Just In
দেবী অন্নপূর্ণা এবং অক্ষয় তৃতীয়া
অন্নপূর্ণেশ্বরী দেবীর অনেকগুলি মন্ত্র আছে যা অক্ষয় তৃতীয়া দিবসে ভজন করা হয়| আসুন এক নজরে দেখে নিন| অক্ষয় তৃতীয়াতে সারা বিশ্বের হিন্দুরা তাদের প্রিয় দেবতার কাছে সমৃদ্ধি ও সম্পত্তির জন্য প্রার্থনা করে থাকেন| এই দিনটি হিন্দু সম্প্রদায়ের জন্য খুব শুভ। 'অক্ষয় তৃতীয়া’ নামটিই দিনটির পবিত্রতার অবিরামতা ও বিস্তৃতি প্রতিনিধিত্ব করে।
এটা বিশ্বাস করা হয় যে এই দিনটি এত শুভ যে এই দিনে যা কিছুই করা হোক না কেন তা খারাপ ফলাফল দিতে পারে না। এই দিনে একটি ভাল কাজ করা পুণ্যের| এই দিনে পূজা এবং হোমযজ্ঞ ভক্তদের জন্য দশগুণ ফল প্রদান করে। স্বর্ণ, নতুন বাড়ি কেনা, ভূমি এবং যানবাহন কেনাকাটা মঙ্গলজনক বলে মনে করা হয়|
এই
দিনটির
অনুকূলে
বহু
প্রচলিত
গল্প
আছে|
বলা
হয়
যে,
ধন-সম্পদের
প্রভু,
কুবেরকে
এই
দিনে
লক্ষ্মী
দেবী
স্বর্গের
কোষাধ্যক্ষ
হিসেবে
পুনর্বহাল
করেছিলেন।
এবং
তাঁকে
প্রচুর
পরিমানের
ধনসম্পদ
দিয়ে
পুরস্কৃত
করা
হয়|
আরেকটি
কাহিনী
এই
যে,
অক্ষয়
তৃতীয়াতে
ভগবান
শ্রীকৃষ্ণ
তাঁর
বন্ধু
সুদামাকে
এক
মুঠো
চিড়ের
পরিবর্তে
সম্পদ
ও
সমৃদ্ধি
সহকারে
আশীর্বাদ
করেছিলেন|
মহাভারতেও একটি গল্প আছে, এই অক্ষয় তৃতীয়ার দিনটি ঘিরে| কৌরবকুল ভারী রাজসভায় তাদের কুলবধূ দ্রৌপদীর বস্ত্রহরণ করে ধৃষ্টতার কাজ করেছিলেন| ভগবান কৃষ্ণের ভক্ত দ্রৌপদী, তার লাজ রাখার জন্য সখার শরণাপন্ন হন| শ্রীকৃষ্ণ তার সখীর লাজ যথাযথ রেখেছিলেন| এই ঘটনাটি কৌরবদের বিনাশের সূত্রপাত বলা হয়ে থাকে এবং অবশেষে তারা কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধে ধ্বংস হন|
অক্ষয় তৃতীয়ার পবিত্রতার সাথে যুক্ত এক কিংবদন্তী হল দেবী অন্নপূর্ণার আবির্ভাব|
অন্নপূর্ণা দেবী হলেন দেবী পার্বতীর একটি রূপ। তিনি পুষ্টি ও খাদ্যের দেবী। অক্ষয় তৃতীয়ার পুন্য লগনে তাই দেবী অন্নপূর্ণার আরাধনা করা হয়ে থাকে|
এই শুভ দিনে ভক্তিভরে তার পুজো, ভজনা করে তাঁকে তুষ্ট করে হয়ে থাকে|
দেবী অন্নপূর্ণার গল্পটি শুরু হয় মহাদেবকে নিয়ে যিনি বলেন যে এই পৃথিবী শুধু 'মায়া' বা একটি বিভ্রম ছাড়া আর কিছুই নয়| তার পত্নী, দেবী পার্বতী তার সাথে একমত হতে পারেন না এবং তা থেকে তর্ক শুরু হয়|
