Just In
প্রতি মঙ্গলবার পুরুষ-মহিলা নির্বিশেষে সবারই হনুমান মন্ত্র পাঠ করা উচিত কেন জানা আছে?
প্রতি মঙ্গলবার হনুমানজির পুজো করার আগে যদি শক্তিশালী হনুমান মন্ত্র জপ করা যায়, তাহলে গৃহস্থে হনুমানজির আগমণ ঘটে।
মঙ্গলবার যে হনুমানজির আরাধনা করার দিন, সেকথা তো নিশ্চয় সবারই জানা আছে। আর এদিন দেবের পুজো করলে যে নানাবিধ উপকার পাওয়া যায়, সে সম্পর্কেও আশা করি এতদিনে জেনে ফেলেছেন। কিন্তু যে কথা হয়তো এখনও পর্যন্ত জেনে উঠতে পারেননি, তা হল প্রতি মঙ্গলবার হনুমানজির পুজো করার আগে যদি শক্তিশালী হনুমান মন্ত্র জপ করা যায়, তাহলে গৃহস্থে হনুমানজির আগমণ ঘটে। ফলে সর্বশক্তিমানের আশীর্বাদে মনের ছোট থেকে ছোটতর ইচ্ছা পূরণের সম্ভাবনা তো বাড়েই, সেই সঙ্গে আরও এমনসব উপকার মেলে, যে সম্পর্কে আপনি শুনলে হয়তো অবাক হয়ে যাবেই যাবেন। তাই তো বলি বন্ধু মারকাটারি প্রতিযোগিতাময় জীবনে সুখে-শান্তিতে যদি বাঁচতে চান, তাহলে এই প্রবন্ধে চোখ রাখতে ভুলবেন না যেন!
"ওম আম হ্রিম ক্লিম দিনানকাম্পি ধর্মত্মা প্রেমাবধি রামবল্লভা অধৈভাম মুথি ভির মে বষ্টদি সৎবরম ক্লিম হ্রিম আম ওম", এই মন্ত্রটিকেই হনুমান মন্ত্র বলা হয়ে থাকে। প্রসঙ্গত, এমনটা বিশ্বাস করা হয় যে এই মন্ত্রটি এতটাই শক্তিশালী যে পাঠ করা মাত্র সারা বাড়িতে পজেটিভ শক্তির মাত্রা বাড়তে শুরু করে, সেই সঙ্গে দেব এতটাই প্রসন্ন হন যে নানাবিধ উপকার মিলতে সময় লাগে না। যেমন ধরুন...
১. বিজয় নিশ্চিত হয়:
নতুন কিছু কাজ শুরু করার কাথা ভাবছেন নাকি? তাহলে বন্ধু আজ থেকেই এই মন্ত্রটি পাঠ করা শুরু করুন। দেখবেন সফলতার সঙ্গে শেষ হবে সেই কাজ। শুধু তাই নয়, জীবন পথে চলতে চলতে সামনে আসা সব বাঁধা সরে যাবে। ফলে শুধু কর্মক্ষেত্রে নয়, পরিবারিক জীবনেও হারিয়ে যাওয়া সুখ-শান্তি ফিরে আসবে।
২. মনের সব ইচ্ছা পূরণ হবে:
