Just In
- 10 min ago কাঠফাটা গরমে শরীরে জলের ঘাটতি পূরণ করবে এই ফলগুলি!
- 1 hr ago নতুন কাজে সাফল্য বৃষ ও কর্কটের, ৫ রাশির জন্য শুভ আজকের দিন, জানতে দেখুন রাশিফল
- 18 hrs ago অতিরিক্ত দই, বিস্কুট খাচ্ছেন? আপনার ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়াতে পারে, সতর্ক থাকুন
- 19 hrs ago গরম থেকে বাঁচতে দেদার খাচ্ছেন ডাবের জল? ডেকে আনছেন না তো বড় বিপদ!
প্রতি শুক্রবার দেবী পার্বতীর অরাধনা করা উচিত কেন জানা আছে?
শাস্ত্র মতে আজ হল মাতৃশক্তির দিন। তাই তো প্রতি শুক্রবার মা দুর্গার নানা রূপের আরাধনা করার পরামর্শ দেওয়া হয়ে থাকে।
শাস্ত্র মতে আজ হল মাতৃশক্তির দিন। তাই তো প্রতি শুক্রবার মা দুর্গার নানা রূপের আরাধনা করার পরামর্শ দেওয়া হয়ে থাকে। কারণ এমনটা করলে জীবন অনন্দে ভরে উঠতে সময় লাগে না, বিশেষত মা পার্বতীর পুজোর আয়োজন করলে তো মেলে একাধিক সুফল, যে সম্পর্কে এই প্রবন্ধের পরবর্তি অংশে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে।
প্রসঙ্গত, মা দুর্গা, মা লক্ষ্মী এবং সরস্বতী, এই তিন দেবীকে এক সঙ্গে "ত্রীদেবী" বলা হয়ে থাকে। এমনটা বিশ্বাস করা হয় যে প্রতি শুক্রবার মা পার্বতীর আরাধনা করার পাশপাশি যদি মা লক্ষ্মী এবং সরস্বতীরও পুজো করা যায়, তাহলে নাকি আরও বেশি মাত্রায় উপকার মেলে। তাই তো বলি বন্ধু, মাতৃশক্তির আশীর্বাদে বাকি জীবনটা যদি সুখ-শান্তিতে এবং আনন্দে কাটাতে হয়, তাহলে ত্রীদেবীর আরাধনা করতে ভুলবেন না যেন!
মানব সমাজ যখনই পাপ এবং হিংসার অন্ধকালে ঢেকেছে, তখনই নানা রূপে এই ধরাধামে আর্বিভাব ঘটেছে মা পার্বতীর। যেমন মহিষাসুরকে বধ করতে মা পার্বতী এসেছিলেন মা দূর্গা রূপে। কালি রূপে এসেছিলেন খারাপ শক্তিকে ধ্বংস করে মানব কূলকে আলোর সন্ধান দিতে। আবার যখন অসুরদের দাপাদাপি বেড়েছে, তখন চন্ডী রূপে আর্বিভাব ঘটেছে মায়ের। এছাড়াও কখনও মীনাক্ষী, তো কখনও ললিতা, অখিলেন্ডশ্বরী, আবার কখনও অন্নপূর্ণ রূপে এই ধরাধামে আর্বিভাব ঘটেছে দেবী পার্বতীর। কিন্তু প্রশ্ন হল মা পার্বতীকে বাড়িতে স্থাপন করে প্রতি শুক্রবার বিশেষ পুজোর আয়োজন করলে সত্যিই কি কোনও সুফল মেলে?
একেবারেই! এমনটা করলে গৃহস্থে মাতৃশক্তির আগমণ ঘটে। ফলে বাড়ির প্রতিটি কোণায় পজেটিভ শক্তির মাত্রা এতটা বেড়ে যায় যে তার প্রভাবে একাধিক উপকার মেলার সম্ভবনা যায় বেড়ে। যেমন ধরুন...
১. মনের মতো জীবনসঙ্গী মেলে:
এমনটা বিশ্বাস করা হয় যে নিয়ম করে প্রতি শুক্রবার দেবীর অরাধনা করলে মনের মতো জীবনসঙ্গী পাওয়ার স্বপ্ন পূরণ হতে সময় লাগে না। শুধু তাই নয়, মায়ের আশীর্বাদে বৈবাহিক জীবনে কোনও ধরনের সমস্যা মাথা চাড়া দিয়ে ওঠার আশঙ্কাও যায় কমে।
২. মিসক্যারেজের আশঙ্কা কমে:
একেবারেই ঠিক শুনেছেন বন্ধু! হিন্দু শাস্ত্র নিয়ে যারা চর্চা করেন, তাদের মতে দেবী পার্বতীর অরাধনা করা শুরু করলে বাবা-মা হোয়ার স্বপ্ন পূরণ হতে যেমন সময় লাগে না, তেমনি প্রসবের সময় কোনও ধরনের সমস্যা মাথা চাড়া দিয়ে ওঠার আশঙ্কাও যায় কমে। বিশেষত মিসক্যারেজের সম্ভাবনা একেবারে কমে যায়। তাই তো বলি বন্ধু, হাজারো চেষ্টার পরেও যাদের বাবা-মা হওয়ার স্বপ্ন পূরণ হচ্ছে না, তারা নিয়ম করে মা পার্বতীর অরাধনা করতে ভুলবেন না যেন!
