Just In
- 44 min ago গাধার দুধের আশ্চর্যজনক স্বাস্থ্য উপকারিতা, জানলে চমকে উঠবেন আপনিও
- 2 hrs ago রুক্ষ-শুষ্ক চুল নিয়ে চিন্তা? জেনে নিন চুলের যত্নে গ্লিসারিনের অবিশ্বাস্য় ভূমিকা
- 4 hrs ago মেষ রাশিতে অস্ত যাবে বুধ, কাজে বাধা-অসাফল্য়, কোন কোন রাশির জন্য বিপদ?
- 20 hrs ago আপনার সুন্দর নখ ভেঙে গিয়েছে? ভাঙা নখ ঠিক করার কিছু ঘরোয়া টোটকা
আপনি কি রোজ গায়ত্রী মন্ত্র জপ করেন? জানেন কি এর অর্থ?
হিন্দুধর্মে পূজা আচারের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ হল মন্ত্র জপ করা। আমরা প্রত্যেকই দেখেছি মন্দিরে বা যেকোনও পুজোতে পুরোহিতরা মন্ত্রচ্চারণ করে এবং আমরা যখন অঞ্জলি দিই তখনও পুরোহিত আমাদের মন্ত্রচ্চারণ করায়। কিন্তু আপনি কি কখনও ভেবেছেন যে, কেন এই মন্ত্রগুলি পাঠ করা হয়? কেন বিভিন্ন দেবদেবীর জন্য বিভিন্ন মন্ত্র রয়েছে এবং এতে কী পার্থক্য রয়েছে? হয়তো আপনি ভাবেননি।
যে কোনও পুজোর মন্ত্র সাধারণত সংস্কৃত ভাষায় পাঠ করা হয়। মন্ত্রের প্রতিটি অক্ষরে একটি বিশেষ শব্দ রয়েছে। সংস্কৃত মন্ত্র পাঠের ক্ষেত্রে তার শব্দ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিভিন্ন ধরনের আওয়াজ মানুষের মানসিকতায় বিভিন্ন প্রভাব ফেলে। যেমন - বাদ্যযন্ত্রের আওয়াজ আমাদের মনকে মন্ত্রমুগ্ধ করে, বজ্রপাতের আওয়াজ আমাদের মধ্যে বিস্ময় ও ভয়ের সৃষ্টি করে।
মন্ত্র জপ আমাদের সচেতনতার স্বাভাবিক স্তর থেকে উচ্চ স্তরে উন্নীত করতে পারে। এটি অনুঘটক হিসেবে কাজ করে যা আমাদের জীবনের লক্ষ্য অর্জনে সহায়তা করে। মন্ত্রগুলির মধ্যে রোগ নিরাময়ের ক্ষমতা, মন্দ থেকে রক্ষা করার, ধনসম্পদ অর্জন করার, অতিপ্রাকৃতিক শক্তি অর্জন এবং এমনকি আমাদেরকে সুখী করার ক্ষমতাও রয়েছে।
আরও পড়ুন : এই ৬ টি মন্ত্র প্রতিদিন জপ করলে জীবনে কোনও দিন খারাপ সময় আসবে না!
এরকম
একটি
শক্তিশালী
মন্ত্র
হল
'গায়ত্রী
মন্ত্র'।
গায়ত্রী
মন্ত্রের
কিছু
চমৎকার
নিরাময়
ক্ষমতা
রয়েছে।
এই
মন্ত্রটি
আমাদের
চেতনার
তিনটি
স্তরকে
প্রভাবিত
করে
-
জেগে
থাকা,
গভীর
নিদ্রা
এবং
স্বপ্ন।
সুতরাং,
গায়ত্রী
মন্ত্রের
আশ্চর্য
নিরাময়
শক্তিগুলি
কী
কী?
