছু নেয়। সেই সঙ্গে পরিবারের অন্দরে সুখ-শান্তির পরিবেশ বিগ্নিত হয়। ওই যে কথায় আছে না কোনও কিছুই বেশ মাত্রায় করা ভাল না। ভগবানের ছবি রাখার ক্ষেত্রে এই আপ্ত বাক্যটি মেনে চলা একান্ত প্রয়োজন, না হলে কিন্তু...
৩. শিবের মূর্তি:
ভুলেও বাড়িতে দুটি শিব লিঙ্গ রাখবেন না। কারণ হিন্দু শাস্ত্র অনুসারে এমনটা করলে ভাল কিছু তো হয়ই না, উল্টে একের পর এক খারাপ কিছু ঘটনা ঘটে যাওয়ার আশঙ্কা বৃদ্ধি পায়। প্রসঙ্গত, হিন্দু মতে বাড়িতে শিব লিঙ্গ রাখতে মানা করা হয়। কারণ এমনটা করলে একাধিক নিয়ম ঠিক মতো মেনে দেবাদিদেবের পুজো করতে হয়। আর যদি এমনটা করতে না পারেন। তাহলে ভালর থেকে খারাপ হয় বেশি। তাই দুটো তো ছাড়ুন একটাও শিব লিঙ্গ বাড়িতে রাখবেন না যেন!আর যদি একান্তই রাখার ইচ্ছা হয়, তাহলে কীভাবে সর্বশক্তিমানের পুজো করতে হবে সে সম্পর্কে জেনে নিতে ভুলবেন না যেন!
৪. কাদের একসঙ্গে রাখা চলবে না:
শ্রী কৃষ্ণ এবং রাধা, শ্রী কৃষ্ণ এবং মিরা, ভগবান কার্তিক এবং তার দুই স্ত্রী বালি এবং দেবসেনা, ভগবান গণেশ আর রিদ্ধি এবং সিদ্ধি, যে ছবি বা মূর্তিতে এরা একসঙ্গে রয়েছেন, তা ভুলেও বাড়িতে বা ঠাকুর ঘরে রাখা চলবে না। কারণ এমনটা বিশ্বাস করা হয় যে এদের একসঙ্গে রাখলে পরিবারের অন্দরে অশান্তি মাথা চাড়া দিযে ওঠে। সেই সঙ্গে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যেকার সম্পর্কও খারাপ হতে শুরু করে। তাই এই বিষয়টি মাথায় রাখা একান্ত প্রয়োজন।
৫. ব্রহ্মা, বিষ্ণু এবং মহাদেব:
এই তিন ভগবান হলেন সর্বশক্তিমান, সর্বোত্তম। তাই এদের ছবি বা মূর্তি ঠাকুর ঘরে রাখতে হবে বাকি ভগবানদের ছবির উপরে। না হলে এই তিন ভগবান বেজায় অসন্তুষ্ট হবে। আর এমনটা হওয়া যে পরিবারের সুখ-শান্তির পরিপন্থি তা নিশ্চয় আর বলে দিতে হবে।
৬. কোন ঠাকুর কোথায় রাখতে হবে:
ব্রহ্মা, বিষ্ণু, মহাদেব, ইন্দ্র এবং সূর্যদেবের আসন পাততে হবে বাড়ির পূর্বদিকে এবং খেয়াল রাখতে হবে তাদের মুখ যেন পশ্চিম দিকে থাকে। এমনটা করা হলে সমৃদ্ধি আপনার পরিবারের সঙ্গ কখনও ছাড়বে না দেখবেন। সেই সঙ্গে সুখ-শান্তির ঝাঁপিও কখনও খালি হবে না। অন্যদিকে গনেশ, দুর্গা এবং কুবের দেবের ছবি বা মূর্তি রাখতে হবে দক্ষিণ মুখি করে। আর যদি বাড়িতে এত জায়গা না থাকে তাহলে খেয়াল করে ঠাকুরের আসন পাতবেন উত্তর-পূর্ব দিক করে। এমনটা করলেও শুভ শক্তির বিকাশ ঘটবে পরিবারের অন্দরে।