৩. স্বামীর কোনও বিপদ হওয়ার আশঙ্কা যায় কমে:
এমনটা বিশ্বাস করা হয় যে বিবাহিত মহিলারা যদি নিয়ম করে প্রতি শুক্রবার দেবীর অরাধনা করেন, তাহলে স্বামীর কোনও ধরনের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা তো কমেই, সেই সঙ্গে জীবনসঙ্গীর আয়ুও বৃদ্ধি পায় চোখে পরার মতো।
৪. শুক্র গ্রহের কুপ্রভাব কেটে যায়:
এমনটা বিশ্বাস করা হয় যে আজ উপোস করে দেবীর পুজো করলে শুক্র গ্রহের সুপ্রভাবে পরতে শুরু করে। সেই সঙ্গে জন্মকুষ্টিতে শুক্রের খারাপ প্রভাব কাটতে শুরু করে। ফলে রোগ-ব্যাধির প্রকোপ যেমন কেটে যায়, তেমনি পরিবারে সুখ এবং সমৃদ্ধির ছোঁয়া লাগতেও সময় লাগে না। শুধু তাই নয়, শুক্রের প্রভাবে বৈবাহিক জীবনও অনন্দে ভরে ওঠে। সেই সঙ্গে পরিবারের কারও সঙ্গে কোনও খারাপ কোনও ঘটনা ঘটার আশঙ্কাও যায় কমে।
৫. ছোট থেকে ছোটতর ইচ্ছা পূর হয়:
শাস্ত্রে এমনটা বলা হয়েছে যে প্রতি শুক্রবার দেবী পার্বতীর অরাধনা করলে মা এতটাই প্রসন্ন হন যে খারাপ সময় কেটে যায়। ফলে গুড লাক রোজের সঙ্গী হয়ে ওঠে। আর এমনটা যকন হয়, তখন মনের অন্দরে জমতে থাকা ছোট থেকে ছোটতর ইচ্ছা পূরণ হতে যে সময় লাগে না, তা কি আর বলার অপেক্ষা রাখে!
৬. যে কোনও ধরনের বিপদ ঘটার আশঙ্কা যায় কমে:
মা পার্বতী হলেন সর্বশক্তির আধার। তাই তো প্রতি শুক্রবার মায়ের বিশেষ পুজোর আয়োজন করলে বাড়ির প্রতিটি কোণায় পজেটিভ শক্তির মাত্রা বৃদ্ধি পেতে শুরু করে। আর এমনটা যখন হয়, তখন খারাপ শক্তি ধারে কাছেও ঘেঁষতে পারে না। ফলে কোনও বিপদ ঘটার আশঙ্কা কমে। শুদু তাই নয়, কারও কুনজরের কারণে কোনও ধরনের ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনাও থাকে না।
৭. যে কোনও ধরনের সমস্যা মিটে যায়:
এমনটা বিশ্বাস করা হয় যে প্রতি শুক্রবার উপোস করে এক মনে মায়ের নাম নিলে যে কোনও ধরনের সমস্যা মিটে যেতে সময় লাগে না। শুধু তাই নয়, কোনও ধরনের অর্থনৈতিক সমস্যা থাকলে তাও মিটে যায়। আর জীবনে যখন কোনও সমস্য়া থাকে না, তখন প্রতিটা দিন যে অফুরন্ত আনন্দে ভরে ওঠে, তা তো বলাই বাহুল্য়!
দেবীর অরাধনা করার সময়কার মন্ত্র:
যেমনটা আগেও আলোচনা করা হয়েছে যে দেবী পার্বতী হলেন মাতৃশক্তির আধার, যা থেকে জন্ম নিয়েছেন মা দুর্গা, চামুন্ডা এবং অন্নপূর্ণার মতো দেবী শক্তি। তাই তো পার্বতীর আরাধনা করার সময় দূর্গা, চামুন্ডা নয়তো মাতৃশক্তি সম্পর্কিত যে কোনও মন্ত্র পাঠ করা যেতে পারে। যেমন ধরুন-
১. দুর্গা মন্ত্র- "ওমডাং দুর্গায় নমহ"।
২. চামুন্ডা মন্ত্র: "ওম ইং হ্রিং ক্লিং চামুন্ডায় বিচায়"।
৩. মাতঙ্গী মন্ত্র: "ওম হ্রিম ক্লিমহোম মাতঙ্গায় ফট সোয়াহা"।
৪. চম্বিকা মন্ত্র:"শক্তি শূলেন পাহি ন দেবী পাহি কাদগাম চম্বিকা"।
৫. সর্ব বাধা মুক্তি মন্ত্র:"সর্ববাধা ভিনিরমুক্ত, ধনধন্যায়সুতানভিতা মনুষ্য মাৎপ্রাসাদেন ভবিষতি ন শনশায়া"।
প্রসঙ্গত, এই মন্ত্রগুলির কোনও একটি পাঠ করতে করতে দেবীর অরাধনা করতে হবে। তাহলেই দেখবেন কেল্লা ফতে! তবে বাড়িতে দেবী পার্বতীর পুজো করার সময় সময় কতগুলি বিষয় মাথায় রাখা একান্ত প্রয়োজন। যেমন ধরুন...