এমনটা বিশ্বাস করা হয় যে দেবকে লাল ফুলের মালা পরিয়ে এবং তুলসি পাতা নিবেদন করে যদি এই মন্ত্রটি পাঠ করা যায়, তাহলে হনুমানজি এতটাই প্রসন্ন হন যে মনের অন্দরে লুকিয়ে থাকা ছোট থেকে ছোটতর ইচ্ছা পূরণ হতে সময় লাগে না। আর মনের সব ইচ্ছা যখন পূরণ হয়, তখন জীবনের প্রতিটা দিন যে আনন্দে ভরে ওঠে, তা কি আর বলার অপেক্ষা রাখে।
৩. ভূত-প্রেত সব দূরে পালায়:
আপনাদের মধ্যে অনেকেই হয়তো ভূত-প্রেতে বিশ্বাস করেন না। কিন্তু একথা তো মানবেন যে আমাদের আশেপাশে পজেটিভ শক্তি যেমন রয়েছে, তেমনি রয়েছে নেগেটিভ শক্তিও। আর সুযোগ পেলে সেই নেগেটিভ শক্তি আমাদের কিন্তু মারাত্মক ক্ষতি করে দিতে পারে। তাই তো বলি বন্ধু, এমন খারাপ শক্তির মার থেকে বাঁচতে চাইলে নিয়মিত হনুমান মন্ত্র পাঠ করতে ভুলবেন না যেন! কারণ এই মন্ত্রটি পাঠ করা মাত্র ভূত-প্রেত তো দূরে পালাই, সেই সঙ্গে খারাপ শক্তির প্রভাব কেটে যেতেও সময় লাগে না।
৪. মনোবল বাড়ে:
এমনটা বিশ্বাস করা হয় যে প্রতি মঙ্গলবার দেবের পুজো করার পাশাপাশি যদি এই মন্ত্রটি পাঠ করা যায়, তাহলে মনের অন্দরে লুকিয়ে থাকা ভয় কাটে যায়। সেই সঙ্গে মনের জোর এতটাই বাড়ে যে, যে কোনও বাঁধা পেরতেই সময় লাগে না। ফলে জীবনের চলার পথটা বেজায় সহজ হয়ে যায় বৈকি।
৫. বড়লোক হয়ে ওঠার স্বপ্ন পূরণ হয়:
হনুমান জি তাঁর ভক্তদের বেজায় ভালবাসেন। তাই তো নিয়মিত তাঁর পুজো করলে যে কোনও ধরনের অর্থনৈতিক কষ্ট কমে যেতে শুরু করে। সেই সঙ্গে পরিবারে সুখ, শান্তি এবং সমৃদ্ধির আগমণ ঘটে। প্রসঙ্গত, অনেকেই আমাদের উপর খারাপ দৃষ্টি দিয়ে থাকেন। এই কু-দৃষ্টির প্রভাব কাটতেও সময় লাগে না যদি হানুমান মন্ত্র পাঠ করা যায় তো। শুধু তাই নয়, জীবনের যে কোনও বাঁকে কেনও ধরনের দুর্ঘটনা ঘটার সম্ভাবনাও হ্রাস পায়।
৬. বুদ্ধির বিকাশ ঘটে:
শাস্ত্র মতে হনুমান মন্ত্র পাঠ করা শুরু করলে গৃহস্থে পজেটিভ শক্তির মাত্রা এতটা বেড়ে যায় যে তার প্রভাবে ধীরে ধীরে মস্তিষ্কের ক্ষমতা বৃদ্ধি পেতে শুরু করে। ফলে বুদ্ধির বিকাশ ঘটতে সময় লাগে না। আর বুদ্ধির ধার যখন বাড়ে, তখন চাকরি হোক কী ব্যবসা, যে কোনও ক্ষেত্রেই সফলতা যে রোজের সঙ্গী হয়ে ওঠে, তা তো বলাই বাহুল্য!
