Just In
- 1 hr ago কাঠফাটা গরমে শরীরে জলের ঘাটতি পূরণ করবে এই ফলগুলি!
- 3 hrs ago নতুন কাজে সাফল্য বৃষ ও কর্কটের, ৫ রাশির জন্য শুভ আজকের দিন, জানতে দেখুন রাশিফল
- 19 hrs ago অতিরিক্ত দই, বিস্কুট খাচ্ছেন? আপনার ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়াতে পারে, সতর্ক থাকুন
- 20 hrs ago গরম থেকে বাঁচতে দেদার খাচ্ছেন ডাবের জল? ডেকে আনছেন না তো বড় বিপদ!
ভগবান রামের এই চারিত্রিক বৈশিষ্টগুলি জানলে আপনি মুগ্ধ হয়ে যাবেন!
"হিরো" শব্দের জন্ম হয়েছে সংস্কিৃত শব্দ বিরা বা ভিরা থেকে। আর এই শব্দের সঙ্গে যার নাম প্রথমেই যোগ করা হয়েছে তিনি হলেন ভগবান রাম।
"হিরো" বলতে আমরা কাকে বুঝি? শাস্ত্র মতে যিনি দুষ্টের বিনাশ করেন তিনিই হিরো। আর আজকের যুগে যে একসঙ্গে ১০০ জনকে মেরে এই জগতে শান্তি প্রতিষ্টা করেন তিনিই হলেন সাধারণের চোখে হিরো বা বিশেষ কেউ। কিন্তু আমি যদি বলি হিরো শব্দের অর্থ আদতে একেবারেই আলাদ, তাহলে কী বলবেন! হিন্দু শাস্ত্র মতে ভগবান রাম, হনুমান বা মারুথি এবং জৈন তির্থঙ্কর মহাবীর, এই তিন জনকে প্রকৃত অর্থে বীর বা হিরো বলে বিবেচিত করা হয়েছে। কেন জানেন? কারণ "হিরো" শব্দের জন্ম হয়েছে সংস্কিৃত শব্দ বিরা বা ভিরা থেকে। আর এই শব্দের সঙ্গে যার নাম প্রথমেই যোগ করা হয়েছে তিনি হলেন ভগবান রাম। আর হিন্দু শাস্ত্রে ভগবান রাম কেন হিরো সেই নিয়ে একটা শ্লোকও আছে। তাতে রামের ৫ টি গুণের উপর আলোকপাত করা হয়েছে। সেই ৫ টি গুণ হল- ত্যায়াগাভিরা (যিনি সদা ত্যাগ করকে প্রস্তুত), দয়াভিরা (যিনি দয়া করেন), বিদ্যায়াভেরা (যিনি জ্ঞানি), পরাক্রমাভিরা (যিনি পরাক্রমী) এবং ধর্মভিরা (যিনি ন্যায়পরায়ণ)।
হয়তো এতদূর পড়ার পর আপনাদের মনে হতে পারে যে হিন্দু শাস্ত্রে যিনি দয়াবান, যিনি বিদ্য়ান বা যিনি ন্যায়পরায়ণ তাকে হিরো বা ভিরা বলা হয়েছে কেন? আসলে বিশ্বের সবথেকে প্রাচীন ধর্ম, হিন্দু ধর্মে বলা রয়েছে কাউকে মেরে ফেলাটা খুব সহজ। কিন্তু এই সব গুণ থাকাটাই প্রকৃত মানুষের পরিচয় দেয়। তাই তো এমন গুণবানকে হিরো বলে ভূষিত করা হয়েছে। সেই অর্থে বলতে গেলে ভগবান রাম হলেন প্রকৃত হিরো। সেই কারণেই তো ভগবান রাম এই সব গুণের প্রদর্শন যেখানে যেখানে করেছেন তার কিছু উপাদারণ এই প্রবন্ধের মাধ্যমে বোল্ডস্কাই বাংলার পাঠকের সামনে তুলে ধরা হল। যাতে তারা বুঝতে পারেন রামই হলেন সেই শক্তি, যিনি তার জীবনে কোনও দিন এই ৫ টি গুণকে হারাননি।
ত্যায়াগাভিরা:
ভগবান রামের বাবা একবার মাত্র আদেশ দেয়ছিলেন। সেই আদেশ পূরণের জন্য দশরথ পুত্র দ্বিতীয়বার না ভেবেই তার ভাইদের হাতে রাজ্যপাট ছেড়ে ১৪ বছর বনে গিয়ে বাসবাস করেছিলেন। সেই সময় রামের বাকি ভাইয়েরা এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ করেছিলেন। কিন্তু রাম তার পিতার আদেশ মানা ছাড়া সে সময়ই আর কিছুই ভাবতে চাননি। একবার ভাবুন তো আজকের দুনিয়ায় যদি আমরা সবাই এমন গুণে গুণবান হয়ে উঠি, তাহলে সমাজটা কতটাই না সুন্দর হয়ে ওঠে।
দয়াভিরা:
জীবনে কোনও দিন ভগবান রাম কারও উপর ক্রধের বর্ষণ করেননি। এমন কি রাবনকেও তিনি ভুল শুধরে নেওয়ার সুযোগ দিয়েছিলন। কিন্তু যখন দেখেছেন কোনও উপায় নেই, তখনই কিন্তু লঙ্কা আক্রামণের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। শুধু তাই নয়, যুদ্ধ ক্ষেত্রে একদিন রাবণের অস্ত্র শেষ হয়ে গিয়েছিল। সেদিন রাম তাকে বলেছিলেন, "আজ তুমি ফিরে যাও। কাল আবার তোমার সঙ্গে নতুন করে যুদ্ধ হবে।" এমন মহান ব্যক্তিত্বের খোঁজ কি আর মিলবে!
বিদ্যায়াভেরা:
যিনি বিদ্যান, তিনিই তো মুক্তমনা। আর রামের থেকে বড় উদাহরণ এক্ষেত্রে কেই বা হতে পারে বলুন! তিনি জ্ঞানি ছিলেন বলেই তো ঠিক-ভুলের মধ্যে ফারাক করতে জানতেন। তিনি জানতেন যুদ্ধার ফল বিনাশ ছাড়া আর কিছুই নয়, তাই তিনি রাবণের সঙ্গে যুদ্ধ এড়িয়ে মা সিতাকে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করেছিলেন। হনুমানকে রাবণের কাছে দূত হিসেবে পাঠিয়েছিলেন। যখন দেখেছেন আর কোনও উপায় নেই, তখনই তিনি আক্রামণ করেছিলেন। আর যখন লঙ্কা জয় করলেন, তখন কিন্তু তিনি রাজা হলেন না। লঙ্কার রাজ্যপাট তুলে দিলেন বিভীষণ এবং সুগ্রীবের হাতে।
পরাক্রমাভিরা:
সেই ছোট বেলা থেকে তিনি পরাক্রমশালী। কখনও দুষ্টের হাত থেকে ঋষিদের রক্ষা করেছেন, তো কখনও পরশুরামকে হারিয়ে সবাইকে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন। একবার হনুমান রাজ সুগ্রীব রামের ক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন। সেই উত্তর দিতে গিয়ে দশরথ পুত্র একটা মাত্র তীর দিয়ে সাতটি গাছকে উপরে দিয়েছিলেন। এমন শক্তিধরকে পরাক্রমশালী বলা হবে না তো, কী বলা হবে বলুন!
ধর্মভিরা:
তিনি তার জীবন দিয়ে ন্য়ায় প্রতিষ্টার চেষ্টা করে গেছেন। প্রকৃত সন্তান, প্রকৃত স্বামী, প্রকৃত দাদা হয়ে ওঠার চেষ্টা করেছেন। ১৪ বছর শুধু পিতার কথা রাখার জন্য জঙ্গলে কাটিয়েছেন। নিজের মায়ের সমান ভালবাসতেন বাকি সৎ মায়েদের। শুধু তাই নয় সেই সময় তিনিই ছিলেন একমাত্র হিন্দু রাজা যিনি একবার মাত্র বিবাহ করেছিলেন। এখানেই শেষ নয়, আরও আরও সব ন্যায়পরায়ণ সিদ্ধান্তের জন্য আজও তিনি ঘরে ঘরে পূজীত হন। শুধু ভারতে নয়, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার একাধিক দেশে আজও ভগবান রামকে পুজো করছেন কোটি কোটি মানুষ। কারণ কি জানেন? কারণ তার এই ৫ টি গুণকে আজও সাধারণ মানুষ শ্রদ্ধা করেন। তাঁকে সামনে রেখে তাঁর মতো হয়ে উঠতে চান।