আসুন
বিস্তারিতভাবে
তা
জেনে
নেওয়া
যাক।
গায়ত্রী মন্ত্র ও মন্ত্রের অর্থ
'ওঁ
ভূর্ভুবস্ব
তৎসবিতুর্বরেণ্যং
ভর্গোদেবস্য
ধীমহি
ধীয়ো
য়ো
নঃ
প্রচোদয়াৎ'
-
এখানে
এই
মন্ত্রের
অর্থ
দেওয়া
হল
ক) ওঁ : পরব্রহ্ম বা সর্বশক্তিমান ঈশ্বর
খ) ভূ : পৃথিবীলোক
গ) ভুবঃ : আকাশলোক
ঘ) স্ব : স্বর্গ
ঙ) তৎ : চূড়ান্ত সত্য
চ) সবিতু : যাবৎ কিছুর উৎস
ছ) বরেণ্যম : এঁদের প্রণাম করা হচ্ছে
জ) ভর্গো : আধাত্ম্যশক্তি
ঝ) দেবস্য : দৈব সত্তা
ঞ) ধীমহি : ধ্যান করা হচ্ছে
ট) ধীয়ো : ধীশক্তি বা বৌদ্ধিক উৎকর্ষ
ঠ) য়ো : কে
ড) নঃ : আমাদের
ঢ) প্রচোদয়াৎ : আলোকপ্রাপ্তি।
"গায়ত্রী" শব্দটি নিজেই এই মন্ত্রটির অস্তিত্বের কারণ ব্যাখ্যা করে। এটি সংস্কৃত বাক্যাংশ গায়ন্তম ত্রিয়তে ইতি-থেকে এর উদ্ভব হয়েছে।
মন্ত্রের উৎস
প্রায় ২,৫০০-৩,৫০০ বছর আগে গায়ত্রী মন্ত্র প্রথমবার উল্লিখিত হয়েছিল ঋগ্বেদে। ঋগ্বৈদিক সভ্যতা ছিল অপৌত্তলিক প্রকৃতি-উপাসক। গায়ত্রী এই উপাসনা পদ্ধতিরই অন্যতম প্রধান মন্ত্র। এই মন্ত্রটি বৈদিক সংস্কৃত ভাষায় রচিত। এটি ঋগ্বেদের একটি সূক্ত। এটি পরম মন্ত্র হিসেবে উল্লেখ করা হয়। গায়ত্রী মন্ত্র গায়ত্রী ছন্দে রচিত। হিন্দুধর্মে গায়ত্রী মন্ত্র ও এই মন্ত্রে উল্লিখিত দেবতাকে অভিন্ন জ্ঞান করা হয়। তাই এই মন্ত্রের দেবীর নামও গায়ত্রী। গায়ত্রী মন্ত্র দিয়ে শুধু পূজাই হয় না, গায়ত্রী মন্ত্রকেও পূজা করা হয়। এর অকল্পনীয় ক্ষমতার কারণে এটি যোগী এবং গুরুরা বহু বছর ধরে গোপন রেখেছিলেন।
গায়ত্রী মন্ত্র পাঠ করার উপকারিতা
এই বিশেষ মন্ত্রটি পাঠ করলে জীবনে অনেক উপকার হয় -
ক) বাধা দূর করে
খ) যেকোনও বিপদ থেকে রক্ষা করে
গ) অজ্ঞতা দূর করে
ঘ) আমাদের চিন্তা শুদ্ধ করে
ঙ) যোগাযোগ দক্ষতা উন্নত করে
চ) মানসিক দৃষ্টি খোলে
গায়ত্রী মন্ত্র নিরাময় শক্তি
গায়ত্রী শক্তি হল একটি শক্তির ক্ষেত্র এবং এটি তিনটি শক্তির সর্বোচ্চ - তেজ বা দীপ্তি, যশ বা বিজয় এবং প্রতিভা। যখন কেউ গায়ত্রী মন্ত্র জপ করে, তখন এই শক্তিগুলি তার মধ্যে প্রকাশ পায় এবং তাকে আশীর্বাদ করার শক্তি দেয়। আশীর্বাদ গ্রহণকারীর মধ্যেও শক্তি প্রেরিত হয়। গায়ত্রী মন্ত্র বুদ্ধি তীক্ষ্ণ করে এবং আমাদের স্মৃতিকে মসৃণ করে যা সময়ের সাথে কলঙ্কিত হয়ে যায়।
গায়ত্রী মন্ত্র জপ করার আদর্শ সময় হল প্রতিদিন ভোর ও সন্ধ্যায়, এমন সময় যখন অন্ধকার বা আলো নয়। এটি আত্মার দিকে মনোনিবেশ করার সঠিক সময়। এই সময়ে গায়ত্রী মন্ত্র জপ করলে মন পুনরুত্থিত হয়।
ঋগ্বেদে উল্লেখ রয়েছে, গায়ত্রী মন্ত্র পাঠ করলে আমাদের সব ক্ষত, তা মনের হোক কিংবা শরীরের হোক বা মস্তিষ্কের, সব ধরনের যন্ত্রণার উপশম ঘটে। সেই সঙ্গে মন, খারাপ চিন্তা থেকে মুক্তি পায়। ফলে, আমাদের শরীর ইতিবাচক শক্তিতে পরিপূর্ণ হয়ে ওঠে এবং সর্বপরি এই মন্ত্র আমাদের আশেপাশের পরিবেশে উপস্থিত খারাপ শক্তিকেও শেষ করে দেয়। তাই, খারাপ কিছু ঘটার আশঙ্কা একেবারে কমে যায়। প্রসঙ্গত, মস্তিষ্ক এবং হার্টের কর্মক্ষমতা বাড়াতেও এই মন্ত্রটির কোনও বিকল্প হয় না বললেই চলে।