৭. দৈহিক শক্তি বৃদ্ধি পায়:
শুনতে হয়তো আজব লাগছে। কিন্তু শাস্ত্রে এমনটা দাবি করা হয়েছে যে প্রতি মঙ্গলবার ১০৮ বার হনুমান মন্ত্র পাঠ করা শুরু করলে দৈহিক ক্ষমতার বিকাশ ঘটতে শুরু করে। সেই সঙ্গে ছোট-বড় নানা রোগ সব দূরে পালায়। ফলে আয়ু বাড়ে চোখে পরার মতো।
৮. সাড়ে সাতির প্রভাব কমে:
আপনার জন্ম কুষ্টিতে কি শনির সাড়ে সাতির খপ্পরে পরার যোগ রয়েছে? তাহলে বন্ধু আজ থেকেই হনুমান মন্ত্র জপ করা শুরু করুন। দেখবেন আপনার উপর শনি দেবের বক্র দৃষ্টি পরার আশঙ্কা একেবারে কমে যাবে। আসলে এমনটা বিশ্বাস করা হয় যে একবার শনিদেব নাকি বিষণ বিপদে পরেছিলেন। সেই সময় হনুমানজি তাঁকে সেই বিপদ থেকে বাঁচিয়েছিলেন। আর সেই কৃতজ্ঞতা স্বরূপ শনিদেব, হনুমানজিকে কথা দেন যে তার কোনও ভক্তের উপর শনির প্রকোপ পরবে না। সেই থেকেই শনিদেবকে প্রসন্ন করতে শুরু হয় হনুমানজির পুজো।
৯. গুড লাক রোজের সঙ্গী হয়ে ওঠে:
এমনটা বিশ্বাস করা হয় যে প্রতি মঙ্গলবার হনুমান জির পুজো করা শুরু করলে ভাগ্যের দোষ কাটতে শুরু করে। ফলে গুড লাক রোজের সঙ্গী হয়ে ওঠে। আর এমনটা হলে চরম সফলতা লাভের সম্ভাবান যে বেড়ে যায়, তা কী আর বলার অপেক্ষা রাখে!
১০.বৈবাহিক জীবন সুখে-শান্তিতে কাটে:
এমনটা বিশ্বাস করা হয় যে প্রতি মঙ্গলবার মারুথির পুজো করার পর যদি এক মনে ১০৮ বার হনুমান মন্ত্র জপ করা যায়, তাহলে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যেকার সম্পর্কের উন্নতি ঘটে। শুধু তাই নয়, অবিবাহিত পুরুষ এবং মহিলাদের মনের মতো সঙ্গী পাওয়ার স্বপ্নও পূরণ হয়।
হনুমান মন্ত্র জপ করলে কী কী উপকার মিলতে পারে সে সম্পর্কে তো না হয় জানলেন। কিন্তু একথা জানেন কি হনুমানজির ঠিক ঠিক ছবি বা মূর্তি যদি বাড়িতে প্রতিষ্টিত করতে না পারেন, তাহলে কিন্তু হাজারো পুজো এবং মন্ত্র পাঠের পরেও কোনও সুফল মিলবে না। তাই তো বাড়িতে হনুমানজির কেমন ধরনের ছবি বা মূর্তি প্রতিষ্টিত করা উচিত, সে সম্পর্কে জেনে নেওয়াটা একান্ত প্রয়োজন। প্রসঙ্গত, বাড়িতে সাধারণত মারুথির যে ধরনের ধরনের মূর্তি বা ছবি রাখা উচিত, তা হল...
১. সূর্য দেবের আরাধনা করছেন:
হনুমানজি ধ্যানরত অবস্থায় বসে সূর্য দেবের পুজো করছেন, এমন ছবি বাড়িতে এনে রাখলে শরীর ভিতর এবং বাইরে থেকে চাঙ্গা হতে শুরু করে। ফলে ছোট-বড় সব রোগ দূরে পালায়। ফলে আয়ু বাড়ে চোখে পরার মতো। সেই সঙ্গে অর্থনৈতিক সমস্যাও মিটে যেতে শুরু করে। শুধু তাই নয়, অল্প সময় অনেক অনেক টাকার মালিক হয়ে ওঠার স্বপ্ন পূরণ হতেও সময় লাগে না। তাই তো বলি বন্ধু চটজলদি যদি বড়লোক হয়ে উঠতে চান, তাহলে হনুমানজির এমন ছবি বাড়িতে এনে নিয়মিত আরাধনা করতে ভুলবেন না যেন!