নিজেকে প্রমান করতে, দেবী পার্বতী অদৃশ্য হয়ে যান এবং তারপরেই সমগ্র বিশ্বে বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়| দেবীর অনুপস্থিতিতে পৃথিবী রসাতলে যেতে বসে| অনাহার, দুর্ভিক্ষে পৃথিবী জর্জরিত হয়ে ওঠে| দিনের পর দিন মানুষ অনাহারে কষ্ট পেতে থাকে|
সন্তানদের এই দুর্দশা দেখে দেবী পার্বতী আর স্থির থাকতে পারলেন না| তাই, তিনি দেবী অন্নপূর্ণার রূপ ধরে কাশিতে তাঁর রন্ধনশালা স্থাপন করেন| ইতিমধ্যে মহাদেবও ক্ষুধার্থ হয়ে পড়েন| দেবী অন্নপূর্ণার কথা জানতে পেরে তিনিও কাশি পৌঁছালেন| মহাদেব দেবী অন্নপূর্ণার কাছে খাদ্য ভিক্ষা চাইলেন এবং উপলব্ধি করলেন যে আধ্যাত্মিক জগতের ন্যায় বস্তুগত জগতের গুরুত্ব কম নয়| দেবী অন্নপূর্ণা শিবকে ক্ষমা করলেন এবং নিজের হাতে তাঁকে খাওয়ালেন।
অন্নপূর্ণা মন্ত্র ও অন্নপূর্ণা গায়েত্রী মন্ত্র সমৃদ্ধি অর্জনে সহায়তা করে। যারা অপুষ্টিতে ভোগেন তাদের এই মন্ত্র পাঠ করা উচিত| যে সব বাচ্চারা পর্যাপ্ত খাবার খায়না, যাদের পুষ্টির অভাব থাকে, সেই সব বাচ্চাদের বাবা মায়েরা এই মন্ত্র পাঠ করে সুফল পেতে পারেন|
যারা রেস্তোরাঁ শিল্পে আছেন বা নিজস্ব হোটেল, বেকারি এবং এই ধরণের কাজে যুক্ত আছেন, তারা অন্নপূর্ণা মন্ত্র এবং অন্নপূর্ণা গায়ত্রী মন্ত্রের শরণাপন্ন হতে পারেন| এই উপায়ে প্রতিষ্ঠানের সমৃদ্ধি হবে। আপনি নিশ্চিত ভাবে দেবী অন্নপূর্ণার অনুগ্রহ লাভ করবেন|
অন্নপূর্ণা মন্ত্র
ওঁ অন্নপূর্ণায় নমঃ
এটি
দেবী
অন্নপূর্ণার
মূল
মন্ত্র।
অক্ষয়
তৃতীয়ায়
এর
উচ্চারণ
অতি
শুভ|
'ওঁ
হ্রিং
নমঃ
ভগবতী
মহেশ্বরী
অন্নপূর্ণা
স্বাহা’
এই
মন্ত্রে
মা
অন্নপূর্ণাকে
আপনার
বাড়িতে
আহ্বান
করুন
যাতে
তাঁর
অসীম
করুনা
সদা
আপনার
পরিবারের
ওপর
থাকে|
আপনার
পরিবারে
কখনো
অর্থের
অভাব
হবে
না|
'ওঁ
হ্রিং
শৃং
ক্লিং
নমঃ
ভগবতী
মহেশ্বরী
অন্নপূর্ণা
স্বাহা'
এই
মন্ত্রে,
আপনি
নিশ্চিত
হতে
পারেন
যে
আপনার
রান্নাঘরটি
খাদ্য
এবং
জ্বালানি
থেকে
বঞ্চিত
হবে
না।
অন্নপূর্ণা
গায়ত্রী
মন্ত্র
ওঁ ভগবতী মহাশ্বেরি ধীমহি তন্ন অন্নপূর্ণা প্রচোদয়াৎ
প্রতিদিন ১০৮ বার এই গায়ত্রী মন্ত্র উচ্চারণে আপনার পরিবার সুখ, শান্তি এবং সাদৃশ্যে পরিপূর্ণ হবে। অক্ষয় তৃতীয়ার জন্য এটি একটি উপযুক্ত মন্ত্র।