১. মায়ের পছন্দের ফুল:
মায়ের অরাধনা করার সময় খেয়াল করে চম্পা, বেল, পলাশ এবং জবা ফুল নিবেদন করতে ভুলবেন না যেন! আর মা যেহেতু দেবাদিদেবকে বেজায় ভালোবাসেন, তাই শিব ঠাকুরের পছন্দের যে যে ফুল রয়েছে সেগুলি মায়ের সামনে রাখলে দেবী বেজায় প্রসন্ন হন। ফলে গৃহস্থে মাতৃশক্তির আগমণ ঘটতে সময় লাগে না।
২. ঠাকুর ঘর পরিষ্কার করে নিতে ভুলবেন না:
দেবী হলেন শক্তির আধার। তাই তো মাকে একবার প্রসন্ন করতে পারলে জীবনের ছবিটা আরও সুন্দর হয়ে উঠতে যে সময় লাগে না, তা তো বলাই বাহুল্য। তবে মাকে খুশি করতে একটা অতি সামান্য বিষয়ের দিকে নজর রাখতে হবে। তবে গিয়ে কিন্তু দেবীর আগমণ ঘটবে আপনার গৃহস্থে। কী নিয়ম তাই ভাবছেন নিশ্চয়? মায়ের অরাধনা করার আগে ভাল করে ঠাকুর ঘর পরিষ্কার করে নিতে ভুলবেন না যেন! এই সময় মায়ের ছবি বা মূর্তি গঙ্গা জলে ভেজানো কাপড় দিয়ে পরিষ্কার করে নিতে হবে। সেই সঙ্গে খেয়াল রাখতে হবে দেবীর আসন যেখানে পেতেছেন তার আশেপাশে যেন কোনও নোংড়া কাপড় না থাকে।
৩. পুজোর নিয়ন:
বাস্তু বিশেষজ্ঞদের মতে প্রতি শুক্রবার মায়ের আরাধনা করার সময় এমন জায়গায় বসতে হবে যাতে আপনার মুখ পূর্ব দিকে নয়তো উত্তর দিকে থাকে। কারণ এমনটা বিশ্বাস করা হয় যে এই নিয়মটি মেনে দেবীর অরাধনা করলে নাকি আরও বেশি মাত্রায় উপকার পাওয়া যায়।
৪. বাড়ির দক্ষিণ-পূর্ব দিক:
বাস্তু শাস্ত্র অনুসারে বাড়ির যে কোনও জায়গায় দেবী পার্বতীর মূর্তি স্থাপন করা যায় না। বরং এক্ষেত্রে একটি জিনিস খেয়াল এতান্ত প্রয়োজন, তা হল বাস্তুশাস্ত্র অনুসারে মায়ের মূর্তি রাখার আদর্শ জায়গা হল হয় দক্ষিণ-পূর্ব দিক, নয়তো দক্ষিণ দিক। আসলে এমনটা বিশ্বাস করা হয় যে বাড়ির এই নির্দিষ্ট দিকে দেবীকে স্থাপন করলে সারা গৃহস্থে পজেটিভ শক্তির বিকাশ ঘটে। ফলে হারিয়ে যাওয়া মানিসক শান্তি ফিরে আসতে যেমন সময় লাগে না, তেমনি স্ট্রেস এবং মানসিক অবসাদের প্রকোপ কমে চোখের পলকে।
৫. রঙিন আলপোনা বা রাঙ্গলি:
এমনটা বিশ্বাস করা হয় দেবীর অরাধনা করার সময় রঙবেরঙের আলপনা আঁকলে দেবী বেজায় প্রসন্ন হন। সেই সঙ্গে সারা বাড়িতে পজেটিভ শক্তির মাত্রা একটা বেড়ে যায়, যে পরিবারের প্রতিটি সদস্যের জীবন সুন্দর হয়ে উঠতে সময় লাগে না। সেই সঙ্গে খারাপ সময়ও কেটে যায়। ফলে পরিবারে সুখ-সমৃদ্ধির ছোঁয়া লাগে।