২. দক্ষিণ দিকে মুখ রয়েছে:
উত্তর দিকে দেবের মুখ রয়েছে এমন ছবি বাড়িতে এনে রাখলে কী কী উপকার মিলতে পারে, তা তো জানলেন, কিন্তু একথা জানা আছে কি, যে ছবি বা মূর্তি শ্রী হনুমানের মুখ দক্ষিণ দিকে থাকে, তা গৃহস্থে এনে রাখলে মৃত্যু ভয় কেটে যায়। সেই সঙ্গে যে কোনও ধরনের ভয় কেটে যেতেও সময় লাগে না।
৩. রামের আরাধনা করছেন দেব:
এমনটা বিশ্বাস করা হয় যে হনুমানজি, শ্রী রাম এবং সীতার সামনে ঝুঁকে তাঁদের প্রণাম করছেন, এমন ছবি বাড়িতে এনে রাখলে গৃহস্থের অন্দরে শুভ শক্তির মাত্রা এতটা বেড়ে যায় যে খারাপ সময় কেটে যেতে শুরু করে। সেই সঙ্গে একের পর এক বাঁধা কাটতে থাকে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই পরিবারে সুখ-সমৃদ্ধির ছোঁয়া লাগতে সময় লাগে না।
৪. ধ্যানরত হনুমান:
শ্রী হনুমান এক মনে বসে রামের নাম জপ করছেন, এমন ছবিকে ঠাকুর ঘরে জায়গা করে দিলে একদিকে যেমন অশান্ত মন শান্তু হয়ে ওঠে, তেমনি রাগ কমতে শুরু করে। শুধু তাই নয়, মনোযোগ ক্ষমতারও উন্নতি ঘটে। সেই সঙ্গে সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়ারও ক্ষমতা যায় বেড়ে। ফলে কর্মজীবনে উন্নতি লাভের পথ প্রশস্ত হয়। প্রসঙ্গত, বাচ্চাদের পড়ার ঘরে এমন ছবি রাখলেও কিন্তু দারুন সব উপকার মেলে।
৫. গদা হাতে দাঁড়িয়ে সর্বশক্তিমান:
যে ছবিতে দেবের শারীরিক ক্ষমতার বহিঃপ্রকাশ ঘটছে, তা ঠাকুর ঘরে রাখলে মনের জোর বৃদ্ধি পেতে শুরু করে। ফলে জীবন পথে সামনে আসা একের পর এক বাঁধা পেরিয়ে যেতে সময় লাগে না। তবে এখানেই শেষ নয়, এমনটা বিশ্বাস করা হয় যে এই ধরনের ছবি বা মূর্তি সঙ্গে রাখলে যে কোনও ধরনের মানসিক এবং শারীরিক কষ্ট কমে যেতে সময় লাগে না।
৬. সাদার আবরণ:
হনুমানজি উজ্জ্বল রঙের ধুতি পরে রয়েছেন আর তাঁর পিছনের অংশটা একেবারে সাদা। এমন ধরনের ছবি ঠাকুর ঘরে রাখলে কর্মজীবন সম্পর্কিত যে কোনও সমস্যা মিটে যেতে সময় লাগে না। সেই সঙ্গে চোখে পরার মতো পদন্নতি ঘটে। শুধু তাই নয়, মাইনেও বাড়ে লাফিয়ে লাফিয়ে। প্রসঙ্গত, এমনটা বিশ্বাস করা হয় যে এমন ছবি গৃহস্থের অন্দরে জায়গা করে নিলে মনের মতো চাকরি পাওয়ার স্বপ্ন পূরণ হতেও সময় লাগে না।
৮. উত্তর দিকে মুখ করে রয়েছেন দেব:
এমনটা বিশ্বাস করা হয় যে হনুমানজির মুখ উত্তর দিকে রয়েছে এমন মূর্তি বা ছবি ঠাকুর ঘরে জায়গা করে নিলে সমস্ত দেব-দেবীর আশীর্বাদ মেলে। ফলে জীবনের ছবিটা বদলে যেতে সময় লাগে না। সেই সঙ্গে স্বাভাবিকভাবেই কোনও ধরনের বিপদ ঘটার আশঙ্কা যায় কমে।